somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল)
নিজেকে বোঝার আগেই মনের মধ্যে একটা চেতনা তাড়া করে ফিরতো। এই ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে বদলাতে হবে, একটা বিপ্লব দরকার। কিন্তু কিভাবে?বিপ্লবের হাতিয়ার কি? অনেক ভেবেছি। একদিন মনের মধ্যে উঁকি দিয়ে উঠলো একটি শব্দ, বিপ্লবের হাতিয়ার 'কলম'।

বরফে ঢাকা আল্পস ভ্রমণের দিনগুলো (শেষ পর্ব - পাছি প্লেন জু )

২৫ শে জুন, ২০২৩ রাত ৩:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২৪ ডিসেম্বর ২০২১, আমাদের ঘরে ফেরার দিন। ট্রেন সন্ধ্যা সাতটায়। এয়ারবিএনবি’র Airbnb শর্ত অনুযায়ী সকাল এগারটার মধ্যে আমাদেরকে ঘর ছেড়ে দিতে হবে।সমস্ত দিন হাতে থাকলেও কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা নেই ।কয়েকদিন সবার মধ্যে যে ছোটার তাড়া ছিল তা ভেতর থেকে চলে গিয়ে অবসাদ ভর করেছে।সকালে সবার ঘুম ভেঙ্গেছে আয়েশি ভঙ্গিতে। নাস্তা সেরে সবার ব্যাগ গোছানোর পর্বও শেষ হয়ে গেল।ট্রেন ছাড়বে দিনের শেষে তাই এতোগুলো বড় ব্যাগ সঙ্গে করে বাইরে অবস্থান করা বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াল। বাসার মালিককে বাসা ছাড়ার আগে ফোন করে অনুরোধ করে বললাম, আমাদের ট্রেন সন্ধ্যায় তাই ভারি ব্যাগগুলো যদি কোথাও রাখার ব্যবস্থা করে দিতেন তবে মাঝের এই দীর্ঘ সময় আমাদের ঘোরাফেরার জন্য একটু সহজ হত।ভদ্রলোক উত্তরে বলল, আজ বাসায় কোন অতিথি উঠবেনা, চাইলে সারাদিন আপনারা বাসা ব্যবহার করতে পারেন।ভদ্রলোকের কথায় মনে হল, মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি পেয়ে গেলাম। দিনের সারাটা সময় আমাদের জন্য ঝরঝরে হয়ে গেল।আলো ঝলমলে এবং কুয়াশামুক্ত সকাল,জানালায় চোখ রাখতে দেখি সুদূরে পাহাড়ের সুউচ্চ চূড়াগুলো জেগে উঠে উঠেছে। ঐ দিনের সকালে পাহাড় যে ভাবে দৃশ্যমান হয়েছে অন্যদিনগুলোতে সে ভাবে দেখা হয়নি।অধিকাংশ সময় পাহাড়ের উপরিভাগ মেঘ ও কুয়াশায় ডাকা থাকায় চূড়াগুলো দেখা যায়না। মাঝে মাঝে মেঘ সরে গেলে বা কুয়াশা কেটে কিছু সময়ের জন্য চূড়ারগুলোর কিছু কিছু অংশ ভেসে ওঠে। ওদিন ছিল ব্যতিক্রম,চারপাশের সমস্ত পাহাড় চূড়াগুলো যেন একযোগে সমস্ত আবরণ ঝেড়ে ফেলে শরীরের সমস্ত রূপ মেলে ধরেছিল। দিনটি এমন, বেলকনিতে বসে পাহাড়ের এমন দৃশ্যকে সামনে রেখে কফির চুমুকে গল্প করে কাটিয়ে দেয়ার।কিন্তু মনে হল, দিনটি যেহেতু নিজের মত করে পাওয়া গেল তাই বাসে করে নতুন কোন জায়গায় গেলে মন্দ হয় না।ওরা দুজন জানিয়ে দিয়েছে, সারা দিন বাসায় কাটিয়ে একবারে ফিরতি ট্রেনে উঠবে।তাই একাই বেরিয়ে পরলাম Auvergne-Rhône-Alpes নতুন কোন অঞ্চল আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে।

