somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গুলশানের রেঁস্তোরায় জঙ্গি হামলা, জিম্মি, হত্যাযজ্ঞ ও অপারেশন থান্ডারবোল্ট: আমার এক টুকরো অভিজ্ঞতা

০৬ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জিম্মি দশা থেকে বেড়িয়ে আসছে ভয়ার্ত দুই তরুণী।

অপারেশন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমার বুক ধরফর শুরু হলো। ঠিক ভয়ে নয়, উত্তেজনায়। আশেপাশে আর কোনও সাংবাদিক চোখে পড়ছে না। কেবল একজন বিদেশী সাংবাদিক ছাড়া। গণমাধ্যমকর্মীদের সবাইকে অনেক দুরে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি বিশেষ কৌশলে পরিচয় গোপন রেখে দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সবাই অবস্থান করছেন, সেখানেই। তখন ৭ টা বেজে ২০ বা ২৫ মিনিট হবে। হঠাৎ করেই সেনাবাহিনীর একাধিক জিপ এসে মোড়টিতে দাঁড়ালো। ভেতর থেকে অ্যাসল্ট রাইফেল নিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে নামছে কমান্ডোরা। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তারা একসঙ্গে জড়ো হয়ে গেলেন। তাদের কমান্ডার একটা শর্ট ব্রিফ দিলেন। তারপর মুভ বলার সঙ্গে সঙ্গে তারা দুই ভাগে ভাগ হয়ে ফুটপাতে ক্রলিং করে এগোতে থাকলেন। এক দলের পর আরেক দল। এর আগেই সাঁজোয়া যান এসে হাজির হয়েছে। হোলি আর্টিজানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে কমান্ডোরা। কিছু দূর যাওয়ার পর আমার চোখের আড়াল হয়ে গেলো তারা।

আমি যেখানটায় দাঁড়িয়ে, সেটা হোলি আর্টিজানের দিকে যেত সর্বশেষ যে মোড়, তার দক্ষিণ রাস্তার কর্ণারে। আমার বিপরীত দিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকতারা দাঁড়িয়ে। রাস্তার এপার-ওপার। আমার এপাশে গুটি কয়েক লোক। সবাই সাদা পোশাকে। এসবি, ডিজিএফআই, এনএসআইয়ের গোয়েন্দা তারা। বুলেট প্রুফ জ্যাকেট নেই তাদের, আমারও। আমি তাদের সঙ্গে অনেকটা তাদের লোক হয়েই মিশে আছি।



৭ টা ৩৫ মিনিটে কয়েকজন জিম্মি বেড়িয়ে এলেন। নারী-পুরুষ-শিশু। অন্যদের মতো আমিও ভিডিও করলাম। ভয় লাগছিলো পাছে যদি ধরা পড়ে যাই। তাহলে আর কিছু হোক না হোক জায়গাটা হারাতে হবে আমাকে। অন্য গণমাধ্যমকর্মীদের মতো আমাকেও অনেক দুরের বেষ্টনীর বাইরে থাকতে হবে। কিন্তু ছবি বা ভিডিও অন্যরাও করছিলো, তাই আমিও করলাম। যদিও কমান্ডোরা যখন প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন আমার বুক উত্তেজনায় এমন ধরফড় করছিলো যে আমি মোবাইল ক্যামেরা কয়েকবার চালু করেছি আর বন্ধ করেছি। কিন্তু ছবি তোলা বা ভিডিও করতে পারিনি। সাহস হয়নি।

জিম্মি দশা থেকে বেড়িয়ে আসছে এক নারী।

তারপর শুরু হলো ঠা...ঠা...ঠা...ঠা... আওয়াজ। গুলির। গোলাগুলি শুরু হয়ে গেলো। মাঝে মধ্যেই গ্রেণেড বিস্ফোরণের মতো বিকট আওয়াজ। কানে তালা লেগে যাওয়ার মতো অবস্থা। অন্যদের সঙ্গে আমিও উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করছি। পেছনে থেকেই। সামনে যাওয়ার চেষ্টা করিনি। শঙ্কা ছিলো যদি কেউ জিজ্ঞেস করে ‘এই, আপনি কে?’ তাহলেই শেষ। সাংবাদিক শুনলে ক্ষেপে যাবে। বের করে দিবে। অপমান বা গলাধাক্কাও দিতে পারে। একারণে ঝুঁকিটা নেইনি। অন্যান্য গোয়েন্দা সদস্যদের ঘারের ওপর দিয়ে যতটা দেখা যায়, তাই উঁকি-ঝুঁকি মারছি।

