একটি রাজ্যে কোটি কোটি মানুষের বসবাস। সেখানে শুধু সুখ, শান্তি, আনন্দ, ভোগ বিলাসিতায় মানুষের জীবন যাপন-রত। সবার স্বপ্নগুলো ও কার্যকারিতা যেন পর্বতের সমান । সবাই বড় হবার জন্য মেতে উঠে থাকে, কে কাকে ডিঙিয়ে যাবে সেই চিন্তায় অনবরত থাকে। এমনই বড় হবার জন্য অনেক মানুষকেই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এ রাজ্যে পাপ কর্ম কি তা পুরোটাই যেন অজানা। সব ভাবনা গুলো যেন হয় শুধু মাত্র নিজেরই জন্য, সেই রাজ্যে কেউ কারো নয়। অনুষ্ঠান আর অনুষ্ঠান যেন মনে হয় মানুষকে খাইয়ে নাম কামানোর ধান্দা, এভাবে তারা দেশের কাছে সম্মানিত হয়েই যাচ্ছে আর সেই সম্মানের ভালো ব্যক্তিত্বের ভিতর লুকিয়ে থাকে ভয়ানক এক ছদ্মবেশী মানব।
এত বড় বড়, দামী দামী গাড়ী গোরা দেখে মনে হয় সেই মানুষ গুলোর পা নেই। তারা যেন টাকার উপর দিয়ে হাটে আর তাদের পালংয়ের ঘুমনোর তোষকটাই যেন টাকার তৈরি ও বালিশটা হচ্ছে টাকা বানানোর চিন্তার ভাবনা একটি আরামদায়ক জায়গা আর কোল বালিশটাও আর বাকি কি! সেটাও যেন মনে হয় টাকাকে জড়িয়ে ঘুমানো।
সেই মানুষ গুলো যেন মাটির তৈরি নয়, তারাও ঐ বিলাস বহুল দামী দামী ইট, সিমেন্ট, রডের তৈরি বহু তলা ভবনের গড়া। তাদের কাছে পৃথিবীর বাতাস ভালো লাগে না, লাগে না সূর্যের সামান্য তাপ, সেইজন্য তারা ঘরের মাঝে এসি’র ঠাণ্ডা-গরম বাতাস খুব আরাম দায়ক ভাবে উপভোগ করে থাকে, সাথে আবার সুগন্ধি এয়ারফেসোনার।
কেউ কেউ রূপের বইরাগী, কেউ কেউ টাকার অহংকারী, আবার কেউ ক্ষমতা দেখানো। সবাই যেন টাকার আর ক্ষমতার পিছনে ছুটছেই তো ছুটছে। ব্যয়ের উপর ব্যয়, অপচয়ের উপর অপচয়। ব্যয় আর অপচয়ের কোন হিসেব নেই, না আছে কিছুর মানে ?
ধ্বংসের এই দুই দিনের রাজ্যে এরকমই হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার কাছে অস্বাভাবিক সেটাই আমি পারিনা আধুনিকতায় আর কাল্পনিকতায় নিজেকে তাল মিলিয়ে ঐসব রাজ্যের মানুষগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে।
আমার জীবনটাই একটা কঠিন বাস্তবতা যখন বাস্তবতা নিয়ে চিন্তা করি তখন আমার কাছে একদম ছোট ছোট জিনিস ধরা পরে, ছোট বলার কারণ হল অনেকের কাছ এটাই কোন ব্যাপার নাই তাই, আসলে সেটা আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার। যেমন- একদম ছোট ছোট বাচ্চারা মানুষের কাছে হাত পাতে কিছু খাবার বা সাহায্যের জন্য, কিন্তু আমরা সবাই মনে করি এইসব একটা ব্যবসা। সবাইতো আর একরকম হয় না, ভালো করে খুঁজ খবর নিয়ে দেখলে দেখা যাবে, কি পরিস্থিতিতেই না তারা সমাজের মাঝে বেঁচে আছে এসব দেখলে বা বুঝলে বুক ফেটে পানি ঝরবে। সেদিন দেখলাম হাটার সময় একটি ছোট মার্কেটের নিচে বসে আছে একটি মা, শীতের সময় একটি ফেরেশতা ফুট ফুটে কি সুন্দর একটা বাচ্চা নিয়ে বসে আছে, বাচ্চাটির শীতের তেমন কোন কাপড়ও ছিল না। মা’টি তখন বাচ্চাটিকে আদর স্নেহে জড়িয়ে আদর করছে। আমার কাছে এতোটাই খাপার লেগেছিল যে, তা প্রকাশ করার মত না। আমি কয়েক মিনিট এক পলকে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম শুধু, পাশে যাবার মত আমি সাহস পাইনি কারণ আমি যে তাকে গিয়ে কিছু সহযোগিতা করবো সে তৌফিক আল্লাহ আমাকে দেননি, আমার খুব রাগ হয়েছিল আল্লাহ’র উপর। কেনই আমাকে তাদেরকে কিছু করার মতো তৌফিক দিলেন না, আর কেনই বা তাদেরকে এই অবস্থায় রেখেছেন? । আবার দেখা যায় ক্ষমতাবান মানুষের ক্রাশে সর্বস্ত হারিয়ে রাস্তায়, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। আবার নিজের মা-বাবাকে অসুস্থতার কাছ থেকে অনেক মেয়েরা ও ছেলেরা নেমে আসে অন্ধকার রাস্তায়। কঠিন বাস্তবতায় পরিস্থিতি অনেক মানুষকে ভেঙ্গে চুরে ফেলেছে কেউ দেখার মতো নেই রম্য পৃথিবীতে, সবাই শুধু রাজত্বের রাজত্ব করার ধান্দায়।
এই বাস্তবতার জীবনে অনেক অনেক করুন অবস্থা পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত হচ্ছে যা আমাদের এই কাল্পনিক রাজ্যের মানুষের চোখে পরে না, তাদের কানে ঢুকে না। তাদের মনে এক চুল পরিমাণও এরকম বাস্তবতার জন্য নাড়া দেয় না। এই রাজ্যের লোক গুলোরা কি আসলেই মানুষ নাকি অন্য কিছু, এই প্রশ্ন যেন আমাকে প্রায় সময় তাড়া করে।