somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

পাবনার তাঁরছেড়া বালক
মনের আবোলতাবোল চিন্তাগুলো সাজিয়ে গল্পে পরিনত করতে চাই। কখোনও গল্প হয়। আবার কখোনও হয় না। ভাল লিখতে জানি না।তবুও লিখি। কারন এটা শখ হয়ে গেছে। আরর এই শখ জেকে বসেছে।

অধিকার

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


.
অন্ধকারে ছাদে বসে আছি। নিকোটিন পুরছে কিন্তু ধোয়াগুলোকে বেঈমান মনে হচ্ছে। তাই বার বার সিগারেট ঠোটে নিয়ে টেনে যাচ্ছি। তবুও মনে একটা হতাশা থেকেই যাচ্ছে।
.
আজ সন্ধ্যার সময়ে মুক্তাকে দেখলাম তার স্বামির সাথে খুব হাসিখুশি ভাবে আছে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে কতটা সুখি। কিন্তু আমি তার সুখ দেখেও সুখি হতে পারছি না।
.
মুক্তার বিয়ের আগে বলেছিল
-তুমি কি আমার ভাল চাও?
-হ্যা।
-তুমি চাও আমি সুখে থাকি?
-যাকে ভালবাসা যায় তাকে সুখি দেখলেও সুখ লাগে।
-তাহলে যদি আমি অন্যকারো সাথে চলে যাই। আমার সুখ চাইবে তো?
-হ্যা। সবসময় চাই তুমি সুখি হও।
.
কথাগুলো যখন বলেছিলাম তখন হয়তো জানতাম না আমি তাকে দেওয়া সেই কথা রাখতে পারবো না। আমি আজ মুক্তার সুখ সহ্য করতে পারছি না। কিন্তু কেন আমি এমন হলাম? কেন তাকে সুখি দেখে আমি খুশি না? তবে কি আমার ভালবাসা মিথ্যা ছিল?
.
এইসব ভাবতে ভাবতে নতুন আরেকটা সিগারেট ধরালাম। আজ সিগারেটও তারাতারি ফুরে যাচ্ছে। সবই আজ আমার সামনে ঘটমান। কিন্তু মাঝেমাঝে মনেহয় মিথ্যে।
.

.
অনেক্ষন ছাদে বসে আছি। আজ অনেকগুলো সিগারেট খেয়ে ফেলেছি। যখন বেশি মনে পরে তখন বেশি খেয়ে ফেলি। সচরাচর ছাদে কেউ আসে না বলে কোন ভয় নেই।
.
সিগারেট ধোয়া উড়াচ্ছিলাম। এমন সময়ে পিছনে কারো উপস্থিতি বুঝতে পারলাম। আর পিছনে তাকিয়ে দেখলাম তিথি দাঁড়িয়ে আছে। চমকে গেলেও সাভাবিকভাবেই বললাম
-তুমি এখানে?
-কেন? আমি এখানে আসতে পারি না?
-আমি কি তাই বলেছি?
-তোমাকে এখানে আসতে দেখি। তাই আজ ভাবলাম দেখি কি করে ছাদে বসে?
-দেখেছ তো?
-দেখলাম। তুমি প্রতিদিন এসে সিগারেট খাও?
-শুধু সিগারেট খাই না। ধোয়ার সাথে আমার দুঃখগুলো উড়িয়ে দেই।
-অতিত নিয়ে কেন ভাব?
-অতিত যে আমায় ছাড়ে না।
-রুমে যাবে কখন?
-চলে যাব।
-যাও। রুমে যাও
.
তিথি চলে যেতে আমিও আমার রুমে চলে গেলাম ঘুমানোর জন্য। যদিও ঘুম হবে কি না জানি না।
.

.
দুপুরের দিকে চায়ের দোকানটাতে বসে আছি। মাঝেমাঝে বসে থাকি। আর সিগারেট খাই। আড্ডা মারা হয় না। কারন এখন আর কারোরই আড্ডার প্রতি কোন আকর্ষন নেই।
.
দোকান থেকে সিগারেট নিয়ে বসে সিগারেট ফুকছি। হঠাৎ সামনে তাকিয়ে দেখি তিথি আসছে। তিথিকে আচমকা দেখে আবার হারিয়ে গেল। বুঝলাম আমার চোখের ভুল।
.
হঠাৎ সামনে কাউকে আবার দেখলাম। চোখ তুলে তাকিয়ে দেখলাম তিথি দাঁড়িয়ে আছে। তাহলে আমার চোখের ভুল না। তিথির আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-এখানে কি করছো?
-দেখতে পাচ্ছই বসে আছি।
-দেখছি তো। আমার সাথে একটু আসবে?
-কেন?
-আসতে বলেছি আসো।
-চলো।
.
আমি দাঁড়িয়ে থাকলাম। তিথিই রিক্সা ডেকে নিজে রিক্সায় উঠলো এবং আমাকেও উঠতে বলল। আমিও তাই রিক্সায় তার পাশে বসলাম।
.
আমি বসে আছি রিক্সায়। তিথি বলে উঠলো
-তুমি এমন কেন?
-কেমন?
-দায়িত্বহীন হয়ে থাকো। কোন কিছুতেই তেমন কেয়ার নেই। কেন?
-জানি না।
-কেন জানো না? এভাবে কি জিবন চলে?
-চলছেই তো।
-একে কি চলা বলে? তোমার জিবনটাকে এমন করে রেখেছ। তোমার ভবিষ্যৎ কি?
-সেটাও জানি না।
-না জানলে কি হবে? তোমার জিবনটা তো তোমারই। তাই তোমাকেই জানতে হবে বুঝতে হবে।
-ভেবে দেখবো।
-হ্যা। তাই করবে।
.
রিক্সা চলতে চলতে বাসার সামনে এসে দাঁড়াল। আমি রিক্সা থামতে দেখে তিথিকে বললাম
-ব্যাপার কি? তুমি কাজের কথা বলে বাসায় নিয়ে এলে কেন?
-এটাই তোমার কাজ। তুমি এখন তোমার বাসায় যাবে।
-এখন বাসায় যেতে হবে কেন?
-বাসায় যাবে ব্যাস। আর দুপুরের খাবার খাবে।
.
পেটে কিছুটা ক্ষুধা ছিল। তাই আর কোথাও মা গিয়ে বাসায় চলে গেলাম। আর এই সময় কিছু খাওয়া উচিৎ। এসে ভালই হয়েছে।
.
বাসায় এসে খাওয়াদাওয়ার পরে মনে হল এখন ঘুমানে উচিৎ। তাই ঘুমাতে চলে গেলাম। আমার এখন আর ঘুমের কোন নির্দিষ্ট সময় নেই। যখন তখন ঘুম। আবার যখন তখন জেগে।
.

