কি করা যায়.......... কিছুই বুঝতে পারতেছিনা। সময় তো কাটতেই চাই না। হ্যা গল্পের বই পড়া যায়। তবে এখন পড়তেও ভালো লাগছে না। কয়টা বাজে??শালার ঘড়িও নষ্ট। মনে হয় ৫টার মতন বাজে। বাইরে যাওয়া দরকার। বাইরের আবহাওয়াটাও জোশ। পড়ন্ত বিকেল সাথে দারুন বাতাস। সাইকেল না নিয়ে হাঁটাই ভালো। পকেটে তো একটা টাকাও নাই। এই ভাবে বাইর হওয়া উচিত হবে না। এখন টাকা কয় পাই?
ও পাইছি। ব্যাগেই তো আছে। আচ্ছা কতো আছে? দেখা দরকার। বেশি নাই তবে চলবে।
দেরী হয়ে গেলো মনে হয়। সামনেই তো গলিটা। এতো কাছে তবু দুরে মনে হচ্ছে। আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তও্ব কাজ করতেছে। কাজ করুক আর নাই করুক তাড়াতাড়ি যাওয়া দরকার। হাঁটলে দেরী হয়ে যাবে।এখন মনে হয়তেছে সাইকেলটা আনলেই ভালো হতো। সবসময় এরকম হয়। আচ্ছা এইটাই তো বাসা। হ্যাঁ তাই তো। সব বাসার রং একরকম মনেহয় কেন?? কয়টা বাজে?? জিজ্ঞাস করা দরকার। কারো হাতে তো ঘড়ি দেখি না। আর থাকবেই কেমনে? এখন মোবাইলেই তো ঘড়ি।
ভাই কয়টা বাজে??
মোবাইলে চাজর্ নাই, ভাই।
ও.............. শালা তাইলে মোবাইল নিয়া ঘুরতাছ কেন??
কথাটা শুনায়ে বলা উচিত ছিল। এইরম বকা হয়তো আমিও খায়।
ঐ দিন একজন লোক আমারে এই গলির মাথায় বলল....
-ভাই আপনার মোবাইলে ২মিনিট কথা বলা যাবে ??
- মোবাইলে টাকা নাই,তবে মেগাবাইট আছে। ফেসবুকে যোগাযোগ করুন। লোকটা মনে হয় চরম বিরক্ত হইলো। বিড় বিড় করতে দেখলাম।
ঐ তো সে আসতেছে। দুর দুর সাথে মা আসার কি দরকার....... আজকে যেভাবেই হোক কথা বলতে হবে। কিন্তু কিভাবে?? বাসার সামনে দাড়িয়ে থাকবো??? নাকি কালকে আসবো??
আচ্ছা ও কি আমাকে দেখে কিছুই বুঝে না। এইভাবে আর কতোদিন??পিছনেই কি হাঁটতে হবে??
শুভ্র আধাঘন্টা ধরে বাসার সামনে দাঁড়ায়ে থাকলো। কোন রকম বাইর হবার আশংকা দেখা গেলো না। একি ঐ দিকের জানালা তো খোলা। ও কি ঐখানে আছে?? থাকতেই পারে। তবে না থাকার সম্ভাবনা বেশি। যাওয়ায় যাক। জানালার সামনে পদর্া কেন?? শালা পদর্াটা পড়ে দিতি। সবচেয়ে অবাক করার মতো বিষয় তখনি ঘটলো। হঠাৎ একটা স্নিগ্ধ সুন্দর মুখ জানালার পদর্া সরিয়ে উকি দিলো। শুভ্রর ঐ মূহূতের্ একি সাথে প্রবল আনন্দ আবার ক্ষাণিক ভয়ও হলো। মেয়েটা তাকে অবাক করে দিয়ে বলল- তুমি আমার দিকে ঐ ভাবে তাকিয়ে থাকো কেনো??আর আমার পিছনে পিছনে আসো কেন?? শুভ্র কি বলবে বুঝতে পারছে না। সে কিছুই বলতে পারলো না।
- আপনি কি কথা বলতে পারেন না? নাকি শুধু মেয়েদের দিকে তাকিয়েই থাকেন?
- তুমি আমাকে একবার তুমি আবার আপনি বলছ কেন?এই প্রথম কথা বললাম তাও এই কথা। আসলেই আমি একটা গদর্ভ।
- না । আপনাকে প্রথম ভালো ভাবছিলাম। তাই আপন ভেবে তুমি বললাম।
- আমি কি এখন ভালো না?? কয়েক মুহুর্তে কি করলাম??
