somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কৃষ্ণপক্ষের বোষ্টমী
এক বোষ্টমী যে কৃষ্ণপক্ষের আধাঁরেই সুর বাধেঁ। তার ইচ্ছা কোন এক শুক্লাদ্বাদশীর দিন চাদেঁর আলোয় সে সুর বাধঁবে... সেই সুরের মূর্ছনায় কারো চোখ ভিজে আসবে...। তবে বোষ্টমীর সেই ইচ্ছা অপূর্ণই থেকে যায়.... কারণ শুক্লপক্ষে যে কৃষ্ণপক্ষের বোষ্টমীর সুর বাধাঁ বারণ।

মানুষ হয়ে মানুষ বোঝা দায়!!

০৫ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৩:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি মনে করি, মানুষের চেয়ে হিংস্র, শ্বাপদসংকুল, স্বার্থপর, বিষধর প্রাণী আর দুটি নেই। আবার এই আমিই মানুষকে নির্বিশেষে ভালোবাসতে পারি, ভালোবাসি, তাদের দুঃখে আমার মন কাদেঁ, চোখে জল আসে। মানুষের প্রতি আমি দ্বৈত মনোভাব পোষণ করি।

এখন কথা হচ্ছে যে, মানুষকে আমি এত হিংস্র, বিধ্বংসী ভাবি কেন?
প্রথমত, মানুষ কোন কারণ ছাড়াই হিংস্র। অন্যান্য প্রাণী যাদের আমরা হিংস্র বলে আখ্যায়িত করি যেমন বাঘ, সে ও ক্ষুধা না লাগলে অথবা তার রাস্তা না মাড়ালে সে হিংস্র হয়ে ওঠে না। কিন্তু, আপনি একা রাতে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন, কোন কারণ ছাড়াই আপনি মানুষের হিংস্রতার শিকার হবেন, তাদের বর্বরতার সাক্ষী হবেন। এই মানুষই কোন কারণ ছাড়াই অন্য দেশে যুদ্ধ করছে, আরেকজনকে হত্যা করছে, হানাহানি মারামারি যেন এদের নিত্যকার রুটিন।

দ্বিতীয়ত, মানুষ বিষধর। অতি বিষধর সাপটিও আপনি গুতোঁ না দিলে আপনার দিকে ফোঁস করে উঠবে না। কিন্তু, আপনি কোন এক ভালো জায়গায় পৌছেঁছেন। মানুষ আপনার বিরুদ্ধে বিষ ঢালবে। বেশিরভাগ মানুষ একজনের কানে অন্যজনের বিরুদ্ধে বিষ ঢালতে ব্যস্ত থাকে। এই বিষ মানুষের মধ্যকার সুন্দর সম্পর্কগুলোকে ধীরে ধীরে বিষাক্ত করে দেয়, স্লো পয়জনিং এর মতোন।

তৃতীয়ত, মানুষ বিধ্বংসী। মানুষের মতে, তারা আধুনিক, সভ্যতার উন্নয়নের ধারক, বাহক, তারা পৃথিবীকে বদলে দিয়েছে, দিচ্ছে, দিবে হোয়াটেভার। আমি বলব, মানুষ বিধ্বংসী, মানুষ স্বার্থপর। পৃথিবীর যেখানেই মানুষ তার কদম রেখেছে, সভ্যতার উন্নয়নের তকমা লাগিয়ে সে জায়গার অস্তিত্ব নষ্ট করে দিয়েছে। সে নিজের সুখ আর স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য উজাড় করে দিয়েছে হাজার হাজার নাম না জানা গাছপালা, কত শত পশু-পাখি। মানুষের তাড়নায় এসব পশুপাখি পালিয়ে বেড়িয়েছে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায়, অবশেষে হার মেনে নিয়েছে মানুষের কাছে, চারিদিকে মানুষের জয় জয়কার, তারা হারিয়ে গেছে এ মানুষের পৃথিবী থেকে। যদিও এ পৃথিবীতে তাদেরও সমান অধিকার ছিল।

হারিয়ে যাওয়া এসব পশুপাখিদের মধ্যে কতশত ছোটবেলার স্মৃতি বিজড়িত। তার মধ্যে অন্যতম স্মৃতি হচ্ছে বাড়ির পাশের তালগাছটায় বাবুই পাখির বাসা। আজকাল যদিও তালগাছ খুব কম চোখে পড়ে, তবুও তালগাছ দেখলে মাথা উচুঁ করে তাকাই, তবে বাবুই পাখির বাসা তেমন করে চোখে পড়ে না। বাড়ির গাছে কাঠবিড়ালিটাও আর আসেনা। হলদে কুটুমটাও দুপুর বেলা আর কুটুম কুটুম বলে ডাকে না।

এতদস্বত্তেও এই মানুষকেই আমি আবার দল, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ভালোবাসি, তাদের দুঃখে আমার মন কাদেঁ, চোখে জল আসে। কি অদ্ভুত তাইনা!!

কেন এই অদ্ভুত ভালোবাসা? কেন এই অদ্ভুত টান??

এই হিংস্র, শ্বাপদসংকুল মানুষগুলোই কেউ বিপদে পড়লে উদ্ধার করতে ঝাপিঁয়ে পড়ে। এমন অনেক সময় হয়েছে, আমি বিপদে পড়েছি, চিনি না জানি না কখনও দেখিও নি এমন কেউ সাহায্যের হাত আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে।

চট্টগ্রামের অবস্থা খুবই শোচনীয়। এমতাবস্থায়, মানুষ তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আমার নেগেটিভ রক্ত, আমার রক্ত নেন, মানুষ সিরিয়াল দিচ্ছে রক্তদান করার জন্য। তারা টাকার জন্য আসেনি, এসেছে শুধু মানুষগুলো বাচুঁক এই আশায়। ওষুধ ফ্রি করে দিচ্ছে অনেক ফার্মেসী, অটো সিএনজি ভাড়া নিচ্ছে না। যে যার জায়গা থেকে সাহায্যের হাত এগিয়ে দিয়েছে। কেউ খাবার নিয়ে আসছে, কেউ নিয়ে আসছে পানির বোতল, শিক্ষার্থীরা বাস নিয়ে চলে এসেছে রক্ত দেবার জন্যে। এদেরকে ভালো না বেসে থাকা যায়??

ভুপেন হাজারিকার গানটি মনে পড়ছে-
মানুষ মানুষের জন্যে
জীবন জীবনের জন্যে
একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না?



ছবি: ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৩:৪১
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×