পুরনো দিনের বাংলা ছবিতে যেসব দৃশ্য হরহামেশাই দেখতাম এবং যেসব দৃশ্য ও ডায়লগ আজো কিছু মুভিতে দেখা যায় সেগুলোর যে কয়টি মনে আসছে তা আজকে শেয়ার করলাম।
**শুরুতেই যদি দেখেন নায়ক একজন কিন্তু নায়িকা দুজন তাহলে শিওর থাকেন ছবির মাঝামাঝি না হলেও শেষের দিকে নায়িকা একজন নায়কের জন্য কিংবা নায়কের প্রাণ বাচাতে মারা যাবেই যাবে।আর মরতে মরতে নায়িকা বলবে,এ জীবনে তোমাকে পেলাম না!পরের জন্মে যেন তোমাকেই পাই।
**ছবিতে নায়কের বাবা কিংবা মা অথবা উভয়কেই গুন্ডারা খুন করলে নায়ক বড় হয়ে তার প্রতিশোধ নিবে।
**ছবিতে যদি আনোয়ার হোসেন নায়ক বা নায়িকার বাবার চরিত্রে অভিনয় করেন তাহলে ছবির কোনো এক সময়ে তার হার্ট এটাক হবে।যেমন, রাবেয়া!! আআআআআআ!!!!!
**যদি নায়কের বাবা সৎ পুলিশ অফিসার হোন তাহলে গুন্ডারা তাকে এবং অনেক সময় তার স্ত্রীকেও খুন করে নায়ককে এতিম করবে।
**ছবিতে নায়ক কিংবা নায়িকাকে প্রথমবার দেখানোর সময় প্রথমে তার পিছন দিক,তারপর সামনের দিক,তারপর জুতা-মুজা,পেন্ট এবং চুল দেখানোর পর তাদের মায়াবী চেহারা দেখানো হবে।
**নায়ক রুবেলের ছবি হলে ,রুবেল মারামারির আগে যখন তার জ্যাকেট খুলবে সেই দৃশ্য তিনবার দেখানো হবে।সেই সাথে প্রত্যেকবার স্পেশাল সাউন্ড (খুউউউউ..খুউউউউ..খুউউউউ) :p
**বেশীরভাগ সময় নায়ক নায়িকাকে দেখলেই কল্পনায় গানের দৃশ্যে চলে যাবে।সেখানে গান হবে,ফান হবে..... ।
**ছবির শুরুতে পারিবারিক কোনো গান হবে যেমন,
বাবা-মায়ের বাগিচার ফুল
এ সংসারে খেলারি পুতুল।
তারপর নায়কের মা কিংবা বাবা সৃতি হারিয়ে ফেলবে।
ছবির মাঝের অংশে বা শেষের দিকে এসে নায়ক মনের দুঃখে এই গান গাইতে থাকবে আর ঠিক তখনই তার বাবা-মা দূর থেকে গান শুনে সৃতি ফিরে পাবে ।
**সাপের ছবি থাকলে সেই ছবিতে অনজু নায়িকা থাকবে আর তার বাবা থাকবেন বাইদ্যা সর্দার।এবং অনেক সময় ড্যানি সিডাক থাকবে কালনাগ কিংবা বিষনাগ ।এই ছবির নায়ক আবার থাকবেন ইলিয়াস কান্চন এবং উনি থাকবেন রাজপুত্র ।
**ছবিতে মিশা সওদাগর ভিলেন হলে তার নায়িকা হিসেবে নাসরিনকে দেয়া হয়ে থাকে Most of The time ।
সেই সাথে মিশার ঐতিহাসিক হাসিতো থাকবেই।(হে..হে..হে..)
**ছবিতে মিশা কিংবা ডিপজল ভিলেন থাকলে নায়কের বোন,প্রেমিকার উপর অত্যাচার চালাবে এই দুই ভিলেন।কিছু কিছু সময় মিজু আহমেদ ও জাম্বু চাচা এই মহান কাজ করেন ।
**ছবিতে নায়িকা হিসেবে মুনমুন কিংবা মুটকি ময়ূরী থাকলে বুঝে নিতে হবে এই ছবি আর সামাজিকের মধ্যে নাই ।একইভাবে ডিপজল ও মিশা এবং আলেকজান্ডার ও মেহেদী থাকলেও ছবি অসামাজিক হিসেবে খ্যাতি পাবে।
**ছবিতে আদালতের দৃশ্য থাকলে আদালতের জজ থাকতে পারেন দুইজন কমন মেন।একজন বয়স্ক যার মাথার চুল সাদা আর আরেকজন বয়স্ক যার মাথায় চুল নাই।এই টাকলু আংকেল আবারো কিছু দৃশ্যে ডাক্তার এবং পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন ।
**ছবিতে মারামারির দৃশ্য আসলে নায়ক একা একশ গুন্ডাকে পিটাবে।নায়কের শরীরের একটুও ডেমেজ হবে না ।
**ছবিতে আহমেদ শরীফ কিংবা রাজীব বড়লোক থাকলে উনারা খান কিংবা চৌধুরী সাহেব থাকেন।
**অনেক ছবিতে মান্না থাকলে অনেক সময় সে মাতাল হবে পারিবারিক দুঃখে।
**ছবির শেষের দিকে নায়ক এবং ভিলেনদের মধ্যে মারামারি হবে।মারামারির সময় সাধারন একটি পিস্তল থেকে এত গুলি করা যাবে যা Ak-47 থেকেও করা যাবেনা।এবং মজার ব্যাপার হচ্ছে ভিলেনের পিস্তলের গুলি এবং নায়কের পিস্তলের গুলি একই সময়ে শেষ হবে ।তারপর হাত দিয়ে মারামারি হবে।
**মারামারি কাটাকাটি সব হবে কিন্তু পুলিশ আসবেনা।যখন ভিলেন খুন হয়ে যাবে কিংবা নায়ক ভিলেনকে খুন করতে যাবে ঠিক তখনই পুলিশ আসবে।পুলিশ আসার পর সেই কমন কমন এবং কমন ডায়লগ “হ্যান্ডস আপ! আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না!” :
**ছবিতে দিলদার থাকলে ছবির শেষদৃশ্য দিলদারের বাণীর মাধ্যমে শেষ করা হবে ।।
এটা কোনো কপি-পেস্ট পোস্ট নয়।সমস্ত লেখাটাই আমি লিখেছি।জানিনা কেমন লেগেছে আপনাদের তবে আশা করছি ভালোই।সবার জন্য ভালোলাগা রইল।__
মুমিন আহমেদ