মসজিদুল হারাম, পবিত্র মক্কাতুল মোকাররমাহ।
আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন ওয়াচ্ছালাতু ওয়াসসালামু আলা রাসূলিহিল কারিম। ওয়া আ'লা আ-লিহী ওয়া আসহাবিহী আজমাঈ-ন।
সময়ের আবর্তনে বছর ঘুরে আসে হজের মওসুম। প্রতিবছর পালিত হয় পবিত্র হজ। চেনা পৃথিবীর জানা অজানা হাজারও জনপদের লক্ষ লক্ষ বাইতুল্লাহর মুসাফিরের মিলনমেলা বসে মক্কাতুল মোকাররমায়। মদিনাতুল মোনাওওয়ারায়। পূর্ব দিগন্তের দেশ চীন, জাপান, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার বিপুল সংখ্যক মানুষ যেমন ছুটে আসেন হজের এই মিলনমেলায়, ছুটে আসেন সাইবেরিয়ার বরফাচ্ছাদিত জনপদের অসংখ্য মানুষেরাও। আবার একইরকম ছুটে আসেন আফ্রিকার ধুসর মরু অঞ্চলের দেশ তাঞ্জানিয়া, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, সুদান, লিবিয়ার কালো মানুষের দলও। প্রাণের টানে হৃদয়ের খোরাক নিতে ছুটে আসেন সুদূর ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার মত ভূখন্ডের জনগণও। বস্তুতঃ ভাষা, বর্ণ ও দেশের সীমানা পেরিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের এমন চোখ জুড়ানো, হৃদয়ে শিহরণ তোলা অপরূপ মিলনমেলা পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি আর আছে কি? নেই। এককথায় নেই। নেই বলেই তো হজ অনন্য। হজ অসাধারণ। হজ তুলনাবিহীন। এ কারণেই তো হজের সফরকে ঘিরে হাজার হাজার বছরের দীর্ঘ পথপরিক্রমা। হজের গোটা সফরটাই অফুরন্ত রহমতে ভরপুর। মহান রব্বে কারিমের ডাকে সারা দেওয়ার এমন অভাবনীয় এবং দুর্লভ সুযোগ এ কারণেই তো দ্বিতীয়টি আর কল্পনা করা যায় না।
এই যে দিকদিগন্ত হতে পাগলপাড়া হয়ে দল বেধে মানুষেরা ছুটে যান হজের সফরে- তারা কেন যান? কী এমন অমৃত সুধা রয়েছে হজের সফরকে ঘিরে, যার সন্ধানে ছুটে যেতে হয় তাদেরকে? আপন আবাস-নিবাস, পরিবার-পরিজন সবকিছুকে পেছনে ফেলে কীসের আশায়, কোন নেশায় বিভোর হয়ে তারা বেরিয়ে পড়েন হজের অমলিন এই সফরে? কত মানুষ তো হজের দীর্ঘ সফর শেষে আর ফিরেও আসেন না। আসতে পারেন না। আলোকিত এই সফরই হয়ে যায় তাদের জীবনের শেষ সফর। চূড়ান্ত সফর। পরকালের অন্তহীন সফরের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় তাদের হজের সফর। এই যে এত ঝুঁকি, এত কোরবানি, এত ত্যাগ, অনিশ্চয়তায় ভরপুর দীর্ঘ সফরের সীমাহীন ক্লান্তি, শারীরিক মানসিক প্রচন্ড কসরত, খাদ্য পানীয়ের কষ্টের সমূহ সম্ভাবনাসহ বিবিধ ধকল সহ্য করেও মানুষেরা ছুটে যান- কেন তারা ছুটে যান বাইতুল্লাহর পানে? বাইতুল্লাহর সান্নিধ্যে কী এমন দৌলত লাভ করেন তারা, যার জন্য সকল কিছুকে তুচ্ছ করতেও দ্বিধা করেন না এতটুকু পরিমান?