আমার এই এতটা কাছ থেকে অপারেশন প্রত্যক্ষ করার কারণ আমার অদম্য কৌতুহল, একজন সাংবাদিক হিসেবে যা থাকাটা খুবই বাঞ্ছনীয়। রাতে যখন গুলশানে গোলাগুলির খবর পেলাম অফিসে বসে, তখন তা এতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে কল্পনা করিনি। অফিসের এক কলিগকে খোঁজ নিতে বললাম। নিজেও চেষ্টা করছি। কিন্তু কোনও পুলিশ কর্মকর্তাই ফোন ধরছেন না বা ব্যস্ত পাচ্ছি। থানা থেকে জানা গেলো বড় ঘটনা আশেপাশের সব থানার কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গেছে। এর মধ্যেই এসবির এক কর্মকর্তাকে পেয়ে গেলাম ফোনে। তিনি আমাকে বরং একটু ধমকই দিলেন যে, এত বড় ঘটনা তবু ঘটনাস্থলে না গিয়ে তাকে ফোন করছি কেন? তিনি ঘটনাস্থলে। বুঝলাম বড় কিছু। তিনি অবশ্য প্রাথমিক কিছু তথ্য শেয়ার করলেন। তারপর অফিসে বড় কর্তাদের কাছে জানিয়ে ছুটলাম ঘটনাস্থলের দিকে।

জিম্মি দশা থেকে বেড়িয়ে আসছে এক যুবক। সম্ভবত তিনি বিদেশী নাগরিক।

অফিসের নিচে এসেছিলো বন্ধু-সাংবাদিক সহকর্মী বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাখাওয়াত কাওসার। নিচে নামতেই সাকা বললো বড় ঘটনা চলেন যাই। আমরা ছুটলাম মোটরসাইকেলযোগে। দু’জনের দু বাইক। কারওয়ানবাজার থেকে গুলশানের শ্যুটিং ক্লাবের কাছে পৌঁছতেই বিশাল জ্যাম। বোঝা গেলো রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে। কোনওরকমে উল্টো পথে এগিয়ে গেলাম। পুলিশ রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে। আমাকেও যেতে দিবে না। আমি আমার দায়িত্বটা তাকে বোঝালাম। কিন্তু উর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া কাউকে গুলশানে ঢুকতে বা বেরোতে দিচ্ছে না তারা। পরে একজন উর্ধ্বতন এগিয়ে এলেন। তিনি আমার পরিচয় নিশ্চিত হলেন পরিচয়পত্র দেখে। তারপর সার্চ-টাচ করে ছাড়া পেলাম তাদের কাছ থেকে। বাইক নিয়ে এগিয়ে গেলাম ঘটনাস্থলের দিকে।

স্পটে গিয়ে চোখ আমার ছানাবড়া। বিশাল ঘটনা। আমি আগে আঁচই করতে পারিনি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অসংখ্য সদস্য। চারদিকে। হোলি আর্টিজানের কাছাকাছি যেতেই দ্রুম...দ্রুম...ঠা...ঠা... গুলি ও বোমার আওয়াজ। দেখা হলো সাকার সঙ্গে। ও আমার আগেই পৌঁছেছে। সে হাপাতে হাপাতে বললো...অল্পের জন্য বাঁচলাম। জঙ্গিরা গ্রেণেড মেরেছিলো। পুলিশের একটি দলের সঙ্গে সেও এগিয়ে গিয়েছিলো। এর মধ্যেই রক্তাক্ত কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া দেখলাম। একটু পর রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পেলাম ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মারুফ ভাইকে। তার গায়ে স্প্লিন্টার লেগেছে। তিনি জানালেন, ওসি সালাউদ্দিন অলরেডি ডেড। এরমধ্যে বিডিনিউজের লিটন ভাইসহ অন্যান্য সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। নোট নেয়ার চেষ্টা করছি। তথ্য সংগ্রহ করছি। পুলিশ-র‌্যাব-সোয়াতের সদস্যরা প্রস্তুতি নিচ্ছে। একপাশে দেখলাম র‌্যাব-১ এর সিও তুহিন ভাই ফার্স্ট এইড নিচ্ছেন। পরিস্থতি ভয়ঙ্কর। থমথমে। জঙ্গিরা হামলা করেছে এক রেস্টুরেন্টে। জিম্মি করে রেখেছে দেশী-বিদেশী নাগরিকদের। ঢাকার ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। এরকম কোনও ঘটনাও আমি কাভার করিনি কখনো। একেবারে যুদ্ধের মতো অবস্থা।

