যে লোকটি কাজী আবেদ হোসেনের হাতের উপর কাঁপুনি দিয়ে মারা গিয়েছিল তাকেও তিনি ফায়ার ব্রিগেডের গাড়িতে তুললেন।যদিও দৃশ্যমান ভাবে মনে হয়েছিল লোকটি মৃত তথাপি তিনি ভাবলেন,দীর্ঘক্ষণ মাটির নিচে চাপা থাকার কারণে কোন ভাবে হয়ত সে জ্ঞান হারিয়েও ফেলতে পারে।তাই তাকেও হাসপাতালে নেওয়া জরুরী। তিনি দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর প্রধান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে ফোন করলেন এবং বললেন,বাসস্ট্যান্ডের কাছে কবর থেকে আমি দু’জন মানুষকে উদ্ধার করেছি এবংমুমূর্ষু অবস্থায় তাদেরকে নিয়ে আমি হাসপাতালে আসছি।হাসপাতালের সমস্ত ডাক্তারদেরকে তৈরি থাকতে বলুন,অক্সিজেন সিলিন্ডার নীচতলায় নামিয়ে রাখুন যাতে করে আসামাত্রই যেন তাদেরকে অক্সিজেন দেয়া সম্ভব হয়।এদিকে ঘটল মহা বিপত্তি।ইতিমধ্যে এলাকার লোকজন আর বাসস্ট্যান্ড থেকে অনতি দূরে চলা সার্কাসের লোকজনে পুরো আঙ্গিনা এবং সমস্ত পথ ভরে গেল।এবার কাজী আবেদ হোসেন ভাবতে লাগলেন পুলিশ হেফাজতে রাখা মহিলা ৩জনকে কিভাবে রক্ষা করা যায়?যদি জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে মহিলা ৩জনকে আক্রমণ করে কিংবা আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়ে তাদেরকে মেরে ফেলে তাহলে তো সত্যি ঘটনাটা জানা হবে না।তাছাড়া তারা সত্যিকারের অপরাধী কি না তা তখনও পর্যন্ত অজানাই ছিল। তিনি মোহনগঞ্জ থানার ও.সি সাহেব কে বললেন, যেভাবেই হোক মহিলা ৩জন কে দ্রুত বারহাট্টা থানায় নিয়ে যেতে হবে।তিনি আরও বললেন, তাদেরকে খুবই কৌশলের সাথে বারহাট্টা থানায় নিয়ে যেতে হবে।সাধারণ জনগণের সাথে মিলিয়ে তাদের চোখ এড়িয়ে তাদেরকে বারহাট্টা থানায় নিয়ে যেতে হবে।শহরের পথ দিয়ে কোনমতেই যাওয়া সম্ভব হবে না ।তাই গ্রামের ভেতরের কোন বিকল্প পথ দিয়ে তাদেরকে নিয়ে যেতে হবে।ও.সি সাহেব কাজী আবেদ হোসেনের কথামত তাদেরকে খুবই কৌশলের সাথে বারহাট্টা থানায় নিয়ে গেলেন।উৎসুক জনগণ গাড়ির চারপাশে ভীড় করে ছিল আর ভেতরে থাকা মানুষ দু’জন কে উঁকি দিয়ে দেখছিল।তিনি খুব দ্রুত কবরের ভেতরের দিকে উঁকি দিলেন এবং দেখলেন,কবরের ভেতরে একটা মাদুর সুন্দর করে বিছানো রয়েছে। বিড়ির পেছনের কিছু পোড়া অংশ,পাউরুটির অংশ বিশেষ মাদুরের উপর ছড়ানো,ছিটানো ছিল।কবরের ভেতরের সবকিছুই তিনি পুলিশকে বাজেয়াপ্ত করতে বললেন।পুলিশ যখন সব কিছু তাদের হেফাজতে নিয়ে নিয়েছিল তখন তিনি অবাক হয়ে গেলেন কবরের মেঝে দেখে। কবরের মেঝেটা ছিল ঠিক যেন ঘরের দেয়ালের মত মসৃণ।কোথাও এক বিন্দু ময়লা ছিল না।পুরো মেঝে ঝকঝক করছিল।এরপর তিনি জনগণের প্রচন্ড ভীড় উপেক্ষা করে ফায়ার ব্রিগেডের গাড়িতে উঠে পড়লেন। কবর থেকে উদ্ধার করা মুমূর্ষু মানুষ দু’জনকে সাথে নিয়ে তিনি হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা করলেন।
(চলবে)
বিঃদ্রঃ[তথ্যসূত্র শেষপর্বে প্রকাশ হবে।]