কম্পিউটারের সাহায্যে ছবি বিশ্লেষণ করে অ্যান্টিকিথেরা মেকানিজম বিষয়ে কাজ করছেন গবেষকেরা। ডিভাইসটির বিভিন্ন পাশ থেকে তোলা তিন হাজার এক্স-রে ছবি বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি ডিভাইসটির একটি ডিজিটাল সংস্করণ দাঁড় করিয়েছেন। গবেষক ফ্রিত জানিয়েছেন, এটা সম্পূর্ণ আলাদা একটি জগত্। এই ডিভাইসটি ছিল অসাধারণ, এই ধরনের ডিভাইস এখন পর্যন্ত একটিই খুঁজে পাওয়া গেছে।
প্রাচীন গ্রিসের লোকেরা গ্রহ-নক্ষত্রের প্রতি তীক্ষ্য নজর রাখতেন। তাদের গতিবিধি লক্ষ্য করতেন। অর্থাৎ তাঁরা জ্যোতির্বিদ্যা চর্চায় অনেক দূর এগিয়েছিলেন। গ্রহ-নক্ষত্রের আবর্তনের সূক্ষ্ম হিসাব রাখতে তাঁরা অ্যান্টিকিথেরা মেকানিজম নামের যন্ত্রটি ব্যবহার করতেন। তবে এই যন্ত্রটির উদ্ভাবক কে বা কারা সে তথ্য এখনো উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। গ্রিসের দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চল অ্যান্টিকিথেরা দ্বীপের কাছে সাগরে ডুবে থাকা হাজার বছরের পুরোনো রোমান জাহাজ থেকে এটি উদ্ধার করা হয়েছিল। ১৯০১ সালে এটি উদ্ধারের পর প্রায় কয়েক দশক এর ব্যবহার সম্পর্কে গবেষকেরা কোনোকিছু নিশ্চিতভাবে বলতে পারছিলেন না। ১৯৫৯ সালে ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ ডেরেক প্রাইস একে গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান নির্ণয়ের যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বর্তমানে ডিজিটাল মডেলে তৈরির সময় গবেষকেরা ২৭টি গিয়ার ব্যবহার করেছেন তবে মূল ডিভাইসটিতে ৫০-৬০টি গিয়ার ছিল বলে ধারণা করছেন তাঁরা। যন্ত্রটির মধ্যে ব্যবহূত ছোট ছোট যন্ত্রাংশ আর এর জটিল কাজের জন্য এটি বিখ্যাত। একটি এল আকৃতির হাতলের সাহায্যে একটি তারিখ নির্দিষ্ট করা হলে যন্ত্রটি সঙ্গে সঙ্গে ওই তারিখের গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান নির্ণয় করতে পারত। এই মেশিনের ছিল তিনটি ডায়াল, এই ডায়ালগুলোর সাহায্যে যথাক্রমে ৩৬৫ দিনের ক্যালেন্ডার, ২৩৫ মাসের মেটোনিক সার্কেল ও সারোস সার্কেলে গ্রহের অবস্থান জানা যেত। যা বর্তমানে কম্পিউটারের মাধ্যমে করা হয়। ঘড়ির কার্যক্রমের সঙ্গেও এর মিল রয়েছে। তাই একে পৃথিবীর প্রাচীনতম কম্পিউটার বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:০৪