somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অনুপম অনুষঙ্গ
আমার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : ১. এবার ধরা দাও (২০০০) ২. উচ্ছ্বাস(২০০১) ৩. পরিত্যক্ত পদাবলি(২০০২) ৪. এক বিকেলে(২০০৪) ৫. নিঃসঙ্গ নির্জন(২০০৫) ৬. ভাঙনের শব্দ(২০১১) ৭. আমার সন্তান যেন দুধেভাতে(২০১২) ৮. চারিদিকে জীবনে সমুদ্র-সফেন(২০১২) গবেষণা গ্রন্থ : ১. শওকত

দর্জি // শাফিক আফতাব //

০৮ ই জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কী এক আজব দর্জি, আবহমান নরম কাথায় ঢুকাচ্ছে সুঁচ
ওদিকে কংক্রিটের মতোন শক্ত হচ্ছে কামনার গম্বুজ
তারপর মেঘের মতো গলে গলে বৃষ্টির ফোটায় দিচ্ছে ফিনকি
আর অমনি উধাও চলে গেলো অনন্তের পাখি।

ফুটন্ত জলের মতোন কেটলির ভেতরে উঠেছিলো টগবগ
কখনো মনে হয়েছিলো সে বুঝি হচ্ছে অপারগ
অতঃপর নরম অথচ গহীন এক আজব গহবরে সে গেলে ঢুকে
স্বর্গের থেকে এক জোড়া সোনালী ফল এলো তার মুখে।

রক্তের অভিব্যক্তিতে সে সিক্ত হলো মোহন মধুর মুহূর্তে
কী সুধা মেখে এলো সে আজ এই বৃষ্টির আবর্তে
পৃথিবীর প্রান্তর খুঁড়ে খুঁড়ে সে ছিটালে বীজ
সে আজ খুলেছিলো প্রেয়সীর শেমিজ।

আজব দর্জি নকসী কাঁথা সেলায় রাত্রির যামে __
মগ্ন পাঠকের মতোন কী গভীর অধ্যয়ন তার, কামনার খামে।

০৭.০৭.২০১৪


তাকে উড়তে দাও, অথই আকাশ ছুঁইতে দাও //
শাফিক আফতাব //

তারে কেনো বাঁধতে চাও সীমান বাঁধনে
তুমি তো নিজেই বৃত্ত ভেঙে চাও অবাধ বিস্তার
তবে তার কেনো দুঃখ দাও মধুর লগনে
তবে তারে দাও না কেনো একটু নিস্তার।

পৃথিবীর প্রতিটি বস্তুর আছে এক স্বতন্ত্র ধর্ম
নদীর তরঙ্গ যথা নিজের মতোন বেগে বেগে ধায়
সে যেমন কোনোদিকে কখনো নাহি তাকায়
এখানে যে যার মতোন করুক না কর্ম।

প্রাণকে কী করে তুমি বন্দি করবে খাঁচায়
একদিন সে নিজেই চলে যাবে অনন্তে
পরিত্যক্ত দেহখানি তোমার পড়ে রবে মধু বসন্তে
তবে তারে কেনো কষ্ট দাও নিয়মের খোঁচায়।

তাকে উড়তে দাও, অথই আকাশ ছুঁইতে দাও
সে নিজেই ফিরে আসবে উৎসে, কষ্ট কেনো পাও ?
০৮.০৭.২০১৪

কারো জন্য অপেক্ষা নেই, প্রতীক্ষাও //
শাফিক আফতাব //

কারো জন্য অপেক্ষা নেই, প্রতীক্ষাও

কারো জন্য একদিন ছিলো গোলাপদিন
কারো জন্য একদিন আমি ক্ষয় করেছিলাম পাথরের পথ
কেউ একদিন শিশিরভেজা গোলাপ দিনে গুনেছিলো দিন
একদিন কারো মনে আমি ছিলাম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানব।

অভিমান করার লোক ছিলো একদিন
জবাবদিহি করারও লোক ছিলো
হৃদয়ের পাশে এক তাজা হৃদয় নিয়ে শুয়েছিলো একদিন একজন
চোখের জল ছিলো, ভালোবাসার ছল ছিলো,
বর্ষায় কদমভেজার দিন ছিলো একদিন
এখন কারো জন্য অপেক্ষা নেই, প্রতীক্ষাও।

একদিন এই সোনা মুখে সোনালী স্পর্শ ছিলো
লকলকে চুলের বিন্যাসে ফুটতো শতশত কাশফুল
একদিন ভরপুর ছিলো হৃদয়ের উপকূল
একদিন আমার তুমি ছিলে, আমি তোমার ছিলাম
অামরা ছিলাম শঙ্খচিল, তোমার আমার মাঝে ছিলো কত অন্তমিল।

এখন কারো জন্য কারো অপেক্ষা নেই, প্রতীক্ষাও।

০৮.০৭.২০১৪


চলো ফিরে যাই পূর্বপুরুষের বাস্তভিটায়, লাঙলে মুঠি ধরি //
শাফিক আফতাব //

চলো মাটির ঘরে যাবো, শানকির জলে তৃষ্ণা মেটাবো
নদীর জলে ধুয়ে দেবো ভালোবাসার ব্যবহারিক শরীর
কদমবনে বর্ষার জলে ভিজে নিবেদিতো হবো
লতায় পাতায় বানাবো আমাদের ভালোবাসার নীড়।

ইটপাথরের ঘরে, পিচঢালা পথে আছে পাষাণ দানবের আঁচ
আছে মানুষের মিথ্যা অলিক আর অভিনয়ে স্বচ্ছ সুন্দর কাচ
আছে ভাষার দহনে ভালোবাসার আদায়ের বিবিধ ফন্দি
অন্যায় আর অসত্যের সাথে চুক্তি, সন্ধি।

