বর্তমান প্রজন্মকে বলা হয় হয় গুগল প্রজন্ম। তাদের নিত্য সময়কার সঙ্গি এই গুগল। তাই গুগলকে অনেকে গুগল মামা বলেও সম্বোধন করে থাকে। এই গুগল মামার সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ দিয়ে আমরা যেমন বিভিন্নভাবে উপকৃত হই। সেই গুগল মামার কাছেই আমরা আবার কখনো লজ্জিত হয়ে থাকি। নাহ! গুগল মামার নিজে থেকে লজ্জা দেবার ক্ষমতা নেই। আমরা যেসব কর্ম করে থাকি সেই কর্মগুলোকে সংরক্ষণ করে একটা সময় গুগল মামা সেগুলোকে সার্চ ইঞ্জিনে শো করে আমাদেরকে অনুশোচনায় নিয়ে যায় কিংবা লজ্জাবোধের অতিব তল সীমায় নিয়ে ফেলে।
গুগলে অক্টোবর মাস নিয়ে সার্চ করতে গিয়ে ২৮ অক্টোবর লিখে সার্চ দিলাম। সার্চ দেবার পর মনে মনে আফসোস করতে লাগলাম, সার্চ না দেয়াটাই হয়তো ভাল ছিল। তা হলে আমরা যে জাতি হিসেবে কতটা নির্মম এবং নিষ্ঠুর সেই চিত্রটা নতুন করে ভেসে উঠতো না।
আরো দেখুন,
দেখুন কতটা ভয়ানক এবং নৃশংস সেই দৃশ্যগুলো। আপনি হয়তো বলবেন, এগুলো তো সব জামায়াত-শিবির। কিন্তু আমি বলব মানুষ। তারা আমারই মত রক্তে মাংসে গড়া মানুষ। তাদের উপর এই পৈশাচিকতা দেখে একজন মানুষ হিসেবে আমিও শিঁউরে উঠি। আপনারাই তো বলেন, সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই। তাহলে আজ কেন এই দ্বিমুখীতা। আমি জানি সামুর মডু মহায়দয়গণ খুব সম্ভবত এই ব্লগটি স্থায়ী হতে দিবেন না। চোখে পড়া মাত্রই এটাকে ট্রাশ বোর্ডে স্থানান্তর করে দিবেন।
আমার কাছে সবচেয়ে দুঃখ লাগে, আমাদের মানবিকবোধটাও আজ দলীয় কেন্দ্রীক হয়েছে। আমাদের মমতাবাধটাও আজ দলকানার ন্যায় অন্ধ হয়ে গেছে। আমরা এতোটাই অন্ধ যে, প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তায় লাশের উপর নৃত্য করা দেখেও আমাদের মনে ঘৃণা জন্মে না। কারণ, ওরা নাকি জামায়াত শিবির! তাহলে কি জামায়াত শিবিরের মানবাধিকার নেই? নাকি তাদের মানবাধিকার থাকতে নেই।
তারা জামায়াত শিবির বলেই রাস্তায় লগি বৈঠার চাপড়ে মাইর খেতে খেতে মরতে হবে। আমি খুব জোর দিয়ে বলতে পারি, সরকারের যদি ক্ষমতা থাকত তাহলে গুগল থেকেই এই ছবিগুলোকে হাওয়া করে দিত। গুগল মামাতে এই নির্মম সত্যের ছবিগুলো শোভা পেত না। কিন্তু সরকারের সক্ষমতা এখনো ওতোদূর পৌছায় নি। তৃতীয় বিশ্বের দেশ কিনা! তবে যে হারে প্রধানমন্ত্রী এবং তার বিজ্ঞানী পুত্র আইটি সেক্টরে উন্নতি করতেছেন সেইহারে গুগলের উপর সরকারের প্রভাব সৃষ্টি করতে খুব বেশি সময় লাগার কথা না!
ছবিগুলো ভাল করে দেখুন! একটি ছবিতে বাপ্পাদিত্য বসুকে দেখা যাচ্ছে। যে কিনা লাশ মাড়িয়ে দৌড়ে পার হচ্ছে। এই বাপ্পাদিত্য বসুরাই আমাদেরকে সমাজতন্ত্রের স্বপ্ন দেখান। সাম্যের বুলি শোনান। আর্নেষ্ট চে গুয়েভারার মত অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিপ্লবী হবার স্বপ্ন দেখান। কিন্তু সেই বাপ্পাদিত্যই কিনা সবলের পক্ষ নিয়ে দুর্বলদের লাশের উপর নৃত্য করলেন। যে লাশের প্রতিবাদ করবার সামান্যও ক্ষমতা নেই সেই লাশের উপরও নিজের মনের খায়েশ মেটালেন। হায় সমাজতন্ত্র! হায় সাম্যবাদ! সবই তোমার পকেটের ফাকা বুলি!
২৮ অক্টোবর ঘুরে ফিরে আসে যায়! কিন্তু সেই দিনকার নিহতেদের মায়েদের আত্নচিৎকার থামে না। তাদের হাহাকারে বাতাস আজও ভারি হয়ে আছে! তাদের মলিন হৃদয়ের রক্তক্ষরনে তাদের উঠানে জ্যোৎস্ন্যা আলো বিলাতেও লজ্জা পায়। একজন মানুষ হিসাবে আমিও লজ্জা পাই। আপনি কি লজ্জা পান?
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:২১