somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মালালার জন্য ভালোবাসা ।

১২ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভীতুরা দিনে হাজার বার মরে,কিন্তু সাহসীরা মরে একবার।পৃথিবীতে এমন মানুষ খুব অল্পই আছে,যারা সমাজের নোংরামো এবং কুসংস্কার দূর করতে গিয়ে নিজের জীবন বাজি রাখে।মালালা হল তাদেরই একজন।

শরীরে টগবগে রক্ত আর চোখে সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন,এই নিয়েই হল ১৪ বছর বয়সী পাকিস্তানী কিশোরী মালালা ইউসুফজাই।ছোট একটি মেয়ে,অথচ মনে কি প্রচণ্ড সাহস!সে আওয়াজ তুলেছিল নারীশিক্ষা নিয়ে প্রচলিত নিষেধাজ্ঞা এবং
ভণ্ডামি নিয়ে।

তালেবান নিয়ন্ত্রিত সোয়াত উপত্যকায় নিজের জীবনযাপন নিয়ে বিবিসি উর্দুতে লেখালেখির সুবাদে ২০০৯ সালে সকলের নজরে আসে মালালা।২০০৭ সালে ঐ উপত্যকা দখল করার পর মেয়েদের বিদ্যালয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করে জঙ্গিরা।এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় মালালা।প্রচারনা চালায় মেয়েদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে।যার ফলাফল স্বরূপ সে এখন লড়াই করছে মৃত্যুর সাথে।

গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের উত্তর-পশ্চিমে সোয়াত উপত্যকার মিংগোরা শহরে স্কুলবাসে হামলা চালায় জঙ্গিরা।এ হামলায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয় মালালা।তালেবানের মুখপাত্র এহসানউল্লাহ এহসান টেলিফোনে জানিয়েছে,মালালা বেঁচে গেলেও তাকে আবার হত্যার চেষ্টা করবে জঙ্গিরা।কারন সে পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রতীক এবং নারীশিক্ষার অধিকারের জন্য তার লড়াই ‘অশ্লীলতা’ ছাড়া আর কিছু নয়।

এই আক্রমনের মাধ্যমে ঘৃণিত পশুগুলো প্রমান করে দিলো যে,তাদের কুশংস্কার এবং বর্বরতার ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে মালালা।এই ছোট মেয়েটির দৃঢ় আওয়াজ আঘাত হেনেছে তাদের ভণ্ডামিতে।আহত হয়েছে তাদের পুং দণ্ড।যার কারণে এই প্রতিবাদী মেয়েটিকে হত্যার প্রচেষ্টায় উঠে পড়ে লেগেছে জানোয়ার গুলো।তাদের ভয়,এই রকম আরও এক হাজার মালালা আওয়াজ তুললে যদি তাদের ভণ্ডামির শেকড় উপড়ে যায়!!!!!

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো,বিশেষ করে বিভিন্ন বিষয় এবং সমস্যা নিয়ে প্রতিদিনই আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।কিছুদিন আগেই ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’ নিয়ে কি ঝড় টাই না দুনিয়াব্যাপি বয়ে গেল।উত্তম কুমার বড়ুয়া নামক এক ব্যক্তির ‘লাইক’ দেয়া একটি ছবিকে কেন্দ্র করে রামুতে যে সহিংস এবং ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে গেল,তা কারো অজানা নয়।এই সব নিয়ে ফেসবুকার,ব্লগার সবাই কত কিছুই না লিখল।অথচ এই অকুতোভয় মেয়েটিকে নিয়ে কতিপয় ব্যক্তি ছাড়া তেমন কেউই কিছু লিখল না!

মানুষের বিবেকের স্থান সম্ভবত ধর্মীয় অনুভূতির অনেক নিচে।এখন এই মেয়েটি যদি কোন ধর্ম কিংবা ধর্মীয় গ্রন্থ কে অবমাননা করে কিছু লিখত,তাহলে এতদিনে দুনিয়া জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যেত।মেয়েটির বিচারের দাবিতে জ্বালাও পোরাও আন্দোলন শুরু হয়ে যেতো।কেউ কেউ হয়তো তার কল্লার দাম ও ধার্য করে দিত।এবং তার উপর হামলা হলে আতশবাজি ফুটিয়ে তৃপ্তির হাসি হাসত।কিন্তু ছোট এই মেয়েটি পাকিস্তানের মত একটি বর্বর দেশে মেয়েদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে ঐ ভণ্ড জানোয়ার গুলোর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে আজ জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছে।তার এহেন সাহসিকতার ঘটনা তেমন কারো চোখে পড়ল না।কিংবা পড়লেও এটা নিয়ে কেউ তেমন একটা মাথা ঘামায়নি।ধর্মানুভুতির স্থান বিবেকানুভুতির চেয়েও অনেক উপরে।প্রথম টা নিয়ে আলোচনা সমালচনা তো দূরের কথা,কোন গুজব ছড়ালেও তার সত্যতা যাচাই বাছাই না করেই বিদ্রোহ করা যাবে।আর দ্বিতীয়টার উপর যতই আঘাত করুক না কেন,কোন প্রকার নাক না গলালেও চলবে।

মালালার প্রতি রইল অশেষ সম্মান এবং ভালবাসা।সে আরও একবার প্রমান করে দিলো,অসির চেয়ে মসির শক্তি অনেক বেশি।মালালা,তুমি সুস্থ হয়ে ওঠো বোন।এখনো যে অনেক টা পথ চলার বাকী.........
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:৪৭
১৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×