somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের প্রজন্ম সংকটাপন্ন কি?

০৬ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৪:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি মনে করি, আমাদের এই প্রজন্মটি ( যাদের বয়স বর্তমানে ১২-৩০ এর মাঝামাঝি) এক কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি। বলা যেতে পারে, এক কঠিনতর সময়ের মধ্য দিয়ে আমরা ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি । আমরা না পারছি অতীত তথা আমাদের চেয়ে যারা ৩০ বছরে বড় তাদের মত করে জীবন-যাপন করতে, না পারছি আমাদের চেয়ে যারা ৩০/৪০ বছরের ছোট কোন প্রজন্মের মত করে নিজেদের মানিয়ে নিতে বা তাদের জীবন-যাপন রীতিতে অভ্যস্ত হতে।

বস্তুত, আমরা আধুনিকতা বা ডিজিটালাইজেশন যুগের এক সন্ধিক্ষণের যাতাকলে পরে গেছি। নতুন নতুন জিনিসের আবিষ্কার, ইন্টারনেটের সর্বত্র ব্যবহার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতি, যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত ডিভাইসের সহজলভ্যতা, বিশ্বায়নের নেগেটিভ-পজিটিভ প্রভাব, অপ-সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ, নিজস্ব সংস্কৃতিকে মান্ধাতার বা সেকেলের ভেবে ছুড়ে ফেলা , নতুন সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হতে হতেও না পারা, অর্ধেক গ্রহণ করতে পারলেও পুরোপুরি গ্রহণে ব্যর্থতা ইত্যাদি। এসকল বিষয় হঠাৎ করে পাওয়ার ফলে, আমরা একটা খাপ-ছাড়া অবস্থার মধ্য দিয়ে সময় পার করছি। ফলে, ভাল-মন্দ, উচিত-অনুচিত, বিবেচনার বিবেকবোধ অনেকাংশে লোপ পেয়েছে । সমাজে সামাজিক অরাজকতা, নৈরাজ্য ও মূলবোধের অবক্ষয় লেখ হু হু করে ঊর্ধ্বগামী হচ্ছে। আর ধর্ষণ, বিয়ের প্রলোভনে বা মিউচুয়াল লিভ টুগেদার, পরকীয়া প্রেম, সাময়িক সঙ্গদান( Escort Service), পতি হত্যা, পত্নী হত্যা, সন্দেহ, ডিভোর্স, ইত্যাদি ও সামানতালে বেড়েই চলছে। জাস্ট, আগামী ২০ বছর পর একটা নিকৃষ্ট সমাজ ব্যবস্থা আমাদের এখানে বিরাজ করবে যা বর্তমান সময়ের চলমান ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে নিঃসন্দেহে বলা যায়।

বর্তমানে যদি প্রেম- ভালোবাসার কথা বলি, এটা অনেকটাই সহজলভ্য হয়ে গেছে। অনেকে ইচ্ছে করলেই তিন-চারটা গার্লফ্রেন্ড/ বয়ফ্রেন্ড রাখতে পারছে। ছেলেদের গোল্ড থাকলে ডিগারের অভাব হয় না, এরকম অবস্থা। আবার, যার তাও নেই, তারও দু-চারটা গার্লফ্রেন্ড আছে। মেয়েদের ক্ষেত্রেও সেরকমটাই। আগের ভালোবাসা আর বর্তমানের ভালোবাসার মধ্যে বিস্তর ফারাক পরিলক্ষিত হচ্ছে। বর্তমানে ভালোবাসা শব্দটি, নিছক একটা আবরণের মত কাজ করছে। ভালোবাসা নামক এই পবিত্র শব্দটাকে পর্দা হিসেবে ব্যবহার করে সকল প্রকার নিকৃষ্টতম অপকর্মকে বৈধ ভাবা হচ্ছে। আর যখন এটার বস্তুগত রূপ,রস, গন্ধ শেষ হয়ে যাচ্ছে, তখন সেটাকে ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছে। গার্লফ্রেন্ড/ বয়ফ্রেন্ড চেন্জ করাও একটা দুইটা শব্দ বা বাক্যের ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। হয়তো "ভালো লাগছে না" নয়তো, "তোমার সাথে যাচ্ছে না" এরকম শব্দ বা বাক্যে সমাপ্তি রেখা টানছে অনেকেই। যে পারছে সহ্য করে নিচ্ছে, আর যে পারছে না সে আত্মহত্যা, বা অবৈধ পথে পা বাড়াচ্ছে, আর যারা অভ্যস্ত তারা নতুন কাউকে নিয়ে নতুন প্রেমের আসর বসাচ্ছে, অতীত প্রেমের রঙের কথা স্মৃতিচারণে বিকৃত আনন্দের হাসি হাসছে, আর কতিপয় ভিক্টিম হয়তোবা কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে।

আবার, পর্নোগ্রাফির কথা যদি বলি, এটাও হয়তো আমরা হঠাৎ করেই পেয়েছি৷ অতীতে থাকলেও এতটা সহজলভ্য অবশ্যই ছিল না। বর্তমানে বাচ্চারা বয়স ৫/৬ বছর হলেই ফোন ব্যবহার করছে, আমরাও তাদের হাতে ফোন তুলে দিচ্ছি। একটা সিক্স/ সেভেনের ছেলে মেয়ে পর্নোগ্রাফি সম্পর্কে জানার সুযোগ তৈরী হচ্ছে, অনেকে সেটার প্রতি রীতিমতো আকৃষ্ট হয়ে এডিক্টেট হয়ে পড়ছে, বাস্তবে প্রয়োগের স্বপ্নে বিভোর হচ্ছে যেটা ধর্ষণ, অবৈধ মেলামেশার মত অপকর্ম করতে প্রোমোট করছে।

উপরের বিষগুলোর আলোকে,একথা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, আমরা অনেক কিছুই হঠাৎ করে ও সহজলভ্য উপায়ে পেয়েছি,পাচ্ছি এবং সামনের কিছুদিন আরও পাবো।কিন্তু সেটার ফলাফল মেনে নিতে হয়তো আমরা সবাই অভ্যস্ত বা প্রস্তুত হয়ে উঠিনি। আমরা কিছু অনুশাসন মেনে চলতেছি, আবার ওদিকটাও ঠিক রাখছি, না পারছি একদম অনুশাসনের গন্ডি চিরে বের হয়ে আসতে, না পারছি এসব অপকর্ম বর্জন করতে। জাস্ট দম আটকানোর মত অবস্থা বলা চলে। অনেকে হয়তো অভ্যস্ত হয়ে গেছেন, অনেকে হন নি, যারা অভ্যস্ত হয়েছেন, তারা বেঁচে গেছেন, আর যারা মধ্যমপন্থীতে আছেন, তারা যেকোন একদিকে হাইলাইট করুন। কেননা সামনে বিপদ অপেক্ষা করছে। সামাজিক অবক্ষয়ের এক নিকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে এদেশকে হয়তোবা দেখা লাগতেও পারে।তবে সেই আশা কোনদিনই করি না।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৪:৩৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×