somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

জিন কি গায়েবের সংবাদ জানে? জিনের আক্রমণ থেকে বাঁচার উপায় কি?

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জিন কি গায়েবের সংবাদ জানে?
এই প্রশ্নের উত্তরে অনেককেই দ্বিধায় পড়তে দেখা যায়। বিষয়টিতে পরিষ্কার ধারনা রাখা প্রত্যেকের জন্য গুরুত্বপূর্ন। সংক্ষেপে এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, জিন জাতি গায়েব জানে না। আল্লাহ ব্যতীত আকাশ-জমিনের কোন মাখলুকই গায়েবের খবর রাখে না। আল্লাহ পাক বলেনঃ

فَلَمَّا قَضَيْنَا عَلَيْهِ الْمَوْتَ مَا دَلَّهُمْ عَلَى مَوْتِهِ إِلَّا دَابَّةُ الْأَرْضِ تَأْكُلُ مِنسَأَتَهُ فَلَمَّا خَرَّ تَبَيَّنَتْ الْجِنُّ أَنْ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ الْغَيْبَ مَا لَبِثُوا فِي الْعَذَابِ الْمُهِينِ

“যখন আমি তাঁর (সুলাইমানের) মৃত্যু ঘটালাম, তখন ঘুণ পোকাই জিনদেরকে তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে অবহিত করল। সুলাইমানের লাঠি খেয়ে যাচ্ছিল। যখন তিনি মাটিতে পড়ে গেলেন, তখন জিনেরা বুঝতে পারল যে, অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান থাকলে তারা এই লাঞ্চনাপূর্ণ শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতো না।” (সূরা সাবাঃ ১৪)

সুতরাং যে ব্যক্তি ইলমে গায়েবের দাবী করবে সে কাফের হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি অন্য কাউকে ইলমে গায়েব জানে বলে বিশ্বাস করবে, সেও কুফুরিতে নিপতিত হবে। কারণ আল্লাহ পাক ছাড়া অন্য কেউ গায়েবের খবর জানে না। আল্লাহ পাক বলেন,

قُلْ لَا يَعْلَمُ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ الْغَيْبَ إِلَّا اللَّهُ

“বলুন, আসমান যমিনে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ গায়েবের খবর জানে না।” (সূরা নামলঃ ৬৫)

যারা ভবিষ্যতের সংবাদ জানে বলে দাবী করে, তাদেরকে গণক বলা হয়। নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ

مَنْ أَتَى عَرَّافًا فَسَأَلَهُ عَنْ شَيْءٍ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلَاةٌ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً

''যে ব্যক্তি কোন গণকের কাছে এসে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করল, চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার নামায কবূল হবে না।''

গণকের কথা বিশ্বাস করা কুফুরির সমপর্যায়ের। কারণ, গণকের কথা বিশ্বাসের মাধ্যমে সে আল্লাহর নিম্নলিখিত বাণীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। আল্লাহ পাক বলেনঃ

قُلْ لَا يَعْلَمُ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ الْغَيْبَ إِلَّا اللَّهُ

“আসমান যমিনে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ গায়েবের খবর জানে না।” (সূরা নামলঃ ৬৫)

জিনের আক্রমণ থেকে বাঁচার উপায় কি?