- আগে আমার উত্তর দেন।
- হুম... দেবোতো । তবে যেভাবে প্রথম জিজ্ঞেস করছিলা ঐ ভাবে করো।
- কোন ভাবে??
- ঐ যে আপন ভেবে।
- ও তাই । এইবলে মেয়েটা হেসে দিলো।
শুভ্র এই হাসির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। ইশ ....!!!! সারা জীবন যদি এই হাসির দিকে তাকিয়ে থাকতে পারতাম। আচ্ছা একটা মেয়ে এতো সুন্দর করে হাসে কেমনে??
- কি হলো ?? এই ভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?
- তোমার হাসিটা অনেক সুন্দর। চোখ ফেরাতে পারছি না।
- ও তাই?? তা আর কার কার হাসি এতো সুন্দর লাগে?
- তোমার কি মনে হয় আমি সব মেয়েকে এই একি কথা বলি?
- হুম। মনে হয়।
- কি দেখে মনে হলো??
- সেটা বলব না।
- আচ্ছা । বলতে হবে না। তোমার নাম কি বলা যাবে?
- কেন বলা যাবে না?? তবে বলতে ইচ্ছা করছে না। পরে বলব।
- ও বলবে না।
- বলব না কে বলেছে?? আপনি অনুমান করুন?? দেখি আপনার ESP ক্ষমতা কেমন??
- আমার এই সব ক্ষমতা নেই। তুমিই বলো।
- ক্ষমতা না থাকলে কথা বলব না।
- তুমি কি জান তোমার সবচেয়ে সুন্দর জিনিস কি??
- কি?? তোমার হাসি। তোমার হাসির মধ্যে মন ভুলানো একটা ব্যাপার আছে। আর এতো কোমল হাসি খুব কম মেয়ের হয়।
- তাই নাকি? জানতাম না তো। তুমি মনে হয় মেয়েদের নিয়ে অনেক ভাবো??
- যাক .... আপন মনে করে কথা বলতেছ। তুমি বলে ডাকলে।
- কি হলো ?? কথা ঘুরাও কেন??
- কি বলব তোমার হাসি দেখে ভালো লাগল তাই বললাম। আর আমি তোমাকে ছাড়া অন্য মেয়েকে কখনো এই কথা বলি নাই।
- আচ্ছা আমার হাসি তোমার ভালো লাগছে তাই বলছ। কিন্তু অন্য কারো অন্য কিছু তোমার ভালো লাগলে কি তুমি এই ভাবে বলে দিবে??
- ভালো বলছ..... চেষ্ট করবো। কিন্তু জানি পারবো না। হা হা হা হা হা
- বুঝছি।.....মা আসতেছে এখন যাই।
- দাঁড়াও। পড়ে কি কথা হবে??
- কি জানি । হতেও পারে। দেখা যাক।
- তোমার নামটা তো বলে যাও..........
মা আসার আর সময় পেলো না। নামহীন অপ্সরীএইভাবে চলে গেলো!!! সন্ধ্যা হয়ে গেছে। বাসায় যাওয়া উচিত। আজকে মনটা অনেক ভাল।আরেকদিন কথা বলে সব জানা যাবে।
বাসায় যাওয়া মাত্রই শুভ্র জ্বর উঠলো। শুধু জ্বর না জ্বরের ১৪গোস্টি নিয়ে উঠলো। ৭ দিন বিছানায় শোয়ে থাকতে হলো। মা কিছুতেই বাইরে যেতে দিবেনা।
ভালো হওয়া মাত্রই সে ঐ গলির বাসার সামনে উপস্থিত। আজকে বাসাটা একবারেই চেনা গেলো। ভালোই তো। কিন্তু জানালার সামনে গিয়ে মনে হলো বাসাটা খালি খালি লাগছে। হ্যাঁ তাইতো..... বাসায় কোন কিছু নেই।বাসা খালি পরে আছে। তাহলে কি বাসা পাল্টালো। আমি তো কিছুই জানি না। সে কোথায় পড়ে,কিসে পড়ে?? এখন কি হবে?? কাওকে জিজ্ঞেস করতে হবে।
কিন্তু কেও কিছু বলতে পারলো না। একটা পরিবার চলে গেলো আর কয় গেলো কেও জানে না। অদ্ভুত!!!!তবে এতাই স্বাভাবিক। শহরে কেও কারো খোঁজ রাখে না।
সে কিছুক্ষন বাসার দিকে তাকিয়ে থাকলো। ইশ!!!!!!! ঐ দিন যদি তুমি সব বলতে!!!!! শুভ্র যেনো মেয়েটার হাসির শব্দ শুনতে পেলো। আচ্ছা হাসির শব্দ এতো সুন্দর হয় কেমনে???????