somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে ১৩ কারণে এখন আর অ্যাপার্টমেন্ট না কেনাই ভালো-

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যে ১৩ কারণে এখন আর অ্যাপার্টমেন্ট না কেনাই ভালো-
১।আপনি নিশ্চয় জানেন, এই মুহূর্তে ফ্লাটের ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতা অনেক অনেক বেশি। কীভাবে? সোজা হিসাব – ক) বিভিন্ন রিয়েল অ্যাস্টেট কোম্পানি হিসাব নিকাশ ছাড়া গাধার মতো ফ্লাট বানিয়েই যাচ্ছে, আর খ) দ্বিতীয় ধরনের ক্রেতায় বাজার ছয়লাব। তারা হলো একসময়ে যারা কিনেছিলো – যেমন প্রবাসী এবং যারা এখন ভাড়ার চেয়ে লোনের পরিমাণ বেশি, এমন অসুবিধায় পড়েছেন। বিক্রি করতে পারলে বাঁচেন, এই সংখ্যাটা এখন এতো বেশি, শুধু যারা জানার তারা জানে।

২। আপনি নিশ্চয় জানেন – মাইগ্রেশন রোগে পেয়েছে আমাদের শিক্ষিতি এবং ধনীদের। ব্যাপকহারে তারা বিদেশে চলে যাচ্ছেন। এমনকি এনজিওতে চাকুরিজীবীরা ব্যাপকহারে দেশ ত্যাগ করছেন, আমি অন্তত ঢাকার ১০০ এনজিও কর্মী গত দুবছরে তাদের ফ্লাট বিক্রি করে বিদেশে চলে গেছে তার তালিকা দিতে পারবো। সংখ্যাটা কিন্তু ১০০ নয়, হাজার হাজার চলে যাচ্ছে। জানেন তো, উন্নত দেশে মানুষের এখন ভয়াবহ সংকট। শুধু জার্মানির শ্রমিক লাগবে ৪০ লাখ! কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়ার সাথে যদি জাপানও মাইগ্রেশন অ্যালাউ করে তবে তো মনে করেন স্রোতের মতো লোক যাবে। আর ওইসব দেশ কিন্তু গরিবদের নেয় না – নেয় ধনী আর উচ্চশিক্ষিতদের!

৩। ইটালিসহ বিভিন্ন দেশে যে ১ কোটি লোক গেছে, তারা এখন আর আগের মতো বিনিয়োগ করছে না, তারা ওইসব দেশে সেটেল হয়ে যাচ্ছে। এদেশে যেসব বিনিয়োগ করেছিলো, সেগুলো বিক্রি করছে তাঁর মধ্যে ফ্লাট এবং মার্কেটের দোকান আছে হাজার হাজার।
৪। এবার আরো একটা হিসাব দেই – ইংলিশ মিডিয়ামে যেসব ছেলেমেয়েরা পড়ছে, ও/এ লেভেলের পরে তারা দেশ ছাড়ছে এবং তারা ফিরবে না। তারা বাবা মায়ের ফ্লাট বিক্রি করবে এবং আজ থেকে ১০/১৫ বছর আগে যারা গেছে তারা বিক্রি শুরু করেছে আরো আগেই।একবার ভাবুন তো, যদি এদের ৮০% দেশ ছাড়ে (এটা কম করে বললাম, কী হতে পারে?

৫। উন্নয়নের সাথে সাথে ডিভোর্স বাড়ে মারাত্মক হারে। এবং বাংলাদেশে ডিভোর্স আর পরকিয়া দ্রুতগতিতেই বাড়ছে, আরো অনেক বাড়বে, ফ্লাটের মালিকানা কার হবে? সুতরাং স্মার্ট দম্পতিরা ফ্লাট কেনার আগে বহু হিসাব নিকাশ কষবে!

৬। আপনার ফ্লাটটি ঠিক ১০/১৫ বছরের মধ্যেই ক্ষ্যাত মনে হবে। নতুন ডিজাইনের ফ্লাটগুলো আপনার মন কাড়বে, কিন্তু কিছুই করতে পারবেন না!

