
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ইতিহাসের অন্যতম বড় গণবিক্ষোভ দেখা গেলো শনিবার। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর উপদেষ্টা ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে পুরো দেশ। ‘ট্রাম্পের পদত্যাগ চাই’, ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’, ‘আমাদের কোনো রাজা নেই’—এমন সব স্লোগানে গর্জে উঠেছে দেশটির ৫০টি অঙ্গরাজ্য।
অধিকারকর্মী, নারী অধিকার সংগঠন, শ্রমিক ইউনিয়ন, এলজিবিটিকিউ-প্লাস সম্প্রদায়সহ প্রায় দেড় শতাধিক গোষ্ঠী মিলে এই ‘হ্যান্ডস অফ’ নামের আন্দোলন গড়ে তোলে। ১ হাজার ৪০০–এর বেশি সমাবেশে অংশ নেয় প্রায় ছয় লাখ মানুষ।
বিক্ষোভকারীদের মূল দাবি—
✔️ ধনকুবেরদের দখলদারি ও দুর্নীতি বন্ধ
✔️ সামাজিক নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিমা কর্মসূচিতে বাজেট ছাঁটাই রোধ
✔️ সংখ্যালঘু, অভিবাসী ও ট্রান্সজেন্ডারদের ওপর হামলা বন্ধ
বিশেষ করে ‘ডিওজিই’ নামের নতুন প্রশাসনিক ইউনিটের মাধ্যমে সরকারি কর্মচারী ছাঁটাই ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে কাটছাঁট নিয়ে ক্ষোভ চরমে পৌঁছেছে।
রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে, মিনেসোটা, নিউইয়র্ক থেকে শুরু করে ফ্লোরিডা, টেক্সাস—প্রতিটি শহরে দেখা গেছে ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে মানুষের ঢল। কেউ কেউ ইউক্রেন ও ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশনীতির বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ করেছেন।
এমনকি ইউরোপেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে—লন্ডন, বার্লিন, প্যারিস, ফ্রাঙ্কফুর্ট ও লিসবনের রাজপথেও জনতার ঢল নামে।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতারাও সরব হয়েছেন এই বিক্ষোভে। প্রতিনিধি জেমি রাসকিন বলেন, “যিনি মুসোলিনির মতো রাজনীতি করেন এবং হোভারের মতো অর্থনীতি সামলান, তাঁর অধীন কোনো ভবিষ্যৎ নেই।” ইলহান ওমর ও ম্যাক্সওয়েল ফ্রস্টও জানিয়েছেন, এ লড়াই শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি মানবিক অধিকার রক্ষার সংগ্রাম।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও জনগণকে সতর্ক করেছেন, “গণতন্ত্র রক্ষায় এখনই সময়। প্রস্তুত হতে হবে আত্মোৎসর্গে।”
গণতন্ত্র, মানবতা ও সামাজিক ন্যায়ের পক্ষে এই বৈশ্বিক প্রতিরোধ কি শেষ পর্যন্ত পরিবর্তন আনবে? সময়ই বলবে। তবে এতটুকু নিশ্চিত—নাগরিকদের কণ্ঠ এখন আর নীরব নয়। জালিমের জুলূম যখন সীমাতিক্রম করতে থাকে তখন ধরে নিতে হয় তার পতন অত্যাসন্ন, ঠিক রাতের আঁধার যত বাড়তে থাকে প্রভাতের তত কাছে এগিয়ে আসার মত।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:২৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