জিম্মি দশা থেকে বেড়িয়ে আসছে এক শিশু

একটু পর দেখলাম সোয়াত প্রস্তুতি নিচ্ছে। র‌্যাবের পক্ষ থেকে টেলিভিশন চ্যানেলের লাইভ বন্ধ এবং ক্যামেরা দুরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। সঙ্গে রিপোর্টারদেরও। বড় কর্মকর্তারা দাঁড়িয়ে কৌশল নির্ধারণ করছেন। সোয়াতের একটি টিমকে প্রস্তুতি নিতে দেখা গেলো। র‌্যাবের সদস্যরাও প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঘটনার আশপাশ থেকে সাংবাদিকদের সব সরিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি রয়ে গেলাম। সঙ্গে বাংলানিউজের নূরুল আমিন। আমরা দাঁড়িয়ে রইলাম সাদা পোশাকের দুই-তিন জন গোয়েন্দা সদস্যের সঙ্গে। মাঝে কয়েকবার পুলিশ এসে আমাদের জিজ্ঞেস করলো এই আপনারা কারা? ওরা নিজেদের পরিচয় দিলো। তাদের কল্যাণে রক্ষা পেলাম আমরাও। পরিচয় পেলেই ঘটনাস্থল থেকে দুরে সরিয়ে দেবে। আমি আর নূরুল আমিন ঠায় দাঁড়িয়ে আছি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুতি নিচ্ছে। বড় কর্মকর্তারা আলোচনা করছেন। কিন্তু অপারেশন শুরু হচ্ছে না। একটু পর আমাদের সঙ্গে যোগ দিলেন ডেইলীস্টারের শরীফ ভাই। সঙ্গে তার এক সহকর্মী। এর কিছুক্ষণ পর কালের কণ্ঠের সরোয়ার ভাই। তারপর রাব্বী, ঢাকা ট্রিবিউনের। আমরা একসঙ্গে দাঁড়াচ্ছি না। ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছি। কারণ এক সঙ্গে এত সাংবাদিক দেখলেই সরিয়ে দেবে। দুরে গেলে তথ্য হয়তো পাবো কিন্তু অপারেশনটা নিজ চোখে দেখা হবে না।

নাহ। অপারেশন হলো না। এরই মধ্যে সেহরীর সময় হয়ে এসছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেহরী খেতে যাচ্ছে। নিরাপত্তায় একটু লুজ মনে হলো। সাংবাদিকরা আরো কয়েকজন ভেতরে এলেন। এদিকে আমি আর নূরুল আমিন ঠায় প্রায় ঘণ্টা তিনেক দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমার কোমর ধরে গেছে। পানি পিপাসা লেগেছে। রাতে খাইনি, ক্ষুধা্ও লেগেছে চরম। পকেটে কোনও সিগ্রেটও নাই যে ধরাবো। এদিকে শোনা যাচ্ছে অপারেশন হবে ভোরের আলো ফুটবার পর। তার রণে ভঙ্গ দিয়ে আমি বেড়িয়ে এলাম। সোজা ৭৯ নম্বর সড়ক ধরে। এদিকটায় পরিচিত সাংবাদিক ভাই-ব্রাদারদের সঙ্গে দেখা হলো। শিপু ভাই...রেজোয়ান ভাই। রেজোয়ান ভাই আমাকে বললেন, চলো কোথাও গিয়ে খেয়ে আসি। আমি যেতে চাচ্ছিলাম না। কারণ একবার এলাকার বাইরে গেলে নিরাপত্তার কারণে যদি আর ঢুকতে না পারি। তবু রেজোয়ান ভাইয়ের জোরাজুরিতে বাইক নিয়ে বের হলাম।


