'সাহাবিরা মিয়ারে হক' বিষয়ে উসুলী বা মৌলিক কয়েকটা কথা মাথায় রাখতে পারেন। এই পয়েন্টগুলো পুরো বিষয়টাকে অল্প কথায় আপনাকে একটা স্বচ্ছ ধারণা দিবে। সেগুলো হলো-
- যারা সাহাবিদেরকে মিয়ারে হক মনে করে, তারা সাহাবিদের সামগ্রিক জামাতকে (মাজমুঈ হাইসিয়ত) উদ্দেশ্য নেয়। একক ব্যক্তি (ফরদান ফরদান/ইনডিভিজুয়ালি) তাদের উদ্দেশ্য থাকে না। কিন্তু যারা একে অস্বীকার করে, তাদের দলিলগুলো একক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত।
- খেয়াল করলে দেখবেন, 'সাহাবায়ে কেরাম মিয়ারে হক' কথাটা এভাবে বলা হচ্ছে। সাহাবা ও কেরাম দুইটাই বহুবচনের শব্দ। এটাও প্রমাণ করে যে, একক কোন ব্যক্তি সাহাবীকে মিয়ারে হক ধরা হয় না; বরং তাদের সামগ্রিক জামাতকে ধরা হয়। কুরআনেও সেভাবেই বহুবচনে বলা হয়েছে- বি মিসলি মা আমানতুম/কামা আ⁻আমানাননাসু... যেটা নির্দিষ্ট ব্যক্তি নয়; বরং তাদের জামাতকে ইঙ্গিত করে।
- একক ব্যক্তি সাহাবির কোন ক্রুটিকে দেখিয়ে সাহাবিদের মিয়ারে হক হবার দাবীকে নাকচ করা মূলত 'মিয়ারে হক' বলতে কী বুঝানো হচ্ছে, সেটা না বুঝেই কথা বলা। কেননা যারা সাহাবীদের মিয়ারে হক বলেন, তারাই আবার সাহাবিদের নিষ্পাপ বা মাসুম মনে করে না।
- 'সাহাবিরা মিয়ারে হক' এর মানে এই নয় যে, তারা কোন পাপ করলে আমাদেরকেও সেই পাপ করে তাদের অনুসরণ করতে হবে। বরং পাপ হয়ে যাবার পর তারা যেভাবে অনুতপ্ত হয়েছেন, যেভাবে তওবা করেছেন আমরাও কোন পাপ হয়ে গেলে সেভাবে অনুতপ্ত হবো, তওবা করব এটা হলো আমাদের জন্য অনুসরণীয়।
- সহজ কথায় 'সাহাবিরা মিয়ারে হক' এর মানে হলো, তারা যেভাবে দ্বীন বুঝেছে, দ্বীন মেনেছে, ঈমান এনেছে, আমল করেছে সেভাবেই দ্বীন পালন করা। তাদেরকে সমালোচনার লক্ষ্যবস্তু না বানানো। তাদেরকে ভালোবাসা ও তাদের প্রতি বিদ্বেষ না রাখা।
- মুনকিরীনে হাদীস বা হাদীস অস্বীকারকারী বলে আমরা যাদের ডাকি, তারা যেমন সকল হাদীসকে অস্বীকার করে না, তেমনি সাহাবী বিদ্বেষী হতে হলে সকল সাহাবীর প্রতি বিদ্বেষী হওয়া জরুরি নয়। একজন সাহাবির প্রতিও যদি কেউ বিদ্বেষ রাখে, তাহলেই সে মুবগিযে সাহাবী বা সাহাবী বিদ্বেষী হবার জন্য যথেষ্ট।