somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অপলক
আমি সাদামাটা মানুষ। ভালবাসার কাঙ্গাল। অল্পতেই তুষ্ট। সবাই আমাকে ঠকায়, তবুও শুরুতে সবাইকে সৎ ভাবি। ভেবেই নেই, এই মানুষটা হয়ত ঠকাবেনা। তারপরেও দিনশেষে আমি আমার মত...

কষাই, পশু ব্যবসায়ী বা মাংস প্রেমীরা সাবধান... না হলে ৭ দিনে কবরে

০৭ ই অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দেশের ভেতরে অ্যানথ্রাক্স রোগের অবস্থা ভয়াবহ। বন্যার পানি নানা দিক দিয়ে দেশে ঢুকছে সাথে অভ্যন্তরীন বৃষ্টিও হচ্ছে। মানে মৃত পশুর রক্ত বা অজানা জীবানু এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পরা সহজ হয়েছে। পশু বা মানুষ আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেড়েছে। শুধু রংপুর বা গাইবান্ধা নয়, উত্তরবঙ্গের আরও বহু জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে।


ক্রেতা হিসেবে আপনি আমি বা কষাই বা পশু ব্যবসায়ীরা নিচের সতর্কতা মানতে পারি:

১. আপাতত উত্তরবঙ্গ থেকে পশু অন্য জেলায় স্থানান্তর বন্ধ রাখা। দাম কমের লোভে পরে পশু কিনে রিজার্ভ রাখার চিন্তাও করা উচিত না।
২. অসুস্থ পশু কাটলে প্রথম টার্গেট কষাই রা। আজ পর্যন্ত ২১ জন মারা গেছে, যাদের ভেতরে ১৬ জন কষাই বাকিরা ক্রেতা। কাজেই সাবধান।
৩. সুস্থ্য পশু(চার পায়ের যেকোন পশু) কিনতে হবে, দরকার হলে হাটের ভেটেরেনারী ডাক্তার দিয়ে হাজার টাকা ফিস দিয়ে পশু কিনতে হবে। টাকার চেয়ে জীবনের মূল্য বেশি।
৪. বিশ্বস্ত কষাই বা মাংস বিক্রেতার কাছ থেকে মাংস কিনতে হবে। সুপারমল মানেই যে, তারা সাধু , তা না। সন্দেহ হলে তাদের কাছে সুস্থ্য পশুর সার্টিফিকেট দেখতে চাইবেন।
৫. দয়া দেখিয়ে অসুুস্থ্য পশু জবাই করবেন না। প্রথম ভিক্টিম আপনি হবার সম্ভাবনা বেশি। কাজেই গরু/খাসির হালকা জ্বর বা খাওয়া দাওয়া করতেছে না বা গায়ে একটু ফুটনি বেরিয়েছে, দরকার নেই ভাই। পশু মালিকের উপর দয়া দেখানোর দরকার নেই। কম দামে সেটা কেনার দরকার নেই। লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। লোভে বা দয়া দেখাতে গিয়ে আপনি মরলে আপনার পরিবারের কি হবে?
৬. পশু আক্রান্ত হবার খবর পেলে এলাকা বাসি নিজ দায়ী্ত্বে চোখ রাখুন, যাতে ঐ পশুটি বা ঐ গোয়ালে কোন পশুই যাতে বেচা বিক্রি না করতে পারে। দরকার মনে হলে ৯৯৯ এ কল করুন। এই কলে কোন টাকা কাটে না।
৭. আক্রান্ত পশু মরলে পুড়িয়ে ফেলাই সবচেয়ে ভাল। তা না হলে ৪ হাত গভীর করে মাটি চাপা দিন। সাথে ১০ কেজি চুন এবং কিছু কেরোসিন ঢেলে মাটি চাপা দিন। তাও না হলে, নিকটস্থ পশু হাসপাতালে খবর দিন। তাও না পারলে এলাকার চেয়ারম্যান/কমিশনার কে খবর দিন। যা করার তারাই করবে।
৮. পশু যে গোয়ালে মারা যাবে বা হাট বাজার থেকে ফিরে সেন্ডেল জীবাণু নাশক দিয়ে ভাল করে ধুয়ে নেবেন।
৯. মা বউদের যাদের হাতে বা আঙ্গুলে কাটা ছেড়া আছে বা নখের কোনা উঠেছে, তারা মাংস প্রসেশিং বা ধোয়া বাছা থেকে দূরে থাকুন। মাংস কুকারে রান্না করুন বা ভাল করে সেদ্ধ করুন। অ্যানথ্রাক্স জীবানু হাত পায়ের যে কোন কাটা বা ছেলা অংশ, চোখ, মুখ, নাক বা হাতের তালু বা পায়ের গোড়ার ফাটা অংশ দিয়েও মানব শরীরে ঢুকতে পারে।
১০. একান্ত বাধ্য না হলে হোটেল রেস্ট্যুরেন্টের গোসত/ নিহারী পদ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। জানেন তো, নষ্ট মাংস বা অসুস্থ্য পশুর মাংস মূল ক্রেতা কারা...আর তাদের রান্নার পরিবেশ কতটা স্বাস্থ্য সম্মত !!! আমি এমনও স্বনামধন্য হোটেল মালিক কে দেখেছি, যারা নিজের হোটেলের রান্না নিজেরাই খায় না। এদেশে থ্রি স্টার বা ফাইভ স্টার হোটেল রেস্ট্যুরেন্টের খাবার খেলেও অনেক সময় পেট খারাপ করে। বোঝা লাগবে, এটা বাংলাদেশ।



