তোমার শরীরের রক্ত গায়ে মেখেছি মা গো,তোমার শরীর থেকে রক্ত খেয়েছি,
আমাকে ঘিরে শুরু হয়েছিলো তোমার নতুন পৃথিবী,
তখনও আমি দুনিয়ার নকল আলো দেখিনি
যখন ১০ মাস ১০ দিন ছিলাম তোমার ভেতর,
তারপর তুমি দেখালে নকল ভালবাসার পৃথিবী,
তোমার চোখ দিয়ে দেখলাম নতুন মিথ্যা পৃথিবী,
মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বললে এখানে এই আলোয় আমি ভালো থাকবো;
কেন মা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিলে?
এই নকল আলোর মিথ্যা ভালোবাসার পৃথিবীর চেয়ে যে তোমার ভেতরের অন্ধকারের আলোয় ডুবে থেকে ভালো ছিলাম,
কেন আমাকে তোমার শরীরের বাইরে আনলে?
মা তুমি এত খারাপ কেন?
মনে আছে মা আমার সাথে তুমি একলা একলা কথা বলতে যখন আমি তোমার ভেতর ছিলাম?
আমি তখন ও জানি না কথা কিভাবে বলতে হয়,তাই তুমি একাই বকবক করতে,
সবাই ভাবতো তুমি বুঝি পাগল হয়ে গেছো;
তারপর জীবনের প্রথম শব্দ মুখ দিয়ে উচ্চারন করলাম “মা” বলে,
আজ যখন তোমাকে তুলে অন্যকে গালি দেই তুমি কি মনে কষ্ট পাও না মা?
মা তুমি এত নির্লিপ্ত কেন?
ছোটকালে তুমিই শিখিয়েছিলে অ,আ,ক,খ,
আজ তোমাকে আমি অ,আ,ক,খ শিখিয়ে নেশার টাকা আদায় করি,
মা তুমি এত অশিক্ষিত কেন?
মনে আছে একদিন স্কুল থেকে দেরী করে ফিরেছিলাম?
তুমি খুব চিন্তিত ছিলে পাছে আমার কোনো অঘটন না ঘটে,
আমার মনে আছে সেদিন তুমি আমাকে বেদম মার মারলে,
খুব একটা ব্যাথা পাইনি,
কিন্তু আজ যখন তোমাকে নেশার টাকা না পেলে মার দেই,চুল টেনে ছিড়িঁ,তোমাকে রক্তাক্ত করি তখন কি তোমার ব্যাথা লাগে না মা?
মা তুমি এত অনুভূতিহীন কেন?
তোমার মনে আছে যখন স্কুলে যেতাম তখন আমার পা ব্যাথা হয়ে যাবে বলে তুমি আমাকে অতদূর পথ কোলে করে নিয়ে যেতে?
আজ যখন বাসে-গাড়িতে তোমার জন্য বরাদ্দ করে রাখা সিটে আমি পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকি আর তুমি আমার পাশেই দাড়িয়ে অন্যলোকের গা থেকে তোমার শরীর বাচাঁতে ব্যস্ত,তখন কি তোমার পা ব্যাথা হয় না?
মা তুমি এত বেখেয়ালী কেন?
মনে আছে মা তোমার কাছে যা চাইতাম তুমি আমার সব আব্দার মেটাতে,
ঈদে আমার শার্ট,প্যান্ট,জুতা সব-ই হতো,
আর তোমার পরনে সেই ছেড়াঁ ব্লাউজ আর রংচটা শাড়ি,
আজ যখন তোমাকে নতুন একটা শাড়ি কিনে না দিয়ে বউয়ের জন্য,শালির জন্য,শাশুরির জন্য কাপড় কিনি,
তখন কি তুমি মুখ ফুটে চাইতে পারো না একটা শাড়ি?
মা তুমি এত আনস্মার্ট কেন?
আর যখন নেশার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে সব বিক্রী করে শেষে তোমার সেই ছেড়াঁ রংচটা শাড়ি খুলে নেবার জন্য তোমার শরীরে হাত দেই,
তখন কি তোমার কোনো লজ্জা হয় না?
মা তুমি এত নির্লজ্জ কেন?
যখন তোমার সাথে দুর্ব্যবহার করে খারাপ ভাষায় তোমার মাকে তুলে তোমাকে গালি দেই,
তার পর মুহূর্তেই আবার ভাত বেড়ে মুখে তুলে খাইয়ে দাও কেন?
মা তুমি এত বেহায়া কেন?
মা তোমার মনে আছে আমাকে ছোটবেলায় যখন সাবান দিয়ে গোসল করাতে তখন সাবানে আমার চোখের চামড়া খুব জ্বলতো?তারপর আমাকে সুন্দর কাপড় পরিয়ে বাবুদের মত সাজিয়ে রাখতে,
আজ আমি তার প্রতিদান হিসেবে যখন এসিড দিয়ে তোমার মায়াবী মুখখানি ঝলসিয়ে দেই তখন কি তোমার শরীরের চামড়া খুব বেশী জ্বলে?
মা তুমি এত কুৎসিত কেন?
তোমার শরীরের যে রক্ত জন্মের আগে গায়ে মেখেছিলাম,আজ নেশার টাকার জন্য তোমাকে মেরে যখন আমার হাত সেই রক্ত মেখে রাঙ্গাই,তখন আমাকে কেন তোমার পেটের ভেতরের অন্ধকারের মত অন্ধকার জায়গা কবরে ফেরত পাঠাবার জন্য স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করো না?
কেন আমার দীর্ঘায়ুর জন্য জায়নামাজে বসে কান্নাকাটি করো?
মা তুমি এত খারাপ কেন?
কেন মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বললে এখানে এই মরীচিকা আলোয় আমি ভালো থাকবো;
কেন মা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিলে?
এই নকল আলোর মিথ্যা ভালোবাসার পৃথিবীর চেয়ে যে তোমার ভেতরের অন্ধকারের আলোয় ডুবে থেকে ভালো ছিলাম,
কেন আমাকে তোমার শরীরের বাইরে আনলে?
মা তুমি এত খারাপ কেন?
মা তুমি এত খারাপ কেন?
মা তুমি এত খারাপ কেন?
~উৎসর্গ~ সকল খারাপ মা কে....
আলোচিত ব্লগ
লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?
মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন
অভিনেতা
বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়
প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন
চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)
সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন
তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?
আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন