somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল)
নিজেকে বোঝার আগেই মনের মধ্যে একটা চেতনা তাড়া করে ফিরতো। এই ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে বদলাতে হবে, একটা বিপ্লব দরকার। কিন্তু কিভাবে?বিপ্লবের হাতিয়ার কি? অনেক ভেবেছি। একদিন মনের মধ্যে উঁকি দিয়ে উঠলো একটি শব্দ, বিপ্লবের হাতিয়ার 'কলম'।

প্রসঙ্গ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

৩০ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশের যে মানুষটা আওয়ামী লীগ করে, বি এন পি করে , জামাত করে,বাম রাজনীতি করে, পুলিশের চাকুরী করে, সাংবাদিকতা করে এরা কেউ অন্য দেশের মানুষ নয়, সবাই বাংলাদেশের ভূমিতে জন্ম নেয়া মানুষ। মতাদর্শ ও পেশাগত কারণে যার যার অবস্থান ও দায়িত্ব ভিন্ন হতে পারে কিন্তু কেউ কারো শত্রু নয়। কারো আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পক্ষপাতিত্বের মাধ্যমে কাউকে শত্রুর সাড়িতে দাড় করিয়ে খুনাখুনির জন্য উদ্যত হওয়া মানে নিজের দেশকে খুন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা,দেশের মানুষকে ধ্বংস করার উদ্যোগ গ্রহণ করা। দেশের মানুষকে সঠিক ভাবে পরিচালনা জন্য আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে একটি প্রশাসনিক কাঠামো রয়েছে। সেই প্রশাসন পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ দেশে জন্ম নেয়া প্রতিটি ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার।একটি রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যও দিয়ে যে কেউ সেই দায়িত্বের গ্রহণের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারে। নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে উপেক্ষা করে যদি কেউ পেশী শক্তি ও তৃতীয় শক্তির সহায়তায় রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের চেষ্টা চালায় তা সম্পূর্ণই স্বৈরতন্ত্রের শামিল এবং দেশের মানুষের সঙ্গে ঘাতকতা ছাড়া কিছু নয়।

দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দেশের মানুষের কল্যাণ সাধন ও রাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এবং প্রতিটি দলই রাষ্ট্র স্বীকৃত।সেই সুবাদে, নিবন্ধিত প্রতিটি রাজনৈতিক দলই মর্যাদাপূর্ণ।প্রতিটি দলের মধ্যে একটি সাধারণ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা থাকবে, তা জনগণের কল্যাণ সাধনকে কেন্দ্র করে। এই প্রতিযোগিতায় যারা এগিয়ে থাকবে জনগণ তাদেরকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বেছে নেবে তাদের পরিচালনার জন্য।এটাই রাজনীতির সুস্থ ধারা।অন্যদিকে যারা, সুস্থ ধারাকে দূরে ঠেলে খুন,জখম ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস ও ভোট চুরির মত অনিয়মের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায় বা ক্ষমতায় যেতে চায় তারা এক কথায় দেশ ও জনগণের শত্রু, তাদেরকে প্রতিহত করা আপামর জনগণের নৈতিক দায়িত্ব নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে।

বাংলাদেশে সামনে সংসদ নির্বাচন, যার মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের জন্য দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেবে দেশের কোন একটি রাজনৈতিক দল বা জোট । সামনের নির্বাচন কিভাবে করতে হবে , কোন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হলে জনগণের নিকট গ্রহণযোগ্য হবে তা দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের এক টেবিলের আলোচনার বিষয়বস্তু। এই বিষয়টি যদি কোন একক দল বা শক্তির সিদ্ধান্তে হয় তবে সেখানে সংঘাত সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী।যদি প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের এক টেবিলে বসানো না যায় তবে সংঘাত এড়াতে ভিন্ন পথে সুষ্ঠু সমাধান খুঁজতে হবে।

বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর বৃহৎ এক অংশের দাবী একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের।যে প্রক্রিয়াটি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে অতীতে সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করে এবং জনপ্রিয়তা লাভ করে।যা বর্তমান সরকার ২০১১ সালে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে বিলুপ্ত ঘোষণা করে।