ছা- জারভে লে বাঁ লো ফায়ে বাস স্টেশনে একটি বাস যাত্রীর জন্য অপেক্ষমাণ।চালককে বললাম,আমি প্যারিস থেকে কয়েকদিনের জন্য এই অঞ্চলে ঘুরতে এসেছি,দুদিন শামনি শহর ও এর আশেপাশের অঞ্চল ঘুরেছি,এখান থেকে বাস অন্য আর কোন পর্যটন স্থানে যায়, জানাবেন কি? ভদ্রলোক বলল, আমি পাছি প্লেন জু (Passy Plaine-Joux)যাবো,এটি একটি স্কি সেন্টার এবং খুব আকর্ষণীয় স্থান,আমি একটু পরেই রওনা হবো, আপনি চাইলে আমার সঙ্গে যেতে পারেন। আমি কোন চিন্তা না করে চালকের কাছ থেকে ছয় ইউরোতে একটি টিকেট সংগ্রহ করে বাসের ভেতরে গিয়ে বসলাম।

বাস কিছু সময়ের মধ্যে সমতল উপত্যকা গ্রাম পেরিয়ে প্রবেশ করলো পাহাড়ি পথে।পাহাড়ের কোল ঘেঁষা পথ একে বেঁকে উপড়ে উঠে গেছে।পথের মাঝে মাঝেই ভয়ঙ্কর বাক। চালক খুব সতর্কতার সঙ্গে সেগুলো পেরিয়ে এগিয়ে যেতে লাগলো।মোটরযান চালনায় বিশেষ দক্ষতা না থাকলে এই পথে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা অনেক।রাস্তার কোথাও কোথাও ভয়ঙ্কর পাহাড়ি ঢালু কিন্তু তেমন কোন নিরাপত্তা বেষ্টনী বেড়া নেই।বাস যতই উপড়ে উঠছিল দূরের পাহাড়ি গ্রাম ও বিস্তীর্ণ উপত্যকা ভূমি ছবির দৃশ্যের মত ধরা দিচ্ছিল দৃষ্টিতে।এই খাড়া পাহাড়ি পথের পাশদিয়ে কোথাও কোথাও গড়ে উঠেছে ছোট ছোট আবাসিক এলাকা, দোকানপাট, বিনোদন কেন্দ্র, হোটেল, রেস্তরাঁ।রাস্তার দুধারে ঘন পাইনের বন।সুশীতল বরফের ছায়াঢাকা পথ।বেশ রোমাঞ্চকর অনুভূতিতে চলার পথের সময়টা উপভোগ করছিলাম আর ওদেরকে মনে পড়ছিল।প্রায় চল্লিশ মিনিটের পাহাড়ি এক দুর্গম খাড়া পথ বেয়ে বাস তার গতি থামাল পাছি প্লেন জু স্টেশনে। আমি বাস থেকে নেমেই আশেপাশে একটু হাঁটাহাঁটি করে নিলাম।