একথা অনস্বীকার্য যে, জিনেরা মানুষের উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং কষ্ট দিতে পারে। দিয়ে থাকে। কখনো এমনও দেখা যায়, জিনেরা মানুষ মেরে পর্যন্ত ফেলে। কখনো বা পাথর নিক্ষেপ করে এবং বিভিন্নভাবে ভয় দেখায়। জিনদের এ সকল কর্ম হাদীছ এবং বিভিন্ন বাস্তব ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত আছে যে, তিনি খন্দকের যুদ্ধের দিন জনৈক ছাহাবীকে তার স্ত্রীর কাছে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে দিলেন। কারণ, তিনি নতুন বিবাহিত যুবক ছিলেন। ঘরে ফিরে যুবক দেখলেন, স্ত্রী ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। এ দেখে তিনি তার প্রতি মনক্ষুন্ন হলেন। স্ত্রী বললেন, ঘরে প্রবেশ করুন। ঘরে প্রবেশ করে দেখলেন বিছানার উপরে একটি সাপ ব্যাড় দিয়ে বসে রয়েছে। হাতেই ছিল বর্শা। বর্শা দিয়ে সাপকে আঘাত করার সাথে সাথে সাপটি মারা গেল এবং উক্ত ছাহাবীও মৃত্যু বরণ করলেন। সাপ এবং ছাহাবীর মধ্যে কে আগে মারা গেল, তা জানা যায়নি। এই সংবাদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে পৌঁছার পর তিনি ঘরের মধ্যে বসবাসকারী সাপগুলো মারতে নিষেধ করলেন। তবে পিঠের উপরে রেখা বিশিষ্ট এবং লেজহীন ছোট ছোট সাপগুলো ব্যতীত। এই ঘটনা থেকে আমরা জানতে পারলাম যে, জিনেরা মানুষের উপরে আক্রমণ করে এবং কষ্ট দেয়। মুতাওয়াতের এবং মাশহুর সনদে বর্ণিত হাদীছে আছে যে, মানুষ কখনো কখনো পুরাতন এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ী-ঘরে প্রবেশ করলে পাথর নিক্ষিপ্ত হয়। অথচ সেখানে কোন মানুষ দেখতে পায় না। কখনো কখনো আওয়াজ এবং গাছের ডালপালার নাড়াচাড়া লক্ষ্য করা যায়। এতে মানুষ ভয় পায়। এমনিভাবে আসক্ত হয়ে কিংবা কষ্ট দেয়ার জন্য অথবা অন্য কোন কারণে জিন মানুষের শরীরেও প্রবেশ করে। এ দিকে ইঙ্গিত করেই আল্লাহ বলেনঃ

الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنْ الْمَسِّ

“যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান (জিন) আছর করে ভারসাম্যহীন পাগলের মত করে দেয়।” (সূরা বাকারাঃ ২৭৫)

কখনো জিনেরা মানুষের শরীরে মিশে গিয়ে তার মুখ দিয়ে কথা বলে। জিনে ধরা রোগীর কাছে কবিরাজ যখন কুরআনের আয়াত পাঠ করে, তখন জিন তার সাথে কথা বলে। কবিরাজ জিনের কাছ থেকে পুনরায় না আসার অঙ্গীকার গ্রহণ করে। এ ধরণের আরো কথা হাদীছে বর্ণিত আছে এবং জনসমাজে প্রচলিত রয়েছে। এর উপর ভিত্তি করে আমরা বলতে পারি যে, জিনের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য সুন্নাহতে বর্ণিত দু’আগুলো পাঠ করতে হবে। তার মধ্যে আয়াতুল কুরসী অন্যতম। কোন লোক রাত্রিতে আয়াতুল কুরসী পাঠ করলে সারা রাত আল্লাহর পক্ষ হতে একজন হেফাজতকারী থাকে। সকাল পর্যন্ত শয়তান তার নিকটেও আসতে পারে না। এমনি করে সকাল বেলা আয়াতুল কুরসি পাঠ করলে সারা দিন জিন থেকে তিনি হেফাজতে থাকবেন। এছাড়া প্রতি ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পরে আয়াতুল কুরসিসহ সম্ভব হলে চার ক্কুল (ক্কুল ইয়া- আইয়্যুহাল কা-ফিরূ-ন, ক্কুল হুঅল্লাহু আহাদ, ক্কুল আউ-যুবি রব্বিল ফালাক্ক, ক্কুল আউ-যুবি রব্বিন্না-স) পাঠ করা যেতে পারে। এই চার সূরাহ পাঠ করে হাতে ফুঁ দিয়ে শরীরে মুছে দেয়া হলে শরীর বন্ধ থাকে। যাদুটোনা, বান, কুফুরি কালামসহ, জিন ও শয়তানের সকল প্রকারের ক্ষতি হতে আল্লাহর রহমতে হেফাজতে থাকা সম্ভব।

সকলে নিরাপদ থাকুন। সকলকে আল্লাহ পাক তাঁর হেফাজত এবং নিরাপত্তায় রাখুন।

ছবিঃ গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৯ সকাল ৮:২৮
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×