somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টেলিভিশন যদি টার্কিশ মুভি ভিজনটেলের নকল হয়, তাহলে চোরাবালি হইল টেইকেন ২ এর নকল

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি সামুতে লাস্ট মৌলিক লেখা কবে পোস্ট করসিলাম মনে নাই, এই বিষয় নিয়ে পোস্ট দেওয়ার ইচ্ছাও ছিল না। কিন্তু হঠাৎ মাথা গরম হয়ে গেল। ফেবুতে আশিফ এন্তাজ রবি একটা স্ট্যাটাস দিসিলেন, ঐটা পড়ে ভিজনটেলে মুভিটা নামাইসিলাম। আজকে দেখলাম, কারণ কালকে ফারুকির টেলিভিশন দেখতে যাওয়ার কথা। মুভিটার সিনেমাটোগ্রাফি অসাধারণ লাগসে, এইটা নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দেওয়ার জন্য ফেবুতে ঢুকসি। স্ট্যাটাস দিলাম:
ভিজনটেলে নামায় রাখসিলাম, আজকে দেখলাম। কালকে টেলিভিশন দেখতে যাব। মুভিটা খুবই ভাল, কাহিনী, এন্ডিং; কিন্তু সিনেমাটোগ্রাফিটা আউট অফ দিস ওয়ার্ল্ড। অন্য লেভেলের। এর কাসে হলিউড ফেল। টার্কিশ ক্রিটিক নাকি বলসে বাংলাদেশেরটা বেটার (দুইটা আলাদা মুভি, রিমেক না)। সেইটা কাহিনী, ডায়ালগ দিয়ে হইতে পারে, কিন্তু এইটার সিনেমাটোগ্রাফি অন্য লেভেলের।

লগআউট করার আগে দেখি সিনেমাখোরদের আড্ডা গ্রুপে একজন পোস্ট দিসে ফারুকিরটা টার্কিশটার নকল। আমি কমেন্ট দিলাম:

আপনি নিজে মুভিটা দেখসেন ?

রিপ্লাই: টার্কিশটা দেখলাম এই পোস্ট দেওয়ার পরেই...
আর বাংলাটার রিভিউ পইড়া ধারনা যতদুর কর্ছি সেইটা তো উপরেই কইলাম কয়েকদফা!
যদি আমারে জিগাইয়া থাকেন তাইলে এই উত্তর...

মানে উনি পোস্টটা দেওয়ার সময় দুইটা মুভির একটাও দেখেন নাই, জাস্ট নামের মিল শুনে পোস্ট দিয়ে দিসে, চিন্তা করেন অবস্থা !!

আগেই বলসি ব্লগে পোস্টই আমি দেই না। আর টেলিভিশন মুভিটা আমি নিজেও এখনো দেখি নাই, শুধু রিভিউ পরসি। তাই টেকনিক্যালি আমারও উচিত না কমেন্ট করা। কিন্তু কথা হচ্ছে ভিজনটেলে মুভিটা দেখলে আর টেলিভিশন এর কাহিনী পড়লে যে কেউ বুঝতে পারবে একটা আরেকটার নকল হওয়া সম্ভব না।

প্রথমে জাস্ট লজিক্যলি চিন্তা করেন, আনিসুল হক আর ফারুকি এত বড় গাধা যে যে মুভি থেকে নকল করসে সেই মুভির নামেই নাম রাখসে ! ফারুকির পড়াশোনা কি আমি জানি না, আনিসুল হক তো বুয়েট থেকে পাশ করসে, প্যারাফ্রেজিং, প্যালগ্যরিসম এইসব টার্ম তো জানা আসে। সে যদি কপিও করে ৭/৮ টা মুভি মিলায় একটা খিচুড়ি বানাবে, যাতে কেউ প্রমাণ করতে না পারে। আনিসুল হক ফারুকি মিলে নাম শুদ্ধা কপি করে ফেলসে এইটা কোন বুদ্ধিমান মানুষ ভাবতে পারে ?

সেকেন্ড, এই খিচুড়ির একটা বড় উদাহরন হইল বারফি। কাহিনী অরিজিনাল, সিন কপি। ঐ ভিডিওটা তো সবাই দেখসেন যেইটার বারফির কোন সিন কোথা থেকে কপি করসে মিলায় দেখায় দেয়। পারলে কোন বাপের ব্যাটা টেলিভিশন নিয়ে এরকম একটা ভিডিও বানায় দেখাক। আমি টেলিভিশন না দেখেই বলতে পারি এইটা সম্ভব না। কারণ ভিজনটেলের লোকেশন পুরাই আলাদা। বেশিরভাগ সিনে ব্যাকগ্রাউন্ডের পাহাড়টাকে ইুউস করর অসাধারণ সব ফ্রেমিং করা হইসে, তারপর উঁচু থেকে পাহাড়ের মধ্যে চিকন রাস্তা। ফারুকির পক্ষে চাইলেও বাংলাদেশে বসে এই ফ্রেম কপি করা সম্ভব না।

থার্ড, কাহিনী। ফেবুর পোস্টদাতা নিজেই স্বীকার করসেন, কাহিনী কপি পেস্ট না, তার ভাষায় এক চিমটি লবন নেওয়া হইসে। এইটা নিয়ে আমি কিসু বলব না, আপনারা নিজেরা দেখে বিচার করেন, ট্রাই করব লিন্ক দিয়ে দিতে।আমি শুধু বলব যে এইটার চাইতে চোরাবালি টেইকেন টু এর নকল এইটা প্রমাণ করা অনেক অনেক অনেক অনেক সোজা। টেলিভিশন এ মেইন চরিত্রে তিশা, চঞ্চল, মোশারফ করিম, ভিজনটেলেতে কোন নায়িকাই নাই !! সবচে ইম্পরটেন্ট নারী চরিত্র হচ্ছে দাদী ! নায়ক একজন, এক পাগলা টেকনিশিয়ান। আরেক ইম্পরটেন্ট পুরুষ চরিত্রেরও বয়স অনেক।