ভদ্রলোক বেড়িয়ে আসতে আসতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি ক্ষোভ ঝারছিলেন। হয়তো অভিযান শুরু হতে সময় নেয়ার কারণে।

খাবারেরর দোকান খুঁজতে খুঁজতে চলে এলাম গুলশান এক নম্বরে। সেখানে দেখি একটি মাত্র বিরিয়ানির দোকান খোলা। রাত তখন তিনটা কি সাড়ে তিনটা বাজে। বিরিয়ানির দোকানে গিয়ে দেখা হলো বিকু ভাই আর সাহেদের সঙ্গে। একসঙ্গে বসে ভাগাভাগি করে বিরিয়ানি খেলাম। খাবার পর সিগ্রেট। আবার ফিরে এলাম স্পটে।

এদিকে আমার মোবাইলে চার্জ প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। কোনওরকমে আল্ট্রা সেভিং মুড দিয়ে মোবাইল চালাচ্ছি। মোবাইল চার্জ না থাকলে অফিস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবো। খাবার খেতে যাওয়ার আগে গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের মেইন রোডের কাছাকাছি দেখা হলো সাকা আর আমার অফিস কলিগ মিজান ভাইয়ের সঙ্গে। মিজান ভাই যে স্পটে এসেছেন আমি জানি না। তার এক পরিচিত কামলা ভাইয়ের বাসা সেখানে। আমি সুযোগ বুঝে মোবাইলে চার্জ নেই জানালাম। মিজান ভাই কামাল ভাইয়ের মাধ্যমে সেই ব্যবস্থা করলেন।

যাই হোক খাবার খেয়ে ভোর ৪টা নাগাদ আবার যখন স্পটে ফিরে আসলাম, তখন দেখি অপারেশনের কিছুটা তোরজোর শুরু হয়েছে। কিন্তু কাছাকাছি যাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ ব্যরিকেড দিয়ে রেখেছে। ভেতরের দিকে যেতে দিচ্ছে না। আগের জায়গায় আর ফিরতে পারছি না। এরই মধ্যে কয়েকবার গুলির শব্দ কানে ভেসে এলো। একটু হতাশ হলাম। ধুর খাবার খেতে বের হওয়া উচিত হয়নি বলে মনে হলো। অপারেশনটা আর প্রত্যক্ষ করা যাবে না। এরই মধ্যে একটু বৃষ্টি শুরু হলো। ঠাই নিলাম এক অ্যাপার্টমেন্টের গ্যারেজে। সবাই সেখানে। দেখা হলো ডিবির দুই কর্মকর্তার সঙ্গে। একজন প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় রেস্টুরেন্টে ঢোকার চেষ্টারত আইন-শৃৃঙ্খলা বাহিনীর দলে ছিলেন। বললেন, অল্পের জন্য তার প্রাণ বেঁচেছে। তার কাছ থেকে রেঁস্তোরা পরিস্থিতি কিছুটা জানা গেলো। তিনি জানালেন, রেঁস্তোরায় ঢুকতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গিরা গ্রেণেড চার্জ করে। তিনি সামনের দিকে ছিলেন। তাই বেঁচে গেছেন। পেছনে গিয়ে পড়েছিল গ্রেণেড। সহকর্মী এসি রবিউল মারা গেছেন সেই গ্রেণেডে। লাশ পড়ে ছিলো কিছুক্ষণ। ভয়ে কেউ এগিয়ে যাওয়ার সাহস করেনি। পরে তারা কয়েকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে আনেন। ডিবির দুই কর্মকর্তা চলে গেলেন। বৃষ্টি থেমে গেছে। রাস্তায় বেড়িয়ে আসার পর আবার নূরুল আমিনের সঙ্গে দেখা। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম এদিক দিয়ে যেহেতু ঢোকা যাবে না। তাই বিকল্প পথ খুঁজতে হবে। আমরা ডান দিকের রাস্তা দিয়ে কাছাকাছি যা্ওয়ার চেষ্টায় রওয়ানা দিলাম।

এই সেই হাসনাত করিম। জিম্মি দশা থেকে বেড়িয়ে আসার পর যাকে নিয়ে ব্যপক আলোচনা চলছে।

দুজন হেটে হেটে এগিয়ে গেলাম ডানের রাস্তায়। ইরান এম্বেসীর সামনে দিয়ে। সরাসরি কাছাকাছি চলে গেলাম সেখানে যেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাা পজিশন নিয়ে আছে। পুলিশ বাধা দিল না ঠিকই কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যেই পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার হ্যান্ড মাইক নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়া সবাইকে চলে যেতে বলছেন। জায়গা ফাঁকা করছেন। এরই নূরল আমিন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলো। আমি কৌশলে ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ির পেছনে একটু অন্ধকার জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালাম। একটু পুর সেখানে এসে হাজির হলো চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের রাশেদ আর যমুনা টিভির মনিরুল। তারা বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিহিত। কিন্তু তার ওপর প্রেস এবং নিজ নিজ চ্যানেলের নাম লেখা। একটু পর আবার শুরু হলো বৃষ্টি। রাশেদ চলে গেলো। আমিও হাটছি ফুটপাত ধরে। ভাবছি বৃষ্টি থেকে বাঁচতে হলে আমাকে ব্যারিকেডের বাইরে আশ্রয় নিতে হবে। আর একবার ব্যারিকেড পার হয়ে গেলে ভেতরে ঢকুতে পারবো না। সিদ্ধান্ত নিলাম ভেতরেই থাকার। ধীর পায়ে হেটে হেটে এগিয়ে আসলাম ইরান অ্যাম্বেসীর সামনে। সেখানে কাকভেজা হয়ে একটা ছোট্ট আশ্রয় পেলাম। দাঁড়িয়ে আছি। বৃষ্টি পড়ছে। বৃষ্টির আঁচ গায়ে লাগছে। দেখি একটু দুরে যমুনার মনিরুল ফনোলাইভ দিচ্ছে। শেষ করে আমার কাছে আসলো।

মনিরুল কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে বললো চলেন এস এ টিভির গাড়িতে গিয়ে বসি। ব্যারিকেডের ভেতর একটি মাত্র চ্যানেলের গাড়ি। মনির আগে গিয়ে সেখানে বসলো। একটু পর গেলাম আমিও। সারারাত ঘুমাইনি। গাড়িতে ঝিমাচ্ছি। পরিচিত গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে ফোন করে অপারেশন কখন শুরু হতে পারে তার খোঁজ-খবর নিচ্ছি। এরই মধ্যে আরেক পুলিশ কর্মকর্তা গাড়িটি সরিয়ে নিতে বললেন। এক সাব ইন্সপেক্টর এসে কিছুটা চোটপাট করে গেলেন। আরেক এডিসির সঙ্গে দেখা হলো। তিনি ঘণিষ্ঠ। গাড়ি থেকে নেমে তার সঙ্গে সিগ্রেট খেলাম। অপারেশন নিয়ে নানারকম কথা হলো। উনি চলে গেলেন।

গুলিবিদ্ধ এক বিদেশী নাগরিককে উদ্ধারের পর অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হচ্ছে হাসপাতালে নেয়ার জন্য

আমি ভাবলাম এসএ টিভির গাড়িতে আর বসা যাবে না। কারণ গাড়িটি বের করে দিবে। আমি ওদের পাশ কাটিয়ে এগোতে থাকলাম সামনের দিকে, ফুটপাত ধরে। হাটতে হাটতে কাঙ্খিত সেই জায়গায়। এখানে থাকতে পারলে অপারেশনটা চাক্ষুস দেখা যাবে। ভেতরে ভেতরে ভয় করছে। না জানি কে কখন বলে এই আপনি কে? সাংবাদিক শুনেই বের করে দিবে।