উপত্যকা ভূমি থেকে ১৩৬০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত ছোট্ট একটি স্কি ষ্টেশন।পর্যটক ও স্কিয়ারদের প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা সম্বলিত একটি দারুণ স্থান।রেস্তরাঁ,পর্যটন তথ্য কেন্দ্র,জাদুঘর,স্কি শেখার স্কুল এবং স্কি ভাড়া ও বিক্রয় সামগ্রীর দোকান সবই রয়েছে।স্থানটির একপাশে ৩৮২ মিটার উচ্চতার পাহাড়ের প্রাচীরে ঘেরা এবং চূড়া ধূসর মেঘের সঙ্গে জড়াজড়ি করছিল। অন্য পাশে উন্মুক্ত আকাশের নিচে উপত্যকা ভূমি আর আদিগন্ত পর্বতমালা। মেঘ আর রৌদ্রের লুকোচুরি খেলায় প্রতিনিয়ত অদ্ভুতভাবে পর্বতচূড়াগুলোর রূপ পরিবর্তন হচ্ছে।আমি বরফের স্তরের উপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে দাঁড়ালাম পাহাড়ের পারের উপর।পারের জায়গায় জায়গায় সতর্ক সংকেত দেয়া রয়েছে।পার এতোটাই খাড়া এবং উঁচু যে কেউ দুর্ঘটনার কবলে পড়লে বাঁচার সম্ভাবনা একেবারেই নেই।বিমান থেকে যে ভাবে ভূমি দেখা যায় এখানে দাঁড়িয়ে সামনের দৃশ্যপট সেভাবে ধরা দিলো আমার সামনে।কয়েক দিনের অতি পরিচিত এলাকাকে এক পৃষ্ঠায় অঙ্কিত একটি মানচিত্রের মত লাগছিল। সুউচ্চ স্তম্ভের উপর দাঁড়ানো ২২৭৫ মিটারের দীর্ঘ সেতুর ভিয়াদুক দে এগ্রাত (Viaduc des Égratz), যেটির উপর দিয়ে আমরা বাসে করে শামনি গিয়েছিলাম সেটি একেবেঁকে চলা একটি চিকন সরীসৃপের মত দেখাচ্ছিল।ক্যামেরার লেন্স জুম করে খুঁজে পেলাম ছা- জারভে লে বাঁ লো ফায়ে  (St-Gervais-les-Bains-le-Fayet)ট্রেন স্টেশন এবং আমাদের ক্ষণিকের আবাস এলাকা। বুঝতে পারলাম আমি কোথায় অবস্থান করছি। কয়েকদিন ছা-জারভে লে বাঁ এলাকার রাস্তায় দাঁড়িয়ে একটি পাহাড়ের বিশালতার দিকে দাঁড়িয়ে মনের ভেতর নানা প্রশ্ন জাগছিল,ঐ উচ্চতায় উপর কি মানুষ যেতে পারে?ঐপাহাড়ের ভাজে কি কোন বসতি আছে? ইত্যাদি। দূর থেকে খাড়া পাহাড়টির অবয়ব দেখলে এতোই দুর্ভেদ্য মনে হয় যে, যে কারো মনে এমন ভাবনার জন্ম দেবে।
পাছি প্লেন জু’র পারে দাঁড়িয়ে আমি আমার প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেলাম।দূর থেকে যে পাহাড় দেখে আমার মধ্যে নানা কৌতূহল জন্ম নিয়েছিল আমি বাসে করে সেই পাহাড়ের গা বেয়ে তারই শীর্ষ চূড়ায় এসে পৌঁছেছি।ব্যাপারটা যে এভাবে বাস্তব হবে তা ভেবেই অবাক হচ্ছিলাম।
পাছি জু’র পারে দাঁড়িয়ে Auvergne-Rhône-Alpes অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি ও মানুষের জীবন যাপন সম্পর্কে একটি ধারনা পেলাম।খালি চোখে সমস্ত অঞ্চলকে একটি পেন্সিলে আঁকা ধূসর রঙয়ের স্কেচের মত লাগছিল।ক্যামেরার লেন্স জুম করে ধরার চেষ্টা করছিলাম দূর পাহাড়ি অঞ্চলের জীবন চিত্র। বিস্তীর্ণ পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে উপত্যকা ভূমি। তার মাঝে ছোট্ট ছোট্ট গ্রাম, আবার কোথাও পাহাড়ের গায়ে গায়ে বিচ্ছিন্ন মানব বসতি ঘরবাড়ী।

মেসেঞ্জারের ভিডিও কলের মাধ্যমে সুমিকে আমার অবস্থান দেখিয়ে বললাম, দুপুরের খাবার সেরে যদি আসতে পারো তবে আল্পসকে আরও নতুন করে আবিষ্কার করতে পারবে। চারপাশের দৃশ্য দেখাতেই ও সহজেই রাজী হয়ে গেল। আমি ওদেরকে এখানে আসার বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে আবার আল্পস উপভোগে নিমগ্ন হলাম।


পাছি’র ছোট্ট পর্বত পৃষ্ঠ যেন একটি বিনোদন কেন্দ্র।খ্রিস্টমাস উপলক্ষে নানা আয়োজনে মেলার ইমেজ বিরাজ করছিলো।বাচ্চাদের আনন্দ দেবার জন্য অনেকে পের নোয়েল বা স্যান্টাক্লজ সেজে এসেছে, কেউবা ধর্মীয় রূপকথার নানা চরিত্রের পোশাক পরে বা বাচ্চাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিল।

