somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বের কিছু রহস্যময় স্থান (ছবিসহ) রিপোস্ট। [ইন্টারনেট থেকে অনূদিত]

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এই বৈচিত্র্যময় দুনিয়ায় রহস্যের শেষ নেই। এ ধরার ভুকে কত যে অদ্ভুত জায়গা রয়েছে যা দেখে রীতিমত আতকে উঠতে হয়। আল্লহ তায়ালা নানা চিত্র বৈচিত্র্য দিয়ে এই ব্রহ্মাণ্ডকে সাজিয়েছেন। পৃথিবীর অদ্ভুত এবং রহস্যমহী কিছু জায়গা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার লোভ সামলাতে পারলাম না।
১। এন্টার্কটিকার রক্ত প্রবাহঃ

আমরা সবাই জলস্রোত অথবা ঝর্না প্রবাহ দেখেছি। রক্তপ্রবাহ দেখা তো দূরের কথা এ নিয়ে চিন্তার অবকাশ না হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এন্টার্টিকা মহাদেশে বরফের মধ্যে এমনি একটি রক্ত প্রবাহ রয়েছে যা থেকে অবিরত রক্তবর্নের তরল প্রদার্থ বের হচ্ছে। তুষারবীদ এবং অনুজীব বিশেষজ্ঞরা এ রক্তপ্রবাহের কারন অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছেন। তাদের ভাষ্যমতে, বরফের নিচে ভূগর্ভস্থ একটি লেক রয়েছে যা প্রচুর আয়রন সমৃদ্ধ হওয়ায় এর জল রক্তবর্ণ ধারণ করেছে।



২। ডোর টু হেল, তুর্কমেনিস্তানঃ

ডোর টু হেল তুর্কমেনিস্তানের ছোট শহর দারভাজের কাছাকাছি অবস্থিত একটি অগ্নিস্তুপ। ৬০ বছর আগে ভুতত্ববিদগন গ্যাস অনুসন্ধানের কাজে একটি কুপ খনন করে, এমন সময় বিষাক্ত গ্যাসীয় খুব বড় একটি ভূগর্ভস্থ গুহা আবিষ্কার করলেন। তারা কয়েক ঘন্টার মধ্যে গ্যাস পুড়িয়ে ফেলার আশায় আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয় যাতে এর বিষাক্ততা ছড়িয়ে না পড়ে। কিন্তু সে আগুন আজ অবধি আর নেভেনি। ৫২৫ ফুট ব্যাস এবং ৬৫ ফুট গভীরতা বিশিষ্ট এই কূপ কোন অগ্ন্যুত্পাত অথবা ভূতাত্বিক কারনে সৃষ্ট হয়নি। পঞ্চাশের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের গ্যাস অনুসন্ধান কাজের অংশ হিসেবে তারা কূপ খনন করতে গিয়ে এই গ্যাসীয় গুহার সন্ধান পান।





৩। বারমুডা ট্রায়াঙ্গলঃ

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল যা শয়তানের ত্রিভূজ নামেও পরিচিত, আটলান্টিক মহাসাগরের একটি বিশেষ অঞ্চল, যেখান বেশ কিছু জাহাজ ও উড়োজাহাজ রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হওয়ায় কথা বলা হয়। অনেকে মনে করেন ঐ সকল অন্তর্ধানের কারণ নিছক দূর্ঘটনা, যার কারণ হতে পারে প্রাকৃতিক দূর্যোগ অথবা চালকের অসাবধানতা। আবার চলতি উপকথা অনুসারে এসবের পেছনে দায়ী হল কোন অতিপ্রকৃতিক কোন শক্তি।

