somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রাচীন জাপান --- ১

০৮ ই জুন, ২০১৪ রাত ৩:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

日本 এই নামটাই জাপান। জাপানের আষ্টে পৃষ্ঠে চীনা সংস্কৃতি জড়িয়ে আছে। প্রথম শব্দটাকে চীনা ভাষায় পড়লে জাপান হয়। আর ইংরেজীতে আমরা জাপানই ডাকি। আর জাপানিদের মতো পড়লে হয় নিপ্পন।
Dai Nippon Teikoku --- এই নামটা ছিল ২য় বিশ্বযুদ্ধের আগ পর্যন্ত। যার ইংরেজী অর্থ "The Empire of Great Japan"।
জাপানের প্রাচীন ইতিহাস অনেক পুরোনো। গুগোল করলেই বেরিয়ে আসবে অনেক কিছু। আমিও তেমনি কিছু খুঁজে পেয়েছি যা জানানোর লোভ সংবরণ করতে পারি নি।
এত লেখালেখির অভ্যাস আমার নাই। তাই অল্প কিছুতে লিখার চেষ্টা করব।
প্রথম কিস্তিতে প্যালিওলিথিক এজ আর জমন সময়কাল সম্পর্কে লিখবো।
প্যালিওলিথিক এজঃ
এটা একটা লম্বা সময়কাল। খ্রিষ্টপুর্ব ৫০,০০০ সাল থেকে ১২০০০ সাল পর্যন্ত এর ব্যাপ্তিকাল। অধিকাংশ ইতিহাসবিদ বিশ্বাস করেন এই সময়কাল ৪০,০০০ বছর আগে শুরু হয়েছে।
তবে এ ধারণা নিয়ে বিতর্কও আছে। কেননা 35000 BC এর আগে কোনো মানুষের অস্তিত্ব ওখানে ছিল কি না তা নিয়ে সংশয় আছে। প্রমাণ হিসেবে বলা যায় হামামাতসুতে কিছু হাড় ফসিল পাওয়া গিয়েছিল যা ১৪ থেকে ১৮ হাজার বছর পুরোনো।


ঐ আমলের কিছু নিদর্শন। এগুলো পালিশ করা কিছু পাথর যা দিয়ে নানা রকম অস্ত্র বানানো হত।
এর পরই আসে জমন সময়কাল।
এর ব্যাপ্তিকাল ১৪০০০ BC থেকে ৩০০ BC পর্যন্ত। কারও কারও মতে ১০০০০ থেকে ৪০০ BC পর্যন্ত। এসময়টাতেই প্রাচীন জাপানে মানব সভ্যতা বিকশিত হচ্ছিল। মানুষ শিকারি হচ্ছিল, পাশাপাশি চাষাবাদ শুরু করেছিল।
তাছাড়া মৃৎশিল্পের প্রকাশ লাভ এই সময় কালেই। প্রমাণ পাওয়া যায় কিছু পুরাতন মাটির পাত্র থেকে।


এগুলো কিছু নিদর্শন তখনকার জাপানি মৃৎশিল্পের।
আরও কিছু দিলাম। এগুলো জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
১।


২.


৩.


৪.


