somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টেম্পলার এবং ফ্রীম্যাসন by হারুন ইয়াহিয়া (৮ম কিস্তি)

২২ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




১ম থেকে ৭ম

টেম্পলারদের অভিশপ্ত ধর্ম বিশ্বাস

যারা টেম্পলার সংঘ গঠন করেছিল এবং পরবর্তীতে যারা তাতে যোগ দিয়েছিল তাদের সিংহভাগই খ্রিষ্টানবাদ থেকে অনেকদূরে সরে গিয়েছিল। Saint Bernard এই সংঘের সবচেয়ে কট্টর সমর্থকদের একজন, যে এই যোদ্ধা নাইটদেরকে চার্চের বাধ্যগত সৈন্যে পরিণত করতে চেয়েছিল যা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
চার্চের সাথে তাদের বোঝাপড়া প্রাথমিকভাবে অনুকূলে মনে হলেও খুব শীঘ্রই তা খ্রিষ্টানবাদের বিপরীতে কাজ করা শুরু করে। এর মূল কারণ ছিল চার্চ প্রদর্শিত বিশ্বাস টেম্পলাররা ছুড়ে ফেলে, সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরণের বিশ্বাস অনুসরণ করা শুরু করে।
প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই খ্রিষ্টানবাদ বিভিন্ন ধরণের আন্দোলনের দরুন সমস্যাগ্রস্ত ছিল। খ্রিষ্টানদের একতা প্রতিষ্ঠিত হতে আরও কয়েক শতাব্দী চলে যায়। এই সময়টাতে Gnosticism, Aryanism, Bogomilism, Waldensianism প্রভৃতি আন্দোলন নিজেদেরকে ক্যাথলিক চার্চের বিকল্প হিসেবে তুলে ধরে। যদিও এসব আন্দোলনকে একটা পর্যায় পর্যন্ত দমানো এমনকি মূলোৎপাটন করা সম্ভব হয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চার্চের একচ্ছত্র ক্ষমতা খর্ব হয়েছিল। এসবের অনেক আগে চার্চ পুরো ইউরোপে জুড়ে আধিপত্য করত। কিন্তু বিশেষত নাইটদের সময়ে অনেক প্রচলিত ধর্মীয় বিশ্বাসে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, দক্ষিণ ইউরোপে বসবাসকারী ল্যাটিন জাতিসমূহের এবং উত্তরে বসবাসকারী বিশেষত জার্মান জাতিসত্তার বিশ্বাস, ধর্মীয় আচার এবং ঐতিহ্যে অনেক তফাৎ লক্ষ্যনীয় ছিল। মূলত উত্তর ইউরোপীয় জাতিসমূহ যাদের থেকে বেশীরভাগ নাইটদের উদ্ভব ঘটেছে, তারা তাদের নিজস্ব বিশ্বাস এবং কুসংস্কারসমূহ বজায় রেখেছিল, কারণ স্থানীয় শাসকরা তাদেরকে খ্রিষ্টান হতে বাধ্য করলেও তারা তাদের পুরনো বিশ্বাসে অটল ছিল।
এভাবে অনেকেই বাহ্যিকভাবে খ্রিষ্টান থাকলেও তাদের নিজস্ব বিশ্বাস বজায় রেখে ইতিহাসের দাবা খেলায় আবির্ভূত হয়েছিল।
এই অন্ধকারাচ্ছন্ন মধ্যযুগে ইউরোপীয়রা গভীর অজ্ঞতার অন্ধকারে ডুবেছিল। এমনকি চার্চের সাথে সংশ্লিষ্টদেরও শিক্ষার হার খুব কম ছিল। যেহেতু ধর্মীয় পুস্তকগুলো ল্যাটিন ভাষায় লিখিত ছিল সেহেতু অন্য ভাষাভাষী লোকেরা লোকমুখে শুনে যতটুকু জানতে পারা যায় ততটুকু জানতে পারত। চার্চের সাথে সাধারণ মানুষের সম্পর্ক ছিল স্থানীয় ধর্মীয় কতৃপক্ষের মাধ্যমে যারা তাদেরকে দাস বলে বিবেচনা করত, তাদের উপর অন্যায় করের বোঝা চাপিয়ে নিজেরা আরাম আয়েশের জীবন যাপন করত। কিন্তু এই সমস্ত লোকদের কাছে সাধারণ মানুষদেরকে দেওয়ার মত কোন জ্ঞান ছিল না। অজ্ঞ জনসাধারণকে সত্যের আহবানের বদলে বিভিন্ন কিংবদন্তি এবং বানোয়াট