somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিরক ও আদেশ বিষয়ক সবচে গুরুত্বপূর্ণ একটা আয়াত :: ইনিল হুক্বমু ইল্লা লিল্লাহ্, "নিশ্চয়ই আদেশ আল্লাহ্'র"

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


:: গুরুত্ব

এ লেখাটাকে যথা সম্ভব ছোট রাখার চেষ্টা করব মাত্র একটা উদ্দেশ্যে, যেন সবার পড়ার সুযোগ থাকে। এ আয়াতের মর্ম উপলব্ধি করা ওপেন হার্ট সার্জারির চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ, জগতের সবকিছুর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এ আয়াত তৌহিদের আয়াত।

পবিত্রগ্রন্থ কুরআনের কিছু আয়াত আছে, যা বুঝতে সমস্যা হলে পুরো ইসলাম ধর্মকে বুঝতে সমস্যা হয়। মানবতা বুঝতে সমস্যা হয়, রাসূল দ.'র পথ মধ্যপন্থা বুঝতে সমস্যা হয়, খোদ্ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল দ. কে বুঝতে সমস্যা হয়। সরল সঠিক পথ থেকে আমাদের গন্তব্য হয় অজানা ঘোরগ্রস্ততায়। তেমনি এক মহামহিম আয়াতখন্ড হল ইনিল হুক্বমু ইল্লা লিল্লাহ্... নিশ্চয়ই আদেশ আল্লাহ'র।

আল্লাহুম্মা লা ইলমালানা= হে আল্লাহ্, আমাদের জ্ঞান নেই
ইল্লা মা আল্লামতানা= আপনি দয়া করে যা শেখান তার বাইরে
ইন্নাকা আনতা= নিশ্চয়ই আপনি
আলীমুল হাক্বীম= সর্বপ্রজ্ঞাময় মহাজ্ঞানী।

লা হাওলা= আমার কোন আশ্রয় নেই
ওয়া লা ক্বুওয়াতা= এবং নেই কোন শক্তি
ইল্লা বিল্লাহিল আলীউল আজীম= হে আল্লাহ্ আপনি ছাড়া, আপনিই তো সর্ব্বোচ্চ এবং মহত্তম।

:: আয়াতের আগে-পরের আয়াতসমূহ থেকে আয়াতের মূল উদ্দেশ্য ও অর্থ অনুধাবন

এখান থেকে আমরা শানে নুযুল বা অবতরণের পরিপ্রেক্ষিত ও তরজমা বা অনুবাদের মাধ্যমে তাফসীর বা ব্যাখা বুঝতে পারব-

সূরা ইউসূফ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম)

৩৬. এবং তাঁর (ইউসূফ আ.) সাথে আরো দুজন তরুণ কারাগারে প্রবেশ করল। তাদের একজন বলল: আমি নিজেকে (স্বপ্নে) দেখলাম (আঙুর থেকে) মদ পিষছি। অন্যজন বলল: আমি নিজেকে দেখলাম মাথায় রুটি বহন করছি আর পাখিরা সেখান থেকে ঠুকরে খাচ্ছে। হে ইউসূফ (আ.)! আমাদের এ স্বপ্ন'র অর্থ বলুন। অবশ্যই আমরা আপনাকে রুহী দিক দিয়ে অসাধারণ মনে করি।

৩৭. ইউসূফ (আ.) বললেন: তোমাদের প্রতিদিনের খাবার দেয়া হয় এখানে। আজকের খাবার দেয়ার আগেই হয়ত আমি তোমাদের এগুলোর অর্থ বলব। এ জ্ঞান সেসব জ্ঞানের অংশ যা আমার প্রভু আমাকে শিখিয়েছেন। অবশ্যই আমি (শুরু থেকে) তাদের ধর্ম অস্বীকার করেছি যারা আল্লাহ্' কে বিশ্বাস করে না এবং পরকালকে অস্বীকার করে।

৩৮. এবং আমি আমার পিতা ও দাদার ধর্ম পালন করি। ইব্রাহিম ইসহাক ও ইয়াকুবের (আলাইহিমুস সালাম)। এবং আমাদের কোন অধিকার নেই আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক মনে করার। এই (তৌহিদের বিশ্বাস) আল্লাহর এক মহান দান আমাদের উপর, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ কৃতজ্ঞতা জানায় না।

৩৯. হে আমার কারাগারের সাথী দুজন! (জেনে নাও স্বীকার করো এবং বলো) আলাদা আলাদা অনেক উপাস্য ভাল, নাকি এক আল্লাহ্, যিঁনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন?