.
আজ বাসায় এসে দেখলাম মাকে রান্নার কাজে কেউ সাহায্য করছে। নতুন কাজের মেয়ে রেখেছে হয়তোবা। আমার ওসব বিষয়ে কোন মাথাব্যথা নেই। তাই নিজের মত আমার রুমে চলে গেলাম।
.
রুমে এসে পানি পিপাসা পাওয়ায় মাকে ডাক দিয়ে বললাম
-এক গ্লাস পানি দাও।
-আমি পারবো না। আমার কাজ আছে।
-তাহলে ওই কাজের মেয়েটাকে দিয়ে পাঠিয়ে দাও।
-কাজের মেয়ে আসলো কোথায়?
-ওই যে কাজ করছে দেখলাম।
-ও কাজের মেয়ে না। তিথি।
-ও। আচ্ছা।
.
কিছুক্ষণ পরে তিথিকে পানি নিয়ে আসলো। তিথি পানির গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বলল
-আমি কাজের মেয়ে?
-আমি ভেবেছিলাম...
-কাজের মেয়ে ছাড়া অন্যকিছু ভাবা যায় না?
-কি ভাবতে হবে?
-কিছু না।
.
তিথিকে প্রায়ই আমাদের বাসায় এসে মাকে সাহায্য করতে দেখি। যেভাবে মায়ের কাজে সাহায্য করে আমার ঘর গুছিয়ে দেয়। তাতে মনে হবেই কাজের মেয়ে।
.
সে যদি আমাদের বাসায় আসতে চায় আসুল্ম ওইসব নিয়ে আমার ভাবার দরকার নেই। আমি আমার মতই থাকি।
.

.
কয়েকদিন অসুস্থ থাকার পরে আজ কিছুটা সুস্থ হলাম। অসুস্থটা বেড়ে গিয়েছিল বলে বিছানা ছেড়ে উঠতেই পারি নি। আর দুইদিনে তিথিকে আমাদের বাসায় বেশি দেখেছি। কিন্তু এখন তাকে দেখছি না।
.
মা এতক্ষন তিথির কথা বলছিল। মা যেতেই তিথি এসে হাজির। তিথি আমাকে দেখে বলল
-এখন তুমি সুস্থ?
-হ্যা। তুমি তো এই দুইদিনে আমার খুব সেবা করেছ। কিন্তু এসব কেন?
-ভাল লাগে বলে করেছি।
-ভাল লাগলেই করতে হবে? কেন ভাল লাগবে?
-অতকিছু বুঝি না।
-কেন ভাল লাগে বলো?
-.......
-বলো। আমার এই জিবনে তোমার এত কেয়ার করতে হবে কেন?
-ভালবাসি তোমাকে বোঝ না?
.
কথাটি বলেই চলে গেল। আমাকে কিছু বলার সুযোগ দিল না। আমার কথাগুলো বলা একটু কড়া হয়ে গিয়েছিল। তাই রেগে চোখের ভেতরে পানি দেখতে পেলাম। আর ওভাবেই চলে গেল।
.
আমার সামনে এখন সব পরিষ্কার হয়ে গেল। আমার প্রতি এত কেয়ার,আমার এই জিবনে তার অধিকার ফলানোর চেষ্টা। সবকিছু বুঝতে পারলাম। তাই বসে ভাবছি এখন।
.
মা এসে বলল
-কিরে তিথি হুট করে চলে গেল কেন?
-কারন আছে। আগে ওর নাম্বার দাও তো।
-কি করবি?
-দরকার আছে। দাও।
-আচ্ছা।
.
মায়ের কাছে থেকে নাম্বার নিয়েছি বিকেলে। কিন্তু ফোন করি নি। এখন নাম্বারে কল দেওয়ার পরে তিথি ধরে বলল
-হ্যালো।
-আমি রাব্বি।
-বলতে হবে না। নাম্বার সেভ করা আছে। ফোন করেছ কেন?
-আমি তোমাকে একটা দায়িত্ব দিলে নেবে?
-কিসের দায়িত্ব?
-আমার এই দায়িত্বহীন জিবনের দায়িত্ব দিলে নেবে?
-কি বলছো?
-তুমি তো এটাই চেয়েছিলে?
-তুমি এখন কোথায়?
-ছাদে দাঁড়িয়ে আছি।
-তুমি থাকো। আমি আসছি।
.
আমি জানি তারাতারি তিথি চলে আসবে। কারন এই দায়িত্ব আজ থেকেই নেবে। আর আমার প্রতি সব আধিকার তাকে আমি দেব। কারন সে আমায় ভালবেসেছে। তাই সে ভালবাসায় তার অধিকার আছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৫৭
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×