এখন আসি টেইকেন টু আর চোরাবালির কথায়। মিলই মিল, বলে শেষ করা যাবে না।

১। দুইটার কাহিনি গড়ে উঠসে কিডন্যাপিং নিয়ে।

২। নায়ক একজন, চুপচাপ, কথা কম, কাজ বেশি, অনায়াসে মানুষ খুন করতে পারে, কিন্তু মনটা নরম।

৩। নায়কই মেইন, ইম্পরটেন্ট মেয়ে চরিত্রে দুইজন।

৪। প্রচুর একশন সিন। গান ফায়ারিং এবং হাতাহাতি

৫। ক্ল্যাইম্যাক্সে কোল্সড রুমের মধ্যে একশন। পিস্তলে গুলি না থাকা নিয়ে ড্রামা। শেষে ভিলেনের ক্ষমা চাওয়া, নায়কের জয়।

৬। কালার টোনিং এ অনেক মিল

৭। লাস্ট বাট নট দ্যা লিস্ট, দুইটা মুভিরই আছে অলটারনেটিভ এন্ডিং। আর কি লাগে !!!!!!!!!!!!!

যাই হোক, মাথা ঠান্ডা হইসে। আর তন্ময় ফেরদৌস ভাই যদি এখন থাকেন, তাকে এই পোস্ট টায় একটু চোখ রাখতে অনুরোধ করছি। যেহেতু উনি দুইটা মুভিই দেখেছেন, অনেক প্রশ্নের ভাল জবাব দিতে পারবেন। আর এইখানে একটা কথা বলা প্রয়োজন, ব্লগে যাদের মুভি রিভিউ বিখ্যাত তাদের মধ্যে মনে হয় শুধু ওনারই মুভি মেকিং সম্পর্কে পড়াশোনা আছে। এবং অনেকেই আছেন যারা রম্য রচনা লিখে বিখ্যাত হয়েছেন, এখন সিরিয়াস রিভিউ লেখা শুরু করেছেন। রিভিউ দেওয়ার অধিকার সবারই আছে, কিন্তু তার আগে আপনার এক্সপার্টিস কি সে সম্পর্কে পাঠককে একটা ধারণা দিলে ভাল হয়। ফর এক্সামপল, তন্ময় ফেরদৌস এর পোস্টে হাসান মাহবুব ভাইয়ের কমেন্ট:

হাসান মাহবুব বলেছেন: টেকনিক্যাল টার্ম অতশত জানি না। তবে অনেক সিনেমা দেখার ফলে দেখার একটা চোখ তৈরি হৈসে। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমি বলতে পারি টেলিভিশন একটা চমৎকার সিনেমা। এখানে ওয়াইড এ্যাঙ্গেলে ক্যামেরার যে ডিটেইলিং, নদীর দৃশ্যগুলা, খেলনা প্লাস্টিকের গাড়ির দৃশ্য, হঠাৎ একটা ছিদ্রের ভেতর থেকে ভেতরে সিনেমা হলের টিকেট চেকার খুবই মুনশীয়ানার সাথে করা। এটা টেলিফিল্ম নাকি সিনেমা হৈসে এই বিতর্ক আসাই উচিত না।

ছবিটার যেই জিনিসটা আমার সবচে ভালো লাগসে, তা হল ফারুকী থিমটাকে কয়েক জায়গায় স্ক্যাটারড করে আবার একসাথে গাঁথতে পারসে। প্রথমে মনে হতে পারে যে এটা ধর্মান্ধতাকে ফোকাস করাটাই ছবির মূল উদ্দেশ্য, পরে মনে হতে পারে নাহ প্রেমকাহিনী দেখানো হৈতেসে, আসলে টেলিভিশন একটা প্রতীক। মানুষের প্যাশনের। এই যন্ত্রের মাধ্যমে পিতা পুত্রের ভালোবাসা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়, প্রেম সার্থক পরিণতি পায়, আবার এটাই ধর্মান্ধ এক বৃদ্ধকে তার আরাধ্য বস্তুর কাছে নিয়ে যায়, কাঁদায়।

আমার খুব ভালো লেগেছে মুভিটা। যেকোন স্ট্যান্ডার্ডেই।


এই ফরম্যাটে কমেন্ট করলে আমার মনে হয় বেটার। পাঠক বুঝতে পারে আপনার কমেন্ট কতোটা সিরিয়াসলি নিতে হবে। আবার আমার ফেবুতে স্ট্যাটাসটা যেতা শুরুতে দিয়েছি ঐটাতে দেখেন আমি শুধু সিনেমাটোগ্রাফি নিয়ে কমেন্ট করেছি। কারণ আমি ফটোগ্রাফি করি, এই জিনিসটা আমি বুঝি। কেউ আমাকে চ্যালেন্জ করে আমি ডিফেন্ড করতে পারব।

শেষ কথা, আমি আশা করব এই পোস্টে দুইটা মুভির মধ্যে একটাও দেখেন নাই এরকম কেউ কমেন্ট করবেন না। ভিজনটেলের লিন্ক খুঁজে বের করে কমেন্টে দিয়ে দিচ্ছি


সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:২৮
১৫টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×