সকাল সকাল বের হয়ে অফিসের দিকে ছুটে চলা । বের হওয়ার আগে পরনের টিশার্টটা একটু ঝেড়ে দেখা । হুড়োহুড়ি করে বাস ধরা । জানালার পাশে সিটটা ধরে হাত দিয়ে চোখ ঢেকে ঘুমিয়ে পড়া । প্রতিটা সকালে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি । মাঝে মাঝে হঠাত সুন্দর কোন মুখ চোখে পরে । হৃদয়ে ঝড় উঠে । কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেই । বাসের প্রতিটা মুখে স্বপ্ন আঁকা । জীবনের সবচেয়ে বড় নিষ্ঠুরতা হচ্ছে একজনের স্বপ্ন পুরণ হলে আরেকজনের স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে যাবে । আমি যে কাজের পিছনে ছুটছি সেটা পেয়ে গেলে আমার সাথে প্রতিযোগীতা করা বাকিরা হতাশ হয়ে ফিরে যাবে ।
পৃথিবীর জাঁদরেল লেখকদের কেউ যদি আমাদের পাবলিক বাসগুলোতে নিয়মিত চলত হয়ত তারা অনেক গল্প লিখে ফেলত । আমি সাধারণ মানুষ, নিজের প্রিয় মানুষের চোখের ভাষাই বুঝতে পারি না, অপরিচিত মানুষেরটা কিভাবে বুঝব । যাক, কী লেখা শুরু করেছিলাম আর কী লিখছি । আমার এটা একটা সমস্যা । সব কিছুতেই উদাসীনতা চলে আসে । বন্ধু-বান্ধবরা বছরের পর বছর পচিয়েও আমার উদাসীনতা দুর করতে পারল না । কিছু সিরিয়াস কথা বলি ।
উত্তরা - এয়ারপোর্ট রোডে নিয়মিত যাতায়াত করি । প্রতিদিনই কোন না কোন বাসের সাইড গ্লাস ভাঙ্গে । আজকে আমাদের বাস আর আরেক বাসের প্রতিযোগিতার মাঝে পরে আরেকটু হলে একটা প্রাইভেট কার চ্যাপ্টা হত । ভাগ্য ভালো শুধু একটা বাসের কিছু জানালার কাঁচ ভাঙ্গা ছাড়া আর কোনও ক্ষতি হয় নি । আরেকদিন বাস জ্যামে আটকালো রেললাইনের উপর । সব যাত্রী হুড়োহুড়ি করে নামলাম । প্রায় ৫ মিনিট পর বাস রেললাইন থেকে সরে যাবার জায়গা পেল । এর একটু পরই ট্রেন আসলো । জায়গাটায় কোন ধরনের প্রটেকশন নেই । আরেকদিন বাসের সামনের দিকে ইঞ্জিন থেকে হঠাত ধোয়া বের হওয়া শুরু হল । তাড়াহুড়ো করে সবাই নেমে গেলো । আমি ঘুমাচ্ছিলাম । চিৎকার চেঁচামেচিতে ঘুম থেকে উঠে কিছু না বুঝে জানালা দিয়ে নেমে গেলাম । একটু পরে আশেপাশের লোকজনকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম পরে ঘটনাটা কী । এ এক অদ্ভুত অবস্থা ।