somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সবাই বিড়াল মারে বাসর রাতে আমি কিন্তু ছোট বেলাতেই মারছিলাম ;):)

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমার শৈশব কেটেছে গ্রামে। গ্রাম মানে রিয়েল গ্রাম, যেখানে ইলেকট্রিসিটি নাই, কাচা রাস্তা (এখন অবশ্য সবই আছে)। তখনও স্কুলে যাওয়া শুরু করিনি। আমাদের বাড়িতে অনেকগুলা ঘর ছিলো ফলে আমার খেলার সাথীর অভাব ছিলো না। তবে আমি, আমার এক চাচা এবং চাচাত ভাই
(সেকেন্ড কাজিন) আমরা সমবয়সী হওয়াতে ওদের সাথেই বেশী ঘুরাঘুরি করতাম।
আমার শৈশবের কথা মনে করলেই যে ঘটনাটা আমার চোখে ভাসে সেটা সবার সাথে শেয়ার করবো।একদিন আমরা খবর পেলাম আমাদের পাশের বাড়িতে একজনের বিড়াল অনেকগুলা বাচ্চা দিছে। শুনে আমাদের তিনজনেরই বিড়াল পোষার শখ হলো। আমরা তিন জনেই সেই বাড়িতে গিয়ে তিনটা বিড়ালের বাচ্চা নিয়া আসলাম।এইবার শুরু হলো বিড়ালের যত্ন নেয়ার পালা। আমি আমার বিড়ালের ব্যাপারে খুবই কেয়ারিং ছিলাম যেমন তিনবেলা খাওয়ার সময় ওকেও খাওয়ানো সাথে স্পেশাল ডিস মাছের কাটা , আমার জন্য যে দুধ রাখা হত সেখান থেকে চুপি চুপি বিড়ালকেও খাওয়ানো ইত্যাদি।
কয়েকদিন পর (প্রায় ১০-১২ দিন) ওদের দুজনের বিড়ালই পালাক্রমে মরে গেল।শুধু আমারটাই বেচেঁ আছে। আমিতো খুবই খুশি।কিন্তু সমস্যাটা দেখা দিলো পরের দিন বিকাল বেলায়। বিকালে ওদের সাথে খেলতে গেলে ওরা আর আমাকে নেয় না। কারন কি?? কারন হলো ওদের বিড়াল মরে গেছে আর আমারটা বেচে আছে :|:|
এখন আমাকে কি করতে হবে??
তোর বিড়ালটা মাইর্রা ফালাইলে অইবো।
শুনে আমার মাথায় য্যানো আকাশ ভাইঙ্গা পড়লো। আমি রাজি হলাম না।
ফলে আমি ওদের আশেপাশে ঘুরঘুর করতে থাকি।ওরা আমাকে ছাড়াই চারা খেলেতে থাকে (ম্যাচের বাক্সের কাগজকে টাকা বানিয়ে মাটির কলসের ভাঙ্গা টুকরা দিয়া খেলা হয় ), দুরে জঙ্গলে শালিকের বাসা দেখে আসে ডিম ফুটছে কিনা....এবং আমাকে শুনিয়ে আগত শালিকের বাচ্চা ভাগাভাগি করে।
উপয়ান্ত না দেখে দুদিন পরই আমি ওদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেলাম।এরপর ওরা আমাদের ঘরের পিছনের অংশে গেলো এবং আমি আমার বিড়ালটা নিয়া আসলাম।ওরা দেখি লাঠি হাতে রেডি এবং আমাকেও একটা লাঠি দিলো এবং বললো আমাকেই আগে আঘাত করতে অইবো। এটা সম্ভবত এই জন্য যে আমি যাতে করো কাছে বিচার দিতে না পারি যে ওরা আমার বিড়াল মাইর‌্যা ফালাইছে। যাই হোক প্রথমে আমি হলকা একটা আঘাত করতেই ওরা দুজন আর দেরী না করে বিড়ালটাকে পিটিয়ে মেরে ফেললো :((:((। এরপর আর আমাদের একসাথে ঘুরতে আর কোনো বাধা রইলো না এবং আমাদের বন্ধুত্বও অটুট থাকলো।

অফটপিক: এই ঘটনা সম্ভবত আমার মনে দাগ কেটেছিলো ফলে আমার শৈশবের অনেক কিছুই ভুলে গেলেও এটা আমার স্পষ্ট মনে আছে। সম্প্রতি রাজসোহানের আমি এখন শহুরে আদলে গড়া অন্য মানুষ লেখাটা পড়ে আমার অতি ছোটবেলার এই ঘটনা আবার মনে পড়ে গেল। তাই এই লেখাটা আমি রাজসোহানকেই উৎসর্গ কর্লাম।

আর বাসররাতে বিড়ালমারা নিয়া আমার শোনা গল্পটা এই রকম :

অনেক অনেক আগে এক দেশের দুই রাজকুমারী ঠিক করিয়াছিলো তারা বিবাহ করিবে এবং তাদের পতিদ্বয়কে তাহাদের কথা উঠিতে বসিতে শুনিতে হইবে, তাহাদের কে কোন আদেশ করিতে পারিবে না, এককথায় তাহাদের গোলাম হইয়া থাকিতে হইব। দেশে দেশে ঢাকডোল পিটাইয়া এই কথা ঘোষনা করিয়া দেয়া হইলো। কিন্তু শর্ত শুনিয়া কেহই তাহাদিগকে বিবাহ করিতে ইচ্ছা পোষন করে না।
অপরদিকে দুই বন্ধু তাহাদের বাড়ি থেকে পলায়ন করিয়া অতি কষ্টে দিনানিপাত করিতেছিলো। তাহার এই কথা শুনিয়া সানন্দে রাজি হইয়া গেলো। তারপর আসলো তথাকথিত বাসররাত।
বাসর রাতের পর দেখা গেল এক বন্ধু ঠিকই চাকরের মত জীবিকা নির্বাহ করিতে লাগিলো কিন্তু অপর বন্ধু রাজার হালে আছে। এই দেখে ১ম বন্ধু ২য় বন্ধুকে প্রশ্ন করিলো
ইহা কিভাবে সম্ভবপর হইলো???
ইহা শুনিয়া ২য় বন্ধু হাস্যরস পুর্বক তাহার বাসর রাতের কাহিনী বর্ননা করিলো।
আমি বাসর রাতে প্রবেশের সময় সাথে করিয়া একটা বিড়াল নিয়াছিলাম।অত:পর বিশাল রামদা বাহির করিয়া এক কোপে উহা দ্বিখন্ডিত করিয়া ফালাইলাম এবং বলিলাম আমাকে যে বেশি ঘাটাইবে টাহার অবস্হাও এইরুপ হইবে।

সুতবাং বাসর ঘরে বিড়াল মারা দিয়া সম্ভবত স্ত্রীর উপরে কর্তৃত্ব নেওয়াকেই বোঝায়। :);)

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:২৩
৩৯টি মন্তব্য ৩৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×