গত কাল থেকে বৃষ্টি ঝড়ছে রিয়াদ শহরে। আকাশ কালো হয়ে আছে দুদিন যাবত। সারা দিনই বাংলাদেশের বর্ষা কালের মত বৃষ্টি ঝড়ছে।
রাস্তা গুলো হালকা পানিতে ডুবছে। তবে কোথাও রাস্তায় পানি জমেনি। যদিও কোন জায়গায় পানি জমেছে,তা তাৎনিক সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি এসে নিস্কাশ করেছে। যদিও এমন বৃষ্টিতে গাড়ি ড্রাইভ করা নিরাপদ নয়,তার পরেও গাড়িতে বসে রিম ঝিম বৃষ্টি ঝড়া দেখতে ভাল লাগছিল। মনে পরে গেল খুব বেশি পুরনো হয়ে যাওয়া কিছু স্মৃতি। পুরনো সেই স্মৃতি গুলো ভাবতে ভাল লাগছিল। কিছুক্ষনের জন্যে হারিয়ে গেলাম সেই সময়টাতে।
আমি, মাসুম আর সাইফুল দূর্গা পুজার লম্বা কলেজ ছুটি পেয়ে বেড়াতে বেরুলাম আমার খালাম্মার বাসায়। খালুদের বাসা আমাদের পাশের থানা বাজিতপুরে।( কিশোরগঞ্জ ) সেখানে বর্ষা কালে চারদিকে পানি আর পানি থাকে। মেঘনা নদী ঘেষা সে হাওরে নেীকা ভ্রমনের মজা নেয়ার লক্ষে ছুটলাম আমরা তিন বন্ধু। খালাতো বোন শিল্পিকে আবার বিয়ে দেয়া হয়েছে সে এলাকায়। সেই কবে থেকে বলছে সেখানে বেড়াতে যেতে কিন্তু যেতে পারছিলাম না, আজ পেলাম সে নেীকা ভ্রমনের সূযোগ।
বাজিতপুর থেকে ট্রলার দিয়ে চললাম খালাতো বোনের শশুর বাড়ির পাণে। বিকালেই আমরা পেীছে গেলাম সেখানে। শিল্পি আপার দেবর সোহানকে ধরলাম আমাদের কে নেীকা দিয়ে এলাকাটা ঘুরে দেখানোর জন্য। সোহান কে নিয়ে আমরা পানি বন্দি পুরো গ্রামটা ঘুরে দেখলাম।
বর্ষা কালে এ গ্রামবাসির নেীকা ছারা কোন গতি নেই। বেশির ভাগ লোকই কৃষক এবং ফ্যামিলি গুলো কৃষি নির্ভর। সূর্য প্রায় ডুবে যাচ্ছে এমন সময় সাইফুল বললো সোহান চলুন আমরা একটু নদীর দিকে যাই।
একটু নদীর দিকে এগোচ্ছি আর ঢেউয়ের আকার বড় হচ্ছে। আমাদের নেীকা পানিতে প্রচন্ড ভাবে দুলছে।মনে হচ্ছে ডুবে যাবে কিন্তু ডুবছেনা। প্রথমে আমি ভয় পেলেও পরে আমার ভয় কেটে গেছে। ঢেউয়ের আনন্দ নিতে লাগলাম। ঝিরি ঝিরি ঠান্ডা বাতাস বইছিল। সাইফুল গান শুরু করলো। একে একে আমরা চারজনই গান গাইছিলাম। গলা ছেরে গান গাইছি আমরা। কোন সংকোচ নেই কারো, কারণ এখানে আমরা চারজন ছারা যে আর কেউ নেই। আসলে গলা ছেরে গান গাওয়ার মজাই আলাদা।
যখন বৃষ্টি পড়ে,হৃদয়ে কেমন যেন একটা আবেগ আসে। রিম ঝিম শব্দের আনন্দ নিতে চেষ্টা করি কিন্তু এখানে কোন রিম ঝিম শব্দ হয়না কারণ গাছ পালা নেই, টিনের চাল নেই, আছে শুধু পাকা পাকা বিল্ড্রিং। স্বপ্নের মাঝে ফেলে আসা প্রিয় সময় গুলোতে ফিরে গেলাম। প্রিয় কারো মুখ সামনে ভেসে এল। আসলে ভুলতে চাইলেও সবকিছু ভুলা যায়না। এত দিন পরেও কোন কিছু সামান্যও ম্ল্লান হয়নি। স্পষ্ট ভেসে আসছে চোখের সামনে। ছ'ুতে ইচ্ছে করছিল, কিন্তু অদৃশ্য এক শক্তির দেয়াল আমার সকল শক্তিকে পরাস্থ করছিল। মানুষ এমনই,সময়ের সাথে সে শৃঙলবদ্দ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