৪০. (প্রকৃতপক্ষে) তোমরা আল্লাহর পাশাপাশি কিছু নামেরই ইবাদাত করো, এর বেশি কিসসু না! এ নামগুলো তোমরা আর তোমাদের পূর্বপুরুষরা তৈরি করেছ। আল্লাহ্ তাদের জন্য কোন ক্ষমতা পাঠাননি।
... নিশ্চয়ই আদেশ (শুধুমাত্র) আল্লাহ্'র...
তিনি একা তোমাদের আদেশ করেছেন যেন তোমরা তাঁকে ছাড়া আর কারো ইবাদাত না করো।
এটাই সোজা পথ (সত্য ধর্ম)।
অথচ বেশিরভাগ মানুষ তা জানে না।

৪১. হে কারাগারের আমার দুই সাথী! (তোমাদের স্বপ্নের অর্থ হল) তোমাদের একজন তার মুনিবের জন্য মদ পরিবেশন করবে, আর অন্যজন ক্রুশবিদ্ধ হবে তারপর পাখিরা তার মাথা ঠুকরে খাবে। তোমরা যা জানতে চেয়েছ তার চূড়ান্ত রায় হয়ে গেছে।

ইউসূফ আলাইহিস সালামকে যখন কারাগারে রাখা হল তখন সেখানে আরো দুজন ছিল। তাদের বিশ্বাস ও আস্থা হয়েছে যে ইউসূফ আ. স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে পারেন। তারা স্বপ্নের অর্থ জানতে চাইলে ইউসূফ আ. আশ্বস্ত করলেন, ব্যাখ্যা তিনি বলবেন এবং তাদের দৈনিক খাবার আসার আগেই বলবেন। কিন্তু সে ফাঁকে ইউসূফ আ.'রও কিছু কথা আছে। তিনি আ. সিদ্ধান্ত নিলেন, এ মানুষগুলো যেহেতু তাঁর উপর আস্থা রাখছে, তিনি সত্যটা তাদের জানাতে চান। তিনি আ. তাদের জানালেন, আল্লাহ্ তাঁর প্রিয়জনদের জানান অজানা বিষয়। আল্লাহ্' কে জানার পাশাপাশি তারা যে বিভিন্ন দেব-দেবতার উপাসনা করে, সেসব দেব দেবতা বলতে কিছু নেই। সেগুলো নাম-সর্বস্ব।

তিনি আ. জানালেন, একেকটা বিষয়ের জন্য একেক উপাস্য নেই।
উপাসনা আরাধনা শুধু আল্লাহর জন্য।
আল্লাহর প্রয়োজন পড়ে না বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন উপাস্য রাখার।
কারণ সকল আদেশ আল্লাহই দেন।
তাই তাদেরও উচিত বিভিন্ন ঘটনার জন্য তাদের পূর্বপুরুষ-কল্পিত বিভিন্ন দেব-দেবী তৈরি করে তাদের উপাসনা প্রার্থনা না করে শুধু আল্লাহর ইবাদাত করা।
এই পথটা খুবই সরল এবং খুবই সহজ।
অথচ এই সহজ বিষয়টাই মানুষ বুঝতে পারে না।



:: ব্যাখ্যা

আগের দিনের মানুষ আল্লাহকে বিশ্বাস করেও বিভিন্ন দেবতা-উপদেবতা ইত্যাদি তৈরি করে নিত।
যেমন, যেখান থেকে ইব্রাহীম আ. আসেন, সেই ব্যাবিলনিয়ায় মানুষ এমনকি শয়তানের পূজাও করতো। শয়তানকে বলতো শস্য দেবতা।
এ প্রচলন সারা পৃথিবীতেই।
পানির জন্য একজন উপাস্য নির্ধারণ করে নিত। তারা ঠিক করতো, বাতাস বয় ওই উপাস্যের জন্য, নদীতে বন্যা আসে সেই উপাস্যকে সন্তুষ্ট করতে পারলে, শীতের উপাস্য সেজন, গ্রীষ্মের অন্যজন, স্বাস্থ্যের একজন...

