somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুক্তমনা ব্লগার
কেহ বিশ্বাস করে, কেহ করে না। যে বিশ্বাস করে সেও সত্য-মিথ্যা যাচাই করে না, যে অবিশ্বাস করে সেও না। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্নটা নির্ভর করে মানুষের খুশির উপর। ধর্মান্ধতা নিপাত যাক, মুক্তচিন্তা মুক্তি পাক।

এক গৎ বাঁধা আইনের মারপ্যাঁচে বন্দী সব কিছু

০৯ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোটি কোটি মানুষ দেখল একটি অসহায় ছেলেকে একদল উন্মত্ত যুবক কিরিচ দিয়ে কুপাচ্ছে। অবশ্য সেই দেখাটা ক্যামেরার চোখ দিয়ে । কিন্তু ক্যামেরায় ধারণকৃত এই ভিডিও চিত্রের অথেনটিকতা নিয়ে আজ পর্যন্ত কেউ প্রশ্ন তুলেনি। কেউ বলেনি এগুলো ফটোশপের কারসাজি। তার মানে এই নৃশংস ঘটনাটি বাস্তবেই ঘটেছিল। আমরা যারা নিজেকে মানুষ বলে বিশ্বাস করি সেদিন এই ভিডিওটি প্রথমবারের মতো দেখার পর নিজেকে মানুষ ভাবতে লজ্জা হচ্ছিল। কারণ শত শত মানুষের সামনে একদল মানুষ এই ঘটনাটি ঘটিয়েছিল একজন মানুষও সেই মানব আজরাঈলের থাবা থেকে অসহায় ছেলেটিকে বাঁচাতে এগিয়ে যায়নি। একজন অবশ্য গিয়েছিলেন তিনি মানুষ নন মহামানব। তিনি একজন রিক্সাওয়ালা। সেই ছেলেটিকে কোলে তুলে নিয়ে তিনি হাসপাতাল পর্যন্ত গিয়েছিলেন কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। সেই রিক্সাওয়ালা ভাইটিকেই মনে হয় সংবেদনশীল মানুষের শেষ প্রতিনিধি।

বিশ্বজিতের হত্যাকারীদের যথাযত শাস্তি প্রদান করে আমাদের লজ্জা ঘুচাবার একটি শেষ সুযোগ ছিল কিন্তু মাননীয় আদালত সেই সুযোগটিকেও নস্যাত করে দিলেন। যে ভিডিওটি অথেনটিক যে ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কারা কীভাবে বিশ্বজিৎকে হত্যা করছে কীভাবে মৃত্যুর সঙ্কীর্ণ জানালা দিয়ে সেই হতভাগা জীবনের দিকে পালাবার প্রানান্ত চেষ্টা করছে। এতসব চাক্ষুষ দেখার পরেও কেন আমাদের আদালত দূর্নীতির প্রজনন কেন্দ্র থেকে উঠে আসা পুলিশের রিপোর্টকেই প্রাধান্য দেবেন কেন দলবাজ ডাক্তারের পোষ্টমর্টেম রিপোর্ট দেখেই আদালতকে বিশ্বাস করতে হবে ‘মানুষটি সত্যি মৃত্যুবরণ করিয়াছিল’ ? কোটি কোটি চোখের এমনকি মাননীয় আদালতেরও নিজ চোখে দেখার চেয়েও কি পুলিশ আর ডাক্তারের রিপোর্ট বেশী গ্রহণযোগ্য ? এখানে বিচারকের বিবেক বুদ্ধি বিবেচনার কোনো স্থান নেই ? এক গৎ বাঁধা আইনের মারপ্যাঁচে বন্দী সব কিছু ?

আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন বাস্তব ঘটনার সাথে পুলিশের সুরতহাল রিপোর্ট বা ডাক্তারের ময়না তদন্তের রিপোর্ট অসামঞ্জস্যপূর্ণ। যদি তাই হয়ে থাকে তবে এক বা একাধিক অসামঞ্জস্যপূর্ণ রিপোর্টকে আমলে নিয়ে আসামীদের শাস্তি লাঘব করা বা বেকসুর খালাস দেয়া কি স্ববিরুধী হয়ে গেলনা ? আদালত কি রায় স্থগিত করে পূণঃ তদন্তের আদেশ দিতে পারতেননা ? বিশেষ করে আদালত নিজেই যেখানে রিপোর্টগুলো নিয়ে সন্দীহান ? এগুলো হয়তো আইনের চোখে সঠিক কিন্তু আমরা যারা আম জনতা আইনের মারপ্যাঁচ বুঝিনা তাদের কাছে দুর্ভেদ্য ধাঁধাঁ বলেই মনে হয়।

আইন যদি নাগরিকের সুরক্ষা বিধানের সার্থেই হয়ে থাকে তবে আমাদের সনাতন ধারার আইনকে যুগোপযোগি করা ছাড়া বিকল্প নেই। কয়েকশত বছরের পুরনো আইন বর্তমানে অনেক দিক দিয়েই অচল পয়সা। কারণ দুইশ বছর আগের পৃথিবী আর বর্তমান পৃথিবী এক জায়গাতে নেই। সমাজ ব্যবস্থায় এসেছে যুগান্তকারী সব পরিবর্তন। জ্ঞান বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে মানব সভ্যতা পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম কুয়াটি ছেড়ে অসীমের সন্ধানে ধাবমান। যে প্রযুক্তি আমাদেরকে সভ্যতার এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে তাকেই আগে আমলে নিতে হবে তাকে বিশ্বাস করতে হবে। যে প্রযুক্তি একটি চলমান ঘটনাকে জীবন্ত রেকর্ড হিসেবে আমাদের চোখের সামনে তুলে ধরে তার সমান্তরালে কীসের পুলিশী রিপোর্ট ? কেন তাকেই আবার দূর্নীতিবাজ পুলিশের চোখ দিয়েই দেখতে হবে? এসব সনাতন ধারা উপধারাকে এখনই শিকেয় তুলে রাখা উচিৎ। গ্রাম বাংলায় প্রবাদ আছে শিং খাইনা শিং এর ঝোল খাই। বিশ্বজিতের বিচারের রায়ে যেন সেই প্রবাদেরই প্রতিধ্বণি শুনা গেল। চোখে আমরা দেখছি ঠিক ঘটনাও ঠিক কিন্তু পুলিশের রিপোর্ট বলছে তা অঠিক অতএব ঘটনাটি অঠিক। কী বিচিত্র আইনের জগত।

বিচারে যদি বিচারকের নিজস্ব বিবেক বিবেচনা প্রয়োগের কোনো সুযোগই না থাকে সবকিছু এক গৎবাঁধা আইনের ছকেই আবর্তিত হতে হয় তবে আদালতে বিবেক বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে কেন বিচারকের আসনে বসিয়ে হুদা হুদা পাবলিকের টাকার শ্রাদ্ধ করতে হবে ? বিচারকের স্থলে একটি কম্পিউটার বসিয়ে রাখলেইতো ল্যাটা চুকে যায়। আইনের সকল ধারা উপধারাকে ডেটা আকারে কম্পিউটারে টেসে ঢুকিয়ে দিলেই পুলিশের সুরতহাল রিপোর্ট আর ডাক্তারের ময়না তদন্ত রিপোর্টকে বিশ্লেষণ করে মিনিটেই একটি নির্ভুল রায় বের করে দেবে। কম্পিউটারের বড় সুবিধা একে মাসে মাসে মোটা অংকের বেতন দিতে হবেনা, নিয়োগ বদলীর ঝামেলামুক্ত আর তার রায় হবে শতভাগ স্বচ্ছ এবং আইনসিদ্ধ কারন কম্পিউটারে মানবিক রাগ অনুরাগের ব্যাপার নেই, আনুগত্যের বা উৎকোচের আশংকামুক্ত আর সবচেয়ে বড় উপকার হবে গোটা কয়েক কম্পিউটার দিন কয়েকের মাঝেই লক্ষ লক্ষ মামলার জট শূন্যতে নামিয়ে আনবে।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×