somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাকতালীয় নাকি প্যারানরমাল

২৮ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘটনা ১

বেজবাবা সুমন, সাকিব এবং জিবরান ভাই ২০১২ সালের দিকে বন্ধুর বিয়েতে এটেন্ড করার জন্য নিজস্ব গাড়ি নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন সুমন ভাই। ওনার পাশে বসেছিল সাকিব ভাই। আর পিছনে ছিল জিবরান ভাই।

হাইওয়েতে সুমন ভাই ১০০ কিমি গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। সবাই ছিল খুব ফূর্তির মুডে। সারারাত সবাই বিভিন্ন বিষয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন।

গাড়ি চালাতে চালাতে আর আড্ডা দিতে দিতে প্রায় ভোর হয়ে আসলো। চারিদিকের কুয়াশা তখন ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছিল। সাকিব ভাই আর জিবরান সবকিছু ঠিকঠাক দেখে নিশ্চিন্তমনে ঘুমায়ে পড়েন।

আর তার কিছুক্ষণ পরেই ঘটে যায় ভয়ানক এক ঘটনা।

হঠাৎ করেই সুমন ভাই গাড়ির স্টিয়ারিংটা নাড়াতে সমস্যাবোধ করতে থাকেন।

স্টিয়ারিং প্রায় একদম হার্ড হয়ে যাওয়ার মত অবস্থায়। গাড়ির নিয়ন্ত্ৰণ রাখতে ওনার বেশ কষ্ট করতে হচ্ছিল। ব্রেকও সেই সময়ে কাজ না করাতে, গাড়িটাও থামাতে পারছিলেন না।

হঠাৎ মরার উপর খাড়ার ঘাঁ হয়ে বিপরীত দিক থেকে একটা সিএনজি উনাদের গাড়ির মুখোমুখি আসতে থাকে । সিএনজি যখন ওনাদের কাছাকাছি, তখনই ঘুম ভেঙে যায় সাকিব ভায়ের। উনি দ্রুততার সাথে গাড়ির স্টিয়ারিং বামে ঘুরায়ে দেন। সুমন ভাইও বামে ঘুরানোর চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু স্টিয়ারিং খুবই শক্ত হয়েছিল। সাকিব ভাইও হাত দেওয়াতে স্টিয়ারিং সহজেই বামের দিকে চলে আসে।

গাড়ি হঠাৎ করে ঘুরে যাওয়াতে সিএনজির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ না হলেও , এক বিরাট গাছের সাথে গাড়ির ধাক্কা লেগে যায়।

একদমই ভয়াবহ অবস্থা।

গাড়ির অনেক ক্ষতি হলেও আল্লাহর রহমতে সুমন, সাকিব এবং জিবরান ভাই বড় আঘাত পাওয়া থেকে বেঁচে যান।

দূর্ঘটনার পর সুমনভাই গাড়ির এজেন্টকে ফোন দিয়ে ওখানে আসতে বলেন। ঢাকা থেকে বন্ধু ইরেশ ওনাদেরকে উদ্ধারের জন্য দুর্ঘটনাস্থলে অন্য নতুন একটা গাড়ি পাঠিয়ে দেন।

গাড়ি আসার পর, ঢাকাতে ফেরার বদলে বন্ধুর বিয়েতে যাওয়ার সিদ্ধান্তেই অটল থাকেন বেজবাবার গ্ৰুপ।

নতুন গাড়ি নিয়ে রওনা হওয়ার পরও বেজবাবা সুমনের গ্ৰুপ পদে পদে বাঁধা পেয়েছিলেন।

কক্সবাজারে যাওয়ার পথে ওই গাড়ির চাকা দুইবার পাংচার হয়েছিল। প্রথমবার ফেনীতে, আর দ্বিতীয়বার কক্সবাজারের কাছাকাছি কোন জায়গায়।


ঘটনা ২

২০১১ সাল। সুমন ভাইয়ের সাথে যে দূর্ঘটনা হয়েছিল, তার ঠিক এক বছর আগের কথা।

সাকিব ভাই, ওনার এক বন্ধুকে নিয়ে কক্সবাজারের দিকে গাড়ি ড্রাইভ করে যাচ্ছিলেন।

কক্সবাজারের কাছাকাছি কোন এক জায়গাতে সাকিব ভাইয়ের গাড়ির ব্রেক ফেল করে এবং ভয়াবহভাবে বিরাট এক গাছের সাথে গাড়ির ধাক্কা লেগে যায়।

দূর্ঘটনায় গাড়ির যা তা একটা অবস্থা হয়। সাকিকে ভাই সামান্য আহত হন। ওনার বন্ধু পিঠে প্রচন্ড ব্যথা পান।

ওই বন্ধুকে প্রায় তিন মাস হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল।


কাকতালীয় মিল

উপরের দুই ঘটনাটাতে কাকতালীয়ভাবে বেশ কিছু মিল পাওয়া যায়।

সাকিব ভাইয়ের দূর্ঘটনা কক্সবাজারের যে জায়গাতে হয়েছিল, ঠিক সেই জায়গাতেই এক বছর পরে বন্ধুর বিয়েতে বেজবাবার সাথে যাওয়ার সময় গাড়ির চাকা পাংচার হয়ে যায় (যে গাড়ি বন্ধু ইরেশ ওনাদেরকে উদ্ধারের জন্য পাঠিয়েছিল)।

আর ২০১২ সালে যে বন্ধুর বিয়েতে সবাই মিলে যাচ্ছিলেন, সেই বন্ধুটা ছিল সাকিব ভাইয়ের সেই ফ্রেন্ড যিনি ২০১১ সালে সাকিব ভাইয়ের সাথে কক্সবাজার যাওয়ার পথে এক্সিডেন্ট করে পিঠে ব্যথা পেয়েছিলেন।

বেজবাবা সুমন এখনও মিলাতে পারেন না - সাকিবের দুর্ঘনাস্থলেই কেন চাকা পাংচার হবে ? কেনই বা নতুন গাড়ির স্টিয়ারিং, ব্রেক হঠাৎ করে ফেল করবে? যে ফ্রেন্ড সাকিবের সাথে ওই স্থানে আহত হয়েছিল, সেই একই ফ্রেন্ডের বিয়ের প্রোগ্রামে যাওয়ার পথে কেন এত বাঁধা আসবে ?

এগুলো কি কাকতালীয় ব্যপার নাকি এর পেছনে অতিপ্রাকৃত কোন কিছুর হাত রয়েছে ?

এসবের উত্তর বেজবাবা সুমনেরও জানা নেই।

(রেডিও ফুর্তির ভূত এফএম প্রোগ্রামে প্রচারিত একটি গল্প দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই লিখা)

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১:০৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×