somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উলামায়ে ছু দের হাক্বিক্বত

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১০ ভোর ৪:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পূর্ব-পুরুষে হিন্দু, ধর্মে কাফির, কর্মে ইংরেজ চর, দর্শনে হিন্দু বন্ধু”- তথাকথিত পাকিস্তানের স্রষ্টা ‘জিন্নাহ’। ভারত উপমহাদেশে অনেকগুলো স্বাধীন মুসলিম দেশের বিপরীতে পাকিস্তান নামক অদ্ভুত রাষ্ট্রের জন্য দায়ী জিন্নাহর একক ক্ষমতা লোভ। একইভাবে এদেশের ক্ষমতালোভী ধর্মব্যবসায়ী দেওবন্দী, জামাতী, ওহাবী, খারিজী, রাজাকার যুদ্ধাপরাধীরা-
‘জিন্নাহ’ নামের সে নালায়েককে ‘কায়েদে আযম’ (মহান নেতা) উপাধি দিয়ে প্রমাণ করেছে- তারাই সৃষ্টির মাঝে নিকৃষ্ট জীব। (নাঊযুবিল্লাহ) -
হমান।
১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে একদিন জিন্নাহ ‘বোম্বে কনিকাল’ দৈনিক পত্রিকার তদানিন্তন সম্পাদক হর্নিম্যানকে বলেছিলেন, মুসলমানদের যে সমপ্রদায়ে তার জন্ম তারা দশঅবতারে বিশ্বাসী এবং উত্তরাধিকার আইন ও সামাজিক প্রথার দিক থেকেও হিন্দুদের সঙ্গে তাদের বহুল সামঞ্জস্য আছে। (সমগ্রন', ১২৫ পৃষ্ঠা)
উল্লেখ্য, দাদাভাই নৌরজী ও ফিরোজ শা মেটার শিষ্য জিন্নাহ কেবল বিলাত ফেরত বিখ্যাত ব্যারিস্টার ছিলো না, চলন-বলন, পোশাক-পরিচ্ছেদ, আহার-বিহার এবং মানসিকতার দিক থেকেও ছিলেন সেকালের প্রথা অনুযায়ী পাক্কা তথাকথিত সাহেব।
নিয়মিত নামায পড়া অথবা দাড়ি রাখা ইত্যাদি ভারতীয় মুসলমানদের নিদর্শনের তিনি ধার ধারতেন না।
পাঞ্জাবী মুসলমানদের সেলোয়ার, কোর্তা তিনি আদৌ পরতেন না।
বরং কোর্ট-প্যান্টেই তিনি বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করতেন। গোখলে জিন্নাহ সম্বন্ধে এবং তিলকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করতেন।
এবং তিলকের বিরুদ্ধে সরকার যখন রাজদ্রোহের অভিযোগ আনে তখন আদালতে জিন্নাহ অত্যন্ত প্রবলভাবে তার পক্ষ সমর্থন করেছিলেন। জিন্নাহর রাজনৈতিক জীবনের প্রথম দিকের কার্যকলাপ দেখে সরোজিনী নাইডুও অনুরূপ মন্তব্য করেন।
এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক শৈলেশকুমার লিখেন, অধিকাংশ ভারতীয় মুসলমান হিন্দু থেকে ধর্মান্তরিত বলে হিন্দুসমাজের চালচলন ও প্রথার রেশ তাদের মধ্যে থেকে যাওয়াই স্বাভাবিক। জিন্নাহ এই পরিমাণ ইসলাম বিদ্বেষী ছিলেন যে, ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে একবার দিল্লিতে সার তেজবাহাদুর সপ্রুকে জিন্নাহ হালকা মেজাজে বলেছিলেন, আমার মনে হয় আমি হিন্দু-মুসলমান সমস্যার একটা সমাধান বাতলাতে পারি। আপনারা আপনাদের গোঁড়া পুরোহিত শ্রেণীকে উৎসাহদান করুন এবং আমরাও আমাদের মোল্লাদের ধ্বংস করি। তাহলে সামপ্রদায়িক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। (নাঊযুবিল্লাহ) (সমগ্রন', পৃষ্ঠা- ১২৬ )
জিন্নাহর হিন্দুপ্রীতি সম্পর্কে অন্নদা শঙ্কর রায় লিখেন,
“জিন্নাহর জীবনের দ্বিতীয় পর্বে তিনি কংগ্রেস ও লীগের মধ্যে সেতুবন্ধন করেন। লোকমান্য টিলকের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে তিনি লখনউতে ১৯১৬ সালে কংগ্রেস লীগ চুক্তি সম্পাদনে আগ্রহী হন। তখন তার উপর আস্থা জাগে হিন্দু মুসলিম উভয় সমপ্রদায়ের।
সরোজিনী নাইডু বলেন, তিনি হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের রাজদূত।
কংগ্রেসের চেয়ে আরো এক পা এগিয়ে তিনি হোম রুল লীগের সভাপতি হন, যার জন্যে অ্যানী বেসান্ট অন্তরীণ হন।
জিন্নাহর প্রতিপত্তি তখন তুঙ্গে। মডারেটদের চেয়ে উচ্চে। এই পর্বে ছেদ পড়ে কংগ্রেস যখন গান্ধীজীর নেতৃত্বে অহিংস অসহযোগ নীতি গ্রহণ করে। জিন্নার নীতি নন কো-অপারেশন নয়, রেসিপ্রোকাল কো-অপারেশন। ননভায়োলেন্ট নয়, কনস্টিটিউশনাল। গান্ধী নেতৃত্ব তিনি গ্রহণ করতে পারেন না নীতিগত পার্থক্যের দরুন। ব্যক্তিগত সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল।
গান্ধী যখন গণসত্যাগ্রহ আরম্ভ করতে উদ্যত তখন তিনি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বারদোলি গিয়ে রাত্রিবেলা গান্ধীর শিবিরে উপসি'ত হন। বলেন, গভর্নমেন্ট সৈন্য আনিয়ে নিয়ে অপেক্ষা করছে, আন্দোলন শুরু হলেই গুলি চালাবে।
সুতরাং আন্দালনে ঝাঁপ দেবার আগে বড়লাটের সঙ্গে সাক্ষাৎ করাই শ্রেয়। তাকে নিয়ে জিন্নাহ ও মালবীয় লর্ড রেডিঙের সঙ্গে বসবেন। যদি তিনি রাজী হন। গান্ধী রাজী হন না। কিন' গণসত্যাগ্রহের প্রোগ্রাম পরিত্যাগ করেন। যেহেতু মুক্তপ্রদেশে চৌরী চৌর থানা আক্রমণ করে ক্ষুব্ধ জনতা পুলিশকে পুড়িয়ে মেরেছে সেহেতু দেশ গণসত্যাগ্রহের জন্যে প্রস্থত নয়। সিদ্ধান্তটা জিন্নাহর। এবং গান্ধী জিন্নাহর সাথে তার সম্পর্কে জন্যই তা মেনে নেয়।

