somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

ইসলামে যাকাত বিধান: ফাযাইল ও মাসাইল

২৭ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৩:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ইসলামে যাকাত বিধান: ফাযাইল ও মাসাইল

সকল প্রশংসা কেবল আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার জন্য:
আলহামদুলিল্লাহিল আকরামিল্লাজী খালাকাল ইনছা-না ওয়া কাররামাহু ওয়া আল্লামাহু মিনাল বায়ানি মা- লাম ইয়া'লাম। ফাসুবহানাহু লা ইউহসা- ইমতিনানুহু বিল্লিছানি ওয়ালা- বিল ক্কলাম। অচ্ছলাতু অচ্ছালামু আলা হাবিবিনাল মুসতাফা, আল্লাজী আ'তাহু খুলুকা আ'জাম, সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার আলীশান দরবারে সিজদাবনত শুকরিয়া যে, তিনি আমাদের জন্য যাকাতের মত উপকারী বিধানকে ফরজ করে দিয়েছেন।

যাকাত; প্রাককথন:
সাহিবে নিসাব অর্থাৎ যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ ধন সম্পদের অধিকারী ব্যক্তির জন্য যাকাত আদায় করা শরীয়তের দৃষ্টিতে ফরজ। যাকাত ইসলামের একটি মৌলিক ও বুনিয়াদী রোকন। ঈমানের পর সালাতের সমস্তরের ফরয বিধান হল যাকাত। এ কারণেই পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে সালাত ও যাকাত আদায়ের নির্দেশ একত্রে এসেছে। তাই তো নিষ্ঠাবান মুমিনের পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য তুলে ধরতে গিয়ে কুরআনুল কারিমে এক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে:

وَأَقِيمُواْ الصَّلاَةَ وَآتُواْ الزَّكَاةَ وَمَا تُقَدِّمُواْ لأَنفُسِكُم مِّنْ خَيْرٍ تَجِدُوهُ عِندَ اللّهِ إِنَّ اللّهَ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ

'তোমরা নামায প্রতিষ্ঠা কর এবং যাকাত দাও। তোমরা নিজের জন্যে পূর্বে যে সৎকর্ম প্রেরণ করবে, তা আল্লাহর কাছে পাবে। তোমরা যা কিছু কর, নিশ্চয় আল্লাহ তা প্রত্যক্ষ করেন।' -সূরা বাকারা : ১১০

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে:

وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ

'নামায কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং রসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও।' -সূরা নূর : ৫৬।

সূরা নিসার ১৬২ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের জন্য ‘আজরুন আযীম’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে:

لَّـكِنِ الرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ مِنْهُمْ وَالْمُؤْمِنُونَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنزِلَ إِلَيكَ وَمَا أُنزِلَ مِن قَبْلِكَ وَالْمُقِيمِينَ الصَّلاَةَ وَالْمُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَالْمُؤْمِنُونَ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ أُوْلَـئِكَ سَنُؤْتِيهِمْ أَجْرًا عَظِيمًا

'কিন্তু যারা তাদের মধ্যে জ্ঞানপক্ক ও ঈমানদার, তারা তাও মান্য করে যা আপনার উপর অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আপনার পূর্বে। আর যারা নামাযে অনুবর্তিতা পালনকারী, যারা যাকাত দানকারী এবং যারা আল্লাহ ও কেয়ামতে আস্থাশীল। বস্তুতঃ এমন লোকদেরকে আমি দান করবো মহাপুণ্য।'

যাকাত অস্বীকারকারী ঈমানহারা হয়ে যায়:
কেউ যাকাত অস্বীকার করলে তার ঈমান চলে যাবে। আর যাকাত ফরজ একথা স্বীকার করে ঠিকই কিন্তু যদি কেউ আদায় না করে থাকে, তবে তা হারাম ও কবীরা গুনাহ। যেমন, ইরশাদ হয়েছে-

الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُم بِالْآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ

যারা নামায কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং পরকালে নিশ্চিত বিশ্বাস করে। (সূরাহ: আন নামল, আয়াত:৩)

যাকাতের সংজ্ঞা ও পরিচয়:
ইসলামী শরিয়ত কর্তৃক নিজের অধীনে থাকা নিসাব পরিমান সম্পদের একটি নির্ধারিত অংশ কোন ফকির বা গরিব মানুষকে মালিক বানিয়ে দেয়াকে যাকাত বলে। (ফাতওয়া শামী,৩য়, ১৭১ পৃষ্ঠা)

কুরআন-হাদীসের আলোকে যাকাতের ফযীলত:
যাকাত দেয়ার দ্বারা সম্পদ কমে না বরং তার মাঝে আরো বরকত হয়। যাকাত প্রদানের ফযীলত সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসে অনেক বর্ণনা রয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে:

وَمَا آَتَيْتُمْ مِنْ رِبًا لِيَرْبُوَ فِي أَمْوَالِ النَّاسِ فَلَا يَرْبُو عِنْدَ اللَّهِ وَمَا آَتَيْتُمْ مِنْ زَكَاةٍ تُرِيدُونَ وَجْهَ اللَّهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْمُضْعِفُونَ

অনুবাদ:- 'মানুষের সম্পদ বৃদ্ধি পাবে বলিয়া তোমরা যে সূদ দিয়া থাক, আল্লাহর দৃষ্টিতে তা ধন-সম্পদ বৃদ্ধি করে না। কিন্তু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য যে যাকাত তোমরা দিয়া থাক তাই বৃদ্ধি পায়, তারাই সমৃদ্ধিশালী।' (সূরা রূম, আয়াত:৩৯)