তথ্য দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হত। ফলশ্রুতিতে জনসাধারনের এক বিরাট অংশ প্রাচীন মিশর, পার্সিয়া এবং ভারতীয় লোকগাথার সাথে সাথে গ্রীক, রোমান, ভাইকিং এবং সেল্টিক পৌরাণিক গল্প অন্ধভাবে বিশ্বাস করত। কুসংস্কারাচ্ছন্ন চর্চা যেমন কালোজাদু, অসুস্থতা সারানোর জন্য যাদু টোনার ব্যবহার, আলকেমি এবং ভবিষ্যৎ বর্ণনার চল ছিল। এইসব অবাস্তব চর্চার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের অন্ধ বিশ্বাস যেমন যাদুর বন এবং অলীক প্রাণী সমূহ অর্থাৎ পরী, দৈত্য দানো, বামন প্রভৃতি এই অন্ধকারাচ্ছন্ন জগতের একটা বড় অংশজুড়ে ছড়িয়ে ছিল।
এমতাবস্থায় টেম্পলারদের অদ্ভুতুড়ে বিশ্বাস শিকড় গড়ে তোলে। আপাতদৃষ্টিতে খ্রিষ্টানবাদ এবং চার্চের প্রতি বিশ্বস্ত থাকলেও, টেম্পলাররা তাদের নিজদেশে প্রতিষ্ঠিত কুসংস্কার ও অন্ধকারাচ্ছন্ন ঐতিহ্যের প্রভাবমুক্ত ছিল না। এছাড়াও অভিজাত শ্রেণীর ধর্ম বিশ্বাস সাধারণের তুলনায় অনেক দুর্বল ছিল। শাসক এবং অভিজাতেরা তাদের প্রয়োজনমত চার্চের বিরোধিতা করতে পিছপা হত না। বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্য এবং দূরদেশে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনাবলী শাসক ও অভিজাত শ্রেণীকে চার্চের প্রতি সন্দিহান করে তোলে এবং চার্চের উচ্চপদস্থদেরকে তারা তাদের স্থানীয় প্রভাবের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা শুরু করে।
দারিদ্রপীড়িত ইউরোপজুড়ে প্রাচ্যের অগাধ সম্পদ প্রাপ্তি এবং বীরত্ব প্রদর্শনের স্বপ্ন অভিজাতদের সাথে সাথে টেম্পলারদেরকেও আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। কিন্তু অগাধ সম্পদ লাভের ব্যর্থতা পবিত্রভুমিতে বসবাসরত টেম্পলারদেরকে প্রচণ্ডরকম হতাশ করে তোলে। এমনকি তারা মসজিদুল আকসার( Solomon’s Temple) ভূ অভ্যন্তর খনন করে এই আশায় যে সেখান থেকে তারা এমন পবিত্র কোন বস্তু পাবে যা তাদেরকে ক্ষমতাশালী করে তুলবে।
কিন্ত হতাশা সত্ত্বেও তারা তাদের লক্ষ্য বজায় রাখে এবং সমগ্র পৃথিবীর কতৃত্ত হাসিলের জন্য নতুন পন্থা অবলম্বন করে। এই সময়ে সংঘের সদস্যরা এক নতুন ধরণের প্রশিক্ষণ আত্মস্থ করা শুরু করে এবং খ্রিস্টীয় ও ইহুদীবাদের বিভিন্ন বিষয় যেমন কাব্বালাহ, অতীন্দ্রিয় বিষয় ইত্যাদির সমন্বয়ে এক নতুন ধারা শুরু করে। এছাড়াও সমুদ্রভ্রমণ, ব্যবসা বাণিজ্য, প্রকৌশল এবং বিজ্ঞান সম্বন্ধে বিশেষজ্ঞ ইহুদীদের পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা লাভ করে।
এই সময়ে টেম্পলারদের কর্মকাণ্ডকে সংক্ষেপে এইভাবে বলা যায় যে, টেম্পলাররা মূলত কাব্বালার প্রভাবে পড়েছিল যা ছিল মুখে মুখে প্রচারিত এক গুপ্তবিদ্যা। কিছু কাব্বালিস্ট গুরু নারকীয় ক্ষমতা লাভের উদ্দেশ্যে ধ্যান, যাদু এবং তুকতাকের আশ্রয় নেয়। তারা বিশ্বাস করত কাব্বালাহ এমন কিছু লেখার এক সংগ্রহ যা প্রাকৃতিক শক্তিসমূহকে নিয়ন্ত্রণের এক উপায় এবং তা এক রহস্যের আধার এছাড়াও কিভাবে মন্ত্র, কবচ এবং চিহ্নসমুহের ব্যবহার করতে তাও উদ্ধৃত আছে। নাইটরা এই বিদ্যার প্রতি মোহাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
