**এক সাগরী রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা আমারা তোমাদের ভুলবোনা**
লক্ষ শহীদের রক্ত আর মা-বোনের সম্মানের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই স্বাধীনতা, যাদের প্রান ও সম্মানের বিনিময়ে আমরা আজকের এই স্বাধীনতা তথা বিজয় অর্জন করেছি তাদের বিদেহী আত্নার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
.
বিজয়ের উচ্ছাসে আমাদের এটা ভুলে গেলে চলবেনা কাদের আত্ন ত্যাগের বিনিময়ে আজকের এই উল্লাস তাই বিজয় উৎযাপনের পাশাপাশি আমাদের সকলের উচিত শহীদদের আত্নার মাগফিরাত কামনা করা। শুধু গালে, মুখে জাতীয় পতাকা আঁকলে কিংবা মাথায় বেধে ওপেন কনসার্টে নাচ-গান করলেই বিজয় দিবস পালিত হয়না; মহান শহীদদের প্রতিও আমাদের কিছু কর্তব্য রয়েছে।
.
এবার একটু অন্য কথায় আসি, জাতিগত ভাবে আমরা স্বাধীন হলেও আমাদের স্বাধীনতা শুধু বিজয় দিবস পালনের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ; মন থেকে আমরা দাসত্বের শৃঙ্খল মুক্ত হতে পাড়িনি। আর হবইবা কেন? দুইশত বছর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দাসত্ব, তারপর পাকিস্তানের দাসত্ব আর বর্তমানে স্বাধীনতাকে রাজনৈতিক দলীয় করন আর পরোক্ষ ভাবে ভারতের দাসত্ব যে আমাদের মনে প্রস্তর খোদিত হয়ে গেঁথে আছে।
.
আর ভারতের দাসত্ব বলার কারন; কিছুদিন আগে ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগমনে শুভেচ্ছা জানাতে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী আমাদের দেশের জাতীয় সঙ্গীত না বাজিয়ে আগে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত বাজিয়ে ছিলেন, যা মনে পরলে আজও ভীষন কষ্ট হয়। একজন জাতির কর্ণধার হয়ে তিনি আমাদের পুরো জাতিকে কি ঈঙ্গিত দিয়েছিলেন তা হয়তো আপনারা ইতিমধ্যে বুঝে গিয়েছেন।
.
এটাতো গেলো একটা ক্ষীণ বিষয় কিন্তু সত্যি কথা বলতে গেলে আমরা ভারতের প্রতি কতোটা নির্ভরশীল সেটা আমাদের বাজারে ভারতীয় চাল, ডাল, পিঁয়াজ আদা সহ আরো বিবিধ পণ্যের সম্ভার দেখলেই বোঝা যায়। আর ভারতীয় টিভি চ্যানেলের এক্যছত্র আধিপত্যের কথা নাহয় বাদই দিলাম। আমি ভারতের বিরোধিতা করছিনা আমি শুধু বলতে চাচ্ছি ভারতকে আমারা বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে পেতে চাই; আমাদের মনিব হিসেবে নয়।
.
স্বাধীনতাকে দলীয় করনের কথা বলতে গেলে বলতে হয়; বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার যেভাবে নিজেদেরকে একক ভাবে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি বলে দাবি করছেন সেটা অত্যন্ত হতাশা জনক। স্বাধীনতা কারো বাবার, কোনও জাতি কিংবা দলের একক সম্পদ না; এতে আমাদের পুরো বাঙ্গালি জাতির সমান অধিকার রয়েছে।
.
স্বাধীনতাকে একক ভাবে রাজনৈতিক দলীয় করনের ফলাফল আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের উপর ১৯৭১ এর ধারনা সম্পর্কে কি পরিমান বিরূপ প্রভাব ফেলবে তার পরিমান আন্দাজ করা অত্যন্ত কঠিন। কেননা দলীয় করনের অর্থই হচ্ছে সঠিক ইতিহাসকে বিকৃত করা আর এই বিকৃত করণ আর সংশোধনের ফলে আমাদের ত্যাগের 'ইতিহাস' না পরবর্তী প্রজন্মের কাছে 'উপহাস' হয়ে যায় সেটাই দুশ্চিন্তার কারন।
.
এখনই সময় উঠে দাঁড়াবার; মুখ বুঝে সহ্য করার দিন শেষ। দাসত্বের মানসিকতাকে আস্তকুড়ে ফেলে বিজয়ের এই দিনে আসুন একসুরে বলি "জাতি হিসেবে স্বাধীন মোরা আর নেই ভয়; রক্তের দামে কিনেছি বাংলা কারো বাবার দানে নয়।"
-সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচছা-
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:৩৩