যাকাতের ফযীলত সম্পর্কে কয়েকটি হাদীস:
এক. হযরত আনাস রা.থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: বনী তামীমের এক ব্যক্তি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, 'হে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমি অনেক সম্পদের মালিক এবং পরিবারে সন্তানও অনেক, সুতরাং আপনি বলে দিন, আমি আমার সম্পদ কিভাবে দান করব এবং তাদের সাথে কি ব্যবহার করবো?' তখন রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: 'তোমার সম্পদের যাকাত দাও। কেননা তা তোমাকে (তোমার সম্পদ) পবিত্র করে দিবে। আর নিকটাত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখ, ভিক্ষুক প্রতিবেশী এবং মিসকীনদের অধিকার পূরণ কর।' (মুসনাদে আহমদ: হাদীস নং ১২৩৯৪,)

দুই. হযরত আবু দারদা রা: থেকে বর্ণিত, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: পাঁচটি আমল এমন রয়েছে, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে তা করবে, সে জান্নাত যাবে।
ক. দৈনিক পাঁচওয়াক্ত নামায অযু, রুকু ও সেজদাসহ সময়মত আদায় করার ব্যপারে যত্মবান হবে।
খ. রমজানে রোযা রাখবে।
গ. সক্ষম ব্যক্তিগন বায়তুল্লাহর হজ্জ করবে।
ঘ. স্বাচ্ছন্দে যাকাত দিবে। (তারগীব ও তারহিব-১মখন্ড পৃ: ৩৩৪,)

তিন. হযরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল যে, ব্যক্তি নিজ সম্পদের যাকাত প্রদান করে তার ব্যপারে আপনার রায় কি? রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: যে ব্যক্তি নিজ সম্পদের যাকাত প্রদান করে তার সম্পদে যত সমস্যা (বিপদ) আছে তা দুর হয়ে যাবে। (তারগীব ১ম,৩৩৫ পৃষ্ঠা,)

চার. হযরত আবু দারদা থেকে বর্ণিত : রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যাকাত হলো ইসলামের সেতুবন্ধন। (তারগীব ১ম,৩৩৪ পৃষ্ঠা,)

যাকাত দেয়ার সুফল:
যাকাত দেয়ার বিশেষ চারটি ফায়দা ও উপকারিতা রয়েছে। যথা:
১. সদকা-খয়রাতের দ্বারা সম্পদে বরকত হয়।
২. যাকাত দেয়ার দ্বারা আল্লাহর রহমত অবতীর্ণ হয় এবং আল্লাহ তাআলার অসুন্তুষ্টি দূর হয়ে যায়।
৩. কৃপনতা ও লোভের ব্যপারে জাহান্নামের যেই আযাবের কথা বলা হয়েছে যাকাত দেয়ার দ্বারা তা দূর হয়ে যায়।
৪. আসমানের ফেরেস্তাগন যাকাত প্রদানকারীর জন্য দোয়া করে। (রহমাতুল্লাহিল ওয়াসিয়া:১/৭৪৯)

যাকাত না দেয়ার কুফল:
যাকাত না দেয়ার কুফল সম্পর্কে পবিত্র কুরআনুল কারিমে ইরশাদ হচ্ছে:

وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنْفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ -يَوْمَ يُحْمَى عَلَيْهَا فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكْوَى بِهَا جِبَاهُهُمْ وَجُنُوبُهُمْ وَظُهُورُهُمْ هَذَا مَا كَنَزْتُمْ لِأَنْفُسِكُمْ فَذُوقُوا مَا كُنْتُمْ تَكْنِزُونَ

অনুবাদ: 'যারা সোনা-রূপা পুঞ্জীভূত করে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদেরকে যন্ত্রনাময় শাস্তির সুসংবাদ দাও। যে দিন ধন-সম্পদ জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে, তারপর তা দ্বারা তাদের কপাল , তাদের পাজর ও পিঠে দাগ দেয়া হবে। ( এবং বলা হবে) এই হচ্ছে সেই সম্পদ যা তোমরা নিজেদের জন্য পুঞ্চীভূত করতে, সুতরাং তোমরা যে সম্পদ পুঞ্জীভূত করতে তার মজা ভোগ কর।' (সূরা তাওবা:আয়াত, ৩৪, ৩৫)

এমনিভাবে অনেক হাদিসেও যাকাত আদায় না করার কুফল বর্ণিত হয়েছে। যেমন, হযরত আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, যারা মালের যাকাত দেয় না তাদের সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 'কিয়ামতের দিন তাদের ধন-সম্পদ বিষাক্ত সাপের আকৃতি ধারণ করবে, যার থেকে সেসব সম্পদের মালিক পলায়ন করতে থাকবে। আর সেই সাপ তাকে খুঁজতে থাকবে। পরিশেষে তাকে ধরে ফেলবে। এমনকি এক পর্যায়ে তার হাতের আঙ্গুলসমূহ গিলে ফেলবে।' (মিশকাত শরীফ: ১ম, ১৫৭পৃষ্ঠা)

হযরত ইবনে মাসউদ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত- এক হাদীসে রাসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- 'যে ব্যক্তি তার মালের যাকাত আদায় করে না, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা তার গলায় সেই মালকে সাপ বানিয়ে ঝুলিয়ে দিবেন।' (মিশকাত শরীফ: ১ম, ১৫৭পৃষ্ঠা,তিরমিজী শরীফ, নাসাঈ শরীফ)



যাকাতের মূল উদ্দেশ্য:
যাকাতের বিধান আরোপিত হওয়ার মূল উদ্দেশ্য তিনটি। যথা:-

১. গরীবের প্রয়োজন পূর্ণ করা। অভিশপ্ত পুঁজিতন্ত্রের মূলোৎপাটন করা, অর্থসম্পদ কুক্ষিগত করে রাখার নিকৃষ্ট মানসিকতাকে খতম করা এবং সমাজে অর্থনৈতিক ভারসাম্য সৃষ্টি করা।
২. অর্থনৈতিক কল্যানের পথ প্রশস্ত করার জন্য নিজের কষ্টোপার্জিত সম্পদকে বিলিয়ে দেয়ার পবিত্র চেতনাকে অনুপ্রানিত করা।
৩. যাকাত আদায়ের দ্বারা শ্রমবিমুখতার আবসান ঘটানো, আত্মশক্তি অর্জন করা এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা। (ইসলামী অর্থনীতির আধুনিক রূপায়ন -৫১৮)

