somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

পবিত্র মিরাজের সময় সংক্রান্ত প্রচলিত গল্পটি সত্যি নয় অলীক : জনৈক লোক স্ত্রীকে মাছ কাটতে দিয়ে গোসল করতে যায়...

২৮ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পবিত্র মিরাজের সময় সংক্রান্ত প্রচলিত গল্পটি সত্যি নয় অলীক : জনৈক লোক স্ত্রীকে মাছ কাটতে দিয়ে গোসল করতে যায়...

ঘটনাটা বেশ প্রসিদ্ধ। তবে লোকমুখে শোনা। তাতে জানা যায়- এক ব্যক্তি মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিরাজ তথা ইসরা বা উর্ধ্বগমনের ঘটনা অস্বীকার করে বসলেন। একদিন তিনি বাজার থেকে মাছ কিনে এনে স্ত্রীকে তা কাটতে দিয়ে নদীতে গোসল করতে গেলেন। নদীর ঘাটে কাপড়চোপড় রেখে গোসলের উদ্দেশ্যে নদীতে নামেন এবং ডুব দিয়ে উঠে দেখেন যে, তিনি অন্য অপরিচিত একটি এলাকায় রয়েছেন এবং আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে, তিনি একজন অপরূপা মহিলায় রূপান্তরিত হয়ে গেছেন।

ঘটনাক্রমে সেদিক দিয়ে নৌকা বেয়ে যাচ্ছিলেন এক সওদাগর। তিনি তাকে দেখে মুগ্ধ হন এবং তাকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে বাড়িতে নিয়ে যান। এরপরে তাদের সংসারে সন্তান-সন্ততির জন্ম হয় এবং তারাও বড় হয়ে যায়।

দীর্ঘ বছর কেটে যায়। সওদাগরের সাথে ঘর সংসার ভালোই চলছিল। কোনো একদিন আবার সেই নদীতে তিনি গোসল করতে যান তিনি। নদীতে নামলেন। কিন্তু ডুব দেওয়ার পর পানির ভেতর থেকে মাথা তুলেই তিনি অবাক। দেখলেন, আবার তিনি আগের পুরুষ ব্যক্তি হয়ে গেছেন। শুধু তাই নয়। আবার ফিরে গেলেন বহু পূর্বের জীবনে। তার সামনে আগের সেই ঘাট। তিনি আবার রূপান্তরিত হয়েছেন পুরুষের অবয়বে।

তার রেখে দেয়া সেই কাপড়চোপড়। সবকিছু ঠিকঠাক। গোসল সেরে তিনি তখন বাড়িতে ফিরে দেখেন, তার স্ত্রী তখনো মাছ কাটছেন। স্ত্রীকে তখন তিনি সব ঘটনা খুলে বলেন এবং তার ভুল বুঝতে পারেন। এভাবে তার মিরাজের ঘটনা বুঝে আসে।

মূলত: এটি একটি অলীক কাহিনী, যা আরেকটি অসার কথার উপর ভিত্তি করে আবিষ্কার করা হয়েছে। তা হল, কিছু মানুষ মনে করে, মিরাজে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাতাশ বছর অতিবাহিত হয়েছে। অর্থাৎ মিরাজে তো নবীজী গিয়েছেন এক রাতে, কিন্তু আল্লাহ তাআলা তখন সময় ও সৃষ্টিজগৎকে স্থির করে রেখেছেন। মাঝখান দিয়ে মিরাজে নবীজীর সাতাশ বছর সময় কেটে গেছে।

আবার এই সাতাশ বছর কেন্দ্রিক আরেক অলীক কাহিনীরও আবিষ্কার করা হয়েছে। সেটি হল, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের সময় জিবরাইল আমীন ও মালাকুল মাউত হাজির হলেন। তখন নবীজী মালাকুল মাউতকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি এত তাড়াতাড়ি কেন এলেন? আল্লাহ পাক তো আমাকে নব্বই বছর হায়াত দিয়েছিলেন। তখন জিবরাইল আমীন বললেন, আপনার জীবনের সাতাশ বছর তো মিরাজের রাতেই অতিবাহিত হয়ে গেছে!

তো আমরা দেখতে পাচ্ছি, একটি ভিত্তিহীন কথাকে প্রমাণ করার জন্য আরেকটি অলীক কাহিনীর আবিষ্কার করা হচ্ছে।

এসকল বর্ণনার কোনো ভিত্তি পাওয়া যায় না। মিরাজের সহীহ ও নির্ভরযোগ্য রেওয়ায়েতগুলোর কোথাও বলা হয়নি যে, মিরাজে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কত সময় অতিবাহিত হয়েছিল। কুরআন মজীদ এবং সহীহ ও নির্ভরযোগ্য হাদীসে বলা হয়েছে যে, এই ঘটনাটি রাতের কোনো একটি অংশে সংঘটিত হয়েছিল। তাতে পুরো রাত লেগেছিল নাকি রাতের কিছু অংশ, না চোখের পলকেই ঘটে গিয়েছিল তা সহীহ হাদীসে বিশদভাবে বর্ণিত হয়নি। আল্লাহ তাআলা তখন সময় ও সৃষ্টিজগতকে স্থির রেখেছিলেন মর্মে হাদীসে এই ধরণের কোনো কথারও অস্তিত্ব নেই।

অতএব মিরাজের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ এবং তার রহস্য ও তাৎপর্য আলোচনার সময় এইসব অমূলক কথাবার্তার আশ্রয় নেয়া খুবই নিন্দনীয় ও সর্বোতভাবে পরিত্যাজ্য। আল্লাহ তাআলার পরিষ্কার আদেশ-
وَ لَا تَقْفُ مَا لَیْسَ لَكَ بِهٖ عِلْمٌ
‘যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই এর পিছনে পড়ো না।’ সূরা ইসরা।

শুধু অনুমান ও ধারণার উপর ভিত্তি করে কোনো কিছু বলা বা প্রচার করা বড়ই অন্যায়। আল্লাহ পাক বিভ্রান্তিমূলক এসব অপপ্রচারণা থেকে আমাদের মুক্ত থাকার তাওফিক দিন।

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:১৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×