আমি এদিন শার্ট ইন করে পড়া। পায়ে স্নিকার। মোটামুটি স্মার্ট বলা চলে। কৌশল করে হাতে মোবাইল আর প্যাড নিয়ে এমন ভঙ্গিতে দাড়িয়ে থাকলাম যেন আমিও সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সদস্য। একটা গাছের পাশে দাঁড়িয়ে আছি। বেশি নড়াচড়া করি না। কারণ কার সঙ্গে ঢুশ লাগলেই যদি বলে আপনি কে? পুলিশের লোক? মিথ্যা বলতে পারবো না। সত্যি বলার সঙ্গে সঙ্গে বের করে দিবে ব্যারিকেডের বাইরে।

এদিকে আমার পা লেগে আসছে। কোমর ব্যথা করছে। সারারাত না ঘুমানো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। বাহিনীর লোকদের এত কষ্টের অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমার নাই, আমার কষ্ট হচ্ছে। দেশটিভির সৈকতের সঙ্গে কথা হচ্ছে মাঝে মধ্যে, মোবাইলে। ওকে বললাম বন্ধু আমি আর পারছি না। বের হয়ে যাই। ও বলছে কষ্ট করে থাকো। বের হয়ো না। তুমি থাকলে কিছু তথ‌্য শেয়ারে পাবো। আমিও ভাবলাম এত কষ্ট যেহেতু করেছি, আরেকটু করি। অপারেশনটা নিজের চোখে দেখি। এরই মধ্যে এক পুলিশ সদস্যের কাছে ধরা খেলাম। সাদা পোশাকের উনি একটা বাইকের ওপর বসে ছিলেন। উনি উঠে গেলে আমি গিয়ে সেখানে বসলাম। একটু পর উনি ফিরে আসলেন। আমি ভদ্রতা করে উঠে গেলাম। উনি নিজে বসে আমাকেও বসার জন্য বললেন। আমি না বলছি। উনি জিজ্ঞেস করেলন, আপনি কি পুলিশের? আমি বললাম, ওই রকমই। উনি হাসলেন, বললেন, সাংবাদিক? আমি বললাম, হুম। উনি বললেন, সাংবাদিক তো অ্যালাউ না আপনি এলেন কিভাবে? আমি একটু বিণীত হলাম। উনি আর কিছু বললেন না। উল্টো তার সঙ্গে আমার একটু খাতির হয়ে গেলো।


এক তরুণী এবং এক ভদ্রলোক। সেনা সদস্যরা তাদের বের করে আনছেন।


তখন সকাল হয়ে গেছে। চারদিকে আলো ফুটছে। সেনাবাহিনীর একটি দুটি গাড়ি আসছে। বোঝা যাচ্ছে তারা বড় কর্মকর্তা। অভিযান যে শিগগির শুরু হবে তার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। হঠাৎ চলে এলো সেই কাঙ্খিত মুহুর্ত। হঠাৎ অনেকগুলো জিপ এসে দাঁড়ালো মোড়টিতে। লাফিয়ে নামলেন সেনা কমান্ডোরা। আমার বুক ধরফর করছে। আমি একমাত্র সাংবাদিক যে অপারেশন প্রত্যক্ষ করছি। আমি উত্তেজিত। কিন্তু হাতের মোবাইল ক্যামেরা চালু করার সাহস পাচ্ছি না। নোট তো আরো দুরের কথা। মাথায় রাখছি সব। কমান্ডোরা যখন অপারেশন শুরু করলেন তখন আমি সৈকতকে তা জানালাম। সঙ্গে লিটন ভাইকেও। তারপরের প্রতিটা মুহুর্ত ছিল উত্তেজনা আর শ্বাসরুদ্ধকর। গোলাগুলি শুনতে পাচ্ছি। উঁকি মেরে অন্য সাদা পোশাকের গোয়েন্দাদের সঙ্গে দেখার চেষ্টা করছি। একটু পর ভেতর থেকে সঙ্কেত এলো সাঁজোয়া যান পাঠানোর। মুহুর্তেই লাফিয়ে উঠে পড়লেন কমান্ডোরা। সেই দৃশ্য দেখার মতো। গর্জে উঠে সেগুলো ছুটলো হোলি আর্টজানের দিকে। একটার পর একটা। কিছুক্ষণ পর পর ব্যাকাপ টিম যাচ্ছে। সবার হাত অত্যাধূনিক অস্ত্র। মনে হচ্ছে সিনেমা দেখছি। বিরতি দিয়ে দিয়ে গোলাগুলি চলছে। গ্রেণেড বিস্ফোরণের শব্দ। একজন গুলিবিদ্ধ বিদেশী নাগরিককে উদ্ধার করে আনা হলো। তার ছবি তোলার চেষ্টা করলাম। তাকে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে চলে গেলো।