কুকুরের স্লেজ গাড়ি কিভাবে ছুটে চলতো পাহাড়ি বরফ ঢাকা পথে তা সিনেমার পর্দায় দেখেছি, কিন্তু এবার সেই ঐতিহ্যবাহী স্লেজ গাড়ীর দর্শন মিলল এখানে।শেয়াল সদৃশ এক দল সুদর্শন কুকুর পর্যটকদের পেছনে বসিয়ে টেনে চলছিলো বরফের উপর দিয়ে।

পাহাড়ের নানা রূপ ক্যামেরায় ধারণ করতে করতে ছোট্ট যন্ত্রটি দুর্বল হয়ে পরল তাই ওকে চার্জ দেবার জন্য একটি ক্যাফে বারে ঢুকলাম।কিছুক্ষণের মধ্যে ক্যাফে বারের বৈদ্যুতিক হিটারের উষ্ণতায় শরীরে বেশ চনমনে ভাব ফিরে এলো।ক্যাফের চুমুকে নিজে সতেজ হওয়ার পাশাপাশি ছবি তোলার যন্ত্রটি বৈদ্যুতিক সংযোগে কিছুটা শক্তি সঞ্চার করে নিলো।সুমি ফোনে জানালো, ওরা প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছে।
বিকেল সাড়ে তিনটের দিকে আমার জন্য একটি পিজার বক্স হাতে করে পাছি পৃষ্টে এসে নামলো। চারপাশের দৃশ্য দেখে মুহূর্তেই উৎফুল্ল ভাব ফুটে উঠল সুমির মধ্যে।আল্পস ভ্রমণে পাছি দর্শন সুমি ও মিশেলের কাছে বাড়তি পাওয়া। ওদের পরিকল্পনার বাইরে এমন একটি জায়গায় আসতে পেরে আমাকে কৃতজ্ঞতা জানালো।হাতে সময় কম থাকায় ওরা নেমে পরল পাছি’র সৌন্দর্য উপভোগে আর আমি ক্ষুধা নিবারণের স্বার্থে ঠাণ্ডায় জমে যাওয়া পিজা অনেকটা জোর করেই পেটে ঢোকাতে লাগলাম পাছি’র এককোণে পেতে রাখা অবকাশ চেয়ার বসে।

ওরা আসাতে আমার আল্পস ভ্রমণের শেষ সময়টুকু বেশ উপভোগ্য হয়ে উঠল।স্মৃতি ধরে রাখতে নিজেদের একে ওপরের ছবি তুলে কাটল বেশ কিছু সময়।সবাই একসাথে হেঁটে বেড়ালাম পাছি পৃষ্ঠের বরফ ভূমির উপর দিয়ে।


