দুর্নীতির ধুয়ো তুলে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পদ্মাসেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল।
অনেক জল্পনা কল্পনা,তদন্ত আর বিশ্বমোড়লদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ আরম্ভ করার পরিকল্পনা করে সরকার।
আজ সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছে,দেশের অর্থায়নে পদ্মাসেতুর নির্মাণকাজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে।বিশ্বব্যাংক তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে তাদের ভুল স্বীকার করে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চেয়েছে যে পদ্মাসেতুতে অর্থায়ন না করা তাদের একটি বড় মাপের ভুল ছিল!
বাংলাদেশের মত স্বল্পোন্নত দেশের কাছে এভাবে নিজেদের পরাস্ত হবার ঘটনা বিশ্বব্যাংকের মত এত বড় মাপের প্রতিষ্ঠানের জন্য এমন কি বাংলাদেশের জন্যও বিরল ঘটনাই বটে।যা সম্ভব হয়েছে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনমনীয় অবস্থান, মোড়লদের রক্তচক্ষুকে পরোয়া না করার মত সৎ সাহস এবং চরম আত্মবিশ্বাস!
দেশ এখন নিম্ন আয়ের দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে,দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেডেছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে এপ্রিলের শেষ নাগাদ। রফতানি ও রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি ছাড়াও বেসরকারি খাতে প্রচুর বিদেশি ঋণ আসায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স ... বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশের এ রিজার্ভ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।ঢাকা চট্টগ্রাম হাইওয়ের ফোর লেনের কাজ প্রায় শেষের দিকে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সরকারের এসব সাফল্যের সুফল এদেশের জনগণই ভোগ করবে,জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হচ্ছে আপামর জনসাধারনের কিন্তু এতসব ঈর্ষনীয় সাফল্যের মাঝেও দেশের অভ্যন্তরীন বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের আকাশচোঁয়া মুল্য সরকারের সব অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে যে দিকে সরকারের দৃষ্টি আরো কিছুটা তীক্ষ্ণ হওয়া দরকার।
মাত্র কিছুদিন আগে রমজান মাসেও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম যেখানে অনেকটাই সহনীয় পর্যায়ে ছিল তা এখন দিন দিন হু হু করে বাড়ছে।কাঁচা তরিতরকারি, পেঁয়াজ- রসুন,সামুদ্রিক মাছ,দেশীয় উৎপাদিত মাছ ভোজ্য তেল সহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও সাধারন মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে যাচ্ছে দিন দিন।
ভারত পেঁয়াজ আর গরু রাপ্তানি নিরুৎসাহিত করায় গত কিছুদিনেই পেঁয়াজের দাম সেন্সুরি অতিক্রম করার কাছাকাছি প্রায়,২৫০ টাকায় যেখানে এক কেজি গরুর মাংস পাওয়া যেত তা এখন কিনতে হচ্ছে ৪০০ টাকায়!
এসব সমস্যার সমাধানে হয় দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে নয়তো আমদানীর জন্য বিকল্প বাজার খুঁজতে হবে কিন্তু সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের এদিকে ততটা তৎপরতা চোখে পড়েনা।আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রী মহোদয় খুব সম্ভবত শীতনিদ্রায় আছেন,দয়া করে কেউ উনার ঘুম ভাঙ্গানোর চেষ্টা করুন!
আমরা ভোজন রসিক বাঙালি একটু সস্তায় খেয়ে পরে চলেফিরে কিছুটা শান্তি আর নিরাপত্তায় একটু ঘুমাতে পারার নিশ্চয়তা পেলেই আপনাদের আর ঘাটাবোনা এটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি।নয়তো আপনাদের সকল অর্জনই আমাদের মত নিম্ন, নিম্ন-মধ্যবিত্ত বাঙ্গালির কাছে নিতান্তই মুল্যহীন!
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সকলকে এ ব্যাপারে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাই।
সাইফুর রহমান রুবেল
ঢাকা,বাংলাদেশ।
২৫-০২০১৫
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৩