ইউসূফ আ. তখন মিসরে ছিলেন। প্রাচীণ মিসরীয়রা এক সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ সম্পর্কে ধারণা রাখতো। কিন্তু ইউসূফ আলাইহিস সালামের সময়কালে ও আগে সেইসাথে যেসব উপাস্য নির্ধারণ করে নিয়েছিল তাদের সংখ্যা অন্তত ১১৪ টি জানা যায় বর্তমানে। মানুষ নিজ কল্পনা এবং ভাবনা বিলাসে অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে কারণ তার ভাবনাকে বিকৃত করার জন্য তার মনের স্বাধীনতা ও শয়তানই যথেষ্ট।

ইউসূফ আ.'র সময়কালের কিছু মিসরীয় "উপাস্য":

বাসতেত (ঈসা আ.'র ২৮৯০ বছর পূর্বযুগে): বিড়ালদেবী। বিড়াল, রক্ষা, নাচ, গান, পরিবার, আনন্দ, ভালবাসা, তৃপ্তি ও গর্ভবতী নারীর দেবী। তাকে বাস্ত, উবাস্তে ও বাসএত ও বলা হত।
আনুবিস: মমির দেবতা। শেয়াল দেবতা। এই মমির দেবতা মমি করার প্রক্রিয়া দেখাশোনা করে এবং মমিকে অক্ষত রাখে এবং পরে মমিকৃত রাজা বা ক্ষমতাবান মানুষ যেন আবার পুনরুজ্জীবিত হয় সেটা নিশ্চয়তা দেয় এমন বিশ্বাস করা হতো।
রা, আমন-রা: এ নিয়ে বিস্তারিত অন্য লেখায় আসবে ইনশাআল্লাহ্। রা প্রাচীণ মিসরের মানুষের কল্পিত সূর্যদেবতা। রা মানুষরূপী, যার মাথা ঈগল বা পাখির। প্রতিদিন সন্ধ্যায় মারা যায় এবং প্রতি ভোরে জন্মায়।
আমন, আমুন: উপাস্য-প্রধান। সে পরে আবার সূর্যদেব রা'র সাথে মিলিত হয়।
নাত: আকাশের ওই দেবী যে কিনা সূর্যদেব রা কে রাতে গিলে ফেলে।
জেব/গেব: মাটির দেবতা। সে হাসলে ভূমিকম্প হয় এমনটা ধরা হতো।
হাতোর: ভালবাসা, আনন্দ, গান বাজনার আরেক দেবী।
সেকমেত: যুদ্ধ ও সংঘর্ষের দেবী।
হোরাস: আকাশ-দেব। প্রাচীণ মিসরীয়রা বিশ্বাস করতো যে ফেরাউনরা ছিল আকাশ-দেবতার বংশধর।
আইসিস: মাতা-দেবী।
হেকেত: সন্তান জন্মের দেবী।
তেফনাত: বৃষ্টিদেবী।
থথ: লেখাপড়া জ্ঞান ও প্রজ্ঞার দেবতা।
সোবেক: নীলনদের দেবতা। কুমিরদেব।



ইউসূফ আলাইহিস সালাম তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, নীলনদে রক্ষা পেতে সোবেক নয় বরং আল্লাহ্'র প্রার্থনাই করতে হবে। জ্ঞান আল্লাহই দান করেন, থথ নয়। বৃষ্টি আল্লাহর হুকুমেই হয়, তেফনাতের উপাসনা করার কোন দরকার নেই। সন্তান সৃজন করেন আল্লাহ্, হেকেত নাম মাত্র। আকাশের আলাদা কোন দেবতা নেই, হোরাস তৈরি করা নাম শুধুই, আল্লাহ্ প্রতিটা হুকুমের মালিক। মাটি পানি আকাশ বাতাস প্রকৃতি পণ্য শস্য ভালবাসা যুদ্ধ সুখ সব শুধু আল্লাহরই প্রকাশ্য হুকুমে হয় অথবা অপ্রকাশ্য নিরব অনুমোদনে হয়। অন্য কোন উপাস্যকে তুষ্ট করার কিছু নেই। উপাস্য শুধু তিনি এক আল্লাহ্।

এটাই তৌহিদের প্রথম শিক্ষা। এ শিক্ষার জন্যই রিসালাতের আগমন। রিসালাতের এ শিক্ষাকে ধারণের জন্যই ইতাআত শুরু হয়েছে সিদ্দিকে আকবর রা. হয়ে ফারুকে আযম রা. হয়ে কিয়ামাত পর্যন্ত ইমাম মাহদী ও ঈসা আ. এ শিক্ষাই প্রকাশিত করবেন।

