...মোহাম্মদপুরের এক রাস্তা ধরে হাটছি, হঠাত এক তরুণ এসে বলছে,
‘ভাই, আমার মা খুব অসুস্থ । আমার মা’কে বাঁচাতে চাই, দয়া করে কিছু করেন।’
‘আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে, পা ছাড়ুন...’
সে আবার বলল, ‘ভাই আমার মা’কে বাঁচান ।’
প্রশ্ন করলাম ‘কি হয়েছে আপনার মায়ের?’
সে তার মায়ের অসুস্থতার কথা আরেকটু বিস্তারিত জানালো । সে তখনো আমার পা ছাড়েনি । আমার পকেটে পাঁচশ ষাট টাকা ছিল, আমি পাঁচশ টাকাই দিয়ে দিলাম । এরপর ছেলেটি বলল, ‘ভাই, এতগুলো টাকা দিলেন, আমার মা’কে একবার দেখবেন চলেন।’
আমি প্রথমে যেতে আপত্তি করলেও পরে তার জোরাজুরিতে যেতে রাজী হলাম ।
...একেরপর এক গলি ক্রস করে একটা সরু গলিতে পৌঁছতেই সে আমার গালে দু তিনটা চর বসিয়ে দিল । আমি বুঝতে পারলাম ঘটনা অন্যরকম কিছু ঘটতে যাচ্ছে, আমার পেটানো শরীর দেখেও ২০-২১ বছরের রোগাটে ছেলের অতো সাহস হবার কথা নয় ।
লক্ষ করলাম চোখের পলকেই ৮-৯জন হয়ে গেল । তারা আমার কাছে আরও কী কী আছে তা চাইলো । আসলে একটা সাধারণ মোবাইল ছাড়া আর তেমন কিছুই ছিলনা । আর টাকার বিবরণ তো দিয়েছিই, পাঁচশ ষাট টাকা ছিল, পাঁচশ টাকা ছেলেটির মায়ের অসুস্থতার কথা শুনে দিয়ে দিয়েছি । তারা বাকি টাকাও নিয়ে নিল । মোবাইল নিয়ে নিলে আমি অনুনয় করে বললাম,
‘ভাই এই মোবাইলটা তো বেশী দামি না, এটা দয়া করে নিয়েন না। আর যদি নিয়েও নেন, সিমটা তো আপনাদের লাগবেনা..।’
মোবাইলটা আমার বোনের দেওয়া, অনেক পুরনো স্মৃতি, তাই ঐ কথা গুলো বলার সময় আমি সেই ছেলেটার পায়েও ধরেছি যেই ছেলেটা মায়ের টাকার কথা বলে আমার পায়ে ধরেছিল। এরপর আরও কয়েকজন চরটর মেরে আমাকে ছেড়ে দিল।
উপরের ঘটনাটি আমার রুমমেটের বন্ধুর সাথে ঘটা । সে যেভাবে ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিল সেভাবেই লেখা হল ।
ছিনতাই-এর নতুন কোন ঘটনা শুনলেই আমরা ভাবছি এ ধরণের ঘটনা এড়িয়ে চলবো । অথচ দুষ্কৃতিকারীরা তাদের কাজ অব্যাহত রাখছে বিভিন্ন অভিনব কায়দা অনুসরণ করে, আমরাও বোকা বনে যাচ্ছি । ভাইবেরাদর, ঢাকার পথেঘাটে সাবধান!