যে সব সম্পদের উপর যাকাত ফরজ:
সাধরণত এমন ধরনের সম্পদেরই যাকাত দিতে হয় যা বর্ধনশীল বা পরিবর্ধনের যোগ্যতা রাখে। এ হিসেবে নিম্নোল্লিখিত সম্পদে যাকাত ফরয হবে। যথা:-
১.নগদ মুদ্রা, সোনা-রূপা। এগুলো বর্ধনশীল না হলেও বর্ধনের যোগ্যতা রাখে, এ দ্বারা ব্যবসা বানিজ্য করে মূল ধন বর্ধিত করা যায়।
২. প্রাণী যা বংশ বিস্তারের মাধ্যমে বর্ধিত হয় তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত হলো প্রাণীগুলো বংশ বিস্তারের জন্য লালন করা হবে এবং বৎসরের অধিকংশ সময় সরকারী চারণ ভূমি থেকে আহার গ্রহণ করে এ রূপ হতে হবে। (আরো বিস্তারিত ফিকাহ কিতাব দ্রষ্টব্য)।
৩. কৃষি জাত উৎপাদনে। কেননা কৃষির মাধ্যমে সম্পদ বর্ধিত হয়। তবে কৃষি জাত উৎপাদনের যাকাত ওশর রুপে আদায় করতে হয়।
মৌলিক ভাবে যাকাত যোগ্য সম্পদ তিন ধরনের যথা: ১. স্বর্ণ রৌপ্য ২. নগদ মুদ্রা।
৩. বিক্রয়ের জন্য নির্ধারিত দ্রব্য বা ব্যবসায়ের পন্য।

যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য শর্তসমূহ:
ব্যক্তি ও সম্পদের সাথে সম্পর্কিত কিছু শর্ত রয়েছে, যা পাওয়া গেলে যাকাত ফরজ হবে, অন্যথায় ফরজ হবে না।

ব্যক্তির সাথে সম্পর্কিত শর্ত হচ্ছে:
১. মুসলমান হওয়া সুতরাং অমুসলিমের উপর যাকাত ফরজ হবে না।
২. আযাদ তথা সাধীন হতে হবে, সুতরাং দাসের উপর যাকাত ফরজ হবে না।
৩. সাবালক হতে হবে, সুতরাং অপ্রাপ্ত বয়স্ক এর উপর যাকাত ফরজ হবে না।
৪. বিবেক সম্পন্ন হতে হবে সুতরাং মাজনুন-পাগলের উপর যাকাত ফরজ হবে না।
৫. সম্পদের পূর্ণ মালিকানা সত্য হতে হবে।

সম্পদ সম্পর্কিত শর্তসমূহ:
১.সম্পদ নিসাব পরিমান হওয়া। (নিসাবের বিবরণ সামনে আসবে)
২. সম্পদ নিত্য প্রয়োজন থেকে অতিরিক্ত হতে হবে।
৩. সম্পদ ঋনমুক্ত হওয়া।
৪. সম্পদ বর্ধনশীল হওয়া। (তাতারখানিয়া ৩/১৩৩,১৩৫, হিন্দিয়া ১/১৭১,১৭২,১৭৪, বাযাযিয়া ১/৩৪০, বাদায়ে ২/৮৮, ফাতওয়া শামী ৩/১৮৪,১৮৯)

যাকাত আদায় করা কখন আবশ্যক হবে এবং কিভাবে বিশুদ্ধ হবে:
পূর্বোল্লোখিত শর্তসহ যখন ব্যক্তির মালিকানায় নিসাব পরিমান সম্পদ পূর্ণ এক বছর অতিবাহিত হবে তখন সেই সম্পদের যাকাত প্রদান করা আবশ্যক হবে। সুতরাং যে যখন নিসাব পরিমান সম্পদের মালিক হবে তখন থেকে চন্দ্র মাস হিসাবে এক বছর পূর্ণ হলেই তার জন্য যাকাত দেয়া ফরজ হবে। এটা রমজান মাসও হতে পারে আবার অন্য মাসও হতে পারে। রমজান মাসের সাথে যাকাত প্রদানের বিষয়ের কোন সম্পর্ক নেই। তবে কেউ যদি রমজান মাসে প্রদানের বিশেষ ফযীলত হাসিলের নিয়্যাতে রমজানে যাকাত প্রদান করে তখন তার জন্য উচিৎ রমজান মাসে সামনের অতিরিক্ত যাকাত প্রদান করা। বৎসর পূর্ণ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও রমজান মাসের অপেক্ষায় যাকাত প্রদান থেকে বিরত থাক উচিৎ নয়। (বাদায়ে ২য়, ১০০ পৃ:, হিন্দিয়া ১ম, ১৮৫ পৃ:, তাতারখানিয়া ৩য়, ১৩৪ পৃ.)



যাকাতের নিসাব:
স্বর্ণের নিসাব হলো বিশ মিছকাল তথা ৭.৫ ভরি/ তোলা = ৮৭.৫১৪ গ্রাম প্রায়। আর রূপার নিসাব হলো দুইশত দিরহাম তথা: ৫২.৫ ভরি/ তোলা, ৬১২.৬০২ গ্রাম প্রায়। এছাড়া বাকী অন্যান্য ব্যবসার সম্পদের নিসাবের ক্ষেত্রে নিসাব হলো স্বর্ণ বা রূপার উক্ত পরিমানের মূল্যের সাথে মিলানো, দুইশত দিরহাম রূপার যে বিক্রয় মূল্য সে পরিমাণ যদি কারো ব্যবসায়ী সম্পদ থাকে তাহলে সেই ব্যবসার মালের উপর যাকাত ফরজ হবে। (আল বাদায়ে ২/১০০, দুররুল মুখতার ৩/২২৪, ফাতওয়া শামী ৩/২২৪)

ব্যবহৃত অলংকারের উপর যাকাতের বিধান:

