somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পতিতানুচ্ছেদ

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাংবাদিকতার কাজে যে আমাকে কোথায় কোথায় যেতে হচ্ছে তা বলে বুঝাতে পারব না।এখন এক পতিতার সামনে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে বসে আছি,আর তার থেকেও বেশি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আমাকে ফেলে দিয়েছে তার একটা প্রশ্নে!
প্রশ্নটা ছিল এমন,আমাদের যদি ভোগের লোক না থাকত তাহলে কি সেই পতিতা সমাজ তৈরি হতো? তাহলে কেনো শুধু আমাদের বাঁকা চোখে দেখে সমাজ? যে দিনে বাঁকা চোখে দেখে,সেই রাত্রে সর্বস্ব সোঁপে দিচ্ছে!!
তাহলে কেনো এই আড়াল আড়াল খেলা?
.
আজ আমি বড় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আঁটকে পড়েছি,কিন্তু পতিতার উপর একটা প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করতে হবে এবং একটা প্রবন্ধও লিখতে হবে।আর এ দায়িত্ব এডিটর স্যার আমার উপর দিলেন কারন আমার মতো নাকি খুব কম লোকই কথা সাজাতে পারে।কি এক বিপদ বলুন তো?
.
২৫-২৮ বছর বয়স হবে মেয়েটার,প্রথমে ঢুকতে সে আমাকে হয়ত খদ্দের ভেবে নিয়েছিল।কিন্তু ওর ভাবনা শেষ হওয়ার আগেই পরিচয় দিয়ে দিলাম এবং আসার কারনও বলেদিলাম।
অবশ্য একজনের জন্য যতটা সময়ে যতটা টাকা নেওয়া হয় তা দিয়েছি।আমি তিনটা প্রশ্ন করব,উত্তর দিলে দিবেন নাহলে না!
আমি চলে যাব।
"আচ্ছা,প্রশ্ন করুন",ভাবলেশহীন মুখ নিয়ে বললেন
-এ পথে কেন?
-পেটের দায়ে
-কিভাবে?
-দু্রসম্পর্কের মামার লগে ৪ বছর আগে শহর দেখতে আইছিলাম,মামা আমারে এইখানে বেঁইচে দিয়ে গ্যাছে
-মুক্তির ইচ্ছা হয়?
-প্রথম প্রথম হতো,এখন হয় না।
-কেনো হয় না।
স্যার আফনার তিনটা প্রশ্ন হইয়ে গ্যাছে।
বেকুব বনে গেলাম,ওহো তাই তো।উঠে এলাম ওখান থেকে।
.
আমার লেখাটা ছিল এ বিষয়ে কিছুটা এমন:
পতিতা!!একি প্রথম শব্দেই নাক সিঁটকালেন।যায় হোক,বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের আর্থ সামাজিক অবকাঠামোতে অনেক ধরনের পেশা তৈরি করে দিচ্ছে।পতিতাবৃত্তি তারমধ্যে একটা।৯৯% পতিতার 'পতিতা' হওয়ার পেছনে কারন থাকে।বাকি ১% শখের বশে।এ বিষয়ে বেশি বলব না,তবে পেছনে গল্প আছে এমনের সংখ্যায় বেশি।তবে এ সমাজ এ বৃত্তিকে নিচু চোখে দেখলেও নির্মূলে আগ্রহী নই।কারন এ বৃত্তি দিনে যারা নির্মূল কর্মসূচি আর 'তারাও মানুষ' নামক মানববন্ধনে যুক্ত হয়,শেষরাত্রে তারা সঁপে দিতে সেখানেই যায়।একদলের এ বৃত্তির চাহিদা আছে,তাদের জন্যই তৈরি হয়েছে এ বৃত্তি এবং তাদের জন্যই টিকেও আছে।জানেন,যদি পুরুষসমাজ বেপর্দার নারী গ্রহণ না করত,তাহলে বেপর্দা থাকত না।তেমনই একদল পুরুষ চাই না এ বৃত্তি বন্ধ হোক,তাই টিকে আছে "পতিতাবৃত্তি"। কোন মেয়েই পতিতা হয়ে জন্মায় না । আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে অর্থনৈতিক সমস্যা , পক্ষপাতদুষ্ট সামাজিক নিয়ম, পারিবারিক শিক্ষা ও মূল্যবোধের অভাব ইত্যাদি পরিস্থিতির স্বীকার হয়েই একটা মেয়ে বেছে নিতে বাধ্য হয় এই ঘৃণিত পতিতার জীবন । এটা কোন মেয়েরই কাম্য জীবন নয় । একটা মেয়ের পতিতা হয়ে উঠার পেছনের কাহিনী যাই হোক এটা ঠিক যে কোন মেয়েই স্বেচ্ছায় পতিতার জীবন বেছে নেয়না । কিন্তু প্রায় সব সময়ই যে বা যারা এই মেয়েটিকে অন্ধকার পতিতার জীবনে ঠেলে দিচ্ছে তারা রহস্যময় ভাবে থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।মোদ্দা কথা এ সমাজ চাই না এ প্রথা বিলুপ্ত হোক।
আজ সমাজে 'পতিতা'দের শুধু নিচু চোখে দেখা হয়,এমনকি তারা মৃত্যুর পর মাটি পর্যন্ত পাই না।তাহলে যে সমাজের জন্য আজ তারা টিকে আছে তাদের কেনো মাটি নসিব হই?আমার ছোট ছেলেটা সেদিন পড়ছিল,"পাপীকে নই,পাপকে ঘৃণা করো"।
.
সমাজের বর্তমান অবস্থা,"সর্প হয়ে দংশন করে,ওঝা হয়ে বিষ নামাতে আসে

লেখক:নাঈম আশফাক
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৫২
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×