এর আগে দুটি তরুণী বেড়িয়ে এলেন। তাদের চোখে-মুখে আতঙ্ক আর ভয়। এরপর আরো কয়েকজন। প্রকৌশলী হাসনাত করিম এলেন পরিবারসহ। ছোট্ট ছেলে, এক মেয়ে আর স্ত্রী এলেন সবার পেছেন। কিছুক্ষন পর ডাক এলো ফায়ার সার্ভিসের। ফায়ার সার্ভিস প্রস্তুতই ছিল। গাড়ি স্টার্ট করলেন। পর মুহুর্তেই সেনা কর্মকর্তারা বললেন, গাড়ি নয়, ফায়ার স্ট্রিংগুইশার নিয়ে যাওয়ার জন্য। রেঁস্তোরার সামনে ফায়ার গাড়ি যাওয়ার জায়গা নেই। কারণ সেখানে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান রয়েছে। স্ট্রিংগুইশার হাতে দৌড় দিলেন ফায়ারকর্মীরা। তখনো গোলাগুলি চলছে। ঠা...ঠা...ঠা... আওয়াজ আসছে। একটু পর ডাক এলো বোম্ব ডিসপোজাল টিমের। র্যাবের বোম্ব টিম চলে গেলেন ভেতরে। এভাবে আরো কিছুক্ষন চলার পর সকাল ৮টা ২০ মিনিট আনুমানিক। গুলির আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে অপারেশন শেষ। কিন্তু ভেতরের খবর পাওয়া যাচ্ছে না। এই মুহুর্তেই রাস্তার মোড়ে আসলেন সেনা প্রধানসহ অন্যান‌্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। আইজিপি এগিয়ে গেলেন তার দিকে। এর কিছুক্ষণ পরই সেনা প্রধানসহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এগিয়ে গেলেন হোলি আর্টিজান রেঁস্তোরার দিকে।

অভিযান শেষে হোলি আর্টিজান রেস্তোরা পরিদর্শন করে এলেন পুলিশ প্রধান।

এই দলের সঙ্গে অন্তত ৫০-৬০ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যাচ্ছেন। সেনবাহিনীর সদস্যরা না না করেও ঠেকাতে পারলেন না। আমি এক মুহুর্ত ভাবলাম। এই ভীড়ে কি যাবো রেঁস্তোরায়। সেটি আমার জন্য আরো বেশি এক্সক্লুসিভ হবে, একজন সাংবাদিক হিসেবে। সাহসে কুলালো না। আমি একপা এগিয়ে আবার পিছিয়ে আসলাম। তারা ফিরে এলেন। তখন পরিস্থিত পুরোপুরি স্বাভাবিক। আমি মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তুলছি, ভিডিও করছি। অন্যরাও করছে, গোয়েন্দারা।