কারো মালিকানায় যদি সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণের অলংকার থাকে আর সে ঋনী না হয় তাহলে ঐ অলংকারেরও যাকাত দিতে হবে, এই অলংকার চাই ব্যবহৃত হোক বা না হোক। এক্ষেত্রে স্ত্রীর উক্ত পরিমানের অলংকার থাকলে স্ত্রীর উপরই যাকাত ফরজ হবে। সাধারণতঃ অলংকার যারা ব্যবহার করেন, সেসব মা-বোনদের অধিকাংশই ঘর-গৃহস্থালীর কাজকর্মে ব্যাপৃত থাকায় তাদের ভিন্ন কোনো উপার্জন থাকে না। তাই তাদের অলংকারের যাকাত আদায়ের বিষয়ে সমাধান কি? অলংকার ছাড়া যদি তাদের নগদ অর্থ কিংবা আর কোন সম্পদ না থাকে তাহলে এক্ষেত্রে যাকাত আদায়ের দু'টি পদ্ধতি। যথা-

১। তার পক্ষ থেকে স্বামী অথবা তার অনুমতি স্বাপেক্ষে অন্য কেউ আদায় করে দিলে যাকাত আদায় হয়ে যাবে।

২। স্বর্ণের আংশিক প্রদান করে যাকাত আদায় করা অথবা আংশিকের মূল্য বিক্রি করে হলেও যাকাত দিতে হবে। (ফাতওয়ায়ে শামী ২/২৯৮, খাইরুল ফাতওয়া ৩/৩৫৮, তাতারখানিয়া ৩/১৫৪, হিন্দিয়া ১/১৭৮, বাদায়ে ২/১০১)

কিছু স্বর্ণ-রূপা ও কিছু টাকার যাকাত:
কারো নিকট কিছু স্বর্ণ-আর কিছু রূপা অথবা স্বর্ণ আর নগদ টাকা রয়েছে কিন্তু কোনটাই নিসাব পরিমাণ নয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে দেখতে হবে, যে পরিমান স্বর্ণ আছে তা বিক্রি করলে স্বর্ণের বিক্রিত মূল্য ও নগদ টাকা যাকাতের নিসাব হয়ে যায় কি না, যদি হয় তাহলে ঐ ব্যক্তির উপর উক্ত মূল্য ধরেই যাকাত প্রদান করা আবশ্যক হয়ে যাবে। (ফাতওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ: ৬,৫০,১১৭,১২৭, রদ্দুল মুহতার: ২/২৯৬, তাতারখানিয়া ৩/১৫৮, হেদায়া ১/১৮৫,১৮৬

যে পরিমাণ যাকাত প্রদান করতে হবে:
নিসাব পরিমাণ সম্পদের চল্লিশ ভাগের এক ভাগ যা শতকরা আড়াই ভাগ আসে। এই পরিমান ফকীরকে দেয়া আবশ্যক। এ ক্ষেত্রে স্মরণ রাখতে হবে যে, যাকাতের হিসাব ধারনামূলক নয় বরং সম্পদের পরিমান সঠিকভাবে হিসাব করে নিশ্চিত হয়ে উক্ত পরিমান যাকাত আদায় করে দিতে হবে। (বাদায়ে ২/১০৬, তাতারখানিয়া ৩/১৫৫, হিন্দিয়া ১/১৭৯)

স্বর্ণরূপা বিক্রয় মূল্য হিসাবে যাকাত দিতে হবে:
কারো নিকট যদি স্বর্ণ বা রূপার অলংকার থাকে তাহলে তা বর্তমান বাজারে বিক্রয় করতে গেলে যে মূল্য পাওয়া যাবে সেই মূল্যের চল্লিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত দেয়া আবশ্যক। এ ধরনের স্বর্ণ বা রূপা ক্রয় করতে গেলে কত মূল্য আসবে তার ধর্তব্য নেই। (ফাতওয়া মাহমুদীয়া: ১৩/৯৬, দারুল উলুম: ৬/১০৮বাদায়ে ২/১১০, তাতারখানিয়া ৩/১৬৫, হিন্দিয়া ১/১৮০)

ভূমি বা প্লট এর যাকাত:
ভূমি বা প্লট এর যাকাতের বিধান ক্রয়কারীর নিয়ত অনুপাতে হবে। যথা:-
১. যদি ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ক্রয় করে, তাহলে তাকে প্রতিবছর ভূমি বা প্লটের বাজার মূল্য বিবেচনা করে যাকাত দিতে হবে। উদাহরণত: কেউ যদি ৫ লাখ টাকায় ৫ টি প্লট ক্রয় করে। তারপর এক বছরের মাথায় উক্ত প্লটটির বাজার মূল্য ৭ লাখ হয়ে যায়, তাহলে তাকে ৭ লাখ টাকার যাকাত দিতে হবে।
২. যদি নিজের বসবাসের জন্য ক্রয় করে। তাহলে উক্ত প্লটের যাকাত দিতে হবে না। তাছাড়া ব্যবসা বা বসবাসের উদ্দেশ্য ছাড়া এমনিতে ক্রয় করলেও উক্ত জমি বা প্লটের যাকাত দিতে হবে না। (আপকে মাসায়েল আও উনকা হল, ৩য় খন্ড, ২৮৪ পৃষ্ঠা)

দোকানের পণ্যের যাকাত:
দোকান, ডেকোরেশন, আলমারী, তাক ইত্যাদি পন্যের মূল্যের উপর যাকাত ফরজ নয়, বরং সেলস বা বিক্রি করার জন্য যেসব পন্য মওজুদ আছে তার মূল্য যদি নিসাব পরিমান হয় তাহলে তাতে যাকাত ফরজ হবে। যাকাতের হিসাব করার পদ্ধতি হলো, বছরের একটা সময় দিন তারিখ নির্ধারণ করে দোকানে মজুদ পন্যের মুল্যের হিসাব করে দেখা গেল, দশ লাখ টাকার পন্য আছে। অতপর ঐ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর আবার আনুমানিক পন্যের মূল্য ধরে দেখা গেল শুরুতেও যেই পরিমাণ সম্পদ ছিল তা নিসাব পরিমান আবার এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পর যে পন্য আছে তাও নিসাব পরিমান, তাহলে সেই সম্পদের শতকরা আড়াই টাকা যাকাত দিতে হবে। (তাতারখানিয়া ৩য়, ১৬৯পৃ:, হিন্দিয়া ১ম, ১৮০পৃ:, দুররুল মুখতার ৩য়, ১৮২পৃ.)

