পরীক্ষা, প্রশ্নপত্র, ফাঁস এবং রসিকতা
উপরের চারটি সম্পূরক শব্দ। গত কয়েক বছর ধরে যুবক কাল থেকে শুরু করে নেংটা কাল, সব পরীক্ষায়ই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। পরীক্ষা আসে, প্রশ্নপত্র ছাপা হয়। আর পরীক্ষার আগেই কতিপয় পরীক্ষার্থি তা হাতে পেয়ে যায়। যারা ভালভাবে পরীক্ষা দিতে চায় তারা, তাদের অভিভাবক এবং সচেতন মহল ক্ষোভে ফেটে পড়েন। গনমাধ্যমে প্রতিবাদ করা হয়, আবার কখনও রাস্তায়ও। থেমে যায়, আবার পরীক্ষা আসে...
আর সরকার প্রত্যেকবারই ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। কখনও প্রত্যক্ষ আবার কখনও পরোক্ষ ভাবে অস্বীকার করা হয়েছে। কখনও বলা হয়েছে, এটা গুজব, আসলে ফাঁস হয়নি। কখনও আবার অভিযোগকে ষড়যন্ত্র হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আবার কখনও এতে সরকারের মান-সম্মানের প্রশ্ন জরিত বলে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি বলে সাফাই গাওয়া হয়েছে। বিনোদোনমূলক আরও অনেক বিবৃতি দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা না করে শুধু প্রভাবিতই করা হয়েছে। এরই মধ্যে জরিত কেউ গ্রেফতার হলেও তার কাছ থেকে তথ্য আদায় না করে হেফাযতে রেখে হত্যা করা হয়েছে। মোটামুটি ব্যাপারটিকে এমনটা ঘটতেই পারে টাইপ হাস্য-রসাত্মক বস্তুতে পরিনত করা হয়েছে।
সর্বশেষ নাটক হলো, প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রনালয় আসন্ন প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধে ব্যবস্থা নিবে। আর তা তারা করবে আট সেট প্রশ্নপত্র তৈরি করে। (Click This Link )। কি হাস্যকর! যারা একসেট প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে ফাঁস করতেন বা সহযোগিতা করতেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস করাকে যারা একটি ফ্যাশন বানিয়ে ফেলেছেন, তারাইতো আটসেট প্রশ্নপত্র ছাপাবেন। আবার নতুন উদ্যমে ফাঁসের ব্যবস্থা করবেন। কোনসেট কোথায় যাচ্ছে তা তাদের জন্য জানা কোন ব্যাপার হওয়ার কথা নয়। ইচ্ছা করলে তখন তারা বৈধভাবেই কাজ হাসিল করতে পারবেন। আটসেট মিলিয়ে পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম সাজেশন সাপ্লাই দিবেন। কোন প্রশ্নের সাথে মিলবে না, সুতরাং ফাঁস হয়নি। এতো একটি সাজেশন মাত্র!
এভাবে তামাশা না করে যারা এর সাথে জরিত তাদেরকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আর ফাঁসকারী এবং ভোক্তা সবার মাঝেই সচেতনতা বাড়াতে হবে। এতে সরকার অপারগ হওয়ার কথা নয়। শুধু দরকার সদিচ্ছা।
এটা এখন আর ইনফেকশন নেই, গ্যাংগ্রিন হয়ে গেছে। চিকিত্সা করান। আঙ্গুল কাটা লাগলে কাটুন, পা কাটা লাগলে কাটুন। পরবর্তীতে হাটু কাটলেও রোগী বাঁচানো কঠিন হবে। অথবা ধরুন সিগারেট। সবার জন্য উন্মুক্ত, তবু প্যাকেটে লিখা থাকে “ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর” তাও আবার সংবিধানকে সাক্ষী রেখে। সেরকম অঘোষিত বৈধতা পাওয়ার আগেই অনুগ্রহ করে রোধ করুন।।