১৫ই ডিসেম্বর ১৯৪৫,ফ্লাইট নাইনটিন (ইউ এস নেভী-র পাঁচটি ‘বি এম অ্যাভেন্জার’স বিমানের একটি দল) যা একটি প্রশিক্ষণ মিশনে যাওয়ার জন্য উড্ডয়নের চার ঘন্টা পর রহস্যজসকভাবে নিখোঁজ হয়। এর বিশ মিনিট অপর একটি উদ্ধারকারী বিমানও ঠিক একই জায়গা থেকে নিখোঁজ হয়। ব্যাপক খোঁজের পরও এসব বিমানের কোনো ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়নি। গত ৬০ বছর ধরে এই রহস্য আরো ডাল-পালা মেলেছে যে,কি এমন শক্তি যা এমন কান্ড ঘটালো? মূলত এই বিষয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে ফ্লাইট নাইনটিন এর এই রহস্যজনক নিখোঁজের পর থেকেই। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল বা শয়তানের ত্রিভুজের রহস্য এমনই। এখানে কোনো বিমান কিংবা জাহাজ হারিয়ে গেলে তার ধ্বংসাবশেষের কোনো চিহ্নও খুঁজে পাওয়া যায় না। এমনকি এখানে কোনো মৃতদেহও ভাসতে দেখা যায় না। কোনো কিছুরই নিদর্শন খুঁজে পাওয়া যায় না। এই ত্রিভুজ অঞ্চলে এমন অদ্ভুতভাবে হারিয়ে গেছে মানুষ,জাহাজ কিংবা উড়োজাহাজ। এরকম অসংখ্য অন্তর্ধানের গল্প বারমুডা ট্রায়াঙ্গলকে পৃথিবীর সেরা রহস্যাবৃত অঞ্চলে পরিণত করেছে। অনেকে মনে করেন এসব অন্তর্ধানের কারণ নিছক দুর্ঘটনা যার কারণ হতে পারে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা চালকের অসাবধানতা। আবার চলতি উপকথা অনুসারে এসবের পেছনে দায়ী অতি-প্রাকৃতিক কোনো শক্তি বা ভিনগ্রহের প্রাণীর উপস্থিতি। জায়গাটির রহস্যময়তা নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হয়েছে বানানো হয়েছে অসংখ্য ডকুমেন্টারিও। পক্ষে-বিপক্ষে অনেক কথা শোনা যায়।


৪। মৃত উপত্যকা (আমেরিকা)ঃ

Death Valley উপত্যকার Racetrack Playa অংশটি জনমানবহীন এক বৈচিত্রময় জায়গা। সচরাচর অন্য প্রানীও দেখা যায় না এখানে। এই উপত্যকার রহস্যময় পাথরগুলি কোন এক অজানা কারনে তার স্হান পরিবর্তন করে বয়ে চলে। বছরের পর বছর ধরে এই পাথর নিজেরায় কিভাবে যেন চলছে সরল পথ ধরে। ধারনা করা হয় যে, পাথরগুলি প্রতি ২-৩ বছর পর পর অগ্রসর হয়। পাথরগুলো নিয়ে এখনও ব্যাপক গবেষনা চলছে। রহস্য আরও ঘনিভূত হওয়ার প্রধান কারন হচ্ছে,

• বিস্তৃত এলাকা জনমানবহীন।
• এখানে বন্যা হয় না।
• এখানে এতো গতিবেগে বাতাস প্রবাহিত হয় না যে পাথরগুলির স্হান পরিবর্তনে সহায়ক হবে।

কিছু গবেষকদের মতে, মাটি যখন কর্দমাক্ত থাকে এবং বরফ পড়ে পিচ্ছিল হয় তখন বাতাসের ধাক্কায় পাথরগুলি স্হান পরিবর্তন করতে পারে। শেষ পর্যন্ত এই যুক্তিও গ্রহনযোগ্যতা পাইনি। কারন পাথরগুলি স্হান পরিবর্তন করে গ্রীষ্মকালে যখন মাটি একেবারে শুকনো থাকে এবং বরফও পড়ে না। তাছাড়া পাথরগুলি একই রাস্তায় চলে না। প্রতিটি পাথরের চলার পথ সম্পূর্ন ভিন্ন বা আলাদা।

যদিও এর পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে তারপরও এই পাথরের স্হান পরিবর্তনের ব্যাপারটা বরাবরই রহস্যময়।


