somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুক্তমনা ব্লগার
কেহ বিশ্বাস করে, কেহ করে না। যে বিশ্বাস করে সেও সত্য-মিথ্যা যাচাই করে না, যে অবিশ্বাস করে সেও না। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্নটা নির্ভর করে মানুষের খুশির উপর। ধর্মান্ধতা নিপাত যাক, মুক্তচিন্তা মুক্তি পাক।

দায়িত্ব কে নিবে?কেন নিবে অথবা নিবে না?

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রোহিঙ্গা শুনলেই আমরা দুইভাগে ভাগ হয়ে যাই। একপক্ষের মতে ‘৭১ এ ভারত যেমন বাংলাদেশী আশ্রয় দিয়েছিল ঠিক তেমন করেই আশ্রয় দেওয়া উচিত মানবিক কারণে আর অন্যপক্ষের মতে নিজের দেশের মানুষেরই ভাত-কাপড় জোটে না, অযথাই আবার ঝামেলা বাড়ানো। এমনকি তাদের মাদক সংশ্লিষ্ট কাজের দিকেও আঙ্গুল তোলেন অনেকেই। কোন যুক্তি তর্কে যাওয়ার আগে একটু ইতিহাস পড়ে নেওয়া ভালো। ​

কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাল ও ঘটনাঃ

১৭৮৪: বার্মা রাজা বোদাপায়া আরাকান নামক স্বতন্ত্র রাজ্য দখল করেন এবং অনেকে জীবনের ভয়ে বাংলায় পালিয়ে আসে। ​
১৭৯০: ব্রিটিশদের কূটনৈতিক হস্তক্ষেপে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোহিঙ্গা কে কক্সবাজারে রিফুজি হিসেবে থাকতে দেওয়া হয়। ​
১৮২৪-১৯৪২: ব্রিটেন এর দখলে বার্মা এবং রোহিঙ্গারা ভারত বর্ষের অনেক জায়গাতেই কাজের জন্য যেতে থাকে। ​
১৯৪২: জাপান বার্মা দখল করে। তখন স্থানীয় অন্য ধর্মাবলম্বীরা মুসলিমদের উপর চড়াও হয় কারণ তাদের মনে এই ধারণা ছিল যে ব্রিটিশ শাসনে মুসলিমদের অনেক উপকার হয়েছিলো। ​
১৯৪৫: বার্মা জাতীয়তাবাদী নেতা অং সান (অং সান সুকির পিতা) ও ব্রিটিশ বাহিনী মিলে আবার বার্মা দখল করে। ​
১৯৪৮: সরকার এবং আরাকান’দের মধ্যে রেষারেষি বাড়তে থাকে, অনেকে মুসলিম প্রধান পাকিস্তানের সাথে যোগ দিতে চায় অঙ্গরাজ্য হিসেবে। বার্মা সরকার তখন বিষয়টা খুব কঠোর হাতে দমন করে এবং সরকারি চাকরি থেকে সব রোহিঙ্গা কে
সরিয়ে দেওয়া হয়। ​
১৯৭৭: ৬০’এর দশকে কিছু রোহিঙ্গা সরকারের বিরুদ্ধে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে সামরিক জান্তা ক্ষমতায় আসার পর সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে প্রায় ২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। ​
১৯৭৮: বাংলাদেশের সাথে বার্মার চুক্তি হয় এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোহিঙ্গা ফেরত যায়। ​
১৯৮২: রোহিঙ্গা দের কে বার্মা সরকার অবৈধ অভিবাসী ঘোষণা করে।
১৯৯১: আবার ২.৫ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে আসে ‘৭৭ এর মত একই কারণে। ​
১৯৯২- ১৯৯৭: লাখ দুয়েক এর মত ফেরত নেয় মায়ানমার সরকার।
২০১৬: রোহিঙ্গা দের বিদ্রোহী গ্রুপ হারাকাহ- আল- ইয়াকিন কয়েকজন বর্ডার গার্ড কে হত্যা করে এরপর সেনাবাহিনীর নির্যাতনে আবার ২৫০০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসে।
২০১৭ এর ঘটনা তো সবারই জানা। ​

গোটা পৃথিবী চায় যে বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিক, সব মিডিয়া এ ব্যাপারে সরব এবং বাংলাদেশেরও অনেক মানুষ চায় এটা হোক। এবং অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ঘটনাকে উদাহারন হিসেবে বলেন। রোহিঙ্গা দের উপর যা হচ্ছে সেটা অমানবিক এবং হৃদয় বিদারক। এবং তাদের বিভিন্ন খারাপ কাজের যে খবর আসে মিডিয়া তে সেগুলোর বেশির ভাগই পেটের দায়ে অথবা কোন উপায় না থেকে। ​

Ethnic Cleansing – এর নাম শুনেছেন আপনারা? মায়ানমারে কি কোন যুদ্ধ লেগেছে? যুদ্ধে শরণার্থী হয়, রিফুজি হয় কিন্তু একটা দেশ ইচ্ছাকৃত ভাবে একটা প্রদেশের মানুষকে মেরে তাড়িয়ে দিচ্ছে দখল করার পাঁয়তারায় সেখানে শরণার্থী শব্দটা কি আসে? চাপ আসার কথা মায়ানমারের উপর আসছে বাংলাদেশের উপর! উল্টো দেশের মানুষ সায় দিচ্ছে। কোন নোবেল বিজয়ীর দিকে তাকিয়ে আছেন আপনারা যার বাপ নিজেই নির্যাতক ছিল? কোন মুসলিম দেশের গুণগান গাইছেন যারা মুখের বুলি ছুড়েই খালাস। প্লেন পাঠায়ে নিয়ে যায়না কেন? সিরিয়ায় মানুষ মরে যুদ্ধে সেখানে জার্মানি এগিয়ে আসে মুসলিম দেশ আসে না তারা আবার গান গায়। সবচেয়ে বড় কথা ভাই যুদ্ধ তো হচ্ছে না, আশ্রয় কেন? নির্বিচারে মানুষ মারার প্রতিবাদ না করে বর্ডার খুলে দিচ্ছি না কেন এটা নিয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে! ৫ লাখ রোহিঙ্গা তো পালছি অনেক দিন। মুসলিম দেশ গুলোকে বলেন যে আগে ৫ লাখ করে নিক তারপর কথা বলুক।বাংলাদেশে একটা কাশ্মীর বানানোর খুব ইচ্ছা? ​

আমাদের দেশেও Ethnic Cleansing হয় কিন্তু সব সংখালঘু একজায়গায় থাকে না জন্য হাজার হাজার সংখ্যা’টা একবারে চোখে পড়ে না। ভারতে কত বাংলাদেশি পালিয়েছে স্বাধীনতার পর থেকে হিসাব জানেন? আর ‘৭১ এ ভারত কেন করেছিল সেটা বুঝতে গেলে ইতিহাসের সহজ হিসাবের সাথে রাজনীতিও বুঝতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা অন্যের অপরাধের দায়িত্ব যদি আমি নেই তাহলে কি উল্টো আমি ঐ অপরাধটাকে সাপোর্ট করছিনা?
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৩
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×