যেহেতু,আমাদের প্যারিস ফেরার ট্রেনের সময় সাতটায় তাই ঝুঁকি এড়ানোর জন্য কিছুটা সময় হাতে রেখে বিকেল পাঁচটার বাস ধরার প্রস্তুতি নিয়ে স্টপেজে গিয়ে দাঁড়ালাম।বাস আসার নির্ধারিত সময় অতিক্রম হলেও স্টপেজে বাসের দেখা মিলল না।প্রায় পনের মিনিট পার হয়ে গেল।কিছুটা উদ্বেগ উৎকণ্ঠা নিয়ে পাছি’র প্রবেশ পথের দিকে বাসের জন্য আমরা অধীর প্রতীক্ষায় রইলাম।ফ্রান্সে পাবলিক যানবাহনগুলো সাধারণত সময় সূচি মেপে চলাচল করে, তবে কোন কারণে ট্রাফিক সমস্যার সৃষ্টি হলে ট্রান্সপোর্টগুলোর সেই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে। বুঝতে পারলাম আমরা তেমনি সমস্যার কবলে পরেছি।প্রতিটি অতিতিক্ত মিনিট বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সবার মুখে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট হতে লাগলো।নির্ধারিত সময়ের প্রায় চল্লিশ মিনিট পর পাছি’র প্রবেশদ্বারে বাসের আগমন ঘটল।স্টেশনে যাত্রী তোলার জন্য বাস আরও পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করে ছা- জারভে লে বাঁ লো ফায়ে’র উদ্দেশ্যে রওনা করলো।আমরা অনেকটা ঝুঁকির মধ্যে রওনা করলাম।সময়টা এমন যে পথের মধ্যে কোনও প্রকার ট্রাফিক সমস্যায় সময় ক্ষেপণ হলেই আমাদের ট্রেন মিস হবে। পাহাড়ের ঢালু পথে ঘুরে ঘুরে বাস নামতে লাগলো।বাস নিচ থেকে থেকে যখন উপড়ে উঠছিল তখনকার পাহার দেখার অনুভূতি থেকে নামার অনুভূতি সম্পূর্ণই ভিন্ন লাগছিল। আসার সময় নিশ্চুপ ভাবে সময় কাটলেও যাবার বেলার গল্প গুজব আমাদের আল্পস ভ্রমণের স্মৃতিটাকে রাঙ্গিয়ে তুলল।যা অপরিকল্পিত ভাবে হয়ে গেল।বাস দুই একটি স্টপেজ থেকে যাত্রী তোলা ছাড়া সময় ক্ষেপণ না করে এগিয়ে যেতে লাগলো।সন্ধ্যার জনমানবহীন পাহাড়ি পথটা এমন, যদি কেউ পথের মধ্যে কোন কারণে শেষ বাস মিস করে তবে তার জন্য মহাবিপদ।গা ঝমঝমে পাহাড়ি সড়কটিতে কোন পথচারী হাঁটার ফুটপাত নেই।এক স্টপেজ থেকে অন্য স্টপেজের দূরত্বও অনেক।পাহাড়ের কোল ঘেঁষা সড়কটি এতোই খাড়া যে এই পথ ধরে হেঁটে ওঠা এবং নামা দুটোই কষ্টকর এবং বিপদজনক। তাই হয়তো কর্তৃপক্ষ পথচারী চলাচলের ব্যবস্থা রাখেনি।মাঝে মাঝে রাস্তার পাশে স্থানীয়দের যে দু চারতে বসতি রয়েছে তাদের এক মাত্র চলাচলের মাধ্যম ব্যক্তিগত মটরগাড়ি। পর্যটকরাই মূলত পাছি পৃষ্ঠে ওঠা ও আশেপাশের অন্যান্য পর্যটন স্থানে যাওয়ার জন্য পাবলিক বাস ব্যবহার করে থাকে।দুচার দিন ঘোরার জন্য এমন এলাকা আকর্ষণীয় হলেও যাদের এসব অঞ্চলে স্থায়ী ভাবে বসবাস করতে হয় তাদের যে নানা প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে সন্ধি করে দৈনন্দিন জীবন কাটাতে হয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও ফ্রান্সের নাগরিক জীবনে আধুনির সুযোগ সুবিধার সবকিছুই প্রত্যন্ত রয়েছে।যা হোক,বাস প্রায় চল্লিশ মিনিটের সতর্ক যাত্রার ইতি টানল ছা- জারভে লে বাঁ লো ফায়ে স্টেশনে।আমরা প্যারিস ফেরার ট্রেনে উঠতে হাতে ত্রিশ মিনিট পেলাম।বাক্সপ্যাঁটরা গোছানোই রয়েছে।দ্রুত পায়ে হেঁটে বাসায় পৌছুলাম।যার যার ব্যাগ নিজ দায়িত্বে নিয়ে বেরিয়ে এলাম আমাদের ক্ষণিকের ছোট্ট নীড় থেকে।দরজার পাশের ছোট্ট একটি বাক্স। বাসার চাবিটি বক্সের মধ্যে ফেলে দেয়ার মধ্যদিয়ে শেষ হল আমাদের আল্পসের গায়ে ছুটে চলার দিন কয়েকের গল্প ।


বরফে ঢাকা আল্পস ভ্রমণের দিনগুলো (পর্ব-১)
বরফে ঢাকা আল্পস ভ্রমণের দিনগুলো (পর্ব-২ , মোঁ ব্লঁ)
বরফে ঢাকা আল্পস ভ্রমণের দিনগুলো (পর্ব-৩ শামনি)
বরফে ঢাকা আল্পস ভ্রমণের দিনগুলো (পর্ব-৪ শামনি গ্রাম)

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০২৩ ভোর ৪:০০
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×