আগেই বলা হয়েছিল যে, যাদুবিদ্যা, আলকেমী এবং ভবিষ্যৎবর্ণনা কোন প্রশ্ন ছাড়ায় সকল স্তরে গ্রহণযোগ্য ছিল। টেম্পলাররা কাব্বালাহর জ্ঞান কাব্বালিস্টদের কাছ থেকে শিখেছিল। এই বিষয়ে টেম্পলারদের আগ্রহের কারণ খুবই পরিষ্কার তারা বিশ্বাস করত দুনিয়াবী নিয়ন্ত্রণের জন্য অতিপ্রাকৃত শক্তির সাহায্য প্রয়োজন।
Albert Pike ফ্রীম্যাসনারির অন্যতম পুরোধা তার Morals and Dogma বইয়ে বলে যে “টেম্পলারদের মুলেই রয়েছে নিজেদেরকে রোম এবং রাজাদের বিরোধিতায় উৎসর্গ করা এবং এর প্রধানদের উপর নির্দেশ ছিল কাব্বালাহ প্রচার করা। যাতে তারা প্রভাব ও সম্পদ লাভ করত পারে, তাদের গুপ্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারে, যুদ্ধে জয়ী হতে পারে, জায়ন (Zion) এবং কাব্বালহার নীতি প্রতিষ্ঠা করতে পারে।”
এছাড়াও অনেকে দ্বৈত বিশ্বাস দ্বারা প্রভাবিত ছিল যা পারস্যের Manecheanism থেকে শুরু হয়ে ফ্রান্সের Cathars এর সাথে সর্বোচ্চ চুড়ায় আসীন হয়। এই বিশ্বাসমতে পার্থিব ক্ষমতা লাভের উপায় হচ্ছে শয়তানের আরাধনা করা। এবং এভাবেই টেম্পলাররা শয়তানের আরাধনায় লিপ্ত হয় যা হালের শয়তান উপাসকরাও করে থাকে।
সুরা মারিয়ামের ৮৩ নং আয়াতে আল্লাহ্‌ বলেছেন “আপনি কি লক্ষ্য করেননি যে, আমি কাফেরদের উপর শয়তানদেরকে ছেড়ে দিয়েছি। তারা তাদেরকে বিশেষভাবে (মন্দকর্মে) উৎসাহিত করে।” অন্য আল্লাহ্‌ অস্বীকারকারীদের মত শয়তান টেম্পলারদেরকেও সত্য পথ থেকে বিচ্যুত করে জাহান্নামের পথে নিয়ে যায়।
পবিত্র কুরআনে অসীম পরাক্রমশালী আল্লাহ্‌ শয়তানের প্রকৃতির বর্ণনা করে---
“সে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তাদেরকে আশ্বাস দেয়। শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়, তা সব প্রতারণা বৈ নয়। তাদের বাসস্থান জাহান্নাম। তারা সেখান থেকে কোথাও পালাবার জায়গা পাবে না।” (সুরা নিসা আয়াত ১২০-১২১)
“যখন সব কাজের ফায়সলা হয়ে যাবে, তখন শয়তান বলবেঃ নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে সত্য ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং আমি তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছি, অতঃপর তা ভঙ্গ করেছি। তোমাদের উপর তো আমার কোন ক্ষমতা ছিল না, কিন্তু এতটুকু যে, আমি তোমাদেরকে ডেকেছি, অতঃপর তোমরা আমার কথা মেনে নিয়েছ। অতএব তোমরা আমাকে ভৎর্সনা করো না এবং নিজেদেরকেই ভৎর্সনা কর। আমি তোমাদের উদ্ধারে সাহায্যকারী নই। এবং তোমরাও আমার উদ্ধারে সাহায্যকারী নও। ইতোপূর্বে তোমরা আমাকে যে আল্লাহর শরীক করেছিলে, আমি তা অস্বীকার করি। নিশ্চয় যারা জালেম তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ”
(সুরা ইব্রাহীম আয়াত ২২)


সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ৯:৪৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×