এইগুলো পুরো জমন কাল ধরে বানানো কিছু নিদর্শন।
এই জমন সময়কাল কিছু ভাগে বিভক্ত--
Incipient Jomon: 10,000 B.C. - 8,000 B.C.
এই সময়ে মুলত মৃৎশিল্পের বিকাশ দেখা যায়। ২০০০ বছর ব্যাপ্ত এ সময়কালের প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায় পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন সিরামিকের (মেসোপটেমিয়ান সিরামিকের চেয়েও পুরোনো) বাসন কোসন পাওয়ার পর।
কান্তো নামের জায়গাতে, যা এখনকার হন্সু ( টোকিও যেখানে অবস্থিত), এই সিরামিকগুলো পাওয়া যায়। তবে অবশ্যই ভাঙ্গা চোরা অবস্থায়।
আবার যদিও কোনো শক্ত প্রমাণ নেই তবে ধারণা করা হয় তখনও কৃষিকাজ হত।
Initial Jomon: 8,000 B.C. - 5,000 B.C.
প্রমাণ পাওয়া গেছে এই সময়কালে কিছু পাত্র বানানো হয়েছিল যা কোনো কিছুকে সেদ্ধ করার কাজে ব্যাবহার করা হত। আবার আগুন জ্বালানোর কাজে ব্যবহৃত হয় এমন কিছু জিনিসও পাওয়া গেছে ( মানে ফসিল পাওয়া গেছে)।
Early Jomon: 5,000 B.C. - 2,500 B.C.
প্রসঙ্গক্রমেই বলছি এ সময়টাতে পৃথিবীর তখনকার তাপমাত্রা এখনকার চেয়ে ৪-৬ ডি,ফারেনহাইট, বেশি ছিল। আর ঐ সময়ইকেই ধরা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণকাল। তো সারা দুনিয়ায় তখন কৃষীকাজের ধুম পড়েছিল। তাই তখন জাপানেও প্রচুরভাবে কৃষিকাজ শুরু হয়েছিল। তবে এটার শক্ত কোনো প্রমাণ কেউ পায় নি /:)
কিছু মাটির ভাঙ্গাচোরা টুকরো পাওয়া গিয়েছিল যা দেখে ধারণা করা হয় ওপরের কথাগুলো।
Middle Jomon: 2,500 B.C. - 1,500 B.C.
এই সময়কালটায় জাপানি জমনীয়রা সমতল কান্তো ছেড়ে পর্বত অভিমুখী হয়েছিল।
{ ** কেন গিয়েছিল কারণটা আমি খুঁজে পাই নি। কেউ পেলে জানাবেন** }
তখন তারা ' দোগু ' নামের বিশেষ কাদামাটির প্রস্তরমুর্তি বানিয়েছিল। কেউ বলে এগুলো বিশেষ রক্ষাকবচ (সুস্বাস্থ্য বা নিরাপদ প্রসবের জন্য)। আবার কেউ এগুলো বাচ্চাদের খেলনা ছিল।
আবার কেউ বলে জমন্দের এলাকা ঘুরে যাওয়া মহাকাশ থেকে আসা এলিয়েনের প্রতিকৃতি এগুলো। :P
Late Jomon: 1,500 B.C. - 1,000 B.C.
এই সময়টাতে জমনীয়রা আবার সমতলে ফিরতে শুরু করে। কারণ পৃথিবী আবার ঠান্ডা হতে শুরু করেছিল। সেসময়ের কিছু বিখ্যাত মৃৎ নিদর্শন নাম হল গোরিও, হরিনউচি, কাসোরি বি।
Final Jomon: 1,000 B.C. - 400 B.C.
এ সময়টাতে হারপুন নামে এক প্রযুক্তি এসেছিল। অনেক বড় বড় নকশার পাথর পাওয়া গেছে যা নানা রকম শাস্ত্রীয় কাজে ব্যবহৃত হত বলে বিশ্বাস করা হয়। এখানেও চাষাবাদের ব্যাপারে প্রমাণ পাওয়া যায়, কিন্তু তা খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারে নি জমনীয়দের ওপর। কিছু নারী প্রস্তর মূর্তি পাওয়া গেছে এই সময়কাল বয়সের যা দেখে ধারণা করা হয় যে ওই সময় জমনীয়রা কোনো দেবীর অর্চনা করত।


খুব একটা ছবি পাওয়া যায় নি দেবার মতো। তাই দেয়া হল না ছবি। তবে পুরো জমন কালের ঐতিহ্য নির্দেশক ছবি আমি দিয়ে দিয়েছি।

আর হ্যাঁ 'জমনীয়' নামটা আমার দেয়া B-)
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×