আসলে হজের পুরো সফরটিই তো ত্যাগের মহিমায় নিজেকে উদ্ভাসিত করতে আলোকিত পথে চলার স্নিগ্ধতায় ভরপুর অনন্য এক উপমা। বাইতুল্লাহর মুসাফির ঘর থেকে যখন বেরিয়ে যান, সাথে করে কী নিয়ে যান তিনি? সংসার, সন্তান, স্বজন আর সম্পদ - সবকিছুকে পেছনে ফেলে তিনি ছুটে চলতে থাকেন নিঃস্ব থেকে নিঃস্ব অবস্থায়। নিজেকে তিনি ভাবতে থাকেন নিঃস্ব ও অসহায়। ফকির যেমন পথপানে চলতে শুরু করেন দীনহীনভাবে; হজযাত্রীও তেমনই ভাবেন নিজেকে। উদ্দেশ্য একটাই, মহান প্রতিপালকের করুণা ভিক্ষা করা। জ্বি, মহান প্রতিপালকের করুণার ভিখারী হয়েই ছুটতে থাকেন তিনি। দামী পোশাক আষাক সবকিছু ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে গায়ে জড়িয়ে নেন ধবধবে সাদা কাপড়। যে কাপড়ে অন্তিম যাত্রায় তিনি যাত্রী হবেন অনন্ত পথের; ঠিক যেন তেমই ধবল ধুসর শ্বেত কাফনের কাফন থাকে তার গায়ে। হজের সফরের যাত্রী যেন শুধু বাইতুল্লাহরই যাত্রী নন, তিনি বরং তার সামনে যেন স্পষ্টতই প্রত্যক্ষ করতে থাকেন অফুরন্ত অন্তর্লোকের দীর্ঘ দীঘল বিস্তির্ণ এক যাত্রাপথ। যে পথের শেষ প্রান্ত মিশে গেছে জান্নাতের পবিত্র আঙিনায়। যে পথ মিশে গেছে এই ক্ষণস্থায়ী জীবনের সীমানা পেরিয়ে পরকালের অসীম, অন্তহীন, অফুরন্ত, আসল এবং সত্যিকারের জীবনের সাথে।
এ কারণেই তো হজের সফর তুলনাবিহীন। এ কারণেই তো হজের সফর উপমাবিহীন। এ কারণেই তো হজের সফরের ক্লান্তি শ্রান্তি আর শত কষ্টকে হাসি মুখে বরণ করে নিতে দ্বিধা থাকে না বাইতুল্লাহর মুসাফিরের। বাইতুল্লাহর মুসাফির তাওয়াফ করেন বাইতুল্লাহর পবিত্র চত্বরে। পবিত্র বাইতুল্লাহকে কেন্দ্র করে বাইতুল্লাহর চতুর্দিকে; কিন্তু তার অন্তর পড়ে থাকে এই ঘরের যিনি মালিক, মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার কাছে। তাঁর দয়া এবং ক্ষমালাভের প্রত্যাশায় ব্যাকুল বেকারার অন্তরে বাইতুল্লাহর মুসাফির নিজেকে উৎসর্গ করেন। কালো গিলাফের দিকে তাকিয়ে তার চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠে। আসলে তখনও তার অন্তরে নদীর মতই নিরবধি বহমান থাকে দয়াময় রহমানের দয়াপ্রাপ্তিরই আকুল আকুতি। তিনি চক্করের পর চক্কর ঘুরতে থাকেন। পবিত্র বাইতুল্লাহকে কেন্দ্র করে। কিন্তু তার এই ঘোরাঘুরির একটিই কারণ, মহান রব্বে কারিমের রহমত আর ক্ষমালাভের উদগ্র আগ্রহ আর অপ্রতিরোধ্য প্রত্যাশা তাকে অস্থির ব্যাকুল করে রাখে। হজের প্রতিটি আমলের পেছনেই বাইতুল্লাহর মুসাফিরের এই জাগ্রত