somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'সর্প কোমরের বাঁক' পাণ্ডুলিপি থেকে

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুপাচ ভগৎ

যে আজ এসেছিল তাঁর পায়ের নূপুর শুনেছিলাম কালকে, কাঠখোদায়ের মধ্যে বাহুর নগ্নতা বেয়ে আমি সিঁড়িঘর পর্যন্ত সঙ্গ দিয়েছিলাম।
দরোজা খুলে সে টিপ খুলতে খুলতে আয়নার ভেতর চলে গেলো।
ফিরে এসে দেখি আমার দেয়ালগুলা কাজল চাহনি। বিছানার উপর গতকালের চাঁদ। আলো ধুয়ে মুছে জানালা।

তাকে দৃষ্টিতে পালতুলে দেখি, আমার গভীর রাত ডুবে যাচ্ছে
চেয়ারের হাতলে, কফি মগে।
চেনা জগতে সুপাচ ভগৎ আমি, আমার ডমরুধ্বনি নগরের ইটের খোপে খোপে বৃষ্টি ফোটা, খুব শাদা। কালো চোখের প্রেতনিগুলি চুলখুলে দিয়ে আমাকে ঢেকে রাখে দিন রাত। আমি পাহাড়ের ঢালে ঢালে সবুজ বৃক্ষগুলোর ছালে চিন্তার বৈঠালগ্ন স্বপ্ন গেঁথে রাখি।

জনমানসের ভেতর পুকুরগুলো শুকিয়ে গেছে, নদীঘাটে এখন ব্রিজ। এই সময়ে লুট হয়ে যাওয়া সজীবতা ফ্লাটগুলির খুপরিতে খুপরিতে সোফাকাম বেড।

আমি বেডরুমের রাহুগ্রাস। পুজোর সন্ধ্যায় আমার হৃদপিন্ড মাটিতে পুঁতে রাখি। ওকে লুকিয়ে রাখি মাটির ঘ্রাণে। ও বুদ হয়ে গেলে আমি নিমগ্ন নীলের টেবিলে চোখদুটো খুলে জানানায় দাঁড়ায়, অনুভব করি না দেখা তাঁর পাঁজর ধ্বনিহীন জলের স্বভাব।

জলের ছলাৎ ছলাৎ শব্দের ভেতর কামিনী ফুলের গন্ধ হয়ে সে হাসে। তাকে আমি টের পাই নিস্তব্ধতায়, মন গভীর একলাতে তাঁর অবয়ব ফুটে ওঠে বাথরুমে, রান্নাঘরে, বইয়ের শেলফে তাঁর চুলের গন্ধ লেপটিয়ে থাকে।
সুপাচ ভগৎ অচেনা জগতে সাপ দেখে, চেনা জগতের স্বভাব বিবর্জিত তাঁর ফণা।

সে ফণার ভেতর ছোবলের শিল্পকলায় রঙ ঢেলে দেয়, কালো দেয়ালে শাদা পাখি আঁকে, ডানা আঁকে। সব শেষে মাটির হৃদপিন্ড ঢুকিয়ে দেয় পাখিতে। পাখি উড়ে যায় আকাশে।


শিহরিত তারকাটা

যেখানে নদীর ঘাট ধুয়ে গেছে, শেভ ক্রিম থেকে কোন গন্ধ
ওড়ে না ওখানে, বালিশ কুচকানো মুখের
দিকে তাকিয়ে রয় সকালের ধুয়া উঠা কফি মগ, গোসল খানা
দুপুর গড়িয়ে আলগা হয়ে যায় প্রিয় সন্ধ্যার গলি

নিরুপমা সেই ধুলোর শহরে কামাক্ষী পায়েলে দেখো নিঝুম আঁধার,
বধুবরণের চোখ থেকে ঝরছে মধুবাণ,
শিরার ভেতর দুলছে শালবন, শিহরিত তারকাটা

পাতার ফাঁকে মুখ সারি সারি সবুজ ঘাস ছুঁয়ে আছে আলতা
পা, সোনার বরণ দেহে মেঘ উরুবন
গা ছমছম নিস্তব্ধতা চুইয়ে পড়ছে পাখি শিকার, ধনুকের
নিখাদ চুম্বন থেকে দেয়াল
চিত্রে ঢুকে যাচ্ছে ঝুমঝুম বৃষ্টিপাত

আজ আমি ডুবন্ত ঘ্রাণের ভেতর ছড়িয়ে দেবো সুগন্ধ ফসলের মাঠ
লাঙলের ফলা থেকে উড়িয়ে দেবো বহুগামী ঠোটের আহার
প্রাণ সখার তিল সৌন্দর্য
যেখানে নৌকার মায়াবী গলুই ছুঁয়ে থাকে
সেখানে বাহুর সীমাহীন মগ্নতার পেরেক বিদ্ধ ঘাটে দেখবো

কলসের সুনির্মিত গলা, দেখবো না উড়ছে হেমন্ত
সুযোনীর কোমল ঢালে ফুটে উঠুক সুষমার রিক্ত সোহাগ,
আমি বেহালার তারে তারে

সুনীড় বাসনার কুয়াশা মন্থন রাত্রির অর্ন্তবাসে ঝুলে রবো
মৃদু হাওয়ায়, কুমারী পাতার সবুজ ঠোট থেকে -
খুলে দেবো ডানা
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ২:০৭
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এই ৩০ জন ব্লগারের ভাবনার জগত ও লেখা নিয়ে মোটামুটি ধারণা হয়ে গেছে?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৬ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৯



গড়ে ৩০ জনের মতো ব্লগার এখন ব্লগে আসেন, এঁদের মাঝে কার পোষ্ট নিয়ে আপনার ধারণা নেই, কার কমেন্টের সুর, নম্রতা, রুক্ষতা, ভাবনা, গঠন ও আকার ইত্যাদি আপনার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আর্তনাদ

লিখেছেন বিষাদ সময়, ১৬ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২১

গতকাল রাত থেকে চোখে ঘুম নাই। মাথার ব্যাথায় মনে হচ্ছে মাথার রগগুলো ছিঁড়ে যাবে। এমনিতেই ভাল ঘুম হয়না। তার উপর গতকাল রাত থেকে শুরু হয়েছে উচ্চস্বরে এক ছাগলের আর্তনাদ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন তার আকাশের বলাকা || নিজের গলায় পুরোনো গান || সেই সাথে শায়মা আপুর আবদারে এ-আই আপুর কণ্ঠেও গানটি শুনতে পাবেন :)

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৬ ই জুন, ২০২৪ রাত ১০:০০

ব্লগার নিবর্হণ নির্ঘোষ একটা অসাধারণ গল্প লিখেছিলেন - সোনাবীজের গান এবং একটি অকেজো ম্যান্ডোলিন - এই শিরোনামে। গল্পে তিনি আমার 'মন তার আকাশের বলাকা' গানটির কথা উল্লেখ করেছেন। এবং এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল্যাইকা লেন্সে ওঠানো ক’টি ছবি

লিখেছেন অর্ক, ১৭ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৩০




ঢাকার বিমানবন্দর রেল স্টেশনে ট্রেন ঢোকার সময়, ক্রসিংয়ে তোলা। ফ্ল্যাস ছাড়া তোলায় ছবিটি ঠিক স্থির আসেনি। ব্লার আছে। অবশ্য এরও একটা আবেদন আছে।




এটাও রেল ক্রসিংয়ে তোলা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×