৫। মৃত সাগরঃ

মৃত সাগরের পশ্চিমে পশ্চিম তীর এবং ইসরায়েল , পূর্বে জর্ডান । জিবুতির আসাল হ্রদের পর এটি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লবণাক্ত পানির প্রাকৃতিক আধার। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৪২০ মিটার(১,৩৭৮ ফিট) নিচে এটি পৃথিবীর নিম্নতম স্থলভূমি এর লবণাক্ততা শতকরা ৩০ ভাগ এবং এটি সমুদ্রের পানির চাইতে ৮.৬ গুণ বেশি লবণাক্ত । মৃত সাগরের এলাকাকে পয়গম্বর হযরত লূতের (আঃ) জামানার সমকামী গোষ্ঠীর আবাসস্থল ছিল। সমকাম পরিত্যাগ করে আল্লহর আনুগত্য স্বীকারে অসম্মত হওয়ার কারণে এই স্থান উল্টে দিয়ে এ জাতিকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল।
এ হ্রদে কোন উদ্ভিদ বা মাছ বাঁচে না বলেই মূলত একে মৃত সাগর বলা হয়ে থাকে । কেবল সামান্য কিছু ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক অণুজীবের সন্ধান পাওয়া যায় ।
মৃত সাগর তীরবর্তী পাহাড়ী অঞ্চলে উট, খরগোশ , খেকশিয়াল এমনকি চিতাবাঘ দেখতে পাওয়া যায়। অতীতে জর্দান নদীর বদ্বীপ অঞ্চলে প্যাপিরাস এবং পাম গাছে সমৃদ্ধ বনভূমির অবস্থান ছিল । জোসেফাস তার লেখনীতে জেরিকো কে জুদিয়া অঞ্চলের সবচেয়ে উর্বরভূমি রুপে উল্লেখ করেন । রোমান এবং বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সময় ইক্ষু , সিকামোর এবং হেনা এ অঞ্চলের উদ্ভিদ বৈচিত্রে সমৃদ্ধি এনে দেয় । জেরিকোতে বালসাম গাছের রস থেকে প্রস্তুত করা হত উন্নত মানের পারফিউম এবং সুগন্ধি । ১৯ শতকের মধ্যে জেরিকোর উর্বরতা অতীত ইতিহাসে পরিণত হয়।


৬। দ্যা টাওস হাম (মেক্সিকো)ঃ

মেক্সিকো ছোট্র শহর টাওস হামের অদূরে একটি স্থান থেকে অদ্ভুত রকমের এক শব্দ ভেসে উঠে যা অনেকটা ডিজেল ইঞ্জিনের আওয়াজের মত শুনায়। কিন্তু মানুষের কানে এটি ধরা পরলেও আজ পর্যন্ত এটি কোন শব্দ সনাক্তকরণ যন্ত্রে ধরা পড়েনি। আজ অবধি নির্নয় করা যায়নি আসলে এই আওয়াজটির মুল কারণ কি।


৭। প্যাটমস্কি জ্বালামুখ (সাইবেরিয়া)ঃ

১৯৪৯ সালে ভূবিজ্ঞানী ভাদিম কলপাকভ সাইবেরিয়া অঞ্চলে এক অভিযানে বের হন। এ অভিযানে তিনি সাইবেরিয়া অরণ্যে রহস্যময় প্যাটমস্কি জ্বালামুখের সন্ধান পান। কলপাকভ যখন এই জ্বালামুখ পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ঠিক এ সময় সেখানকার ইয়াকুট অধিবাসীরা তাকে যেতে বারন করলেন। তাদের ভাষ্যমতে, এ জায়গাটি অনেক ভূতুড়ে এখানে মানুষতো দুরের কথা কোন পশু-পক্ষীর আনাগোনাও সেখানে নেই। তারা এর নাম দিয়েছে “Fire Eagle Nest”। এর আশেপাশে গেলেই মানুষ অসুস্থ বোধ করাসহ নিমিষেই অদৃশ্য হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
একজন বিজ্ঞান মনস্ক মানুষ হিসেবে কলপাকভ তা কর্ণপাত করলেন না, বরং আরো কৌতূহলী হয়ে গেলেন।
তিনি দেখলেন যে এটি ২৫ তলা ভবনের উচ্চতার সমান এক বিশাল জ্বালামুখ সমেত বস্তু যা বনে গাছের মধ্যেই গর্জে উঠেছে। কল্পাকভের ধারনা মতে এর বয়স ২৫০ বছর।
পরবর্তীতে এ নিয়ে অনেক গভেষনা হয়েছে, অনেকেই একে অগ্নেয়গিরি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। আবার অনেকের ভাষ্যমতে উল্কাপিণ্ডের মাধ্যমে এটি গঠিত হয়েছে।
২০০৫ সালে প্যাটমস্কি সম্পর্কে নতুন তথ্য উদ্ঘাটনের আশায় এক গভেষকদল অভিযানে নামে। কিন্তু ঘটনা সেখানেই থেমে যায়। অভিযাত্রিক দলের প্রধান নেতা প্যাটমস্কি জ্বালামুখের কাছে না যেতেই হার্ট এটাকে তিনি থেমে যান।

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৬
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×