মাঝরাতে মোবাইলের ভাইব্রেটের শব্দে সাধের ঘুমটা ভেঙে গেল যুথির।ঘুম ঘুম চোখে ফোনটা রিসিভ করল সে।বলল,
—হ্যালো।এই মাঝরাতে কি প্যাচাল পাড়ার জন্য ফোন দিছিস জলদি বল।
—ও আমার সব কথা তো তোর কাছে প্যাচাল মনে হয় তাই না?বাদ দে তোর সাথে তর্ক করার জন্য ফোন দেইনি।
—তাইলে কি করতে ফোন দিছস তাড়াতাড়ি বল।আর বলে আমাকে উদ্ধার কর।
—আমারে কালকের মধ্যে গার্লফ্রেন্ড খুজে দে।
—এমন ভাবে বলতেছিস মনে হচ্ছে গার্লফ্রেন্ড বাজারের আলু পটল।
—আলু পটল হলে তো নিজেই বাজার থেকে কিনে আনতাম।তোরে বলতাম না।
—হুম বুঝলাম কিন্তু তোর জুই এর কি হইল?
—ওর কথা বাদ দে।
—কেন মাইয়া ভাগছে?
—দেখ মজা নিস না।খুজে দিবি কিনা সেইটা বল।
—আচ্ছা দিব এখন মাথায় পানি ঢেলে ঘুমা।নিজেও ঘুমা আমারেও ঘুমাইতে দে।গুড নাইট।
রিফাতকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোনটা কেটে দিল যুথি।ঘুমটাও দূর হয়ে গিয়েছে তার।মেজাজটা চরম খারাপ হয়ে আছে।প্রতি মাসেই রিফাতের গার্লফ্রেন্ড চেঞ্জ হয়।কোন মেয়ে রিফাতের সাথে ১ মাসের বেশী থাকতে পারে না।দোষটা রিফাতের।রিফাত চায় তার গার্লফ্রেন্ড সবসময় বোরকা পড়বে,কোন ছেলের সাথে কথা বলতে পারবে না ইত্যাদি নানা রকম বিধি নিষেধ।এখনকার মেয়েরা এত বিধি নিষেধ মানতে পারে না এই কথাটা বুঝতে চায় না রিফাত।তাই প্রতি মাসে গার্লফ্রেন্ড খুজে দেওয়ার জন্য যুথির কাছে বায়না ধরে সে।যুথির অসহ্য লাগে খুব।মাঝে মাঝে মনে হয় আচ্ছা অনলাইনে একটা গার্লফ্রেন্ড খোজার সাইট খুল লে কেমন হয়? পাত্রি চাই এর মত গার্লফ্রেন্ড চাই ডট কম।নিজের বুদ্ধিতে নিজেকেই বাহবা দিল যুথি।কিন্তু পরক্ষনেই আবার বিষন্ন হয়ে উঠল মনটা।চোখের কোন ভিজে উঠল পানিতে।এই অশ্রু নিজের ভালবাসার মানুষটাকে না পাওয়ার।নিজের ভালবাসার মানুষটাকে অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার।ভালবাসার মানুষ টাকে প্রতিনিয়ত অন্য মেয়ের কাছাকাছি দেখার।ভালবাসার মানুষটাকে নিজের মনের কথা না বলতে পারার।বন্ধুত্ব নামক সম্পর্কের জন্য নিজের ভালবাসা টাকে তুচ্ছ করার।আসলেই এই কস্টের কোন সীমা পরিসীমা হয় না।এই অশ্রু প্রতিনিয়ত কুড়ে কুড়ে খায় যুথির মত হাজারো ছেলে মেয়েদের।কিন্তু নিয়তির এই নির্মম সত্যকে এড়িয়ে যাওয়ার কোন পথ নেই।
প্রচন্ড সাওন্ডে রেডিও ছেড়ে দেয় যুথি।আর ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে থাকে বিছানার উপর।রেডিওতে বাজতে থাকে,
"আমি সেই সুতো হবো
যে তোমায় আলোকিত করে নিজেই নিজেই জ্বলে যাব...."
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:২৪