গাড়ী, লঞ্চ ইত্যাদি বস্তুর যাকাত:
গাড়ী, লঞ্চ, ইত্যাদি কয়েক ধরনের হতে পারে, যদি কেউ গাড়ী বা লঞ্চের ভাড়া দিয়ে বা লাইনে চালানোর অথবা রেন্ট-ই-কারের ব্যবসা করে তাহলে সেই গাড়ী বা লঞ্চের মূল্যের উপর যাকাত ফরজ হবে না। আর যদি কারো দোকান থাকে যেখানে গাড়ী বা লঞ্চ ইত্যাদি বিক্রি করা হয়, তাহলে ঐ গাড়ী বা দোকানের মূল্যের উপর যাকাত ফরজ হবে। (আদ্দুররুল মুখতার ৩য়, ১৯২পৃ:, তাতারখানিয়া ৩য়, ১৯৭পৃ:, কাযী খান ১য়, ১৫০পৃ.)

ব্যাংকে সঞ্চয়কৃত টাকার যাকাত:
কোন ব্যক্তি সঞ্চয়ের জন্য যদি ব্যাংকে টাকা জমা রাখে তাহলে ঋনমুক্ত অবস্থায় যে দিন তার জমাকৃত টাকা নিসাব পরিমান হবে, সে দিন থেকে এক বছর পূর্ণ হলে ঐ টাকার উপর যাকাত ফরজ হয়ে যাবে। (ফাতওয়া আলমগীরি:১ম, ২৭০ পৃ:, মাহমুদিয়া: ৩য়, ৫৭ পৃ.)

ব্যাংক লোনের টাকা দিয়ে তৈরী ফ্যাক্টরীর উপর যাকাত:
যদি কেউ হাজতে আসলিয়া অর্থাৎ নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু যথা বাসস্থান, পরিধেয় বস্ত্র, ঘরের আসবাবপত্র, যানবাহন ইত্যাদি বাবদ ঋণ নেয় তখন দেখতে হবে ঐ টাকা কোথায় লাগানো হয়েছে। যদি ঐ টাকা দিয়ে এমন কিছু করা হয় যার উপর যাকাত আসে না, যেমন-মিল-কারখানা, মেশিনারী বস্তু ইত্যাদি তাহলে ঐ ঋণ যাকাতের নিসাব হতে বাদ দেয়া যাবে না। কারণ, এ ঋণ নিয়ে যেহেতু সম্পদ তথা মিল-কারখানা করা হয়েছে, সুতরাং একদিকে ঋণ আছে অপরদিকে তার পরিবর্তে সম্পদও আছে। মালিক কখনও ঋণ আদায়ে ব্যর্থ হলে এ সম্পদ থেকে ব্যাংক তার প্রাপ্য ঋণ উসুল করে নিবে। সুতরাং এ ধরনের ঋন যাকাতের নিসাব হতে বাদ দেয়া হবে না। কাজেই এধরনের ঋন থাকা সত্ত্বেও কারো নিকট যদি নিসাব পরিমাণ স্বর্ণ-রূপা বা নগদ ক্যাশ কিংবা ব্যবসার মাল থাকে, তাহলে তার উপর যাকাত ফরজ হবে। আর যদি উক্ত ঋণ দিয়ে ব্যবসার মালামাল ক্রয় করা হয়, তাহলে সেই ঋণ হতে চলতি বৎসরের পরিশোধ যোগ্য কিস্তি পরিমাণ যাকাতের নিসাব থেকে বাদ দেয়া হবে। এমনিভাবে প্রতি বছর যে পরিমাণ কিস্তি পরিশোধ করতে হবে সে পরিমাণ ঋণ বাদ দিয়ে বাকী সম্পদের উপর ঐ বছরের যাকাত দিতে হবে। (বাদায়ে ২য়, ৮৬পৃ:, ফাতয়ায়ে রাহমানী: ২য়, ৩৯ পৃ.)

দোকান/বাড়ী ভাড়ার জন্য প্রদত্ত এডভান্স টাকায় যাকাত:
বর্তমানে বাড়ী বা দোকান ভাড়া নেয়ার সময় মোটা অংকের টাকা এডভান্স রাখতে হয়, এডভান্সের এই টাকা বাড়ী বা দোকানের মালিকের হয়ে যায় না বরং যিনি ভাড়া নিচ্ছেন তার মালিকানায় এ টাকা রয়ে যায়। বিধায় নিসাবের পরিমাণ হলে ঐ টাকাসহ যাকাত দিতে হবে। দোকান বা বাড়ী ভাড়া গ্রহনকারী ব্যক্তির উক্ত টাকার যাকাত আদায় করা জরুরী। (আদদুররুল মুখতার: ৩য়, ১৮৪ পৃ:, দারুল উলুম দেওবন্দ: ৬ষ্ঠ,৭৭পৃ:, আহসানুল ফাতওয়া. ৪র্থ, ২৬১ পৃ:, ফাতওয়া শামী ৩য়, ১৭৫ পৃ.)

করয দেয়া টাকার উপর যাকাত:
করয দেয়া টাকা উসূল হওয়ার পর উক্ত টাকার যাকাত দিতে হবে এবং বিগত বছরসমূহে উক্ত টাকার যাকাত না দিয়ে থাকলে সেই যাকাতও দিতে হবে। তবে কেউ যদি করযের টাকা উসূল হওয়ার পূর্বে প্রতি বছর উক্ত টাকার যাকাত দিয়ে দেয় তাহলেও যাকাত আদায় হয়ে যাবে। (আদদুররুল মুখতার:২য়, ২৬৬পৃ:, দারুল উলুম.৬ষ্ঠ, ৪৫, ৭৭ পৃ.)

