somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

€€€$৳₹$ বৃত্তে বন্ধী মধ্যবিত্ত $₹৳$€€€

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আল্লাহ তাওয়ালা মানুষকে সৃষ্টির সেরাজীব হিসেবে সৃষ্টি করে নারী পুরুষে বিভক্ত করলেও কোন বৈষম্যমূলক শ্রেণীবিভাগ করেন নি। কিন্তু মানুষ সবচেয়ে মেধাবী প্রাণী হয়ে সৃজনশীলতার চর্চা না করে মানবিকতা বিসর্জন দিয়ে নিজেদের মধ্যে নানা শ্রেণীবিভাগ করে গড়ে তুলেছে বৈষম্যমূলক সমাজব্যবস্থা। সাদা-কালো, ধনী-গরীব,ইতর-ভদ্র, উচু-নিচু, ছুত-অচ্ছুত ইত্যাদি ভাগে বিভক্ত করে নিজেদের মেধা বিভক্ত করে নিজেদের পায়ে নিজরা কুড়াল মেরে গড়ে তুলেছে দ্বিধাবিভক্ত মনুষ্যত্ব হীন প্রাণী যাদের আচার আচরণ অনেক সময় পশুকে হার মানায়। তাইতো মানুষকে আচরণের দিক দিয়ে বিভক্ত করলে গরু, ছাগল,গাধা, কুকুর,বিড়াল, শকুন,হায়না,শিয়াল, বানর, বাঘ, সিংহ ইত্যাদি পশুর সাথে তুলনা করা হয়। তাইতো উত্তেজনা, রাগ বা প্রশংসায় মানুষকে ঐ সমস্ত পশুর নামে ডাকতে কেউ লজ্জিত হয় না।
আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে মানব সমাজ আজ নিম্ন শ্রেণী/নিম্নবিত্ত/গরীব, মধ্যবিত্ত ও উচ্চ বিত্ত/ধনী শ্রেণী এই তিন ভাগে বিভক্ত। শ্রেণীবিভাগের দিক দিয়ে যেমন মধ্যে আছে মধ্যবিত্ত তেমনি সমাজ ব্যবস্থার যাতকলে (বৃত্তাকার দুটি ভারী চাকতি) মধ্যে পিষ্ট মধ্যবিত্ত। এ যেন সার্থক নাম করন। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর আবার তিনটা ভাগ আছে নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত। সাধারণত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও চাকুরীজীবিরা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। আবহমান কালধরে যুগের বিবর্তনের ভিতরেও এদের কোন পরিবর্তন নাই এরা নিয়মের বেড়াজালে এমন ভাবে বাধা যেন বৃত্তের মধ্যে বন্ধী। বৃত্তের সীমারেখার বাইরে বা নিজেদের গন্ডি পেরিয়ে কোথাও যেতে পারবে না এ যেন অলিখিত নিয়ম। এদের আয় একটা নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে উঠানামা করে যে সীমা কখনও অতিক্রম করতে পারে না। সমাজ কাঠামো শক্ত হতে ধরে রাখে মধ্যবিত্ত, সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষা করে মধ্যবিত্ত, সামাজিক রীতিনীতি মেনে চলে মধ্যবিত্ত, সরকারের ট্যাক্স সময়মতো সম্পূর্ণ রূপে পরিশোধ করে মধ্যবিত্ত কিন্তু প্রাপ্তির বেলা মধ্যবিত্ত শুন্য। প্রাকৃতিক দূর্যোগে ত্রাণ পায় নিম্নবিত্ত আর মধ্যবিত্ত আল্লাহর অশেষ কৃপায় বেঁচে থাকেন, সরকারের রাস্তায় নিম্নবিত্ত টংঘর তুলে আশ্রয় নেয় আর ধনীরা গাড়ি চালায়। মধ্যবিত্তের প্রাপ্তি এখানেও নেই বললেই চলে। উচ্চবিত্ত ট্যাক্স ফাঁকি দিলেও সরকারী সুযোগসুবিধা পুরোপুরি ভোগ করে। আর্থিক টানাটানি থাকলে কাউকে বলতে না পারা শ্রেণী হচ্ছে মধ্যবিত্ত। ছেলে মেয়েদের সুশিক্ষিত করাসহ পরিবারের সকলের প্রতি দায়িত্বশীল করতে গিয়ে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ে মধ্যবিত্ত পরিবারের কর্তা। নিম্নবিত্তের মতো বস্তিতে থাকতে পারবে না মধ্যবিত্ত কিন্তু আবাসিক ব্যয়সহ সমাজের সাথে তালমেলাতে আরও কত শত অর্থ দন্ড দিতে হয় তার কোন ইয়েত্তা নেই।