অনুভূতি নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যায়। যে করেই হোক, প্রিয়তম রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাতলানো পথে হেটে মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার রাজি, খুশি ও সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। এই আরাধনা, এই উপলব্ধি ও অনুভূতি নিরন্তর তাকে আগলে রাখে। পুরো সফর জুড়ে।
নিয়মের পরিক্রমায় প্রতি বছরই আহবান আসে মহিমান্বিত হজের মহান সফরের। বাইতুল্লাহ যিয়ারতের সে পয়গাম আল্লাহ এবং রাসূল প্রেমিক বান্দা বান্দিদের অন্তরে বইয়ে দেয় আনন্দের হিল্লোল। সৌভাগ্যবানরা ছুটে যান মহিয়ানের সেই আহবানে সারা দিতে। আর আমরা যারা অক্ষম, স্বশরীরে হাজির হতে পারি না রবের ঘরের সান্নিধ্যে, ছুটে যেতে পারি না প্রিয়তম হাবিবের শহর মদিনাতুল মুনাওওয়ারা পানে; হজের মৌসুম এলেই অস্থির হয়ে ওঠে আমাদেরও বেদনা বিদুর অন্তর। উদ্বেলিত ব্যাকুল হয়। আকুলিবিকুলি আর হাহাকারের স্পষ্ট ক্রন্দনগুলো আওয়াজ করে ওঠে আমাদেরও বুকের পাটাতনে। এমন পাগলপারা কেন হয় মন? এমন ছুটোছুটি, এমন অস্থিরতার ঝড় কেন বয়ে যায় বুকের পাঁজরে? হৃদয়জুড়ে কান্নার এমন অস্ফুট ধ্বনিদের আনাগোনা কেন এই সময়টায়? চোখের কোনে অশ্রুর এমন শ্রাবন প্লাবন কেন বয়ে যায় অনন্য এই মুহূর্তগুলোয়? এই সময়টাতে হাজীদের 'লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক' ধ্বনি শ্রবনে কেন হতচকিত হয়ে ওঠে হৃদয়-মন? নিজের অজান্তেই অন্তর কেন পড়ে থাকে প্রিয়তম রবের ঘরের পানে? মক্কাতুল মোকাররমায়! প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্মৃতিধন্য মদিনাতুল মোনাওওয়ারায়! রওজায়ে আতহারের কিনার ছুঁয়ে!
বারাকাহপূর্ণ হারামাইন শরীফাইনে মন অবশ্য পড়ে থাকে সারাক্ষণই। সারাটি বছরজুড়েই। কিন্তু হজের সময়টা কেন যেন সম্পূর্ণই ভিন্ন। স্মৃতির পাতাগুলো একে একে খুলে যেতে থাকে এই সময়টাতে। চোখের সামনে থেকে সরে যেতে থাকে অদৃশ্য সকল অন্তরাল। হাজার হাজার মাইলের পথের দূরত্ব আর কালের ব্যবধানগুলোও যেন অপসৃত হতে থাকে একে একে। মনে হয় যেন আমিও রয়েছি হজের সফরের প্রতিটি কাফেলার সাথে। হাজী সাহেবানদের মুঠি মুঠি দয়া কুড়িয়ে নেয়ার অনন্য সফরের আমিও যেন প্রত্যক্ষদর্শী। যেন আমিও তাওয়াফ করছি হাজীদের সাথে বাইতুল্লাহর চত্বরে। আমিও সায়ী করে চলেছি সাফা মারওয়ার আলো ঝলমলে প্রান্তরগুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে। আমিও