৭। ফ্লাটটি যারই হোক, থাকছেন তো আপনি! সুতরাং ভালো ভালো ফ্লাটে ভালো ভালো জায়গায় ভাড়া থাকতে পারবেন, মন চাইলে। আগে যেমন নিজের একটা ফ্লাট! একথা বলে মানুষকে বলদ বানানো গেছে, এখন কিন্তু চিড়ে ভিজবে না!

৮। গাড়ি কিনে কয়েক বছর চালালেন, তারপর বিক্রি করলে আবার সেই টাকাই পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু অ্যাপার্টমেন্ট? আপনি ৮০ লাখ টাকার ফ্লাট একসময়ে ২০ লাখ টাকাতেও বিক্রি করতে পারবেন না। আগামীতে একদমই পারবেন না, গ্যারান্টি দিচ্ছি। এতো এতো ফ্লাটের মধ্যে আপনার ফ্লাট কে কিনবে? বিক্রির মালিকানা হস্তান্তর ফিও আপনাকে দিতে হবে।

৯। ফ্লাটটি ৮০ বছর টিকবে তো? কয়টা কোম্পানি ঠিকভাবে গুণগত মান রক্ষা করেছে? যদি না টিকে, তবে ? আর ভূমিকম্প তো হতেই পারে একটা বড়!

১০। দেশ এগিয়ে যাওয়া মানে বিনিয়োগ বাড়া। মানুষ বিনিয়োগমুখী হবে, ফলে ফ্লাট কেনা থেকে বিরত থাকবে।এবং এখনই তার প্রমাণ স্পষ্ট। দেশের ৮ কোটি মানুষের বয়স ২৪ এর নিচে, তারমানে কয়েক বছরের মধ্যে এরাই ক্রেতা হওয়ার কথা। সমস্যা হলো এদের বাবা মায়েরা অনেকেই ফ্লাট রেখে যাচ্ছেন। আর যাদের নেই, তারাও কিনবেন না। কারণ, তারা জানে কিনে তারা বিক্রি করতে পারবেন না। আর সেই টাকা বিনিয়োগ করা অনেক জরুরি। একটা সময়ে দেশে বিনিয়োগের জায়গা ছিলো না, এখন হাজারটা পথ।(এর সামারিটা হচ্ছে ১/২ জেনারেশন কিনে ফেলেছে, পরের দুই জেনারেশন ভোগ করবে, মানে কিনবে না)

১১। এই মুহূর্তে যত ফ্লাট আছে, আগামী ২০৫০ সাল পর্যন্ত কোন ফ্লাট আর দরকার নেই। দেশে আইটি ব্যবসা বিপুল প্রসার লাভ করবে, ফ্রিল্যান্সিং এ বিপ্লব হবেই। আগামীর অফিসে বড় বড় রুম খুবই হাস্যকর দেখাবে। এগুলো থাকবে না।

১২। মানুষ এক দারুণ প্রাণি। সে পরিবর্তন চায়। এক ফ্লাট আপনার ভালো লাগবে না। এই ঢাকায় একটা ফ্লাট কেনা মানে সেখানে আজীবন বন্ধি হয়ে থাকা। অথচ আপনার কিন্তু ইচ্ছে হবে ঢাকার ভালো এলাকায় কয়েক বছর পর একটু বদলাতে।

১৩। হাজব্যান্ডের হার্টের রোগ নিশ্চিত করতে চাইলে লোন করে ফ্লাট কেনার বুদ্ধি দেন! ঢাকায় হার্টের রোগ যে বাড়ছে, তার কি কোন প্রমাণ দিতে হবে? এর বড় কারণ কী ব্যাংকের লোন নয়? যারা লোন করে কিনেছেন, তারা জানেন, এই লোনের মজা কতা রকম ও কী কী! লোনের ঘুঘু দেখতে সুন্দর কিন্তু ফাঁদ ভয়ংকর। হার্টের বারোটা বাজিয়ে দেয়।
ভালো লাগলে শেয়ার করবেন। লাখ লাখ মানুষের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৬
৯টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×