somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দূষিত নেতৃত্ব কে “না” বলার এখনি সময়

২২ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশি ভাই বোনেরা,

আপনারা অল্প কয়েকজন ও যদি কোনভাবে আমার লেখা পড়তে পারেন, আপনাদের কাছে আমার জিজ্ঞাসা,
“আপনারা কি করছেন !!! আপনারা কি বুঝতে পারছেন না ক্ষমতালোভী নেতৃত্বের দাবা খেলার গুটিতে পরিণত হচ্ছি আমরা সমগ্র জাতি !”


আমাদের অপরিসীম সম্ভাবনা থাকার পরেও আমাদের কেই আজ বিভিন্ন দল উপদলে বিভক্ত করা হচ্ছে ! স্কুলজীবনের বন্ধুকে রুপান্তরিত করা হচ্ছে চরম বিরক্তিকর শত্রুতে, ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে অবিশ্বাস আর সন্দেহ।চারিদিকে যেন মিথ্যা আর নষ্টদের ই জয়জয়কার। ভোটের রাজনীতির কাছে আজ মূল্যহীন হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন, মতামত। ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে আজ ভুলে যাচ্ছে অনেক তরুণ।

আমরা কি অথর্ব জাতি ? সোজাসাপ্টা উত্তর হলো : “না”। কেননা তা হলে ১৯৫২ সালে আমরা “বাংলা” কে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারতাম না।১৯৭১ সালে লক্ষ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হতে পারতাম না। আমরা যদি মেরুদন্ডহীন হতাম তাহলে আমরা ব্রিটিশ আর পাকিস্তানি শোষণের মাত্র ৪২ বছরের মাঝেই এতটা দাঁড়াতে পারতাম না, তলাহীন ঝুড়ি হয়েই থেকে যেতাম।




আমরা আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, আমাদের অনেক শহরকে আমরা কালো ধোঁয়ামুক্ত করেছি, আমরা তৈরি করেছি স্টেডিয়াম, বিমান বন্দর, বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা ইন্সটিটিউট, স্কুল, কলেজ , হাসপাতাল। আমরা জিতেছি নোবেল পুরস্কার, গণিত অলিম্পিকের সম্মানসূচক পদ, আমরা ক্রিকেট খেলায় বিশ্বের অন্যতম একটা শক্তি।আমাদের নিজেদের আছে নিউজ চ্যানেল, স্পোর্টস চ্যানেল। আমাদের দেশের শ্রমিকেরা, সেনাবাহিনী, পুলিশবাহিনী দেশের বাইরে যথেষ্ট সুনামের সাথে কাজ করছেন।





এছাড়া বাংলাদেশের অসংখ্য স্টুডেন্ট, চিকিতসক, ইঞ্জিনিয়ার, গবেষক, বিজ্ঞানী , ব্যবসায়ীরা দেশের বাইরে ও পৃথিবীর উন্নত দেশের নাগরিকদের টেক্কা দিতে শুরু করেছে এবং অনেক খানেই শ্রেষ্ঠত্বের আসনগুলা জিতে নিচ্ছে।


নিউ ইয়র্কে ইসলামের শান্ত সৌম্য ভাব এবং সৌন্দর্য প্রচার করে চলেছেন বাংলাদেশি অধ্যুষিত মসজিদ গুলা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে খ্যাতনামা কোম্পানিগুলার পোশাকে লেখা থাকছে MADE in BANGLADESH,
সেনাবাহিনী নিজেদের অস্ত্র নিজেরা তৈরি করছে, নৌবাহিনীর জন্য জাহাজ তৈরি হচ্ছে আমাদের দেশেই, বিমান বাহিনী উন্নত হচ্ছে।



বাংলাদেশের ঔষধ বিক্রয় হচ্ছে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে। মাতৃ মৃত্যুহার,
শিশু মৃত্যুহার আমরা কমিয়েছি। দূর করেছি পোলিও; ডায়রিয়া, কলেরা রোগের স্যালাইন আবিষ্কার করেছি আমরা।

এত সম্ভাবনা’রএকটা জাতি আমরা,
কিন্তু আমরা মহান জাতি নই।
তবে মহান হতে পারি আমরা চাইলেই।
যে নেতারা আপনাকে গাড়ি ভাঙ্গার জন্য টাকা দিচ্ছে, আপনি কি সেই টাকা অন্য কোন সৎ উপায়ে আয় করতে পারতেন না ? সত্যি কি সে চেষ্টা করেছেন। গাড়ি ভাঙ্গার সময় একবারো কি মনে হয় না, অন্যের এই সম্পত্তি আমি যেভাবে ধ্বংস করছি, হয়ত দেশের আরেক জায়গায় এমনি ভাবে আমার নিজের পরিবারের সম্পত্তি নষ্ট করছে অন্য কেউ !
নষ্ট নেতৃত্ব আপনাকে রাস্তায় লাঠি, অস্ত্র নিয়ে নামতে বললেই কেন আপনাদের নামতে হবে ?