যেন প্রতিনিয়ত সিজদায় মস্তক অবনত করে চলেছি স্বশরীরে বাইতুল্লাহর সামনে। অশ্রুর নজরানায় আমিও যেন নিজেকে শুদ্ধ- পরিশুদ্ধ-পরিস্নাত করার চেষ্টা করছি মাকামে ইবরাহিমের পাশে। যেন আমিও নিজের ভেতরে নিজেকে ভেঙ্গেচূড়ে একাকার করে চলেছি সতত, অবিরাম - প্রিয়তম রবের একান্ত সান্নিধ্য আর নৈকট্যপ্রাপ্তির বুভূক্ষু প্রত্যাশায়।
মনে হতে থাকে, একেকটি তাওয়াফ শেষে বাইতুল্লাহর মুসাফিরদের সাথে আমিও যেন পিপাসার্ত, তৃষ্ণার্ত! তৃষ্ণার্ত চাতকের মত আমারও যেন কতকালের প্রতীক্ষা প্রিয় পানীয় জমজম পান করার! অপেক্ষার প্রহর গুনে গুনে অবশেষে! পেটপুরে আমিও পান করার সৌভাগ্য লাভ করছি জগতের শ্রেষ্ঠ সুমিষ্ট আবে জমজম! মনে হতে থাকে, আমারও তিরোহিত হচ্ছে শারীরিক সব ধকল আর অবসন্নতা! ক্ষুধা পিপাসা একইসাথে নিবারণের এমন দুর্লভ পানীয় পৃথিবীতে আর কোথাও আছে কি? নেই। নেই, প্রিয় বন্ধু, এমনটি আর নেই। তাওয়াফ শেষে এই পানীয় পান করার প্রশান্তি আর পরিতৃপ্তি কি ব্যক্ত করে বুঝানো যায়? হৃদয় মন জুড়িয়ে যাওয়া সেই অনুভূতি শব্দের গাঁথুনিতে প্রকাশ করার ক্ষমতা কি কোন কবিরও থাকে? হয়তো আছে, হয়তো নেই। আমার তো নেই!
আলহামদুলিল্লাহ। ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার অপরিসীম দয়া এবং মেহেরবানিতে এই বাইতুল্লাহরই মুসাফির হওয়ার তাওফিক একটিবারের জন্য হলেও প্রাপ্ত হয়েছিলাম। কত বছর পূর্বে! সেই ২০১৭ সালে! কিন্তু প্রিয়তম রবের ঘরের চৌকাঠ ছোঁয়ার সেই স্মৃতিগুলো আজও অমলিন! সেই স্মৃতিরা প্রতিনিয়ত আজও টেনে নিয়ে যায় প্রিয় বাইতুল্লাহর শহর মক্কাতুল মোকাররমায়, প্রিয়তম রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্মৃতিঘেরা মসজিদে নববীর আলো ঝলমলে প্রাঙ্গণে, মদিনাতুল মোনাওওয়ারায়। হজের সফর শেষে ফিরে এসেছি সেই কবে, কিন্তু মন পড়ে আছে আজও সোনালি সেই সফরের স্মৃতিময় বিমুগ্ধতায়! মন বলে ওঠে, আবার যদি যেতে পারতাম একবার! হৃদয় হাহাকার করে ওঠে, আরও কিছুটা সময় যদি হেটে আসতে পারতাম মক্কার অলিতে গলিতে! হারামাইন শরিফাইনের পথের আরও কিছু ধূলো যদি গায়ে মেখে আসতে পারতাম! আরও ক'টা দিন যদি কাটিয়ে আসতে পারতাম রওজায়ে আতহারের নিবিড় সান্নিধ্যে! মিনা, মুযদালিফা, আরাফাতের আলোকিত প্রান্তরে যদি আরও কিছুটা সময় ঘুরে আসার সুযোগ পেতাম! আবারও যদি হাজিরা দিয়ে আসতে পারতাম জান্নাতুন মা'লা, জান্নাতুল বাকির আলোকিত কবরগাহে!
