somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মি. বিকেল
আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

সত্যের ছদ্মবেশে মিথ্যার খেলা: ‘Self-justification’ আমাদের কীভাবে ধ্বংস করে?

২৯ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমরা সবাই নিজেকে সঠিক প্রমাণ করতে চাই। কিন্তু ‘Self-justification’ বা ‘আত্ম-ন্যায়ায়ন’ এর মাধ্যমে আমরা ক্রমশ মিথ্যার জালে জড়িয়ে পড়ি। এই আর্টিকেলে জানুন ‘Self-justification’ এর ক্ষতিকর প্রভাব, ‘Cognitive Dissonance’ এর সাথে মোকাবিলা করার উপায় এবং সত্যবাদী জীবনযাপনের গুরুত্ব।

আমরা সত্য বা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকি নিজেকে নিজের বিবেকের কাঠগড়ায় “আমি অপরাধী নই” শর্তে বিচার করার জন্য। আমরা যখন সত্য বলি সেখানে নিজের লাভ আছে বলেই বলি, আর আমরা যখন মিথ্যা বলি তখনও সেখানে নিজের লাভ থাকে বলেই বলি। আর এই ‘Self justification’ করতে করতে একদিন নিজেকে খুঁজে পেতে কষ্ট হয়। একদিন নিজেকে নিজের কাছে অপরিচিত বলে মনে হয়।

সাধারণত যখন আমরা নিজেদের বিশ্বাস এবং মূল্যবোধ কে ভেঙ্গে কিছু বলি। যেমন, আপনি হয়তো আপনার বন্ধু কে মিথ্যা বলেছেন কিন্তু নিজেকে আপনি একজন সৎ মানুষ হিসেবে ভাবেন। এখানে একরকম মানসিক দ্বন্দ্ব তৈরি হতে বাধ্য। আর এটিকে মনোবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘Cognitive Dissonance’।

কাউকে ঠকাচ্ছেন কিন্তু নিজের ভাবমূর্তি ঠিক রাখার জন্য হয়তো নিজের মনের কোনো একটি বিশেষ আবেগ কে শক্তি যোগাচ্ছেন। কারণ যে কোনো আবেগ ঠিক ততটাই শক্তিশালী হয়, যতটুকু শক্তি আপনি সেই আবেগ কে দিয়ে থাকেন। আপনি হয়তো নিজেকে ভাবাচ্ছেন,

(ক) ওমন মানুষকে ঠকানোই উচিত।
(খ) আজকাল এসব হরহামেশাই চলে।
(গ) যদি ঠকিয়েও থাকি তবুও আমি তার জন্যে অনেক কিছু করেছি।
(ঘ) আর আমি যদি ও কে না ঠকাতাম তাহলে ও বাস্তব জীবন কে বুঝতে পারতো না।

এরকম অসংখ্য যুক্তি মন কে শিখিয়ে তাকে একটি ইতিবাচক শক্তি প্রদান করা যায়। শুধু তাই নয়, এতে করে আপনার বাহ্যিক ভাবমূর্তিও ইতিবাচক থাকে। মানসিক শান্তি এবং ইতিবাচক মনোভাব সর্বদা রাখার জন্য এবং ‘Cognitive Dissonance’ এর সাথে পিষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

আধুনিক মানসিক চিকিৎসা বা যারা সাইকোলজিস্ট তারা মূলত এই অংশটুকুই নিয়ে কাজ করেন আপনার অনুভূতি কে ‘Restore’ করার জন্য, ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আনার জন্য। তারা চেষ্টা করেন আপনার মধ্যে নতুন নতুন বিশ্বাসের এবং মূল্যবোধ কে জাগ্রত করার।

এই পেনিট্রেশন এক সময় হয়তো আপনাকে ভালো থাকতেও শেখায়, কিছু ঔষধ আছে যা আপনার অনুভূতি কে জাগ্রত হবার সুযোগ দেয় না। খেয়াল করে দেখবেন, সাইকিয়াট্রিস্ট দ্বারা ঔষুধের কার্যাবলী। Bing এ একটু জিজ্ঞাসা করলেই পাবেন। কারণ একজন মানুষ কখনোই আপনার অতীতে গিয়ে সমস্ত বিষয়ে নিখুঁত সমাধান দিতে পারবেন না, পারেন না। তিনি ফিক্স করবার চেষ্টা করেন, কিছুটা মেরামত বলতে পারেন।

নতুন যে ট্রেন্ডিং ‘পডকাস্ট’; আরো বড় ধোকা আমাদের সামনে নিয়ে এসেছে। আমি গত ২-৩ বছর প্রায় নিয়মিত পডকাস্ট শুনছি। “এখানে কিচ্ছু নেই” – সেটা বলার সাহস আমার নাই, উচিতও নয়। কিন্তু ভুল অনুপ্রেরণার সবচেয়ে বড় ইন্ডাস্ট্রি হয়ে গড়ে উঠছে। সিনেমায় শুধু বাকি রয়েছে বাছাইকৃত কিছু ওয়েব সিরিজ; বার্বিদের জন্য আলাদা করে কিছু বলার নেই।

কিন্তু এর নেতিবাচক দিক কিন্তু অনেক ভয়াবহ। সংক্ষিপ্ত একটি তালিকা নিম্নে তুলে ধরা হলো,

১. ‘Self-Justification’ আমাদের ক্রমান্বয়ে এক পাক্ষিক হতে শেখায় পাশাপাশি “আমি ভুল হতে পারি না/আমার ভুল হতে পারে না” এই শর্তে প্রতিক্রিয়াশীল হতে শেখায়।
২. যখন আপনি আপনার প্রতিটি ভুলের জন্য নিজের আইনজীবী হয়ে পড়বেন এবং ছোট্ট একটি ‘দুঃখিত’ বলবেন না তখন সেসব ভুল থেকে আপনি কিছু শিখবেনও না।
৩. এটি আপনাকে ব্যক্তি হিসেবে দিনদিন নিজের চারপাশে একজন ক্ষতিকর মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে। কাউকে মিথ্যে বলে, কারো সাথে অন্যায় করে, কাউকে ঠকিয়ে আপনি ‘Self-justication’ বারবার যদি করেই যান তাহলে একদিন কাউকে হত্যা করতেও হয়তো আপনার কাছে প্রয়োজনীয় যুক্তি পাওয়া যেতে পারে।

আজকাল ব্যক্তিজীবনে চায়ের আলাপ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কেন জানিনা ঠিক এদিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। নিজেকে সঠিক প্রমাণ করবার এক দৃঢ় প্রচেষ্টা! আচ্ছা, আপনি যদি সত্যিই সঠিক হয়ে থাকেন তাহলে বারবার উঠে দাঁড়িয়ে জানান দেবার তো বিশেষ প্রয়োজন নাই। তাহলে কেন? কে জানতে চাইছে! আপনি ঠিক না কি বেঠিক!

সত্যি বলতে আপনি যেমন এসব বিষয় নিয়ে অন্যকে তেমন একটা পাত্তা দেন না, ঠিক তেমন করে আপনাকেও এসব বিষয় নিয়ে অন্যরা আপনাকে পাত্তা দেন না।

ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।

ছবি: Bing Enterprise
Also Read It On: সত্যের ছদ্মবেশে মিথ্যার খেলা: ‘Self-justification’ আমাদের কীভাবে ধ্বংস করে?
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৩৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×