কমান্ডোরা কেউ কেউ ফিরছেন। তাদের চোখে-মুখে প্রশান্তি। বোঝা যাচ্ছে অপারেশন সাকসেসফুল। জঙ্গিরা হয়তো পাকড়াও অথবা মারা পরেছে। এরপর আরো ঘণ্টা দুয়েক দাঁড়িয়ে থাকলাম। লাশ বের করার অপেক্ষায়। শোনা যাচ্ছিল ভেতরে অনেক লাশ। কিন্তু সঠিক তথ্য পাচ্ছি না। ঠিক কতজন? নাহ, তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। একেকজন একেক সংখ্যা বলছে। কেউ বলছে ২০, কেউ ২২, কেউ ২৪। পরিস্থিত স্বাভাবিক হয়ে আসছে। সাদা পোশাকের গোয়েন্দরা অনেকে রেঁস্তোরার কাছাকাছি যাচ্ছেন। কেউ সেনাবাহিনীর বাধা পেয়ে ফিরে আসছেন। এদিকে ততক্ষণে আমার পাশে দেখি নিউএইজের রোমিও এবং প্রতিদিবের সাকা। ওদের সঙ্গে কথা বলে শেষবারের মতো রেঁস্তোরার একবারে সামনে যাওয়ার শেষ ঝুঁকিটা নিলাম। মোবাইলে কথা বলতে বলতে হাটতে থাকলাম। পুলিশ সদস্যরা আমাকে ডাকছে। আমি শুনছি কিন্তু পাত্তা দিচ্ছি না। তারপর একজন পুলিশ দৌড়ে এসে আমার পরিচয় জানতে চাইলো। আমি সাংবাদিক শুনে সে যেন আকাশ থেকে পড়লো। আমাকে বাঁধা দিলো। আমি ফিরে এলাম। একেবারে শেষ মুহুর্তে এসে যেন ব্যর্থ হলাম।

শনিবার সকাল ১১টায় ব্যর্থতার গ্লানি মাথায় নিয়ে লাশ দেখা বা রেঁস্তোরার যুদ্ধবিদ্ধস্ত চেহারা দেখার আশা বাদ দিয়ে এদিক সেদিক একটু ঘুরাঘুরি করে বাসায় ফিরলাম দুপুর একটায়। টানা প্রায় ১৫-১৬ ঘণ্টার আমার নিজস্ব সাংবাদিকতার অভিযান শেষ হলো।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন জঙ্গি হামলা এবং হত্যাযজ্ঞের ঘটনা এটিই প্রথম। একদম সামনা সামনি দাঁড়িয়ে কাভার করার অভিজ্ঞতাটাও আমার প্রথম। ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে থাকা। যদিও এই থ্রিলের সিকি অংশ আমি আমার রিপোর্টে আনতে পারিনি। কারণ দুপুরে বাসায় গিয়ে ঘুম। ঘুম থেকে উঠে অফিসে গিয়ে ইফতার। তারপর লিখতে বসে দেখি মাথা হ্যাং হয়ে আছে। তারপরও রিপোর্ট লিখলাম। কিন্তু মনে হলো যা দেখেছি তার কিছুই রিপোর্টে তুলতে পারলাম না।

অপরাধ বিষয়ক রিপোর্টার হওয়ার কারণে প্রতিদিনই খুন, হত্যা, রাহাজানি, ছিনতাইসহ নানারকম অপরাধের ঘটনা কাভার করতে হয়। আমাদের অনুভূতি ভোতা হয়ে গেছে অনেক আগেই। আমাদের কাছে ঘটনা মানেই রোমাঞ্চকর অনুভূতি। নানারকম অ্যা্ঙ্গেল প্রতিবেদন। বাইলাইন স্টোরি। তবুও আমি এমন বাংলাদেশ আর কখনো দেখতে চাই না। এমন জঙ্গি হামলা প্রত্যক্ষ করতে চাই না। আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। ধর্ম-বর্ণ-জাত নির্বিশেষে সবাই একসঙ্গে বাঁচতে চাই। বাংলাদেশকে পাকিস্তান বা আফগানিস্তান বা ইরাক-সিরিয়া হিসেবে দেখতে চাই না। জঙ্গিবাদের প্রতি তীব্র ঘৃণা জানাই।
জয় হোক মানবতার।

ছবি: লেখক

পুনশ্চ: লেখাটা অতিকায় হয়ে গেলো। কিন্তু তবুও আমার মনে হচ্ছে অনেক কিছু বাদ পড়ল। ধন‌্যবাদ সবাইকে যারা কষ্ট করে পড়ছেন।আমার ফেসবুক পেইজে আপনাদের আমন্ত্রণ
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:০৪
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×