যাকাত হিসাবে ঋণ মাফ করে দেয়া:
নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক ব্যক্তি যদি কোন গরীবের নিকট করয হিসাবে টাকা পায় তাহলে যাকাতের নিয়তে ঐ করয আদায় করে দিলে যাকাত আদায় হবে না। বরং এ ক্ষেত্রে পদ্ধতি হলো যাকাতের নিয়তে তাকে নগদ টাকা দিয়ে দিতে হবে, অত:পর তার থেকে করয হিসাবে ঐ টাকা আবার নিয়ে নেয়া হবে। (আদদুররুল মুখতার: ২য়, ২৭০পৃ:, আলমগীরী: ১ম, ১৭ পৃ:. রহিমিয়া: ২য়, ১২ পৃ.)

প্রভিডেন্ট ফান্ডের উপর যাকাতের বিধান:
সরকারী কর্মচারীদের বেতন থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ডের জন্য বাধ্যতামূলক যে পরিমাণ টাকা কর্তন করে রাখা হয় সে পরিমাণ অর্থ যেহেতু উত্তোলনের পূর্বে কর্মচারীর মালিকানায় আসে না, তাই সরকারী প্রভিডেন্ট ফান্ডে অর্থ থাকাকালীন তার উপর যাকাতও দিতে হবে না। এ কারণে উক্ত ফান্ডের টাকা পাওয়ার পর বিগত বছরের যাকাতও দিতে হবে না। তবে যদি কর্মচারী উক্ত প্রভিডেন্ট ফান্ডের সঞ্চিত অর্থ অন্য কোন ইন্সুরেন্স কোম্পানীতে স্থানান্তর করিয়ে নেয় সে ক্ষেত্রে উক্ত অর্থ স্বতন্ত্রভাবে বা অন্য যাকাতযোগ্য মালের সাথে যোগ হয়ে নিসাব পরিমাণ হলে যথানিয়মে তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে। (আহসানুল ফাতওয়া, ৪খন্ড, ২৬০পৃষ্ঠা, ফাতওয়া শামী, ২য় খন্ড, ৩০৬)

গরু,বকরী ও মুরগীর ফার্মের উপর যাকাত:
ব্যবসার জন্য গরু, বকরী এমনিভাবে পোল্ট্রি মুরগীর ফার্ম করা হয়। এই ফার্মে লালিত পালিত হয়ে এক পর্যায়ে এই সব প্রাণী বিক্রি করা হয়। এসব প্রাণীর বিক্রি মূল্য যদি নিসাব পরিমান হয় তাহলে উল্লেখিত শর্তসাপেক্ষে তার যাকাত দেয়া আবশ্যক। (ফাতওয়ায়ে উসমানী ২/৩৯)



বীমা কোম্পানীতে জমাকৃত টাকার যাকাত:
বীমাতে যে পরিমাণের টাকা কাজে লাগানো হয়েছে তার উপর যাকাত ওয়াজিব। প্রতি বছর যাকাত আদায় করার সময় নিজ সম্পদের হিসাব করতে হবে। (ফাতওয়ায়ে উসমানী ২য় খন্ড, ৩৯ পৃষ্ঠা)

কোম্পানির শেয়ার এর উপর যাকাত ওয়াজিব:
কোম্পানির অংশ ক্রয় করা জায়েয আছে। এই শর্তে যে যদি তার লেনদেন জায়েয হয় এবং অংশের মূল্যের উপর জাকাত ও ওয়াজিব হবে। (ফাতওয়ায়ে উসমানী ২য় খন্ড, ৩৯ পৃষ্ঠা)

যাদেরকে যাকাত দেওয়া যাবে:
কুরআন শরীফে আট শ্রেণীর লোকদেরকে যাকাত দেয়ার বর্ণনা রয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে:

إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِنَ اللَّهِ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ

অনুবাদ: 'যাকাত হল কেবল ফকির, মিসকীন, যাকাত আদায় কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের জন্য এবং দাস-মুক্তির জন্যে-ঋণ গ্রস্তদের জন্যে, আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।' (সূরা তাওবা,আয়াত:৫৯)

কুরআনে বর্ণিত যাকাত প্রদানের ৮ টি খাত:
মোট ৮ ধরণের ব্যক্তিকে যাকাত দেয়ার কথা কুরআনে বর্ণিত। যথা-

১- গরীব। যার সম্পদ আছে কিন্তু নেসাব পরিমাণ মালের মালিক নয়।
২- মিসকিন। যার একদমই কোন সম্পদ নেই।
৩- ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের জন্য শরীয়ত নির্দিষ্ট যাকাত আদায়কারী আমেল। এটা ইসলামী রাষ্ট্রপ্রধান দ্বারা নিযুক্ত হতে হবে। নিজে নিজে মনে করে নিলে হবে না। {জাওয়াহিরুল ফিক্বহ-৬/৬৯}
৪- নব মুসলিমদের ইসলামের প্রতি মোহাব্বত বাড়ানোর জন্য উৎসাহমূলক যাকাত প্রদান।
এ বিধানটি রহিত হয়ে গেছে। তাই বর্তমানে কোন ধনী নওমুসলিমকে যাকাত প্রদান জায়েজ নয়। {হিদায়া-১/১৮৪, মাআরিফুল কুরআন-৪/১৭১, তাফসীরে মাযহারী-৪/২৩৫}
৫- দাসমুক্তির জন্য। যেহেতু বর্তমানে দাসপ্রথা নেই। তাই এ খাতটি বাকি নেই।
৬- ঋণগ্রস্তের জন্য।
৭- ফী সাবিলিল্লাহ। তথা আল্লাহর রাস্তায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য। এখন প্রশ্ন হল আল্লাহর রাস্তায় কারা আছে? ফুক্বাহায়ে কেরাম বলেন এতে রয়েছেন-
জিহাদরত মুজাহিদরা। তাদের জিহাদের অস্ত্র ও পাথেয় ক্রয় করার জন্য যাকাতের টাকা গ্রহণ করবে। হজ্বের সফরে থাকা দারিদ্র ব্যক্তির জন্য। ইলমে দ্বীন অর্জনকারী দারিদ্র ব্যক্তির জন্য। {আদ দুররুল মুখতার-৩৪৩, হিদায়া-১/১৮৫, রূহুল মাআনী-৬/৩১৩}
৮- সফররত ব্যক্তিকে। যার টাকা পয়সা আছে বাড়িতে। কোন সফর অবস্থায় অসহায়। তাকে যাকাতের টাকা দেয়া জায়েজ। (তাতারখানিয়া ৩য়,১৯৮পৃ:, হিন্দিয়া ১ম,১৮৭পৃ:, বাদায়ে ২য়,১৫৭পৃ.)

