লেখাঃ ১৮ ডিসেম্বর ২০২০(আমার ফেসবুক পোস্ট থেকে নেয়া)
বইটির প্রকাশকালঃ ২০ ডিসেম্বর ২০২০(ভারত) এবং ২৫ জানুয়ারি ২০২১(বাংলাদেশ)
বইটির প্রকাশের পিছনের গল্প বেশ লম্বা। সেসব অন্য একদিন আলাদা করে বলা যাবে। কিন্তু বিশেষ কিছু মানুষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন না করে পারছিনা।
স্মৃতি দত্ত, উনি ভারতের ছত্রিশগড়ের মানুষ। কাকতালীয় ভাবে উনার সাথে ফেসবুকে আমার পরিচয়। তখন চলছে মহামারীর আতঙ্ক(আজ তা আরো বর্ধিত)। একদিকে মহামারী সংকটে মানুষ স্বপ্ন ছেড়ে শুধু বেঁচে থাকার লড়াই করছিলো অন্যদিকে উনি এই মহা-সংকটের মধ্যে আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেন। হ্যাঁ, আমার বই উনি প্রকাশ করবেন বলে জানালেন। ওনাকে 'হ্যাঁ' বা 'না' বলার শর্তে একদিন মুখ ফসকে বলেই দিলাম, "ঠিকাছে"। আসলে হাতে তো উপায়ও কোনো ছিলো না। কারণ যে বইটি প্রকাশ হবার কথা ২০১৯ সালে সে বইটি যখন প্রকাশনীর উচ্চ চাহিদার কাছে ভীমড়ি খেয়ে আঁটকে যায় তখন আমার মত আপেক্ষিকভাবে কম মানসিক শক্তি সম্পন্ন মানুষ আরো একটি বছর অপেক্ষার প্রহর গণনার ক্ষেত্রে নির্ঘাত ব্যর্থ হত। কিন্তু দিদি তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। ভার্চুয়াল জগতে সব সস্তা বলে চালিয়ে দেওয়া মানুষদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যুদ্ধ করলেন শেষ পর্যন্ত, হ্যাঁ বইটি এখন আমাদের হাতে। এই ঋণ শোধ করবার নয়। অথবা কৃতজ্ঞতার মধুর দুটি শব্দ দিয়ে শেষ করা যায় না। তবুও কৃতজ্ঞতা জানাই। এতকিছু হয়তো সম্ভব হয়েছে আমাদের বাংলার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা আছে বলেই।
প্রফেসর আবদুল্লাহ আল-মামুন স্যার, কম্পিউটারের মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে দুই অক্ষর বাংলা লিখতে পারতাম না। দুই-চারটা বই ততদিনে পড়েছি। কিন্তু তা দিয়ে তো আর সাহিত্য হয় না! হোক সেটা সস্তা -ই! কিন্তু আমি স্যারের দ্বারা অনেক বেশি প্রভাবিত। আমার লেখায় উনার কথার বা দর্শনের ছাপ যদি মিলেও যায় এতে ব্যক্তি হিসেবে স্যার আমায় মাফ করবেন আশা করি। কারণ, আপনি সবসময় বাংলাকে প্রাধান্য দিয়ে গেছেন। আপনার শতাধিক উক্তি(যা এখনো সংরক্ষিত আমার নোটবুকে) আমাকে বাংলা সাহিত্য চর্চার দিকে অনেক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে। তাই বইটি আমি আপনাকে উৎসর্গ করেছি। স্নাতক শেষে এখন ভয় করে আবার আপনার একটা ক্লাস কবে করতে পারবো? এই শঙ্কায়।
পুরো ইংরেজি বিভাগ আমাকে শিখিয়েছে বাংলায় গল্প লেখার সময় মননশীল একটি স্কেল ধরতে যা লেখা কে আরো সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলে। এজন্য আমি সবার কাছেই কৃতজ্ঞ।
মাহফুজুর রহমান নাঈম, পৃথিবী একদিকে তো আমার এই বন্ধু অন্যদিকে। মানে আমি সবসময় ঠিক। ওর বিশ্বাস - আমি পারবো। কিন্তু আজ অবধি আমি ও কে শুনেছি এবং আজ প্রচন্ড মিস করছি। কারণ শুরুর গল্পটা ওর হাত ধরেই। এখন উৎসর্গে হুট করে নিজের নামটা খুঁজে পেলে অন্যায় হবে না মনে হয়।
ফাহিম ফয়সাল নিবিড়, আমি ও কে মজা করে "সাধু" বলে ডাকি। ডাকনামটি স্ব-ঘোষিত ছিলো আমি শুধু ধার করেছি মাত্র। সাধুর মোড়ের চায়ের আড্ডাটা না হলে আর যাইহোক অন্তত লেখালেখি করা যেত না। সেটা অবশ্য ওর জানার কথা। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে সবসময় পাশে পেয়েছি তোকে। বইটির নাম হয়তো তাই এমন হয়েছে অথবা প্রচ্ছদ।
বিজন বিশ্বাস, সরাসরি আপনাকে একবার দেখতে ইচ্ছে করছে, সত্যি বলছি। খুব দ্রুত কোলকাতায় যাবো বলেও ভাবছি। প্রচ্ছদে আপনার শৈল্পিক হাত ছিলো মূল গল্পের থিমকে ঘিরে এবং সে ব্যাপারে কোনরকম ছাড় দেননি। অতি অল্প পরিচয়ে খুব আপন করে নিয়েছেন যেন আমায়। আমার অন্তরস্থল থেকে অশেষ কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানাই আপনাকে।
মুকতাদির রাদ, আমার খুচরো গল্পের বেশ দামী পাঠক। শুরু থেকে আজ অবধি ছায়া হয়ে পাশেই আছে। আমার এই বন্ধু খুব অভিমানী। কিন্তু বোধহয় আমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
এছাড়া, বিশেষ কৃতজ্ঞতা সুস্মিতা খান কে। একটা সময় খুব ভেঙ্গে পড়েছিলাম। সুস্মিতা ওর জায়গা থেকে সবসময় লেখার জন্য আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:০২