আমাদের কে একের পর এক লেলিয়ে দিয়ে তারা হয়ত ভোটের হিসাব কষছে, কিন্তু আপনি আমি আহত নিহত হলে কিন্তু আমাদের যার যার পরিবার ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এটা কি বুঝেও আমরা বুঝতে চাচ্ছি না !

যারা চলন্ত গাড়িতে আগুন দিচ্ছে, আপনি না দিলেও তার সাথে থাকছেন, আপনিও সমান অপরাধী, কেন এই সব দূষিত বিকৃত নেতৃত্বকে অযথা মৌন প্রশ্রয় দিচ্ছেন ! গাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া মানুষটার জায়গায় একবার নিজেকে কল্পনা করুন। ক্ষতিগ্রস্থ কিন্তু একদিন ঠিক এভাবে আমি আপনি বা আমাদের পরিবারের সদস্য যারা আমজনতার অংশ তারাও হতে পারে।

দেশের বাইরে অনেকেই আছেন, যারা দলীয় আদর্শগত কারণে নিজ নিজ দলের সমস্ত অন্যায় আচরণ মেনে নিচ্ছেন, নিজ দলের অন্যায়ের ব্যাপারে স্পীকটি নট অবস্থায় আছেন , এমন কি অনেকে হয়ত মৌনভাবে শুধু সম্মতি ই দিয়ে যাচ্ছেন না, বরং স্পন্সর ও করছেন। আজ যদি আপনি দলের অন্যায়কে বাধা দিতে না পারলেও সেটাকে অসমর্থন করেন, তাহলেই কিন্তু আস্তে আস্তে এই ধ্বংসাত্মক অবস্থা থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারব।আমাদের অনেক কাজ বাকি, আমাদের দেশে বেকারত্ব সমস্যা, বিদ্যুতের সমস্যা, যানজটের সমস্যা, নিরক্ষরতা, জলাবদ্ধতা এসব নিয়ে কিন্তু আমাদের নিজেদের ই কাজ করতে হবে।আমাদের সমস্যা নিয়ে বাকি বিশ্বের কিছুই যায় আসে না।

আরেকবার নিজের অবস্থান চিন্তা করুন। আসুন আমরা হরতাল, জ্বালাও পোড়াও , আর ভাংচুরের রাজনীতিকে চিরতরে বিদায় জানাই।

আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে অনেক রক্ত ঝড়িয়ে, স্বাধীনতার পরেও চলেছে রক্তের বন্যা।আর কত রক্তের প্রয়োজন? আর কত লাশের প্রয়োজন ?

সেই দিন দেখার অপেক্ষায় এবং সেইদিন প্রতিষ্ঠা করার কাজে সারাজীবন লড়াই করে যাব, যেদিন সমাজে ছেলে মেয়েদের সমান অধিকার থাকবে, রাতের কাজ শেষে বাসায় ফিরে আসতে কাউকে নিরাপত্তার অভাবে ভীত হতে হবে না, যানজটে পড়তে হবে না, ৬৪ উপজেলার সব শিশু স্কুল এ যাবে, চিকিতসার অভাবে কেউ মারা যাবে না, দারিদ্র্য সীমার নিচে কেউ বাস করবে না, ছাত্রদের কেউ রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না, যে যার মত নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারবে, এবং অন্যের ধর্মমতকে উপহাস করার কথা চিন্তা ও করবে না, বেকারত্ব বলে কিছু থাকবে না, থাকবে না ইভটিজিং, ধর্ষণ, বা খুন। আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ হয়ে উঠবে শান্ত স্নিগ্ধ কিন্তু অতি উন্নত একটা সুখী দেশ, যে দেশের বাস পোড়ানো, গাড়ি ভাঙ্গা, প্রকাশ্য দিবালোকে মানুষ খুন, খুনীদের সাজা কার্যকর না হওয়া হবে অনেক পুরানো একটা কালো অধ্যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:৫৪
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×