যাদেরকে যাকাত দেয়া যাবে না:
১. কাফের।
২. নেসাব পরিমাণ মালের মালিক।
৩. নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের নাবালক সন্তান।
৪. বনু হাশেমের লোক।
৫. মা,বাবা, দাদা,দাদী,নানা,নানী এমনি যত উপরের দিকে যাওয়া হবে।
৬. নিজের মাধ্যমে যারা দুনিয়াতে এসেছে, অর্থাৎ ছেলে-মেয়ে এবং তাদের সন্তানাদি এমনিভাবে যত নীচে যাওয়া যায়।
৭. স্ত্রী অথবা স্বামী
৮. মসজিদ-মাদ্রাসা, পুল, রাস্তা, হাসপাতাল বানানোর কাজে যাকাতের টাকা এমনিভাবে মৃত্যের দাফনের কাজে যাকাতের টাকা দেয়া যাবে না। (হিন্দিয়া ১ম, ১৮৮, ১৮৯পৃ:, তাতারখানিয়া ৩য়, ২০৬পৃ:, আদদুররুল মুখতার ৩য়, ২৯৪, ২৯৫ পৃ.)

ভাই-বোনকে যাকাত দেওয়া:
সহোদর ভাই-বোন যেহেতু উসূল বা ফুরু অর্থাৎ যাকাতদাতার মূল বা শাখা নয়, বিধায় তাদেরকে যাকাত দেয়া যাবে। এমনিভাবে যাকাতের টাকা দিয়ে কাপড় কিনে দিলেও যাকাত আদায় হয়ে যাবে। অন্তরে যাকাতের নিয়্যাত রেখে মুখে তা উল্লেখ না করে এমনিতে দিয়ে দিলেও যাকাত আদায় হয়ে যাবে। অথবা হাদিয়া বলেও দিতে পারবে। এতে অসুবিধা নেই বরং এটাই উচিৎ। তবে যাদেরকে দেয়া হচ্ছে তারা গরীব বা যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হতে হবে। (হিদায়া: ১ম খন্ড ২০৬ পৃষ্ঠা, বাদায়ে: ২য় খন্ড ৪৯ পৃষ্ঠা)

নিজ মেয়ের জামাইকে যাকাত দেয়ার হুকুম:
মেয়েকে বিবাহ দেয়ার পরে তার খোরপোষ ইত্যাদি দেয়া তার স্বামীর দায়িত্ব। আর মেয়ের জামাই যেহেতু উসুল ও ফুরূর মধ্যে শামিল নয়, তাই জামাইকে যাকাত থেকে সাহায্য করা যাবে। নিজের গরীব আত্মীয়-স্বজনকে যাকাত দেয়ার অধিক ফযীলতের কথা হাদীসে উল্লেখ আছে। তবে তাদেরকে যাকাতের মাল হাদিয়া বলে দেয়া নিয়ম, যাতে যাকাতের কথা শুনার কারণে তাদের মনে ব্যথা না লাগে। জামাইকে যাকাত প্রদান করার পর সে উক্ত টাকার মালিক হয়ে নিজের সংসারের যে কোন জরুরতে খরচ করতে পারবে। কিন্তু সরাসরি মেয়েকে বা মেয়ের সন্তানাদিকে যাকাত – ফিতরা দেয়া জায়িয হবে না। মেয়েকে বা তার সন্তানাদিগকে কিছু দিতে চাইলে, তা যাকাত থেকে নয়, বরং আসল মাল থেকে হাদিয়া হিসেবে দিতে হবে। আল বাহরুর রায়েক: ২য় খন্ড ৪২৫ পৃষ্ঠা, আহসানুল ফাতওয়া, ৪র্থ খন্ড ২৬৯ পৃষ্ঠা, মাআরিফুল কুরআন: ৪র্থ খন্ড ৪১২ পৃষ্ঠা।

যাকাতের মাল জনকল্যাণ মুলক কাজে ব্যয় করা:
যাকাতের মাল শুধু মাত্র গরীবদের ব্যক্তি মালিকানায় দিয়ে দিলেই যাকাত আদায় হয়। সুতরাং মসজিদ, হাসপাতাল, রাস্তা-ঘাট, কালভার্ট ইত্যাদি জনকল্যানমূলক প্রতিষ্ঠান কিংবা স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে যাকাতের মাল খরচ করা যাবে না। কারণ এসব ক্ষেত্রে যাকাতের মাল খরচ করার দ্বারা সামাজিক কল্যান সাধিত হলেও ব্যক্তি বিশেষকে উক্ত সম্পদের মালিক বানিয়ে দেয়া হয় না। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত মুআয (রা.) কে বলেছেন, এ সম্পদ ধনীদের থেকে গ্রহণ কর এবং ফকীরদের মধ্যে বিতরণ কর। ধনীদের থেকে গ্রহণ করে ফকীরদের মধ্যে বিতরণ করার কথা দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, তাদেরকে মালিক বানিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় যাকাত আদায় হবে না। (খাইরুল ফাতওয়া: ৩য় খন্ড ৩৮৮ পৃষ্ঠা, তাতারখানিয়া ৩য় খন্ড ১৯৮,২০৮ পৃষ্ঠা, দুররুল মুখতার ৩য় খন্ড ১৭১-১৭৩ পৃষ্ঠা, রদ্দুল মুহতার ৩য় খন্ড ১৭১ পৃষ্ঠা)