যাইহোক, পশুটি অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত সেটা আন্দাজ করবেন কি ভাবে?
১. অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত পশু হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হয়, অলস হয়ে যায় এবং শ্বাসকষ্টে ভুগতে পারে বা নাও পারে, দ্রুত মৃত্যু হয়।
২. পশুর গলা, মুখ বা মাথা ফুলে যেতে পারে এবং চামড়ায় ক্ষত দেখা দিতে পারে। নাক, মুখ বা চোখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে। পায়খানায় রক্ত যেতে পারে।
৩. মুখে ফেনা থাকে বা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয়।
৪. একই গোয়ালের একাধিক পশু কিছু বুঝে ওঠার আগেই অসুস্থ্য হয় বা মারা যায়।
৫. নিয়মিত পর্যবেক্ষণের অংশ হিসেবে ফার্মের পশু চিকিৎসক স্যাম্পল নিয়ে পরীক্ষা করেও আক্রান্ত কিনা জানাতে পারবেন।



একজন মানুষ অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত কিনা বুঝবেন কিভাবে?
১. ত্বকের অ্যানথ্রাক্সে সাধারণত চামড়ার উপর ক্ষত দেখা যায়। রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে ত্বকে একটি ছোট ফোঁড়া বা পিণ্ড তৈরি হয়, যা চুলকানিযুক্ত হতে পারে। পরবর্তীতে এটি একটি কালো বা বাদামী দানায় পরিণত হয়, যা ব্যথাহীন হতে পারে। সাধারণত হাত, পা, ঘাড় এবং মুখে এই ধরনের ক্ষত দেখা যায়।



২. ফুসফুসের অ্যানথ্রাক্সে শ্বাসকষ্ট, কাশি, বুকে ব্যথা ও ক্লান্তি দেখা যায়। গলা ব্যথা, হালকা জ্বর এবং পেশী ব্যথাও হতে পারে।
এর পরে বুক ধরফর করা, বুকে অস্বস্তি, এবং পরিশ্রম ছাড়া ক্লান্তি অনুভব হতে পারে বা মাথা ঘুরতে পারে।

৩. পেটের অ্যানথ্রাক্সে জ্বর, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া , খাবারে অরুচি বা ক্ষুধামন্দা, পেটে তীব্র ব্যথা হতে পারে এবং ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।



অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত মানুষের হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায় না। কিন্তু তাদের রক্ত বা অর্গান আদান প্রদােনে হতে পারে। আক্রান্ত পশুর যেকোন অংশ যেমন মাংস, হাড়, চামড়া, পশম ব্যবহার করলে আক্রান্ত হতে পারেন। কাজেই বুঝে শুনে আচরন করুন। আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারকে সামাজিক বয়কট বা একঘরে করার কোন মানে হয় না। বেকুবদের মত কাজ করবেনা, স্মার্ট মানুষদের মত সচেতন হোন।

আল্লাহ সব ভাল মানুষের জান মালের হেফাজত করুন। আমিন।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৫:০২
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×