সকল কিছুর আদেশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে আল্লাহর কাছ থেকেই আসে। এ শিক্ষাটাই শিশু অবস্থায় মুসলিমের ভিতরে সরল কথায় দেয়া হয়, "আল্লাহর হুকুম ছাড়া গাছের একটা পাতাও নড়ে না।"

যে মানুষ বা জ্বিন বা শয়তান খারাপ করে সে-ও খারাপটুকু করতে পারে কারণ আল্লাহ্ তাকে খারাপটুকু এবং ভালোটা করার স্বাধীনতা দিয়েছেন বলেই। আল্লাহ্ খারাপ করার হুকুম দেননি বরং তার স্বাধীনতার হুকুম দিয়েছেন বলেই সে খারাপ করতে পারছে। তার স্বাধীনতার এ জবাবও তাই তাকেই দিতে হবে।

সৃষ্টি থেকে ধ্বংস পর্যন্ত প্রকৃতির প্রতিটি বিষয় আল্লাহর একক হুকুমে পরিচালিত হয়। সে হুকুম অন্তত তিন প্রকারের:

১. সরাসরি হুকুম। যেমন, রাসূল দ.'র প্রাণ কেউ হরণ করতে পারবে না। কুরআন কেউ বিকৃত করতে পারবে না।
২. তাকদীরবদ্ধ হুকুম। যেমন, সূর্য তার নিজ কক্ষপথে চলবে, চন্দ্র তার নিজ কক্ষপথে চলবে। কেউ নবী বা রাসূল দের প্রতি বেআদবি করলে সে আর কখনো ঈমান লাভ করবে না...
৩. সীমিত স্বাধীনতার হুকুম। শুধু দুটি অস্তিত্ব মানুষ ও জ্বিন সীমিত স্বাধীনতা পাবে এবং তাকে আল্লাহ্ আরো সুযোগ দেবেন যেন সে পার্থিব জীবনে যা খুশি করে নিতে পারে। তবে এ স্বাধীনতায় আল্লাহ্' ও কিছু বাধা রেখেছেন। যেমন, শয়তানকে (সে জাতিগতভাবে জ্বিন) আল্লাহ্ পাল্টা জানিয়েছেন, আল্লাহর প্রিয়পাত্রদের শয়তান ধোঁকা দিতে পারবে না। অর্থাৎ শয়তানের ধোঁকা দেয়ার সীমিত স্বাধীনতা আছে যে স্বাধীনতা আল্লাহ্ দিয়েছেন একই সাথে সেই স্বাধীনতার কিছু রদকৃত অবস্থা আছে যদি তাঁরা আল্লাহর প্রিয়জন হন।

সকল কিছুই শুধু আল্লাহর নিয়মে পরিচালিত হয়।
সকল কিছু শুধু আল্লাহর হুকুমে পরিচালিত হয়। সে হুকুম যে রূপেরই হোক না কেন।
অবশ্যই বিশ্বপ্রকৃতির প্রতিটি বিষয় এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর চূড়ান্ত ও একক অধীনস্ততায় রয়েছে।

আল্লাহর হুকুম প্রতিষ্ঠিত। সূর্যের উপর, চন্দ্রের উপর, ভূমি-আকাশ-পাতাল-সুখ-শান্তি-কষ্ট-যন্ত্রণা-সুস্থতা-জন্ম-মৃততু-খাদ্য এবং সর্বোপরি ঈমানের উপর আল্লাহর আদেশ প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহর আদেশ প্রতিষ্ঠিত এটাই ইসলামের মৌলিক শিক্ষা। আল্লাহর আদেশকে প্রতিটি ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত জানাটাই তৌহিদ-রিসালাত-ইতাআতে তথা সিরাতুল মুস্তাকিমে তথা দ্বীনিল কাইয়্যিমাহ্ তে তথা সরল সহজ সমর্পণ ইসলামে থাকার একমাত্র উপায়।

নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ভাল জানেন এবং রাসূল দ. কে এবং তাঁর প্রিয়জনদের ভাল জানিয়েছেন।