শারে' ইবরাহিম, শারে হিজরাহ - ইবরাহিম আলাইহিস সালাম রোড, হিজরাহ রোড ধরে ধরে আনমনে হেটে চলার সে কি হৃদয় ছোঁয়া মুগ্ধতা! হাটছি এই সময়ে অথচ মন পড়ে আছে ১৪০০ বছরের পুর্বেকার আলোকিত সেই ক্ষণে! প্রিয় রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হেটে চলেছেন সন্তর্পনে! ধীর পদবিক্ষেপে! মদিনার পানে! রাতের আঁধার গোটা চরাচরে, চারদিকে! সঙ্গী একমাত্র প্রিয় সহচর আবু বাকার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু! প্রচন্ড আত্মবিশ্বাস আর মহান আল্লাহ তাআ'লার রহমতের উপরে পূর্ণ ভরসায় দু'জনের দৃপ্ত পদচারণা। আমিও যেন সঙ্গ দিচ্ছি আনমনে! অবশেষে, চলতে চলতে গারে সাওরের নির্জন গুহাভ্যন্তরে ক্ষণিকের জন্য আশ্রয় গ্রহণ! অতঃপর পুনরায় পথচলা! মদিনার দিকে! উঁচুনিচু পাহাড়ি পথে!
মন কেঁদে ওঠে, জাবালে নূর, জাবালে রহমতের পবিত্রতার ছোঁয়ায় আবারও যদি সিক্ত করতে পারতাম নিজেকে! আরও কিছুটা সময় যদি হেটে আসতে পারতাম রক্তঝড়া স্মৃতিময় তায়েফের পথে প্রান্তরে! আরও কিছু সময় যদি দাঁড়াতে পারতাম, মা হালিমা সাদিয়া রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহার মায়াময় সেই ছোট্ট ঝুপড়ি ঘরটির পাশে! যে ঘরের পাশেই হাতছানি দিয়ে ডাকতে থাকে সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত চমৎকার ছোট্ট মাঠ! আশেপাশে সারি সারি কাঁটাযুক্ত বাবলা গাছের সমারোহ! বাবলার ছায়াঘেরা সেই মাঠেই তো খেলা করতেন পিতৃহীন শিশু মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আহ, কী অসাধারণই না ছিল সেই দৃশ্যগুলো!
উহুদ! প্রিয় জাবালে উহুদ! এই উহুদ প্রান্তরের এক পাশেই তো শুয়ে আছেন নবীজীর প্রিয় পিতৃব্য একান্ত বিশ্বস্ত সহচর সাইয়িদুশ শুহাদা আমির হামযা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু! যদি সৌভাগ্য হতো তাঁর শাহাদাতগাহের পাশে আরও কিছুটা সময় দাঁড়ানোর! এই তো সেই উহুদ! যেখানে দাঁত ভেঙ্গে গিয়েছিল প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর! তাঁর পবিত্র দান্দান মোবারক শহীদ হওয়ার হৃদয় চূরমার করে দেওয়া সেই উহুদ! এই উহুদেই তো রক্তাক্ত, আহত এবং জখম হয়েছিলেন প্রিয়তম রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
জানি না! কিছুই জানি না, কবে আবার যেতে পারবো প্রিয় নবিজীর দেশে! কবে সাগরের অথৈ সলিলের উষ্ণ পরশে সিক্ত হবে ক্ষুদ্র হৃদয়ের সরোবরে কুলুকুলু রবে বয়ে যাওয়া অবিরাম স্বপ্নের এই ঝর্ণাধারা! অন্তরের গহীনে লুকিয়ে থাকা ছোট ছোট প্রত্যাশারা কবে ডানা ঝাপটে উঠবে, পূরণ হবে বাইতুল্লাহর পানে ছুটে যাওয়ার জমিয়ে রাখা প্রত্যয় - কিছুই জানা নেই! প্রিয়তম রব্বে কারিম, মহান মালিক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার একান্ত অনুগ্রহ, অনিঃশেষ অনুকম্পা আর অফুরন্ত করুণাই শুধু ভরসা!
মসজিদে নববী, মদিনাতুল মোনাওওয়ারাহ।
সকল প্রশংসা মহান রব্বুল আলামীনের জন্য এবং সালাত ও সালাম তাঁর প্রিয়তম রাসূলের প্রতি। শুরুতে এবং শেষে। আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন ওয়াচ্ছালাতু ওয়াসসালামু আলা রাসূলিহিল কারিম।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০২৩ বিকাল ৫:০৩