জিন্নাহর হিন্দুপ্রীতি সম্পর্কে

যাই হোক কিছু কিছু পুরাতন নেতা কলকাতা (এই তথ্য ভ্রান্ত। জিন্নাহ তার পরবর্তী নাগপুর কংগ্রেসের পর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করেন।) কংগ্রেসের পর কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করেন এবং তাদের মধ্যে জিন্নাহ ছিলেন এক জনপ্রিয় ও বিখ্যাত ব্যক্তি। সরোজিনী নাইডু তাকে হিন্দু মুসলিম ঐক্যের রাজদূত আখ্যা দিয়েছিলেন। অতীতে মুসলিম লীগকে কংগ্রেসের কাছাকাছি আনার কৃতিত্ব বহুলাংশে ছিল তারই। (অহ অঁঃড়নরড়মৎধঢ়যু দ্য বডলি হেড, লন্ডন, ১৯৫৫, পৃষ্ঠা- ৬৭)

জিন্নাহর মুসলমান বিদ্বেষ সম্পর্কে
বিশের দশকের জিন্নাহর সঙ্গে আলাপচারির উল্লেখ করে শিবরাও জানাচ্ছেন, “শ্রীমতি বেসান্ত এবং অন্যান্য লিবারালরা যে কারণে গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনকে বিপজ্জনক মনে করতেন জিন্নাহও সেই কারণে তার বিরোধী ছিলেন।
বিশেষ করে ভারতবর্ষের মুসলমানদের উপর খিলাফত আন্দোলনের সম্ভাব্য পরিণাম নিয়ে তার মনে দুশ্চিন্তার অবধি ছিল না। অজ্ঞ এবং ধর্মান্ধ মুসলমানদের আন্দোলনের সহকর্মী করাকে তিনি একান্তভাবে অবিবেচনাপ্রসূত বলে মনে করতেন।”
(সমগ্রন': ১২৫ পৃষ্ঠা) গান্ধীও স্বয়ং ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই ডিসেম্বর লর্ড কেসির কাছে একথা স্বীকার করেন। এন মানসের্গ ঔ ঞযব ঞৎধহংভবৎ ড়ভ ঢ়ড়ধিৎ অতঃপর টি.পি রূপে উল্লেখিত, ষষ্ঠ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৬১৭। এইচ এম সীরভি রচিত চধৎঃরড়হ ড়ভ ওহফরধ: খবমবহফ ধহফ জবধষরঃু (বোম্বাই, ১৯৮৮) পৃষ্ঠা ১৩-৪ও প্রসঙ্গে দ্রষ্টব্য।)
তথ্য সুত্র যামানার তাজদীদী মুখপত্র দেনিক আল ইহসান)

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১০ ভোর ৪:৫০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×