সুদ-ঘুষের টাকার যাকাত:
হারাম পন্থায় উপার্জিত সমস্ত টাকাই হারাম। এখন এই হারাম টাকা যদি বৈধ আমদানীর সাথে মিলিয়ে না ফেলে, তাহলে তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। বরং তা প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। আর যদি বৈধ আমদানীর সাথে সেই টাকাকে মিশ্রিত করে ফেলে এবং উভয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য করা সম্ভব না হয়, তাহলে সমুদয় টাকার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে। আর কর্মচারীদের জন্য সেই হারাম টাকা যদি পৃথক থাকে তাহলে সেই হারাম টাকা বেতন হিসেবে নেয়া জায়েয হবে না। আর হালাল টাকার সাথে মিশ্রিত থাকা অবস্থায় তাদের জন্য বেতন নেয়া জায়েয হবে ইমাম আবু হানিফা (র.) এর মাযহাব অনুসারে। (আদদুররুল মুখতার: ২য় খন্ড ২৭ পৃষ্ঠা, ইমদাদুল আহকাম: ২য় খন্ড ৩, ৪ পৃষ্ঠা)

সদকা ও যাকাতের বেশী হকদার কারা:
সদকায়ে ওয়াজিব অর্থাৎ, যাকাত, ফিতরা বা কুরবানীর চামড়ার মূল্য এমনিভাবে নফল দানের সবচেয়ে বেশী হকদার গরীব তালিবে ইলম। তারপর গরীব আত্মীয়-স্বজন, অত:পর সাধারণ গরীব।

যেহেতু ফুকাহায়ে কিরামের বর্ণনা মতে ফযীলতের ক্ষেত্রেও তালিবে ইলমদেরকে দান করলে ৩ গুণ সাওয়াব (অর্থাৎ দান, দ্বীনের সহায়তা ও সদকায়ে জারিয়ার সাওয়াব) পাওয়া যাবে।

পক্ষান্তরে গরীব আত্মীয়দের দান করলে ২ গুণ সাওয়াব (অর্থাৎ দান করা, ও আত্মীয়তা রক্ষা) এবং সাধারণ গরীবদের বেলায় শুধু যাকাত এর সওয়াব পাওয়া যাবে। (সূরা বাকারা, আয়াত, ২৭৩)

সদকাতুল ফিতর এর বিধান ও তা আদায় পদ্ধতি:
ঈদুল ফিতরের দিন যে ব্যক্তির মালিকানায় নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকবে আর তা নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহারের অতিরিক্ত হবে তার উপর সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ হলো গম, আটা, ছাতু বা কিশমিশ দ্বারা প্রদান করলে পৌনে দুই সের আর খেজুর বা যব দ্বারা আদায় করলে সাড়ে তিন সের দিতে হবে। উক্ত বস্তু দিয়ে সদকাতুল ফিতর আদায় করা যাবে। আবার তার সমমূল্য দ্বারাও আদায় করা যাবে। এক্ষেত্রে স্মরণ রাখতে হবে যে, সদকাতুল ফিতরের উক্ত পরিমাণের দান নিজ পক্ষ থেকে এমনকি, নিজের অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের পক্ষ থেকেও দিতে হবে। স্ত্রী বা ঘরের অন্যান্য সদস্যদের পক্ষ থেকে দেয়া ওয়াজিব নয়। গরীব মিসকিন লোককে উক্ত পরিমাণ সম্পদের মালিক বানিয়ে দিতে হবে। এ দেয়াটা ঈদের আগে বা পরের দিন দিলেও আদায় হবে। তবে উত্তম হল ঈদের দিন ঈদের নামাযে যাওয়ার আগে আদায় করা। ফাতাওয়া শামী, ৩য় খন্ড ৩০৯-৩২৬ পৃষ্ঠা, আলবাহরুর রায়েক, ২য় খন্ড, ৪৩৭-৪৪৬ পৃষ্ঠা।

বাংলাদেশে এ বছরের সদকাতুল ফিতরার পরিমান:
বাংলাদেশে প্রতিবছর রমজানে রাস্ট্রীয়ভাবে ফিতরার হার নির্ধারণ করা হয়। সেই হিসাবে এবার জনপ্রতি সর্বনিম্ন ৭০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর ফিতরার হার সর্বনিম্ন ৭০ টাকাই ছিল তবে সর্বোচ্চ ছিল ২ হাজার ৩১০ টাকা।

শেষের প্রার্থনা:
আল্লাহ পাক আমাদের যাকাত, সদকা ও ফিতরার পরিমান নির্ধারণ করে তা সঠিকভাবে আদায় করার মাধ্যমে আমাদের সম্পদকে পবিত্র করার তাওফিক দান করুন। এই পৃথিবীতে সম্পদের যাকাত আদায় না করার ফলে আমাদের গলায় যাতে আমাদের বহু কষ্টার্জিত মাল সম্পদ পরকালে অগ্নিস্বর্প বানিয়ে পেচিয়ে দেয়া না হয় এবং আমরা সেগুলোর নির্মম দংশনের শিকার না হই, সর্বোপরি আমাদের যাতে জাহান্নামের বিভীষিকাময় আজাবে নিপতিত হতে না হয়, আল্লাহ পাক আমাদের সেইভাবে পরিপূর্ণভাবে, বর্ণিত নিয়মে যাকাত আদায় করার মাধ্যমে আল্লাহ পাকের ফরজ হুকুম পালন করার শক্তি ও সাহস দান করুন।



ছবি: অন্তর্জাল।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০২০ সকাল ৯:৪৩
১৯টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×