সামাজিক রীতিনীতির ক্ষেত্রে নিম্নশ্রেণী বা উচ্চশ্রেণী নিয়মকানুন না মানলে ক্ষতি নাই কিন্তু মধ্যবিত্তদের সবকিছুই মেনে চলতে হবে। একজন রিক্সা চালক বা দিনমজুর দুই তিনটি বিয়ে করলে সমস্যা নাই, উচ্চবিত্ত রক্ষিতা রাখুক, দুই তিনটা বিয়ে করুক সমস্যা নাই। শুধু মধ্যবিত্তদের কারও পান থেকে চুন খসলেই তঘলকী কান্ড ঘটে যাবে।
ধরুন কয়েকবছর আগে একজন প্রথম শ্রেণীর একজন সরকারি কর্মকর্তার মূলবেতন ছিল ১১০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া বাবদ পেত ৬৬০০ টাকা। একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা যাকে উচ্চ মধ্যবিত্ত বলা যেতে পারে যিনি তথাকথিত সমাজ ব্যবস্থার সাথে তালমেলাতে গিয়ে বস্তিতে থাকতে পারবে না আবার ৬৬০০ টাকায় ঢাকার শহরের কোথায় বাড়ি ভাড়া পাবে তাই নিয়ে গবেষণা করতে হয়। বেতনের বাকি ১১০০০ টাকা + মেডিকেল ভাতা ১০০০ টাকা দিয়ে সংসার খরচ মিটিয়ে সামাজিকভাবে বেঁচে থাকা কতটা মানবেতর বা চ্যালেঞ্জিং তা বোঝার জন্য গবেষণা করতে হয় না। তারপরও মাথা সমুন্নত রেখে সমাজকাঠামো কিভাবে ধরে রেখেছেন মধ্যবিত্তরা তা আল্লাহ্ মালুম।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে মধ্যবিত্ত আর টিকে থাকতে পারবে কি সেটাই এখন প্রশ্ন। সমাজের নিয়মকানুন মানতে গিয়ে So Called Society এর সাথে তাল মিলাতে গিয়ে কখন যে মধ্যবিত্ত শ্রেণী তাদের স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলেছে বা যে শক্তি দিয়ে সমাজটাকে আগলে রেখেছে তা হারিয়ে ঋণের জালে বা ক্রেডিট কার্ডের ফাঁদে বা সমাজ/পরিবারের প্রতি অতিরিক্ত দায়িত্বপালন করতে গিয়ে নিজেই নীরবে শেষ হয়ে গেছে বা যাচ্ছে।
এই সমস্যা থেকে উত্তোরণের একটাই উপায় নিজেকে সৃষ্টিকর্তার নিকট আত্মসমর্পণ করা এবং সত্য কে গ্রহণ করা। আমি যা তাই প্রকাশ করা। সমাজের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে নিজেকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে প্রকাশ না করে সত্য প্রকাশ এবং নিজের অবস্থান অনুযায়ী নতুন সমাজ গড়ে তোলা। আমারা যদি নিম্নবিত্ত,মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের পাশাপাশি নিজেদের প্রকৃত অবস্থা অনুযায়ী আদর্শ শ্রেণী(নতুন সমাজ/আদর্শ সমাজ) গঠন করা হয় তবে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না এটা নিশ্চিত। AM
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:২৩
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×