somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুক্তি মুন্না
আমি আমার জীবনের লক্ষ্য নিয়ে সন্দিহান ছিলাম এবং এখনো আছি। আমি পথিক হয়ে আসলে কোথায় যাচ্ছি, এর শেষ কি হবে তা আমাকে মাঝে মাঝে ভাবিয়ে তুলে। কিন্তু আমি হেঁটে চলছি অবিরত। আমি নিজেকে মেঘের সাথে তুলনা করতে পছন্দ করি, একদিন সেও বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে। আমিও ---

সারা বিশ্বে এক সাথে ঈদ ও রোজা কেন হয়না?

০২ রা জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পক্ষ বিপক্ষ। ইমাম আবু হানিফা র. এর ফতওয়া। শবেকদর ও আরাফা।
আমার ক্ষুদ্র খোজাখোজিতে যা পেলাম।

পক্ষে যারা।
যারা পক্ষে আছেন তাদের কোন দলীল নেই। যাও দু'একটা পেশ করার চেষ্টা করেন তাও কোমর সোজা করে দাড়াবার সামর্থ রাখে না।

আবার উনাদের যুক্তি বড় চটকদার। যে কাউকে তারা পটাতে পারেন সহজেই। কিন্তু যুক্তিতে মুক্তি নেই এটা মনে হয় তারা ভুলে গেছেন।

দু'বছর আগে একজনের সাথে আলোচনা হয়েছিল অল্পস্বল্প। চমকদার যুক্তি শূনে উনাকে একটা প্রশ্ন করেছিলাম। সৌদিআরবে যে দিন চাঁদ দেখা হয় এর আগেরদিন পৃথিবীর কোন অঞ্চলের মুসলমান চাঁদ দেখে কি না? তিনি স্বীকার করলেন হ্যা দেখে। এবং বললেন এখানে এসেই আমরা আর পেরে উঠি না।

সারা বিশ্বে এক সাথে রোযা রাখা ও ঈদ পালনের প্রবনতা এখানেই নিঃশেষ হয়ে যায় যখন বলা হয় সৌদিআরবের আগেরদিন যারা চাঁদ দেখেছে এরা কি সৌদির সাথে মিল রেখে রোযা রাখার জন্য একদিন অপেক্ষা করবে? যদি করে তাহলে চাঁদ দেখার পর তাদের উপর ফরজ হওয়া রোযার কি হবে? অথবা ঈদের চাঁদ দেখার পর সৌদির সাথে মিলে ঈদ করার জন্য অপেক্ষা করে ঈদের দিনে হারাম রোযা রাখবে কি?
এক সাথে রোযা রাখা ও ঈদ পালনকারীরা এখানে লাজবাব।

পৃথিবীর আকাশে যখন প্রথম চাঁদ উদিত হয় তখন সর্বপশ্চিমের ভূখন্ড আমেরিকার আলাস্কা ও কানাডার মুসলমানরা দেখতে পায়। এর পরের দিন দেখতে পায় সৌদিআরব।

বাস্তবতা হল পৃথিবীর মানুষ আকাশে উদিত চাঁদ দেখতে পায় তিন দিনে। প্রথম দিন পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্তের লোকজন, দ্বিতীয় দিন মধ্যপ্রাচ্যের লোকজন ও তৃতীয় দিন পৃথিবীর পূর্বপ্রান্তের লোকজন। একদিনে সারা বিশ্বে চাঁদ দেখা যেমনি সম্ভব নয় ঠিক তেমনি একদিনে রোযা রাখা ও ঈদ পালনও সম্ভব নয়।

সৌদিআরবে যদি প্রথম দিন চাঁদ দেখা যেত আর দাবী তোলা হত ইসলামের প্রাণ কেন্দ্র মক্কার সাথে মিল রেখে আমরা রোযা রাখব ও ঈদ পালন করব তাহলে কুরআন হাদীসকে সঠিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষন করে অন্তত দাবীটুকু হাতে নেয়া যেত। কিন্তু এ দাবী কুরআন হাদীস বিরোধী হওয়ায় হাতে নেয়াই সম্ভব হচ্ছে না।

এ দাবী কুরআন বিরোধী,
আলকুরআন فمن شهد منكم الشهر فليصمه-
তোমাদের মধ্যে যে রমজান মাস পায় সে যেন রোযা রাখে। বাকারা ১৮৫.
চাঁদের মাধ্যমে রমজান যারা পেল তাদের জন্য রোযা ফরজ। এভাবে ঈদের চাঁদ দেখার পর রোযা হারাম।
যারা সৌদিআরবের আগের দিন চাঁদ দেখে এক সাথে রোযা রাখার জন্য অপেক্ষা করল তারা কুরআন বিরোধী কাজ করল। এভাবে ঈদেও।

