কোনটি হালাল শবনম?
১। শবনম - সৈয়দ মুজতাবা আলী
২। শবনম - কাসেম বিন আবু বাকার
মোটামুটি বই পত্র যারা ঘাটেন তাদের মধ্যে সৈয়দ মুজতবা আলীর শবনম পড়েন নি এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিলের ব্যাপার হবার কথা। একজন তুর্কি বংশোদ্ভূত আফগান বড়লোকের একমাত্র মেয়ের বিপরীতে এক বাঙালী যুবকের প্রেমের কাহিনী। মজনুনের প্রতি শবনমের ভালবাসার কোন তুলনা ছিল না। চোখের পানি মুছতে মুছতে অনেকবার শবনম পড়েছি ।
"শবনম" এর মাধ্যমে সৈয়দ মুজতবা আলী রুচিহীন কিছু লেখকের চোখেও কাঠি নাড়া দিয়েছেন বলে মনে হয়েছে আমার কাছে। যেসব লেখক বাস্তবতা আর আধুনিকতার নাম করে উপন্যাস আর সাহিত্যের ভিতরে পাশবিক নগ্নতাকে টেনে নিয়ে এসে আমাদেরকে শুধুমাত্র দৈহিক প্রেমের শিক্ষা দিয়ে থাকেন, সেইসব লেখকদের গালে চপোটাঘাত দিয়ে মুজতবা আলী শবনমের মাধ্যমে মানবিক প্রেমের শিক্ষা দিয়েছেন সুনিপুনভাবে।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ "শবনম" নিয়ে বলেছিলেন “বাঙ্গালী তরুন-তরুনীদের প্রেমে পড়ার পূর্বে অবশ্যই সৈয়দ মুজতবা আলীর শবনম উপন্যাসটি পড়ে নেয়া উচিত। এমন শিক্ষনীয় প্রেমের উপন্যাস বিশ্ব সাহিত্যে আর একটিও নেই। ” প্রেমের এরকম শ্বাশত বর্ণনা আর কোনো উপন্যাসে পেয়েছি বলে মনে হয় নি।
কাশেম বিন আবু বকর নামের এক ইসলামী ঐপন্যাসিকের নাম গত কিছুদিন ধরে বিভিন্ন মাধ্যমে খুব চাউর হচ্ছে। ইন্টারনেটে তাকে নিয়ে ঘাটাঘাটি করার চেষ্টা করে দেখলাম তারও শবনম নামে একটি উপন্যাস আছে। উনার কোনো বই পড়ার অভিজ্ঞতা না থাকলেও লোকমুখে শুনলাম উনি বিসমিল্লাহ বলে প্রেমিকাকে নায়ক দ্বারা হালাল চুমু খাওয়ায়। রোমান্সের শুরুতে বিসমিল্লাহ আর শেষে শুকরিয়া টেনে আনায় উনি নাকি হালাল লেখক।
আচ্ছা তাহলে এইসব চুম্মাচাটি বাদ দিয়ে সৈয়দ মুজতাবা আলী যে সহস্রাব্দের শ্রেষ্ঠ প্রেমের উপন্যাস "শবনম" লিখে গ্যাছেন সেটি বেশি হালাল নাকি কাশেমের "শবনম" বেশি হালাল?
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৩৩