আমি মনে করি, কাগজে কালির হরফে লেখা সংবিধানের কথা যেমন দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য সংরক্ষন ও পালন যেমন সরকারের মহান দায়িত্ব , আবার সময়ের প্রয়োজনে ও বৃহৎ জনগোষ্ঠীর দাবীর প্রেক্ষিতে সংবিধান পরিবর্তন ও পরিমার্জন করাও কখনো কখনো অপরিহার্য কর্তব্য। কারণ, জনগণের জন্যই দেশ ও দেশের সরকার ব্যবস্থা।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলো যেহেতু একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রক্রিয়ার মতে এক হতে পারছে না সেহেতু কোন প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হবে তার দায়িত্ব জনগণের উপর ন্যস্ত করা যেতে পারে। সেই প্রেক্ষাপটে সংসদ নির্বাচনের পূর্বে সরকার অনলাইন প্লাটফর্ম বা অন্য কোন মাধ্যমে একটি ভোটের আয়োজন করতে পারে, যে ভোটে দুটি অপশন থাকবে, এক। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, দুই। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। এই দুইটি অপশন থেকে ভোটার একটি অপশন বেছে নিয়ে তার ভোটের মাধ্যমে মত প্রদান করবেন। দিন শেষে যে অপশনে জনগণের চাওয়ার আধিক্য অর্থাৎ ভোট বেশী পড়বে সেই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি বর্তমান সরকার সামনের সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তবেই বর্তমান সরকারকে জনগণের পক্ষের শক্তি হিসেবে পরিগণিত করা হবে এবং এই প্রক্রিয়ায় রক্তপাতহীন একটি নির্বাচন ও সরকার প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা রয়েছে।

নিজের ঘরের সমস্যা সমাধানে তৃতীয় শক্তির দ্বারস্থ হলে অধিকাংশ সময়ে কল্যাণের চেয়ে অকল্যাণ সাধনের সম্ভাবনাই বেশী থাকে। দেখা যায়, তৃতীয় শক্তি অন্যের দুর্বলতার সুযোগে নিজ স্বার্থ হাসিল করে ঘর ধ্বংস করে বেরিয়ে যায়, যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ সারা পৃথিবীতেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। নিজের ঘরে যদি মতানৈক্য সৃষ্টি হয় তবে কমবেশি ছাড় দিয়ে ঐকমত্যে এসে ঘর রক্ষার স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকাই কল্যাণকর। নতুবা,যেদিন গোঁয়ারতুমি করে যাদের পরামর্শে ঘরহারা হবেন ঐদিন দেখবেন আপনার বুদ্ধিদাতা বন্ধুর ঘরে আপনার আর জায়গা হচ্ছেনা, জায়গা হবে রাস্তার খোলা আকাশের নিচে।নিজের ঘর সুন্দর থাকলেই অন্যের ঘরে অতিথির মর্যাদার পাওয়া যায়,আর নিজের ঘর না থাকলে অন্যের ঘরে আশ্রিত হতে হয়। এটাই পৃথিবীর বাস্তব নিয়ম।ঘর হারিয়ে সুবুদ্ধির উদয় হলে কোন লাভ নেই,বরং নিজের জীর্ণ ঘরে বসে ঘরের মানুষদের নিয়ে ঘরকে কিভাবে আরও মজবুদ করা যায় সেই ভাবনাই বুদ্ধিমানের কাজ। পৃথিবীর অনেক প্রতিষ্ঠিত দেশ আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে শুধু অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সঙ্কট ও রাজনৈতিক নেতাদের অদূরদর্শিতার কারণে।যা থেকে আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত।

অর্থাৎ, নিজের দেশের সমস্যা সমাধানে নিজ দেশের রাজনৈতিক দল ও জনগণের উপর আস্থা রাখুন।ইউরোপ, আমেরিকা,ভারতকে বন্ধু না বানিয়ে নিজের দেশের রাজনৈতিক দল ও জনগণকে বন্ধু বানান। তা, আপনার দলের জন্য যেমন কল্যাণকর তেমনি দেশের প্রতিটি মানুষের জন্যও স্বস্তির বিষয় ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ২:০৯
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×