বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতায় আনার পেছনে তরুণ সমাজের যে ভূমিকা রয়েছে তা পূরণ করতে না পারায় এখন বিরুপ মন্তব্য যে যেভাবে পারছে চালিয়ে যাচ্ছে। যোগাযোগের সেরা মাধ্যম ফেসবুকেও তা কম নয়। প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যর্থতা নিয়েও বেশ কিছু দিন গরম ছিল মিডিয়া নেপথ্যে ছিলেন এক শিক্ষক। তেমনি আরো কিছু ফেসবুকের মন্তব্য সামুর ব্লগারদের জন্য তুলে ধরা হলো-
আমি বাঁধনহারা নামে সম্প্রতি এক ফেসবুক ব্যবহারকারী তার দেয়া স্টাটাসে লিখেছেন-
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ভারতের দালালি করে আসছে। স্বাভাবিকভাবে আওয়ামী লীগের সমর্থক ও অনুরাগীরাও ভারতের দালালি করে যায়। ভারতের যেকোনো অত্যাচারকে এসব দালাল বৈধতা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে। বাংলাদেশের সামর্থ্য অনুযায়ী ভারতকে সব সময়ই সুবিধা দিয়ে এসেছে এ দেশ। অথচ মনমোহন সফরে ভারত তার স্বার্থ ছাড়া এক পাও এগোয়নি। তিস্তা চুক্তি ব্যর্থ হওয়ার পেছনেও এই একই কারণ।
চণ্ডীদাস তার মন্তব্যে বলেন-
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জনগণকে যে স্বপ্ন দেখাতেন, আপামর সাধারণ মানুষ নির্ভেজাল সে স্বপ্ন দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে থেকেছে। কিন্তু স্বপ্ন আর বাস্তবতার পার্থক্য কতটুকু তা মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। তেমনি মনমোহন সিং আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে স্বপ্ন দেখিয়ে এসেছেন, শেখ হাসিনাও সে স্বপ্নের জন্য একের পর এক প্রহর গুনে এসেছেন। নিশ্চয় স্বপ্ন আর বাস্তবতার সেই পার্থক্যটুকু এবার তিনি টের পেতে শুরু করেছেন? একেই বলে রাজনীতির লীলাখেলা!
শিহাব আহমেদ জানান তার ক্ষোভের কথা-
তাহলে মনমোহনের বাংলাদেশে আসাটা কি সার্থক হলো না? এ সরকারের সঙ্গে ভারতের কী গভীর সখ্য; ভারতেরও নাকি বাংলাদেশের প্রতি অন্য রকম আন্তরিকতা! তাহলে কেন তিস্তা চুক্তিটা শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি?
কাজী জুবায়ের মাহমুদ তার না পাওয়া স্বপ্ন নিয়ে বললেন-
মনমোহন সিং বাংলাদেশে আসার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের পাহাড়সমান স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। মনমোহন যাওয়ার পর এখন সব স্বপ্ন ভেঙে পড়ল।
শ্রীকৃষ্ণ সুশীলদের বলেন-
কোথায় গেল সংখ্যালঘু সুশীল ব্যক্তিরা? মনমোহন বাবু তো আওয়ামী লীগকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে চলে গেলেন। তারা আওয়ামী লীগকে এখন কী পরামর্শ দেবে? আঙুল চোষা ছাড়া তো আর কোনো কাজ দেখছি না।
সাদাত দা ডন নামে একজন জানিয়ে দেন তার নিজের কথা-
বাংলাদেশ যে ভারতের কাছে বরাবরই ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা, তা আরেকবার প্রমাণিত হলো এই মনমোহন গংদের সফরে। মমতার দিদিগিরির জয় হলো। তার পরও দেখছি, আমরা ভারতকে 'জি হুজুর' বলতে ব্যস্ত!
মুরাদ আবসার একটু রসিকতা করে বলেন-
কে বলে মনমোহনের সফর ব্যর্থ? ভারত তো ঠিকই আছে, তারা এসে খেয়ে আবার ব্যাগ ভরে নিয়েও গেল। ব্যর্থ শুধু আমাদের প্রধানমন্ত্রী।
আবদুল মজিদ নাদিম জনমতের গুরুত্ব বুঝে বলেন-
জনগণকে অন্ধকারে রেখে চুরি করতে চাওয়া ট্রানজিট চুক্তি শেষ পর্যন্ত হয়নি_জনমতের মূল্য আছে মনে হচ্ছে।
রোঙ্নে রাজীব ইলিশ নিয়ে বলন-
ভারত আমাদের শত্রু। যদি বিশ্বাস না করেন, তাহলে ১৯৭৫-পরবর্তী ইতিহাস খতিয়ে দেখবেন। বাঙালি ইলিশ খেতে পারে না চড়া দামের জন্য। আর সরকার ভারতকে ১৫০ কেজি ইলিশ উপহার দেয়।
দেবদাস চক্রবর্তী দরিদ্রতা নিয়ে শেয়ার করেন তার অভিজ্ঞতার কথা-
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের চার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপকালে দারিদ্র্যকেই এ অঞ্চলের প্রধান সমস্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি চার মুখ্যমন্ত্রীকে এই দারিদ্র্যবিমোচনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার ওপর জোর দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের ব্যর্থ মন্ত্রীরা যখন খাদ্যের নিরাপত্তা এবং দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ রোধ করতে না পেরে জনগণকে কম খাওয়ার পরামর্শ দেন, তখন কেন প্রধানমন্ত্রী তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না? কেন তিনি এসব ব্যর্থ মন্ত্রীর পক্ষে সাফাই গান? এটাই কি তাঁর দারিদ্র্যবিমোচনের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস? নাকি জাতিকে আরো দরিদ্র করার ঐক্যবদ্ধ নমুনা?
শাহরিয়ার রশিদ ফাহিম তার ক্ষোভে মন্তব্য করেন এভাবে-
ভারত-বাংলাদেশের চুক্তিগুলো হাস্যকর ব্যাপার ছাড়া আর কিছু নয়। মাছ-বাঘ ইত্যাদি উন্নয়ন চুক্তির জন্য এত আয়োজন? এসব উন্নয়ন রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোনো পরির্বতন আসবে বলে মনে হয় না। কিন্তু মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য যে চুক্তি দরকার ছিল, অর্থাৎ তিস্তার পানিবণ্টনে এই ডিজিটাল সরকার কিছুই করতে পারেনি। এরপর হয়তো গরু-ছাগল রক্ষা চুক্তি ছাড়া আর কিছুই সম্ভব হবে না।
তুষার বণিকও জানাতে ভুলেননি-
এ দেশে রাজনীতি বলে কোনো কথা নেই। সব কিছুর আড়ালেই স্বার্থ আর দুর্নীতি জড়িত।
এই যদি হয় তরুণদের ভাবণা তবে আগামী নির্বাচনে কে এসরকারের পক্ষ নিবে? ভেবে দেখুন যারা এবার আওয়ামীলিগকে ক্ষমতায় আনতে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছে তারা কি আগামীতেও তাদের পক্ষে কাজ করবে???