ছবি-১: ইউসূফ আ.'র পর মূসা আ. মিসরের রাজপুরুষদের একত্ব বোঝানোর চেষ্টা করেন। ফেরাউন দ্বিতীয় রামেসিসের পতনের পর মূসা আ.'র সেই মহান সরল বাণী যে মিসরীয় রাজপুরুষরা গ্রহণ করেননি বরং নিজ কুসংস্কারের যাঁতাকলই আঁকড়ে ছিলেন তার প্রমাণ বহন করছে এই দেয়ালচিত্র। সম্রাট তৃতীয় রামেসিস আমনের সামনে নৈবেদ্য নিয়ে যাচ্ছে। মূসা আ. ইউসূফ আ.'র সেই বাণী নিয়েই গিয়েছিলেন: আদেশ শুধু আল্লাহ্ করেন, প্রকৃতির আর কোনকিছুর জন্য কারো দ্বারস্থ হতে হবে না হে রাজন!

ছবি-২: কুরআনের ফেরাউন বা সম্রাট দ্বিতীয় রামেসিসের পাথর-কোঁদা আরাধনাচিত্র। তাহ্, আমুন এবং রা'র পাশে চিত্রিত ফেরাউনের মূর্তি। ফেরাউন নিজেকে ঈশ্বর দাবি করেছিল এবং সেইসাথে তার সময়ে আমুন, রা, তাহ্ ইত্যাদি ঈশ্বরেও বিশ্বাস স্থাপন করেছিল বা নিদেনপক্ষে করিয়েছিল। মজার ব্যাপার হল, সর্বশক্তিমান এক ও অদ্বিতীয়তে বিশ্বাসের পরও তাদের এসব কল্পিত পুরাণ-চরিত্র তৈরি করতে হয়।

:: প্রার্থনা ও সমর্পণ

আল্লাহুম্মা লা সাহলা= হে আল্লাহ্, কোনকিছু সহজ নয়,
ইল্লা মা জা'আলতু সাহলা= আপনি দয়া করে যা সহজ করে দেন তার বাইরে

রাব্বী ইন্নী লিমা আনযালতা ইলাইয়্যা মিন খাইরিন ফাকির= মহান প্রতিপালক হে! নিশ্চয়ই আমার সেটাই প্রয়োজন আপনি যা পাঠাবেন। [ক্বাসাস: ২৪]

রাব্বিশ রাহলী স্বদরি= মহান প্রতিপালক হে! আমার কেন্দ্রকে (মস্তিষ্ক, বুক, অনুভব, মন) প্রসারিত (উন্মোচিত, মহান, উপলিব্ধর সক্ষম) করে দিন।
ওয়া ইয়াসসির লি আমরী= এবং আমার দায়িত্বকে আমার জন্য সহজ করে দিন
ওয়াহ্-লুল উকদাতাম মিল্ লিসানি= এবং আমার কথার দুর্বোধ্যতাকে দূর করে দিয়ে বোঝা যায় এমন করে দিন
ইয়াফকাহু ক্বাওলি= যেন আমাদের কথা সবাই বুঝতে পারেন। [ত্ব-হা ২৫-২৮]

আল্লাহুম্মা স্বল্লি আলা= হে আল্লাহ্ আপনি অনুগ্রহ করে সালাত প্রেরণ করুন
সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদ= আমাদের মহান পথপ্রদর্শক মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি
ওয়া আলা আ'লী সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদ= এবং আমাদের মহান পথপ্রদর্শক রাসূল দ.'র বংশধরগণের প্রতি

কামা স্বল্লাইতা= যেভাবে আপনি সালাত প্রেরণ করেছেন
আলা সাইয়্যিদিনা ইব্রাহিম= আমাদের মহান পথপ্রদর্শক ইব্রাহিম আ.'র প্রতি
ওয়া আলা আ'লী সাইয়্যিদিনা ইব্রাহিম= এবং আমাদের মহান পথপ্রদর্শক ইব্রাহিম আ.'র বংশধরগণ তথা মহানবী রাসূল দ.'র পূর্বপুরুষগণের উপর। ঈসা, মূসা, ইসমাঈল, ইউসূফ, ইসহাক, ইয়াকুব, যাকারিয়া আলাইহিমুস সালাম এবং তাঁদের উত্তরসূরী রাসূল দ.'র পবিত্র বংশধারার উপর।

ইন্নাকা হামিদুম্ মাজী-দ=নিশ্চয়ই মহত্তম প্রশংসা আপনারই জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৯
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×