এ দাবী নিম্নের হাদীস বিরোধীও,
মুহাম্মাদ "সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম" এর হাদীস, আবু হুরায়রা রা. বলেন, "যখন তোমরা নতুন চাঁদ দেখ তখন রোযা রাখ এবং যখন শাওয়ালের চাঁদ দেখ তখন রোযা ভেঙ্গে ফেল আর যদি আকাশ মেঘাছন্ন থাকার কারণে চাঁদ দেখা না যায় তবে রমযানের ত্রিশ দিন পূর্ণ করো একইভাবে শাবানেরও"
বুখারী ১৯০৯.
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
ইমাম আবু হানিফা র. এর ফতওয়া।
ইমাম আবু হানিফা র. এর মতে বিশ্ববাসী এক সাথে রোযা রাখবে ও ঈদ করবে। কথা ঠিক।

উত্তর,
সে যুগের মানুষের ধারনা ছিল পৃথিবী চ্যাপ্টা। পশ্চিমাকাশে চাঁদ উদিত হলে সারা বিশ্বের মানুষ তা দেখতে পাবে। সে ধারনায় ছিল ইমাম সাহেবের ফতওয়া।
বর্তমানে সচেতন সবার জানা পৃথিবী চ্যাপ্টা নয়, গোল। গোলাকার পৃথিবীতে একদিনে চাঁদ দেখা সারা বিশ্বে সম্ভব নয়।

মজার কথা হল, আমাদের দেশে অধিকাংশ মুসলমান হানাফি। সাধারন হানাফি মুসলমানকে ধোকা দেবার জন্য ইমাম আবু হানিফা র. এর ফতওয়া টেনে আনা হয়।
সরন রাখা জরুরি যে, ইমামরা নবী ছিলেন না। ইমামদের নিজেস্ব ফতওয়া সব যুগে সচল রাখা জরুরি নয়।
সবযুগে সচল কুরআন ও হাদীস।

আরো মজার কথা হল, যারা এ দাবীর পক্ষে তারা সহীহ হাদীস মানার দাবীদার। কিন্তু সৌদিআরবের সাথে মিল রেখে রোযা রাখা ও ঈদ করার পক্ষে কোন দলীল পেশ করতে পারেননি। তারাই বলেন যুক্তি শয়তানী কাজ আবার তারাই যুক্তি দিয়ে এ দাবী উত্তাপন করে থাকেন।

আরো একটি মজার কথা। মাজহাব মানিনা, ইমাম মানিনা, সহীহ হাদীস ছাড়া কিছুই বুঝিনা বলে যারা শ্লোগান দেন তারা দুই ভাগে বিভক্ত। তাদের মাঝেই চলছে চরম বাহাছ বিতর্ক। জানা মতে এ পর্যন্ত বিপক্ষরাই বিজয়ী। অবশ্য সুযোগে ইমাম আবু হানিফা র. এর নাম ব্যবহারে কেউ কার্পন্য করেন না।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
শবেকদর ও আরাফা।
যাদের যখন রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত তখন তাদের শবেকদর। নো টেনশন। রহমত, মগফিরাত ও নাজাতের ফয়সালা হয় এমন এক জগতে যেখানে দুনিয়ার মত দিন রাত্রি নেই। দুনিয়াতে চাঁদের হিসাবে যখন যেখানে শবেকদর, রহমত বর্ষিত হয় সেখানে বেকদর।

এভাবে আরাফার দিন। চন্দ্র সূর্যের ঘুর্নায়নে যেদিন যেখানে যাদের ৯ জিলহজ্ব সেদিন সেখানে তাদের আরাফার ফজিলত।

বিপক্ষে যারা,
যারা বিশ্বব্যাপী এক সাথে রোযা ও ঈদ পালনের বিপক্ষে তাদের দলীল অকাট্য। যাদের দলীল আছে তাদের মতামত গ্রহন করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে বাতস্তবতাটি বুঝার তৌফিক দিন। আমীন
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫০
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:০৭




মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে…
১. প্রথমে বলেছেন মৃতদের পেটে কাটাছেড়ার ডাহা মিথ্যা। পরে স্বীকার করেছেন দাগ থাকে।
২. আশ্রমে বৃদ্ধদের চিকিৎসা দেয়া হয় না। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×