পোড়া মাটির মতোন পুড়ে ঝামা হয়েছে মানুষের মন
কারো চোখের জল এতটুকু করুণা নিয়ে আসেনা এই শহরে
এখানে আছে জীর্ণ আস্তানা, বেগানা, নগ্ননারীর রমণ
অজস্র কীট বাস করে এই শহরের গহবরে।

চলো ফিরে যাই পূর্বপুরুষের বাস্তভিটায়, লাঙলে মুঠি ধরি
আবহমান বাংলার রূপ হৃদয়ে ধারন করি, হে অভিসারি।
০৮.০৭.২০১৪
ঋণ //
শাফিক আফতাব //

আমি তো দীনহীনই ছিলাম, তুমিই ভালোবাসা ঋণ দিয়েছিলে
জলবতী করেছিলে ভালোবাসার মরা নদী
বৃষ্টির জলে ধুয়ে দিয়েছিলে অন্তর্গত সুন্দরের শরীর
তোমাকে পেয়ে হয়েছিলাম অপার অনাদী।

আমি ছিলাম চৈত্রের চোচির মাঠ
তুমি দিয়েছিলে বৃষ্টির স্পর্শ
মনে বর্ষার কদমের ঘ্রাণ হয়েছিলো জমাট
তুমি হয়ে উঠেছিলে বিশেষ দিন, উৎসব অার নববর্ষ।

আমার দৈন্যতা ছিলো উপবাসে কতদিন আমি কেটেছি রাত
প্রতিবেশীর আভিজাত্য দেখে কোনোদিন হিংসায় জ্বলেনি আমি
মানুষের দিন যেতো আনন্দে, কামনার অবিরাম জলপ্রপাত
তুমি বড় প্রাঞ্জল করেছিলে, কত উর্বর করেছিলে মনোভূমি।

সাধের সাধ্য ছিলো না, স্বপ্ন দেখিনি কোনোদিন অপরূপা সুরঞ্জনার
তুমিই ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছিলে, কত সুষমা দিয়েছিলে বর্ষার।
০৮.০৭.২০১৪


প্রত্যাবর্তন
শাফিক আফতাব

চলো গ্রামে ফিরে য়াই, মাঁলকোচা মেরে মাঠে নামি, জমির আল ঝুঁড়ে দেই ;
ছিটাই বীজ, রবী শস্যের জন্য প্রস্তত করি বাস্তভিটার পূবের ভাগ __
পৈত্রিক পুকুর খনন করে ছাড়ি মাছ, জঙ্গলে লাগাই কিছু দেশি শাক ;
কিছু বৃক্ষ রোপণ করি, ধূলোয় গড়াগড়ি খাই, স্বর্গসুধা পাবো আপন ঘরেই।

এই নগ্নযুগে নাগরিক নারীর শরীরে শুধু পাবে যন্ত্রের বিস্তার __
নাগরগুলো নেমেছে টেন্ডার বাগাতে, ঘুষের মহড়ায়, ভূমিদস্যুপনায় ;
অনেকেই নাম লিখিয়েছে তারা অধিকাক্ষমতাধর সরকা ক্যাডার ;
এখানে তোমার স্থিতি কোথায়, এতটুকু বর দেবেনা তোমায় জাঁহাপনায়।

বরং চলো গ্রামে ফিরে যাই, মাটির চাক ঠেলে বপন করি সোনাবীজ,
হালের বলদকে সুঠাম করি, হাসমুগরীর খামার দেই, কবুতর পালি __
দেখবে নিত্যদিন ভালোবাসার রোদ উঠছে তোমার ঘরে, একফালি
দেখবে স্বর্গের থেকে এসে উর্বসী নিজেই খুলে দেখাবে শুভ্র শেমিজ।

চলো গ্রামে ফিরে যাই, নগরের কীটের ভিতরে আছে শুধু স্বর্থের ঘুণেপোকা ;
আর আছে মিথ্যে ভাউচার, অলিক উপাচার, কত অসত্য লেখাজোকা।
০৮.০৭.২০১৪

দর্জি //
শাফিক আফতাব //

কী এক আজব দর্জি, আবহমান নরম কাথায় ঢুকাচ্ছে সুঁচ
ওদিকে কংক্রিটের মতোন শক্ত হচ্ছে কামনার গম্বুজ
তারপর মেঘের মতো গলে গলে বৃষ্টির ফোটায় দিচ্ছে ফিনকি
আর অমনি উধাও চলে গেলো অনন্তের পাখি।

ফুটন্ত জলের মতোন কেটলির ভেতরে উঠেছিলো টগবগ
কখনো মনে হয়েছিলো সে বুঝি হচ্ছে অপারগ
অতঃপর নরম অথচ গহীন এক আজব গহবরে সে গেলে ঢুকে
স্বর্গের থেকে এক জোড়া সোনালী ফল এলো তার মুখে।

রক্তের অভিব্যক্তিতে সে সিক্ত হলো মোহন মধুর মুহূর্তে
কী সুধা মেখে এলো সে আজ এই বৃষ্টির আবর্তে
পৃথিবীর প্রান্তর খুঁড়ে খুঁড়ে সে ছিটালে বীজ
সে আজ খুলেছিলো প্রেয়সীর শেমিজ।

আজব দর্জি নকসী কাঁথা সেলায় রাত্রির যামে __
মগ্ন পাঠকের মতোন কী গভীর অধ্যয়ন তার, কামনার খামে।

০৭.০৭.২০১৪

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×