

রাহুল আনন্দ বাংলাদেশের নাম করা একজন সংগীতশিল্পী। তিনি "জলের গানের" প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। যারা দেশের ব্যান্ড মিউজিক শুনতে পছন্দ করেন তাঁরা হয়তো জানেন জলের গানগুলো কী দারুণ! এবং রাধুল আনন্দের ভোকালে কী অদ্ভুত জাদু আছে।
সময়টা ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩:
রাহুল আনন্দের বাড়িতে আসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে সাদরে বাংলাদেশের আতিতিয়তায় গ্রহণ করেন রাহুল। রাহুলের বাসায় প্রায় ১ ঘণ্টা ৪০ মিন সময় অবস্থান করেন ফ্রান্সের প্রসিডেন্ট। এসময়ে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে প্রথমে ফকির লালন সাঁইয়ের ‘আর কি বসবো এমন সাধুর সাধবাজারে/না জানি কোন সময় কোন দশা ঘটে আমারে’ গেয়ে শোনান রাহুল। রাহুল বলেন, "আপনার এই আগমন আমাদের দেশের জন্য, আমার পরিবার ও বন্ধুদের জন্য বিরাট আনন্দের।"
রাহুল যে একতারটি বাজিয়ে গান পরিবেশন করেছিলেন সেটি উপহারদেন ফ্রান্স এর প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ কে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টও রাহুলকে একটি কলম উপহার দেন। রাহুল প্রতিশ্রুতি দেন, কলমটি দিয়ে তিনি নতুন গান লিখবেন। তখন বেশ খুশি হয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আপনার গানের জন্য আমি অপেক্ষা করবো।’
তারপর এলো ৫ অগস্ট ২০২৪।
বাংলাদেশের মানুষের জন্য শির চির উন্নত রাখার দিন। বাঁধভাঙা উল্লাসের দিন। ইতিহাসের সব থেকে নিষ্ঠুর স্বৈরাচার পতনের দিন। বাংলাদেশের মানুষের ২য় স্বাধীনতার দিন।
কিন্তু বহু পরাজিত হায়নার এই বিজয় আনন্দ একদমই পছন্দ হচ্ছিল না! ওরা সহ্যই করতে পারছিল না দেশের ছাত্র-জনতার এই বাঁধভাঙা উল্লাস। এই বিজয়কে কলঙ্কিত করার জন্য ওরা বেছে নেয় সেই ঘির্ণিত-নিন্দিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের অস্ত্রকে! দেশের বেশিরভাগ মানুষ যখন বিজয় উল্লাসেমত্ত, তখনই এরা দেশের সাইবার স্পেসএ মাস প্যানিক, রিউমারস স্প্রেড করা শুরু করে। এবং সুযোগ বুঝে কিছু সংখ্যলঘু নাগরিকের বাসায় এবং মন্দিরে আক্রমণ করে, ভাংচুর করে। এই ঘটনা প্রবাহের ভেতর সব থেকে আলোচিত ঘটনাটি হলো রাহুল আনন্দের বাসায় হামলা। তাঁর বাসায় আক্রমণ করে ভাঙচুর করা হয়। তাঁকে এক কাপড়ে বের করে দেয়া হয় বাসা থেকে।
বিজয়উল্লাস শেষ পর্যায়ে বিভিন্ন স্থান থেকে হামলা ভাঙচুর এর খবর আসতে থাকলে মানুষ স্তম্ভিত হয়ে পড়ে! আমরা বিজয় উল্লাস করছি, তাহলে হামলা করল কারা? সেই গণহত্যাকারী হায়নার পাল নয়তো?
বাংলাদেশ আওয়ামলীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনটির পলিটিকাল স্ট্রাটেজি একটু এনালাইসিস করলেই এদের ডার্টি পলিটিক্স গেম প্লে বের হয়ে আসে। বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা গণ বিপ্লবের কাছে পরাজয় বরণ করে এরা এদের নেত্রী খুনি সাইকোপাথ হাসিনার মতো উম্মদ হয়ে ওঠে। এখানে বিশেষ করে উল্লেখ যোগ্য খুনি হাসিনার ছেলে গর্ধভ জয় এর ভারতীয় টিভিতে ইন্টারভিউতে বলা; বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন হচ্ছে! এর ঠিক পরই রাহুল আনন্দের মতো দেশ বরেণ্য সংগীত শিল্পীর বাসায় হামলা করে হায়না পাল। হামলা করার কারণ একদম সিম্পল। রাহুল আনন্দের আন্তর্জাতিক পরিচিতি ছিল। দুই বাংলার মানুষ তাঁকে চিনত। তাছাড়া সম্প্রতি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট তাঁর বাসায় এসেছিলেন। এ সময়ে তাঁর সাথে ছিলেন খুনি হাসিনার পররাষ্ট্র মন্ত্রী চোর-বদমাইশ হাসান মাহমুদ। ওরা রাহুলের বাসা কোথায় কিভাবে যেতে হবে সবই জানত। এবং সেভাবেই হাই কম্যান্ড থেকে নির্দেশনা পেয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কাছে কখনোই শিল্পী গোষ্ঠী বা সংখ্যা লঘু একচুয়ালি মাইনে রাখে না। হায়নাগুলো এই মানুষগুলোকে সব সময়ই তাদের পলিটিকাল ডার্টি গেম প্লে তে পণ বা ট্রাম কার্ড হিসাবে ইউজ করেছে। রাহুল আনন্দের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। ওরা জানত, ওদের এই স্বরচিত সংখ্যালঘু আক্রমণ নাটক খুব একটা কাজে দিবে না। কারণ এর বেশির ভাগই ছিল ফেক নিউস। যেমন; মাশরাফি এর বাড়িকে লিটন দাসের বাড়ি বলে চালিয়ে দেয়া। একটি রেস্টুরেন্ট পড়ানোকে মন্দির পড়ানো বলে চালিয়ে দেয়া। দুই বছর আগের রবীন্দ্রনাথের একটি মূর্তি স্থানান্তরের ভিডিওকে হিন্দু কবি রং লাগানো! আরও অসংখ্য গুজব আর নাটক!
ডাইনি হাসিনার ছেলে জয়ের কয়েকটি ভিডিও বার্তা দেয়ার পরই হামলা হয় রাহুল আনন্দের বাসায়। ওই ভিডিও বার্তাগুলোতে জয় একটা কথা বারবার করে বলছিল; সংখ্যালঘু নির্যাতন! এবং বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুরা নিরাপদ নয়! হামলার সময় রাহুল আকুল ভাবে আক্রমণকারী হায়না গুলকে বলে, আমি ছাত্র-জনতার পক্ষে ছিলাম আমি রবীন্দ্রসরোবরে গানও করেছি! তখন হায়না গুলো রাহুলকে বাসা থেকে থেকে বের করে দিয়ে তাঁর বাসা ভাঙচুর করে। হায়নাগুলোর জঘন্য পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়।
এই হায়না গুলো ওই সময়টাতে আর মন্দির এবং হিন্দুদের আক্রমণ করতে পারছিল না কারণ তখন দেশের সর্বস্তরের জনতা মন্দির রক্ষা করতে মন্দিরের সামনে পাহারা বসিয়েছিল। তখন কে ভেবেছিল ছাত্র-জনতার পক্ষে অবস্থা নেয়া দেশ বরেণ্য সংগীত শিল্পী রাহুল আনন্দের বাসায় আক্রমণ হবে? তাঁরও পাহারা প্রয়োজন হায়নার পালগুলো থেকে সুরক্ষা প্রয়োজন! কেউ ভাবতেও পারেনি। না ভাবাটাই সাভাবিক।
এমন ঘৃণ কর্ম সাধারণ মানুষের মাথায় আসা সম্ভবও না। হায়না গুলো ওদের নেত্রী খুনি হাসিনার ছেলে গর্ধভ জয়ের মৌন নির্দেশনা পেয়েই এই নিকৃষ্ট, ঘৃণ, নিন্দনীয় কর্ম ঘটিয়েছে ঘটিয়ে থাকতে পারে। ৯ অগস্ট ২০২৪ খুনি হাসিনার একটি অডিও ফোনেলাপ লিক হয়। সেখানে ওকে ছাত্রলীগের হায়না গুলোকে বিভিন্ন নির্দেশনা দিতে শোনা যায়। একটি নির্দেশনা ছিল; "ওরা কথা বললেই বলতে হবে, অমুকে মারছোঁ কেন জবাব দাও" অমুকটা কী তাহলে রাহুল আনন্দ???! নাকি অন্য কোনো গুণী জনের ওপর আবারও হামলা হতে যাচ্ছে? এবং ঘটানোর সম্ভাবনা চূড়ান্ত মাত্রায়। কারণ, শুধুমাত্র এই সংখ্যালঘু নির্যাতন নাটকটাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেয়ার জন্য। এবং দেশের ছাত্র জনতার গণবিপ্লবকে কলুষিত করে কালিমা লেপন করার জন্য!
রাহুল আনন্দ ও হয়তো আক্রমণের আগের মুহুর্থে সর্ব স্তরের মানুষের বিজয়ের উল্লাস উপভোগ করছিল! কিন্তু সে কী জানত, হি এন্ড হিস্ ফ্যামিলি ইস গোয়িং টু বি এ পণ অফ ডার্টি পলিটিকাল ওয়ারফেয়ার অফ বাংলাদেশ আওয়ামলীগ???

নিউজ লিঙ্ক

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


